গল্পঃ অভিমানী বউ
রাত ১০:২৫ মিনিট বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিচ্ছিলাম। হঠাৎ ফোনের message ton বেজে উঠলো,
message টা seen করলাম।
""" তুই যদি ১৫ মিনিটের ভিতরে বাসায় না আসিস,
আমি আজকে আবার হাত কাটবো""!...
পাগলীটা ৯:০০ টার পর থেকেই ফোন দিচ্ছিলো। একবার রিসিভ করে,
বলেছি একটু পর আসছি তারপর আর রিসিভ করিনি। তাই রাগ করে message টা করেছিলো।
ও যা বলে তাই করে,
খুব রাগি,এর আগেও অনেকবার আমার উপর রাগ করে হাত কেটেছে।
তাই আর এক মুহুর্ত দেরী না করে,বাড়ির দিকে দৌড় দিলাম।
।।
দরজায় একবার নক করতেই পাগলীটা একটা মোমবাতি হাতে বেরিয়ে এলো!...(তখন কারেন্ট ছিল"না)
---এই তুই এতক্ষন বাইরে কি করলি,কখন থেকে তোকে ফোন দিচ্ছি....?
- সত্যি করে বল কোথায় ছিলি?
- ওইতো বন্ধুদের সাথে ছিলাম।অনেকদিন পর ওদের সাথে দেখা হলো তাই একটু আড্ডা দিলাম।
- আমার চেয়ে তোর আড্ডায় বড় হয়ে গেল...?
তুই জানিস না বাসায় একা একা আমার ভয় করে।
বলেই কান্না শুরু করে দিয়েছে।.(ওর কান্নাটা আমি একদম সহ্য করতে পারি না)
আমিঃ আচ্ছা সোনা আমি আর কখনও রাতে বাইরে থাকবো""""না,এবারের মত ক্ষমা করে দেও।
- তুই এর আগেও অনেকবার একথা বলেছিস,কিন্তুু পরে আর মনে থাকে না।তুই আমার সাথে কথা বলবি"না।
আমিঃ আমার জানটা দেখি আমার উপর খুব রাগ করেছে।আমার সাথে কথা না বলে আমার রাগী
বউ""টা কি থাকতে পারবে...?
- হ্যা পারবো, তুই আমার সাথে কথা বলবি না ভাল করে বলে দিচ্ছি,(কথা গুলো বলার সময় আমার বউ"টার প্রতি খুব মায়া হচ্ছিলো,চোখ দিয়ে অঝরে পানি পড়ছিলো,মেয়েটা খুব অভিমানী)
আমিঃ আচ্ছা ঠিক আছে কতক্ষন থাকতে পারিস দেখাই যাবেনি,
- খেয়েছিস....?
- কুত্তা, বান্দর, সঝাড়ু ( আমার চুল গুলো একটু খাড়া খাড়া, তাই পাগলীটা আমাকে সজাড়ু বলে ক্ষ্যাপায়, পাগলীটা আমাকে ছাড়া কখনও খাইনি, তাই এসব
বলছিল)
আমিঃ জানি, আমার জানটা আমাকে ছাড়া খেতেই পারে না,চল খাই....
- যা তুই একাই গিল, আমি খাবো না,(বলেই শুবার ঘরে চলে গেল)
প্লেটে কিছু ভাত নিয়ে ঘরে গিয়ে ওকে বোঝানো শুরু করলাম,কোনো কিছুতেই কাজ হচ্ছে না।
এক সময়....
আমিঃ জান, আমার না খুব খিদে লাগছে।
- খিদে লাগছে তো খা, আমাকে কেন বলছিস....?
আমিঃ তুই একটু খাওয়ে দে প্লীজ।
- পারবো না, ,, যা তো এখান থেকে।(পাগলী আজকে খুবই রাগ করে আছে)
।।
প্লেটা টেবিলে রেখে শুয়ে পড়লাম।কেবল চোখে ঘুম ঘুম ভাব তখনি দেখি পাগলী"টা ভাতের প্লেট
হাতে নিয়ে আমাকে ডাকছে।
- এই ওঠ, নে গিল, আমি ছাড়া তো আর খাবি না...
আমিঃ তোকে ছাড়া আমি কি করে খাবো বল?
