Breaking News

গল্পঃ সিনিয়র আপুর সাথে প্রেম | ৫ম ও শেষ পর্ব



হাতে মুষ্টি করতে করতে আমার দিকে তাকিয়ে রাগি একটা লুক দিলো
আমি– ঐ দরজা লাগাও কেনো? উলটা পালটা কিছু করবা
না তো?? কে কোথায় আছো বাচাও বাচাও।
রিমি — ঠাসসস…… এখনও তোর ফাযলামি বের
হয়? খালি উলটা পালটা না আজ তোকে শেষ করে ফেলবো।
আমি– আমাকে একা পেয়ে আমার এতো বড় ক্ষতি
করো না আল্লার দোহাই লাগে। আমি সমাজে মুখ দেখাতে পারবো না।
রিমি– ঠাসসস….. তোর মুখ সমাজকে দেখাতে
হবে না। শুধু আমাকে দেখালেই চলবে।
আজতো তুই শেষ। আজ তোর ১২ টা বাজিয়েই ছাড়বো
আমি– ঐ এতো মারো কেনো? ব্যাথা লাগে না
বুঝি আমার। খালি ভালোবাসি তাই কিছু বলতেছি না otherwise বুঝায় দিতাম।
রিমি– ঠাসসস…… কি করবি তুই? এইসব করার
খেয়াল আছিলো না তোর যে তুই অসুস্থ হয়ে
যাইতে পারিস। পুরা ৬টা ঘন্টা অজ্ঞান অবস্থায় ছিলি তুই।
একদিকে ভাইয়া অসুস্থ অন্যদিকে তোর এই অবস্থা
আমি চিন্তাতে চিন্তাতে মরেই যাইতাম।


আমি– বলো কি এতো সময় অজ্ঞান ছিলাম আমি.
ভাইয়া কেমন আছে,আর আমার জন্য তোমার মরে
যাওয়ার মতো চিন্তা হয় এইবার টা ঠিক হজম হইতেছে
না। বলেই একটু পিছিয়ে গেলাম। বিশ্বাস নাই আবারো মারতে পারে।
রিমি– এইদিকে আয় তোর কানের নিচে আরও
৪/৫ টা দেই তাহলে সব কিছু হজম হয়ে যাবে। তুই
এইসব বুঝবি কিভাবে?? তুই তো বুঝবি FB তে গল্প,
কিভাবে লিখতে হয় ভালোবাসা মিশিয়ে আর
মেয়েদের কিভাবে পটাতে হয় FB তে।
আমি– আমি FB তে গল্প, লিখি এইগুলা তুমি
কিভাবে জানো? তোমার সাথে তো আমার Add নাই।
রিমি– ( sorry id name ta dilam na) ID এর কথা ভুলে গেছিস এতো তাড়াতাড়ি?
আমি– মানে,,,,ঐটা তোমার ID? এটা পুরোপুরি
cheating. তুমি fake ID দিয়ে আমার সাথে এমন
করতে পারো না। কলেজে এ আসার আগে এই
কলেজে এর একটা মেয়ের সাথে FB তে পরিচয়
হয়। একটু পটানোরও চেষ্টা করি যাতে কলেজে
এসে একটু সুবিধা পাই আর কি।


রিমি– জ্বী জনাব, আমারই ID আর আমিই সেই ID এর মেয়ে।
তুই তো তাকে গল্প লিখে লিখে তাকে
তোর গল্পের প্রেমে ফেলে দিয়েছিস।
আমি– আমার গল্পের প্রেমে পরেছে?? এটা তো
আমাকে বলে নাই। তার মানে তুমিও আমাকে ভালোবাসো।
রিমি– আমি তোকে ভালোবাসতে যাবো
কোন দু:খে। আমি তো ভালোবাসি তোর গল্পকে,
ভালোবাসার জন্য তোর পাগলামি গুলাকে।
আমি– সব বুঝেছ। নাহিদ ভাই মিথিলা আপু আমি সব
বুঝেছি। চিৎকার করে বাহিরে দাড়িয়ে থাকা নাহিদ
ভাইয়া আর মিথিলা আপুকে বললাম।


রিমি- ঠাসসস….. ঐ চিল্লাইয়া বলার কি আছে।
আমি– এই জন্যই কাছে আসতে চাইনা। খালি চড়
মারো তুমি। তা কেমনে কি হইলো বলো তো।
রিমি– তোর গল্প গুলো ভালো লাগতো।
কখনো ভালোবাসার মতো ঐরকম চিন্তা করি নাই।
তবে প্রথম তোকে class এ দেখে অবাক এর
থেকে বেশি খুশী হয়েছিলাম। তারপর তোর
ভালোবাসার জন্য পাগলামির জন্য হয়তো তোকে
ভালোবেসে ফেলছি। তবে তোকে ভালোবাসি
না আমি কারন তুই আমাকে propose করেও
(“”””””””””””) ID এর মেয়েকে propose করেছিস।
আমি– তাহলে (“””””””””) ID মেয়েকে propose করার কারনটা
শুনো। তবে এর আগে নাহিদ ভাইকে আর মিথিলা
আপুকে ভিতরে আসতে বলো।


