গল্পঃ-বিশ্বাসঘাতকা.
সকাল বেলা মামুনের কল পেয়ে ঘুম ভাঙল।
ইচ্ছে ছিল না কল টা রিসিভ করার,কারণ ঠিক এই সময় ঘুম টা ই বেশি গুরুত্বপূর্ন মনে হচ্ছিলো।
কিন্তু মামুন তো কল করেই যাচ্ছিল।
তাই বাধ্য হয়েই কল টা রিসিভ করলাম।
কল রিসিভ করেই দেখি মামুন আমার বাসায় এসে হাজির।
আমি বললাম,
কিরে এত সকালে তুই।
মামুন বলল,
কিরে কাকা এখন ও তোর কাছে সকাল মনে হয়?
ঘড়িতে তাকিয়ে দেখ ৯ টা বাজে। আমি বললাম,
ঠিক আছে রে বাবা।
এখন বল কি বলবি?
কি বলবো মানে?
তুই কি ভুলে গেছিস,
আজ যে ঈশার সাথে দেখা করতে যাওয়ার কথা?
ওওও,
মনে ই নাই।
কিন্তু আমি কেন দেখা করতে যাবো??
আমি তো ঈশা কে পছন্দই করিনা।আর ওর সাথে তো আমার কোন সম্পর্কই নাই।তবে কেন যাবো দেখা করতে??
কাকা মানে কি??ঈশা দেখতে কত সুন্দর। আর তোরে কত পছন্দ করে।
আমি বললাম,জানি আমি।আরে আমারে তো এফ বি তে ম্যাসেজ করে করে জ্বালিয়ে মারে।
মামুন বলল,তুই ই তো আইডি টা খুলে দিয়েছিস।এফ বি চালানো শিখিয়েছিস।
হুমমম।আমি কি আগে জানতাম নাকি শালী আমাকে এমন ম্যাসেজ করে জ্বালাবে??
মামুন বলল,কাকা তুই কি সত্যিই ঈশা কে পছন্দ করিস না??
আমি একটু চুপ করে রইলাম।আসলে আমি ঈশা কে পছন্দ করি।
কিন্তু আপাতত সম্পর্কে জড়াতে চাচ্ছিলাম না।তাছাড়া ঈশা ও ছোট মেয়ে।তাই ভাবতেছিলাম,ঈশা ও একটু বড় হোক,আমাকে যেহেতু অনেক পছন্দ করে,সেহেতু পরে ও প্রেম করা যাবে।
মামুনের ডাকে বাস্তবে ফিরলাম।
কিরে কাকা তোদের বাড়ি এসে কি শুধু শুধু বসে আছি নাকি?
চল তো ঈশার সাথে দেখা করে আসি।
আমি ও পরে রাজি হয়ে গেলাম।
আগে পরিচয়টা দিয়ে নেই।আমি রিপন।পড়াশোনা করিনা।একেবারে যে করিনি তা না।আগে করতাম।এখন করিনা।আসলে পড়াশোনা করতে ভালো লাগেনা।আর যার সাথে কথা হচ্ছিলো সে হল আমার প্রাণের দোস্ত মামুন।
তবে সম্পর্কে ও আমার ভাতিজা হয়।এক সাথে থাকতাম দিনের বেশির ভাগ সময়।খুব ফ্রি ছিলাম দুজন।আমি সব কিছুই শেয়ার করতাম মামুনের সাথে।
–
পরে মামুনের চাপাচাপিতে
দেখা করলাম ঈশার সাথে।আমি এখনও ঈশা কে ভালোবাসি বললাম না,কিন্তু মামুন বার বার ঈশা কে কাকি কাকি বলে ডাকতেছিল আমার বউ হিসেবে।তাছাড়া আমাদের সম্পর্কে মামুনের ইচ্ছে টা ই ছিল বেশি।
ঈশা যখন ই এফ বিতে আমাকে ম্যাসেজ করতো তখন ই আমি মামুন কে দিতাম ওর সাথে চ্যাটিং করতে।মামুন ও আমাকে যা লিখতো তাই পড়ে শুনাতো।ঈশা তো মনে করতো আমি ই কথা বলছি।
মাঝে মাঝে অন্য বন্ধুদের দিয়েও চ্যাটিং করাতাম।আমার চ্যাটিং করতে কখনই ভালো লাগতো না।কিন্তু ঈশা সারাক্ষন ই ম্যাসেজ করতো।
–