- মুখ ভেটকি দিয়ে বলে উঠলো,তোকে ছাড়া কি করে খাবো বল।
কুত্তা আর একদিন যদি বাসায় আমাকে একা ফেলে বাইরে থাকিস তোকে আমি মেরেই ফেলবো।
- আচ্ছা ঠিক আছে, দে খিদে লাগছে,
ও আমাকে তুলে খাওয়াচ্ছিল,(আসলে বউ এর হাতে খাওয়ার মজাই আলাদা)
আমিও পাগলীটাকে খাওয়ে দিলাম,তারপর দুজনে শুয়ে পড়লাম...
।।
কিছুক্ষন পর..........
- এই শুনছিস, ওঠ না একটু........কিরে শুনতে পাচ্ছিস না, কান্না ভরা কন্ঠ আমার কানে ভেসে উঠল এই কুত্তা, এই বান্দর ওঠ বলছি......
আমিঃ কিরে, কি হইছে ডাকছিস কেন?
ঘুমাতেও দিবি না নাকি?
- আমাকে একটু বুকে জড়িয়ে নিবি, আমার না খুব ভয় করছে!....(বাইরে খুব বৃষ্টি আর বজ্রপাতের শব্দ
শোনা যাচ্ছে , বজ্রপাতের শব্দ পাগলী খুব ভয় করে)
,,
পাগলীটাকে বুকে জড়িয়ে নিলাম শক্ত করে।ও আমার বুকে ছোট বাচ্চাদের মতো লুকিয়ে গেল,,,( আসলেই ওর সব কিছু ছোট বাচ্চাদের মতই)
বাচ্চাদের মত ঠোট ফুলিয়ে বলতে লাগলো,,
,,
,,
,,
- তোকে কখন থেকে ডাকছি,এতক্ষন উঠলি না কেন....?
আমিঃ ঘুমিয়ে পড়েছিলাম সোনা।
- ঘুমাবিই তো আমাকে তুই একটুওভালবাসিস না, আমার কথা তোর একটুও মনে থাকে না।আমি যেদিন
মরে যাবো,দেখবি সেদিন ঠিকই আমাকে মনে করে কাদবি!...
আমিঃ না সোনা এভাবে বলিস না,তুই ছাড়া আমি একটা মুহূর্তও ভাল থাকতে পারবো নারে।
তোর যদি কিছু হয় আমি প্রতিদিন মৃত্যু যন্ত্রনা ভোগ করবো''''"""রে।(চোখ থেকে দু ফোটা জল গড়িয়ে
পড়লো,পাগলীটার গালে)
- মাথাটা একটু উঠিয়ে, কিরে কাদছিস কেন?
আমিঃ তোকে ছাড়া আমি থাকতে পারবো নারে, প্লিজ আমাকে ছেড়ে তুই কোথাও যাস নে....
- না সোনা, তোকে ছেড়ে আমি কোথায় যাবো না।আমি তোর উপর রাগ করি ঠিক আছে,কিন্তুু আমি
তোকে অনেক ভালোবাসিরে,অনেক ভালোবাসি।
আমিঃ আমি জানি, আমার আপন মানুষ আমাকে অনেক ভালবাসে,তা এখন একটু ঘুমাও .....
- হ্যা ঘুমাচ্ছি, সারারাত জড়িয়ে ধরে থাকবি কিন্তুু, একটুও ছাড়বি না, না হলে সকালে আমি খুব কান্না করবো।
আমিঃ আচ্ছা সোনা, তোকে আমি আমার বুক থেকে কখনই আলাদা করবো না।অনেক রাত হয়েছে এখন
একটু ঘুমা!.......
- আচ্ছা, উম্মাহ্...(আমার গালে একটা চুমু দিয়ে পাগলীটা ঘুমিয়ে পড়লো)
আমি ওকে জেগে জেগে বুকে জড়িয়ে পাহারা দিচ্ছিলাম।
আমাদের ভালবাসা দেখে মনে হয় বৃষ্টিরাও আজকে অনেক হিংসে করছিলো।
হঠাৎ চোখের পাতাটা ভারি হয়েএলো,
পাগলীটার কপালে একটা চুমু দিয়ে,ওকে বুকে জড়িয়ে ঘুমিয়ে পড়লাম!................