রিমি– আচ্ছা ঠিক আছে। দরজা খুলে দেওয়ার পর ওনাদেরকে ডেকে আনলো।
রুমে এসেই নাহিদ ভাই আমার দিকে তাকিয়েই বললো-
নাহিদ– আগে জানলে হেলমেট দিয়ে যাইতাম তোমাকে অাবির ।
মিথিলা — সেইদিন হেলমেটও কাজে আসে নাই।
মনে আছে??
আমি– আমার গাল দুইটা তবলার মতো বাজাইতেছিলো।
রিমি– এইসব বাদ দিয়ে আসল কথা বল ফাযিল
ছেলে তা না হলে আবার তবলা বাজাবো
মিথিলা– কিসের আসল কথা?
আমি– নাহিদ ভাই বলে দেন (“””””””””””””””) ID মেয়েটার কথা।
নাহিদ — মাথা খারাপ?? তুমি রিমির চড় সহ্য করতে পারো তুমিই বলো।
রিমি– এতো কথা বাদ দিয়া বল তুই।
আমি– আল্লাহ রক্ষা করিও। আমি (“””””””””””””)
ID তে request দিয়েছিলাম এমনিই। কিন্তু college এ
এসে যখন তোমার সাথে ঝামেলা হওয়ার পর
নাহিদ ভাইয়ের সাহায্যে জানতে পারলাম ঐটা
তোমার ID. আর তোমার আর আমার Relation এর
পিছনে রোহান ভাইয়েরও অবদান ও পরিকল্পনা
রয়েছে। যখন জানতে পারলাম ঐটা তোমার ID তখন
তোমাকে propose করা, প্রেমের কবিতা লেখে পাঠানো
এইগুলা নাহিদ ভাই বলে দিয়েছে। কারন তুমি কবিতা
অনেক পছন্দ করো।


নাহিদ– এর মধ্যে আমাকে আবার টানতেছো
কেনো অাবির। আমার Life টা Risk এ পরে যাবে তো।
রিমি – নাহিদ তুই চুপ কর, তোর খবর পরে
নিতেছি। ঐ ফাযিল ছেলে তুই বলতে থাক।
আমি– এরপর তোমার সম্পর্কে ভালোভাবে
জেনে নিলাম মিথিলা আপুর কাছ থেকে। এরপর বাকিটা তুমি তো জানোই।
রিমি– মিথিলা তুইও আছিস ওর সাথে?
মিথিলা– আরে না মানে একটু আধটু।
রিমি– তোরা সব কয়টা ষড়যন্ত্রকারী।
তোদের সাথে কোনো কথা নাই। থাক তোরা।
এই বলে কেবিন থেকে বের হয়ে গেলো।
আমি– ঐ কথায় যাও? দাড়াও আমিও আসতেছি।
নাহিদ– অাবির তুমি অসুস্থ। এভাবে ছূটাছুটি করিও না।
আমি– ভাই এখন যদি না যাই তাহলে আরও অসুস্থ হয়ে
পরবো। আগে ভালোবাসা বাচাই তারপর না হয় নিজেকে বাঁচাবো।


মিথিলা– How romantic!!! Best of luck অাবির ।
আমিও রিমির পিছনে পিছনে গেলাম। এইটুকু
সময়ের মধ্যে হাসপাতাল থেকে বের হয়ে
হাসপাতালের মাঠের এক কর্ণারে দাড়িয়ে আছে ।
গিয়ে দেখি ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কান্না করতেছে। কি
বলবো ভেবে পাচ্ছিলাম না। এগিয়ে গিয়ে হাতটা
ধরলাম আর বললাম-


আমি– আমাকে এতো ভালোবাসো তুমি??
রিমি– কে?? ওহ তুই, একটু শান্তিতে থাকতে দিবি
না ? এখানেও চলে এসেছিস। বলতে বলতেই
হাত ছাড়িয়ে নিতে চাইলো কিন্তু পারলো না।
আমি– আমাকে এতো ভালোবাসো কেন???
রিমি– জানি না তবে অনেক ভালোবাসি।এই
বলে আমাকে এমনভাবে জড়িয়ে ধরলো মনে হয়
আমাকে হারিয়ে ফেলবে।
আমি– তাহলে এতোদিন দুরে দুরে থাকলা যে। তুমি
সিনিয়র আমি জুনিয়র এই কারনে।
রিমি– না,,অন্য কারনে। কান্না করে চোখের
পানি আর নাকের পানি আমার T-shirt ভিজিয়ে ফেলছে।