পরে ভেবে দেখলাম ঈশা যেহেতু আমার জন্য এত পাগল সেহেতু এখন সম্পর্ক টা চালিয়ে যাই পরে কোন ভালো কাজে ডুকে আমার পরিবার কে রাজি করে ঈশা কে বিয়ে করা যাবে।তাছাড়া মামুন ও ঈশার সাথে প্রেম করতে এত জোড় করছে।মানুষ নাকি বন্ধুর জন্য সব করে।আমি না হয় নিজের পছন্দের মেয়ের সাথে প্রেম ই করলাম।
তাই এখন আমি ই চ্যাটিং করি।অনেক ভালোবাসি আর আমাদের সম্পর্কটা ও অনেক ভালো।ফোনে ও এফবিতে অনেক কথা হয়।দেখা ও হয় অনেক।তবে এখন ও বেশির ভাগ সময় মামুন কে সাথে নিয়ে যাই।ভালোই চলছিল আমাদের।
–
হঠাৎ এর মধ্যেই কেন জানি ঈশা পাল্টে যাচ্ছিলো।
কেমন জানি করতো।আগের মতো কথা বলতো না।যে মেয়ে কিনা এক দিন ও কথা না বলে থাকতে পারতো না, সে কেন জানি দুই-তিন ঠিকই থেকে ফেলছিল।
তাও আমি কল ম্যাসেজ না করলে ও করতো না।
তাই আমি আগ্রহ করে দেখা করলাম।আমার জোড়াজুড়িতেই ঈশা দেখা করতে রাজি হলো।
দেখার পর কিছু টা ভালোর দিকে ছিলো।
পরের দিন আমার এক বন্ধুর বোনের বিয়েতে গেলাম।ঈশা ও কোন সূএ ধরে জানি বিয়েতে আসলো।আর আমাদের সম্পর্কের কথা আমার বন্ধু মহলের সবাই -ই জানতো।
আমার মনটা তো খুব ই ভালো।ভালোবাসার মানুষ সারাক্ষণ কাছাকাছি থাকবে।
হঠাৎ ই এক বন্ধু এসে আমার হাতে ঈশার ফোন টা দিয়ে বলল,দেখ রিপন messenger এ ডুকে দেখ।
আমি বললাম, কি দেখবো?
ইমন বলল,দেখলেই বুঝবি।
আমার তো মাথা ই ঘুড়ছে।
তৎক্ষণাত ফোন টা হাতে নিয়ে ঈশার messenger এ ডুকে দেখি ঈশার আর মামুনের মধ্যে গভীর প্রেম চলছে। তাও প্রায় তিন-চার মাস যাবত।
মাথা টা সত্যিই ঘুড়ছিল।কি দেখছি আমি??কাকে দোষারোপ করবো??ঈশা কে নাকি মামুন কে??নাকি নিজের ভাগ্য কে??পরে চ্যাটিং গুলো ভালো করে পরে দেখি মামুন বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন ভাবে আমাকে ঈশার চোখে খারাপ প্রমান করেছে।না না রকম বদনাম বলেছে আমার।অনেক বুঝিয়ে ওর চোখে আমাকে খারাপ প্রমান করেছে।
এইদিকে ঈশা ও ছোট মানুষ। মাএ ক্লাস 6 এ পড়ে।যা বুঝিয়েছে তাই বুঝেছে।
তবে ঈশার যে দোষ নাই তাও না।ও কেমন ভালোবাসতো আমায়?অন্যের মুখের কথা শুনে বিশ্বাস করে আমাকে ঠকাচ্ছিল?? ভাগ্যিস ইমন ফোন টা নিয়েছিল বক্সে এ গান বাজাতে।আর তখনই মামুন এর ম্যাসেজ আসে।তাই ইমন দৌড়ে ফোন টা আমার কাছে নিয়ে আসে।না হলে তো আমাকে অন্ধকারে রেখেই ওরা গোপন পেম চালিয়ে যেতো।
ধিক্কার দিতে ইচ্ছে হচ্ছিল নিজেকে।কেমন ভালোবাসলাম,আর কেমন প্রাণের দোস্ত আমার…যে কিনা দুনিয়াতে এত মেয়ে থাকতে আমার প্রেমিকার সাথে প্রেম করে।
মামুন কি করে এই কাজ টা করতে পারলো??যেখানে ও নিজেই জোড় করছিলো আমাকে ঈশার সাথে প্রেম করতে??
কষ্টে বুকটা ফেটে যাচ্ছিলো।হাত পা গুলো কাপঁছিল। এত বড় বিশ্বাসঘাতকতা??কিভাবে মেনে নেবো আমি??