।।
পাগলীটাকে নিয়ে ভালই কেটে যাচ্ছিল দুষ্টু মিষ্টি ভালবাসার দিন গুলো.......
কিছুদিন পরই পাগলীটা মা হবে, আর আমি হবো বাবা!!....
আজকাল ওকে একটু বাড়তি কেয়ার করা শুরু করেছি।ওকে দেখে শুনে রাখার জন্য একটা কাজের
মেয়েকেও রেখেছি।
।।
একদিন আমি বাইরে ছিলাম, হঠাৎ কাজের মেয়েটা ফোন দিয়ে বললো,
ভাইয়া ভাবির অবস্থা খুব খারাপ........
কথাটা শুনে বুকের মধ্যে কেমন জানি চিন চিন করে উঠলো।
সেদিন কিভাবে বাসায় এসেছি আমার খেয়াল নেই।
এসে দেখি, পাগলীটা শুয়ে থেকে যন্ত্রনায় কাতরাচ্ছে, আমি দৌড়ে গিয়ে আমার জানটাকে মুহূর্তেই বুকে
জড়িয়ে নিলাম............................!
।।
আমার জান"টার আজ ডেলিভারি পেইন শুরু হয়েছে,,,
আমি তাকে বুকে জড়িয়ে ধরে আছি।
খুব ছটফট করছিল আর কান্না করছিল পাগলীটা।
আমি আমার জানটার কষ্ট একদমই সহ্য করতে পারি না।
ওর সামান্য খারাপ লাগা টুকু আমার কাছে মৃত্যুের চেয়ে ভয়াবহ।
এককথাই নিজের জান নিজের দেহে আছে তা কখনোই মনে করিনা।
ওকে বিয়ে করার পর কোনো কিছুর অভাব,কষ্ট কি ওকে বুঝতে দিইনি।
কোনো চাওয়া অপূর্ন রাখিনি...সে খুব অভিমানী ছিল, অল্পতেই অভিমান করতো আর কাদতো।আমি
আমার সর্বোচ্চ চেষ্টা দিয়ে ওর কান্না থামাতাম।
কিন্তুু আজ আর ওর কষ্টের কান্না থামানোর মত কোনো উপায় জানা নেই!(চোখের পানি আটকাতে পারলাম না)
।।
দেরী না করে খুব তাড়াতাড়ি হাসপাতালে নিয়ে গেলাম!.....
সময় যতই যাচ্ছে পাগলীটার যন্ত্রনার পরিমাণ ততই বাড়ছে,চিৎকার করে কাদছিল আমার
বউ।
ওর কান্নায় আমার বুকটা ফেটে যাচ্ছিলো।
আজ একটা কথাও বলেনি আমার সাথে,কারন অসহ্য যন্ত্রনায় তার জানটা বেরিয়ে যাচ্ছিল।
আসলে মা হতে হলে একটা মেয়েকে কতটা কষ্ট আর ত্যাগ স্বীকার করতে হয় সেদিন আমি আমার জানটা"কে দেখে বুঝেছি।
।।
ডাক্তার তাকে ডেলীভারি রুমে নিয়ে যাচ্ছে,সাথে সাথে আমিও যাচ্ছিলাম।......
কিন্তুু ডাক্তার আমাকে রুমে ডুকতে দিল না।ডাক্তার"কে অনেকবার অনুরোধ করলাম,ডাক্তার আমার জানটা খুব ভিতু।আমার ওর সাথে থাকা খুব দরকার,প্লীজ আমাকে সাথে নিন।
ডাক্তার কোনো কথায় শুনলো না।এই দিকে আমার জানটা চোখ বন্ধ করে যন্ত্রনায় ছটফট করছিল।
আমাকে বাইরে রেখে ওরা আমার জানটা"কে ভেতরে নিয়ে গেলো।
যাওয়ার সময় আমার লক্ষি সোনাটা চোখ মেলে একবার আমার দিকে
তাকালো..............."কি মায়া ওর চোখে বলে বুঝাতে পারবোনা।
।।
বাইরে অপেক্ষা করছি, আল্লাহকে ডাকছি আর কাদছি!...