আমি– তাহলে কি কারন?
রিমি– তর ভালোবাসা সত্যি না মিথ্যা যাচাই করলাম।যদি স্বপ্ন দেখিয়ে চলে যান, সেই ভয়ে।
আমি– ও,,,,,,এই ভয় পেয়ে এভাবে দুরে থাকো
তুমি। পাগলি কপালে একটা চুমু দিয়ে বল্লাম তোমাকে ছেড়ে কোনো দিন যাবো না যতো দিন বেঁচে থাকবো তোমাকে ভালোবাসবো। ভয় পেও না তুমি।
রিমি– আমি তোমাকে ছাড়া থাকতে পারবো না।
আমি– থাকতেও হবে না। আমার তো ভয় আরেকটা কারনে।


রিমি– কি কারনে?
আমি– এতোদিন তো মাঝে মাঝে চড় খাইছি আর
এখন তো কথায় কথা চড় খাইতে হবে।
রিমি– ঐ ফাযিল ছেলে তোর ফাযলামি বন্ধ করবি
নাকি আবার তবলা বাজাবো?
আমি– এইতো আগের ফর্মে ফিরে আসছো।
এভাবেই সারাজিবন থেকো।
রিমি– হুম, এভাবেই থাকবো আর তোকে মারবো।
আমি– আমি রাজি। তবে বেশি জোরে মারবে না খুব বেথা লাগে।
রিমি– তখন চড় দিয়েছিলাম খুব ব্যাথা পেয়েছো তাই না??
আমি– হ্যা,,,এখনও দেখো লাল হয়ে আছে।
রিমি– sorry…. তবে তুমি এইরকম করলা
কেনো? যদি তোমার কিছু হয়ে যাইতো? তখন
আমি কিভাবে ঠিক থাকতাম তুমিই বলো।
আমি– আর কখনও এমন করবো না। তবে এমনটা না
হলে তো আর তোমাকে পেতাম না।
রিমি– হুম তা ঠিক,,, আচ্ছা দেখি গালে কোথায় কোথায় ব্যাথা করতেছে তোমার।
আমি– এইতো এইখানে।গাল টা দেখায় দিলাম।
রিমি– উম্মাহ!!!!! এইতো এখন ব্যাথা ভালো হয়ে
যাবে। এইভাবে pain killer লাগিয়ে দিবে গালে বুঝতেই পারি নাই।
আমি– এটা যদি ব্যাথার অসুধ হয় তাহলে আমি সবসময় এই ব্যাথা পেতে চাই।
রিমি– খুব শখ তাই না?


নাহিদ — এই মিথিলা দেখো,,, কিছুক্ষণ আগেও যারা
ভারত-পাকিস্তানের মতো যুদ্ধ করতেছিল এখন তারা
পুরাই Love Birds হয়ে গেছে। একে অপরের
সাথে মিশে আছে। আচমকাই নাহিদ ভাই র মিথিলা
আপু চলে আসলো।
নাহিদ — হুম,, তাই তো দেখতেছি। How romantic!!!!
Love couple. কিরে রিমি তুই নাকি কখনো
প্রেম করবি না তা এখন কি করতেছিস?
রিমি– তোরা???? তোরা কখন আসলি।এই
বলেই দৌড়ে চলে গেলো হাসপাতালের ভিতরে।
আমি– না মানে আপনারা এখানে যে। কিছু হয়েছে নাকি?
নাহিদ– হইছে তো অনেক কিছুই। কিছুটা এখানে
আর কিছুটা ওখানে।


আমি– মানে কি???
মিথিলা– তুমি তো রোগীর জন্য এসে নিজেই
রোগী হয়ে গেছো। এখন তোমাকে
খুজতে গিয়ে হাসপাতালের ডাক্তার আর নার্সরা মিলে
রোগী না হয়ে যায়।
নাহিদ — আরে মিয়া উপরে চলো। ডাক্তার
তোমাকে খুজতেছে discharge এর জন্য।
আমি– ওহ!!! চলেন যাই।
এরপর হাসপাতাল থেকে discharge নিয়ে বাসায়
ফিরে আসলাম আর সব কিছু ভাবতে লাগলাম যে এসব
স্বপ্ন নয়তো।