দুনিয়াতে আর কাকে বিশ্বাস করবো।ইচ্ছে হচ্ছিলো মামুন কে কল করে বলতে,,,ও চাইলো তো আমি নিজেই ঈশা কে ছেড়ে দিতাম।কিন্তু ও আমার আড়ালে কেন আমাকে ঈশার চোখে খারাপ প্রমান করে। আমার নামে মিথ্যা বলে ওর সাথে প্রেম টা করলো??
কিছুতেই হিসেব মেলাতে পারছিলাম না।
আমি কি এতটাই বোকা?ওরা আমাকে নিয়ে খেললো,আর আমি বুঝতেই পারলাম না??
সাথে সাথে ঈশার ফোন টা ইমনের হাতে দিয়ে বাসায় চলে আসলাম।পরে সব বন্ধুরা ইমনের দ্বারা ব্যাপারটা যেনে গেলো।
যার বোনের বিয়ে, সে বিয়েতে যাওয়ার জন্য অনেক কল ও করলো।কিন্তু আমি যাইনি।কারণ আমি আর কোন মতেই ওই বিশ্বাসঘাতকের মুখ টা দেখতে চাচ্ছিলাম না।
গা জ্বলছিল আমার।
মনটাই ভেঙে গেছে।
বিশ্বাস শব্দটা থেকেই বিশ্বাস উঠে গেছে।
সেই ছোটকাল থেকেই একসাথে বড় হয়েছি আমি আর মামুন।পরিবারের শত বারন সত্বেও ওর সাথেই মিশেছি।সেই বন্ধু কিনা একটা মেয়ের জন্য এত বড় গেইম খেলল আমার সাথে??
আরে চাইলে এমন হাজার টা প্রেম করতে পারি,কিন্তু মন থেকে ভালো তো আর সবাই কে বাসতে পারবোনা।
সেই ভালো শুধু ঈশাকেই বেসেছি।সাথে সাথে দুইটারেই ব্লক দিয়ে দিলাম।নিজেকে কিছুতেই বুঝাতে পারছিলাম না।তাই ঈশাকে কল করে ফেললাম।ঈশাকে বললাম,তোমার যদি আমার বন্ধুটাকে এতই পছন্দ,তবে আমার সাথে কেন প্রেম করলা??আর আমার সাথে প্রেম করার পরেও যদি ওরে আমার চেয়ে বেশি ভালো লেগে গেছে, তবে আমাকে কেন বলো নি??একটা বার বলেই দেখতে।আমি না হয় তোমাদের সুখের জন্য, আমার সুখ টাকে বিসর্জন দিতাম।তা ও তো নিজের মনটাকে মানাতে পারতাম।এখন তো দুই কুলের কারো বেঈমানী টা রে ই মেনে নিতে পারছিনা।পরে ঈশা অনেক কান্না করলো।বলল,মামুন নাকি আমার নামে ওরে কি সব ওলটা পালটা বলছে। আমি একটু হাসি দিয়ে বললাম,তুমি যে আমাকে এত ভালোবাসো??তবে তুমি কেন যাচাই না করে মামুনের কথা বিশ্বাস করেছো??আবারো ওর সাথে প্রেম শুরু করে দিয়েছো।আর আমার সাথে ও প্রেম চালাচ্ছো।তুমি কি ভেবে দেখছো,তুমি কতটা বুদ্ধিমাতি??আরে আমি তো ভাবছিলাম,ছোট মেয়ে কিছুই বুঝোনা,নিজের মনের মতো করে গড়ে নেবো।এখন দেখি আমাকে নিয়েই খেলতে শুরু করে দিয়েছো।ভাগ্য ভালো আজ ইমন সব দেখে ফেলেছে।না হলে তো দিনের পর দিন আমাকে দিয়ে স্বপ্ন দেখিয়ে তা এক নিমিষে ভেঙে দিতে।কথা গুলো বলেই কল কেটে দিলাম।ঈশার মন ভুলানো কান্নাটা আজ কেন যানি হৃদয় টা ছুঁয়ে দিতে পারেনি।নতুন করে আর বেঈমান টা কে বিশ্বাস করার সাহস পাইনি।তবে ততক্ষনে আমি খুব কাদঁতেছিলাম।পরে ঈশার পিক,নম্বর সব ডিলিট করে ফেললাম।যাতে করে কোন স্মৃতিই পিছু টানতে না পারে।
–
একবার ইচ্ছে হচ্ছিলো মামুন বেঈমান টারে আচ্ছা মতো শাস্তি দেই।পরে ভেবে দেখলাম,ওর সাথে লড়ে নিজেকে আর ছোট করার দরকার নেই।মাফ করে দেই।
তবে এখন আর আমাদের বন্ধু মহলের কেউ মামুন কে পছন্দ করেনা।ওর নাম টা ও নেয় না।অনেকেই নানা রকম ভাবে আমাকে শান্তনা দিয়েছে।তবে শান্তনাই যদি সব কষ্ট ভুলিয়ে দিতো,দুনিয়াতে কউ একই কষ্ট নিয়ে দিনের পর দিন কষ্ট পেতো না।
কিন্তু ওরা বন্ধু হয়ে তো ওদের দায়িত্ব পালন করবেই।
এখন আছি নিজের মতো।কাউকে ভালোবাসার মতো মিথ্যা সাহস আর দেখাই না।
.