আধা ঘন্টা পর ডাক্তার বেরিয়ে আসলেন।
এসে বললেন;
- আপনি একটু আমার চেম্বারে আসেন..
message টা seen করলাম।
""" তুই যদি ১৫ মিনিটের ভিতরে বাসায় না আসিস,
আমি আজকে আবার হাত কাটবো""!...
পাগলীটা ৯:০০ টার পর থেকেই ফোন দিচ্ছিলো। একবার রিসিভ করে,
বলেছি একটু পর আসছি তারপর আর রিসিভ করিনি। তাই রাগ করে message টা করেছিলো।
ও যা বলে তাই করে,
খুব রাগি,এর আগেও অনেকবার আমার উপর রাগ করে হাত কেটেছে।
তাই আর এক মুহুর্ত দেরী না করে,বাড়ির দিকে দৌড় দিলাম।
।।
দরজায় একবার নক করতেই পাগলীটা একটা মোমবাতি হাতে বেরিয়ে এলো!...(তখন কারেন্ট ছিল"না)
---এই তুই এতক্ষন বাইরে কি করলি,কখন থেকে তোকে ফোন দিচ্ছি....?
- সত্যি করে বল কোথায় ছিলি?
- ওইতো বন্ধুদের সাথে ছিলাম।অনেকদিন পর ওদের সাথে দেখা হলো তাই একটু আড্ডা দিলাম।
- আমার চেয়ে তোর আড্ডায় বড় হয়ে গেল...?
তুই জানিস না বাসায় একা একা আমার ভয় করে।
বলেই কান্না শুরু করে দিয়েছে।.(ওর কান্নাটা আমি একদম সহ্য করতে পারি না)
আমিঃ আচ্ছা সোনা আমি আর কখনও রাতে বাইরে থাকবো""""না,এবারের মত ক্ষমা করে দেও।
- তুই এর আগেও অনেকবার একথা বলেছিস,কিন্তুু পরে আর মনে থাকে না।তুই আমার সাথে কথা বলবি"না।
আমিঃ আমার জানটা দেখি আমার উপর খুব রাগ করেছে।আমার সাথে কথা না বলে আমার রাগী
বউ""টা কি থাকতে পারবে...?
- হ্যা পারবো, তুই আমার সাথে কথা বলবি না ভাল করে বলে দিচ্ছি,(কথা গুলো বলার সময় আমার বউ"টার প্রতি খুব মায়া হচ্ছিলো,চোখ দিয়ে অঝরে পানি পড়ছিলো,মেয়েটা খুব অভিমানী)
আমিঃ আচ্ছা ঠিক আছে কতক্ষন থাকতে পারিস দেখাই যাবেনি,
- খেয়েছিস....?
- কুত্তা, বান্দর, সঝাড়ু ( আমার চুল গুলো একটু খাড়া খাড়া, তাই পাগলীটা আমাকে সজাড়ু বলে ক্ষ্যাপায়, পাগলীটা আমাকে ছাড়া কখনও খাইনি, তাই এসব
বলছিল)
আমিঃ জানি, আমার জানটা আমাকে ছাড়া খেতেই পারে না,চল খাই....
- যা তুই একাই গিল, আমি খাবো না,(বলেই শুবার ঘরে চলে গেল)
প্লেটে কিছু ভাত নিয়ে ঘরে গিয়ে ওকে বোঝানো শুরু করলাম,কোনো কিছুতেই কাজ হচ্ছে না।
এক সময়....
আমিঃ জান, আমার না খুব খিদে লাগছে।
- খিদে লাগছে তো খা, আমাকে কেন বলছিস....?
আমিঃ তুই একটু খাওয়ে দে প্লীজ।
- পারবো না, ,, যা তো এখান থেকে।(পাগলী আজকে খুবই রাগ করে আছে)
।।
প্লেটা টেবিলে রেখে শুয়ে পড়লাম।কেবল চোখে ঘুম ঘুম ভাব তখনি দেখি পাগলী"টা ভাতের প্লেট
হাতে নিয়ে আমাকে ডাকছে।
- এই ওঠ, নে গিল, আমি ছাড়া তো আর খাবি না...
আমিঃ তোকে ছাড়া আমি কি করে খাবো বল?