শরীর খারাপ থাকায় বেশ কিছুদিন কলেজে এ গেলাম
না। তবে রিমির সাথে নিয়মিত ফোনে, FB তে
কথা চলতে থাকলো। ৪/৫ দিন পর কলেজে এ
গেলাম আর class এ ঢুকতেই সবাই আমার দিকে
এমনভাবে তাকালো যেনো আমি ভিন্নগ্রহের
মানুষ। এর কারনটা হলো যে আমার আর রিমির
ব্যাপারটা campus এর সবার জানা হয়ে গেছে। আমি
আর কি করবো যা হওয়ার হয়েই গেছে পরিস্থিতির
সাথে মানিয়েই চলতে হবে। রিমির কাছে
গেলাম আর ওর সামনে গিয়ে দাড়াতেই-
রিমি– ঠাসসস……. কখন আসছিস কলেজে এ আর
এখন আমার সামনে আসলি? চড় ছাড়া কি কোনো
কথা বলা যায় না নাকি,,আমার বুঝে আসে না।
মিথিলা- অাবির তোমাকে স্বয়ং আল্লাহ ছাড়া আর কেউ
বাচাইতে পারবে না এই চড়ের হাত থেকে।
আমি– ঠিক বলেছেন মিথিলা আপু। আমার কি দোষ?
class এ ঢুকতেই sir এসে পরলো। তাই দেরি
হয়ে গেলো।


রিমি– তা আগে বলবা না। খামখা চড় দিলাম। ব্যাথা
পাইছো খুব তাই না। আচ্ছা পরে অসুধ দিয়ে দিবো
নি। এই মেয়ে কখন আমার সিনিয়র আপু আর কখন আমার
প্রেমিকা বুঝতে পারি না।
আমি– তোমার class আছে এখন??
রিমি– না। কিন্তু কেনো।
আমি– এমনিই। চলো আমার সাথে।
রিমি– আচ্ছা ঠিক আছে। মিথিলা এখন যাই পরে কথা হবে।
মিথিলা — আচ্ছা ঠিক আছে।
আমি– যাচ্ছি তো সাথে কিন্তু please আর মারিও না।
এখন কলেজে এ আমার আলাদা একটা সম্মান আছে তো।


রিমি– সম্মান??? কিসের আর কেনো?
আমি– সিনিয়র আপুর এর সাথে প্রেম করি তো তাই আর
কি,,,সবাই একটু আমাকে সম্মান দিয়ে চলে।
রিমি– ওরে আমার প্রেমিক রে। আমি
তোকে ভালোবাসি না। আমি তোর পাগলামি গুলাকে ভালোবাসি।
আমি– আমার ঐটুকু হলেই চলবে। আর everything is fear in love & war.
রিমি– এইখানে war এর কথা আসলো কথা থেকে। 

আর ভুলে যাসনা আমি তোর সিনিয়র আপু।
আমি–যদি বলো সবটুকু ভালোবাসা দিবো তোমারই
কাছে,,
যদি বলো সবকিছু মিশিয়ে তোমায় লুকাবো মিছে।
আমি কিছু স্বপ্ন এনে রাখবো তোমার মন দুয়ারে,,
চাইলে তুমি নিজের মনে করে সব স্বপ্ন দিবে
উড়িয়ে।
আমি জানি তুমি অভিমানি থাকো চুপ রেগে গিয়ে,,
একটু খানি কাছে নিয়ো ভালোবাসায় রেখো
মুড়িতে।
তুমি আমায় ফিরিয়ে দিলে তবুও বারবার ফিরে আসি,
জানি শুধু এটাই.সিনিয়র আপু তাতে কি তবুও ভালোবাসি।
রিমি– খুব ভালোবাসি তোমাকে,, বড্ড
ভালোবাসি। আর তোমার এই কবিতাই তো আমাদের
ভালোবাসার ছন্দ কথা।
আমি– জানি তো,,,,এভাবেই ভালোবেসো আর
আমার সিনিয়র আপু হয়েই থেকো।
এভাবেই আমাদের ভালোবাসার শুরু। এই সিনিয়র আপু এই
প্রেমিকা দুইভাবেই ভালোবাসার প্রকাশ। আমার
ফাযলামি আর তার হাত ফসকানো চড় দুইটাই একে
অপরের সাথে সংযুক্ত। “এভাবেই শুরু হলো শেষ
জানি না কোথায়,, জানি শুধু আমার আর সে মিলে বাধা
রয়েছি ভালোবাসার সুতোয়।
কষ্ট করে গল্পটা পড়ার জন্য সবাইকে ধন্যবাদ। কেমন লাগলো গল্পটা জানাতে ভুলবেন না।

** সমাপ্ত **

 

No comments

info.kroyhouse24@gmail.com