...সমাপ্ত...
ইচ্ছে ছিল না কল টা রিসিভ করার,কারণ ঠিক এই সময় ঘুম টা ই বেশি গুরুত্বপূর্ন মনে হচ্ছিলো।
কিন্তু মামুন তো কল করেই যাচ্ছিল।
তাই বাধ্য হয়েই কল টা রিসিভ করলাম।
কল রিসিভ করেই দেখি মামুন আমার বাসায় এসে হাজির।
আমি বললাম,
কিরে এত সকালে তুই।
মামুন বলল,
কিরে কাকা এখন ও তোর কাছে সকাল মনে হয়?
ঘড়িতে তাকিয়ে দেখ ৯ টা বাজে। আমি বললাম,
ঠিক আছে রে বাবা।
এখন বল কি বলবি?
কি বলবো মানে?
তুই কি ভুলে গেছিস,
আজ যে ঈশার সাথে দেখা করতে যাওয়ার কথা?
ওওও,
মনে ই নাই।
কিন্তু আমি কেন দেখা করতে যাবো??
আমি তো ঈশা কে পছন্দই করিনা।আর ওর সাথে তো আমার কোন সম্পর্কই নাই।তবে কেন যাবো দেখা করতে??
কাকা মানে কি??ঈশা দেখতে কত সুন্দর। আর তোরে কত পছন্দ করে।
আমি বললাম,জানি আমি।আরে আমারে তো এফ বি তে ম্যাসেজ করে করে জ্বালিয়ে মারে।
মামুন বলল,তুই ই তো আইডি টা খুলে দিয়েছিস।এফ বি চালানো শিখিয়েছিস।
হুমমম।আমি কি আগে জানতাম নাকি শালী আমাকে এমন ম্যাসেজ করে জ্বালাবে??
মামুন বলল,কাকা তুই কি সত্যিই ঈশা কে পছন্দ করিস না??
আমি একটু চুপ করে রইলাম।আসলে আমি ঈশা কে পছন্দ করি।
কিন্তু আপাতত সম্পর্কে জড়াতে চাচ্ছিলাম না।তাছাড়া ঈশা ও ছোট মেয়ে।তাই ভাবতেছিলাম,ঈশা ও একটু বড় হোক,আমাকে যেহেতু অনেক পছন্দ করে,সেহেতু পরে ও প্রেম করা যাবে।
মামুনের ডাকে বাস্তবে ফিরলাম।
কিরে কাকা তোদের বাড়ি এসে কি শুধু শুধু বসে আছি নাকি?