- মুখ ভেটকি দিয়ে বলে উঠলো,তোকে ছাড়া কি করে খাবো বল।
কুত্তা আর একদিন যদি বাসায় আমাকে একা ফেলে বাইরে থাকিস তোকে আমি মেরেই ফেলবো।
- আচ্ছা ঠিক আছে, দে খিদে লাগছে,
ও আমাকে তুলে খাওয়াচ্ছিল,(আসলে বউ এর হাতে খাওয়ার মজাই আলাদা)
আমিও পাগলীটাকে খাওয়ে দিলাম,তারপর দুজনে শুয়ে পড়লাম...
।।
কিছুক্ষন পর..........
- এই শুনছিস, ওঠ না একটু........কিরে শুনতে পাচ্ছিস না, কান্না ভরা কন্ঠ আমার কানে ভেসে উঠল এই কুত্তা, এই বান্দর ওঠ বলছি......
আমিঃ কিরে, কি হইছে ডাকছিস কেন?
ঘুমাতেও দিবি না নাকি?
- আমাকে একটু বুকে জড়িয়ে নিবি, আমার না খুব ভয় করছে!....(বাইরে খুব বৃষ্টি আর বজ্রপাতের শব্দ
শোনা যাচ্ছে , বজ্রপাতের শব্দ পাগলী খুব ভয় করে)
,,
পাগলীটাকে বুকে জড়িয়ে নিলাম শক্ত করে।ও আমার বুকে ছোট বাচ্চাদের মতো লুকিয়ে গেল,,,( আসলেই ওর সব কিছু ছোট বাচ্চাদের মতই)
বাচ্চাদের মত ঠোট ফুলিয়ে বলতে লাগলো,,
,,
,,
,,
- তোকে কখন থেকে ডাকছি,এতক্ষন উঠলি না কেন....?
আমিঃ ঘুমিয়ে পড়েছিলাম সোনা।
- ঘুমাবিই তো আমাকে তুই একটুওভালবাসিস না, আমার কথা তোর একটুও মনে থাকে না।আমি যেদিন
মরে যাবো,দেখবি সেদিন ঠিকই আমাকে মনে করে কাদবি!...
আমিঃ না সোনা এভাবে বলিস না,তুই ছাড়া আমি একটা মুহূর্তও ভাল থাকতে পারবো নারে।
তোর যদি কিছু হয় আমি প্রতিদিন মৃত্যু যন্ত্রনা ভোগ করবো''''"""রে।(চোখ থেকে দু ফোটা জল গড়িয়ে
পড়লো,পাগলীটার গালে)
- মাথাটা একটু উঠিয়ে, কিরে কাদছিস কেন?
আমিঃ তোকে ছাড়া আমি থাকতে পারবো নারে, প্লিজ আমাকে ছেড়ে তুই কোথাও যাস নে....
- না সোনা, তোকে ছেড়ে আমি কোথায় যাবো না।আমি তোর উপর রাগ করি ঠিক আছে,কিন্তুু আমি
তোকে অনেক ভালোবাসিরে,অনেক ভালোবাসি।
আমিঃ আমি জানি, আমার আপন মানুষ আমাকে অনেক ভালবাসে,তা এখন একটু ঘুমাও .....
- হ্যা ঘুমাচ্ছি, সারারাত জড়িয়ে ধরে থাকবি কিন্তুু, একটুও ছাড়বি না, না হলে সকালে আমি খুব কান্না করবো।
আমিঃ আচ্ছা সোনা, তোকে আমি আমার বুক থেকে কখনই আলাদা করবো না।অনেক রাত হয়েছে এখন
একটু ঘুমা!.......
- আচ্ছা, উম্মাহ্...(আমার গালে একটা চুমু দিয়ে পাগলীটা ঘুমিয়ে পড়লো)
আমি ওকে জেগে জেগে বুকে জড়িয়ে পাহারা দিচ্ছিলাম।
আমাদের ভালবাসা দেখে মনে হয় বৃষ্টিরাও আজকে অনেক হিংসে করছিলো।
হঠাৎ চোখের পাতাটা ভারি হয়েএলো,
পাগলীটার কপালে একটা চুমু দিয়ে,ওকে বুকে জড়িয়ে ঘুমিয়ে পড়লাম!................
।।
পাগলীটাকে নিয়ে ভালই কেটে যাচ্ছিল দুষ্টু মিষ্টি ভালবাসার দিন গুলো.......
কিছুদিন পরই পাগলীটা মা হবে, আর আমি হবো বাবা!!....
আজকাল ওকে একটু বাড়তি কেয়ার করা শুরু করেছি।ওকে দেখে শুনে রাখার জন্য একটা কাজের
মেয়েকেও রেখেছি।
।।
একদিন আমি বাইরে ছিলাম, হঠাৎ কাজের মেয়েটা ফোন দিয়ে বললো,
ভাইয়া ভাবির অবস্থা খুব খারাপ........
কথাটা শুনে বুকের মধ্যে কেমন জানি চিন চিন করে উঠলো।
সেদিন কিভাবে বাসায় এসেছি আমার খেয়াল নেই।
এসে দেখি, পাগলীটা শুয়ে থেকে যন্ত্রনায় কাতরাচ্ছে, আমি দৌড়ে গিয়ে আমার জানটাকে মুহূর্তেই বুকে
জড়িয়ে নিলাম............................!
।।
আমার জান"টার আজ ডেলিভারি পেইন শুরু হয়েছে,,,
আমি তাকে বুকে জড়িয়ে ধরে আছি।
খুব ছটফট করছিল আর কান্না করছিল পাগলীটা।
আমি আমার জানটার কষ্ট একদমই সহ্য করতে পারি না।
ওর সামান্য খারাপ লাগা টুকু আমার কাছে মৃত্যুের চেয়ে ভয়াবহ।
এককথাই নিজের জান নিজের দেহে আছে তা কখনোই মনে করিনা।
ওকে বিয়ে করার পর কোনো কিছুর অভাব,কষ্ট কি ওকে বুঝতে দিইনি।
কোনো চাওয়া অপূর্ন রাখিনি...সে খুব অভিমানী ছিল, অল্পতেই অভিমান করতো আর কাদতো।আমি
আমার সর্বোচ্চ চেষ্টা দিয়ে ওর কান্না থামাতাম।
কিন্তুু আজ আর ওর কষ্টের কান্না থামানোর মত কোনো উপায় জানা নেই!(চোখের পানি আটকাতে পারলাম না)
।।
দেরী না করে খুব তাড়াতাড়ি হাসপাতালে নিয়ে গেলাম!.....
সময় যতই যাচ্ছে পাগলীটার যন্ত্রনার পরিমাণ ততই বাড়ছে,চিৎকার করে কাদছিল আমার
বউ।
ওর কান্নায় আমার বুকটা ফেটে যাচ্ছিলো।
আজ একটা কথাও বলেনি আমার সাথে,কারন অসহ্য যন্ত্রনায় তার জানটা বেরিয়ে যাচ্ছিল।
আসলে মা হতে হলে একটা মেয়েকে কতটা কষ্ট আর ত্যাগ স্বীকার করতে হয় সেদিন আমি আমার জানটা"কে দেখে বুঝেছি।
।।
ডাক্তার তাকে ডেলীভারি রুমে নিয়ে যাচ্ছে,সাথে সাথে আমিও যাচ্ছিলাম।......
কিন্তুু ডাক্তার আমাকে রুমে ডুকতে দিল না।ডাক্তার"কে অনেকবার অনুরোধ করলাম,ডাক্তার আমার জানটা খুব ভিতু।আমার ওর সাথে থাকা খুব দরকার,প্লীজ আমাকে সাথে নিন।
ডাক্তার কোনো কথায় শুনলো না।এই দিকে আমার জানটা চোখ বন্ধ করে যন্ত্রনায় ছটফট করছিল।
আমাকে বাইরে রেখে ওরা আমার জানটা"কে ভেতরে নিয়ে গেলো।
যাওয়ার সময় আমার লক্ষি সোনাটা চোখ মেলে একবার আমার দিকে
তাকালো..............."কি মায়া ওর চোখে বলে বুঝাতে পারবোনা।
।।
বাইরে অপেক্ষা করছি, আল্লাহকে ডাকছি আর কাদছি!...
আধা ঘন্টা পর ডাক্তার বেরিয়ে আসলেন।
এসে বললেন;
- আপনি একটু আমার চেম্বারে আসেন..
No comments
info.kroyhouse24@gmail.com