চল তো ঈশার সাথে দেখা করে আসি।
আমি ও পরে রাজি হয়ে গেলাম।
আগে পরিচয়টা দিয়ে নেই।আমি রিপন।পড়াশোনা করিনা।একেবারে যে করিনি তা না।আগে করতাম।এখন করিনা।আসলে পড়াশোনা করতে ভালো লাগেনা।আর যার সাথে কথা হচ্ছিলো সে হল আমার প্রাণের দোস্ত মামুন।
তবে সম্পর্কে ও আমার ভাতিজা হয়।এক সাথে থাকতাম দিনের বেশির ভাগ সময়।খুব ফ্রি ছিলাম দুজন।আমি সব কিছুই শেয়ার করতাম মামুনের সাথে।
–
পরে মামুনের চাপাচাপিতে
দেখা করলাম ঈশার সাথে।আমি এখনও ঈশা কে ভালোবাসি বললাম না,কিন্তু মামুন বার বার ঈশা কে কাকি কাকি বলে ডাকতেছিল আমার বউ হিসেবে।তাছাড়া আমাদের সম্পর্কে মামুনের ইচ্ছে টা ই ছিল বেশি।
ঈশা যখন ই এফ বিতে আমাকে ম্যাসেজ করতো তখন ই আমি মামুন কে দিতাম ওর সাথে চ্যাটিং করতে।মামুন ও আমাকে যা লিখতো তাই পড়ে শুনাতো।ঈশা তো মনে করতো আমি ই কথা বলছি।
মাঝে মাঝে অন্য বন্ধুদের দিয়েও চ্যাটিং করাতাম।আমার চ্যাটিং করতে কখনই ভালো লাগতো না।কিন্তু ঈশা সারাক্ষন ই ম্যাসেজ করতো।
–
পরে ভেবে দেখলাম ঈশা যেহেতু আমার জন্য এত পাগল সেহেতু এখন সম্পর্ক টা চালিয়ে যাই পরে কোন ভালো কাজে ডুকে আমার পরিবার কে রাজি করে ঈশা কে বিয়ে করা যাবে।তাছাড়া মামুন ও ঈশার সাথে প্রেম করতে এত জোড় করছে।মানুষ নাকি বন্ধুর জন্য সব করে।আমি না হয় নিজের পছন্দের মেয়ের সাথে প্রেম ই করলাম।
তাই এখন আমি ই চ্যাটিং করি।অনেক ভালোবাসি আর আমাদের সম্পর্কটা ও অনেক ভালো।ফোনে ও এফবিতে অনেক কথা হয়।দেখা ও হয় অনেক।তবে এখন ও বেশির ভাগ সময় মামুন কে সাথে নিয়ে যাই।ভালোই চলছিল আমাদের।
–
হঠাৎ এর মধ্যেই কেন জানি ঈশা পাল্টে যাচ্ছিলো।
কেমন জানি করতো।আগের মতো কথা বলতো না।যে মেয়ে কিনা এক দিন ও কথা না বলে থাকতে পারতো না, সে কেন জানি দুই-তিন ঠিকই থেকে ফেলছিল।
তাও আমি কল ম্যাসেজ না করলে ও করতো না।
তাই আমি আগ্রহ করে দেখা করলাম।আমার জোড়াজুড়িতেই ঈশা দেখা করতে রাজি হলো।
দেখার পর কিছু টা ভালোর দিকে ছিলো।
পরের দিন আমার এক বন্ধুর বোনের বিয়েতে গেলাম।ঈশা ও কোন সূএ ধরে জানি বিয়েতে আসলো।আর আমাদের সম্পর্কের কথা আমার বন্ধু মহলের সবাই -ই জানতো।
আমার মনটা তো খুব ই ভালো।ভালোবাসার মানুষ সারাক্ষণ কাছাকাছি থাকবে।
হঠাৎ ই এক বন্ধু এসে আমার হাতে ঈশার ফোন টা দিয়ে বলল,দেখ রিপন messenger এ ডুকে দেখ।
আমি বললাম, কি দেখবো?
ইমন বলল,দেখলেই বুঝবি।
আমার তো মাথা ই ঘুড়ছে।
তৎক্ষণাত ফোন টা হাতে নিয়ে ঈশার messenger এ ডুকে দেখি ঈশার আর মামুনের মধ্যে গভীর প্রেম চলছে। তাও প্রায় তিন-চার মাস যাবত।
মাথা টা সত্যিই ঘুড়ছিল।কি দেখছি আমি??কাকে দোষারোপ করবো??ঈশা কে নাকি মামুন কে??নাকি নিজের ভাগ্য কে??পরে চ্যাটিং গুলো ভালো করে পরে দেখি মামুন বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন ভাবে আমাকে ঈশার চোখে খারাপ প্রমান করেছে।না না রকম বদনাম বলেছে আমার।অনেক বুঝিয়ে ওর চোখে আমাকে খারাপ প্রমান করেছে।
এইদিকে ঈশা ও ছোট মানুষ। মাএ ক্লাস 6 এ পড়ে।যা বুঝিয়েছে তাই বুঝেছে।
তবে ঈশার যে দোষ নাই তাও না।ও কেমন ভালোবাসতো আমায়?অন্যের মুখের কথা শুনে বিশ্বাস করে আমাকে ঠকাচ্ছিল?? ভাগ্যিস ইমন ফোন টা নিয়েছিল বক্সে এ গান বাজাতে।আর তখনই মামুন এর ম্যাসেজ আসে।তাই ইমন দৌড়ে ফোন টা আমার কাছে নিয়ে আসে।না হলে তো আমাকে অন্ধকারে রেখেই ওরা গোপন পেম চালিয়ে যেতো।
ধিক্কার দিতে ইচ্ছে হচ্ছিল নিজেকে।কেমন ভালোবাসলাম,আর কেমন প্রাণের দোস্ত আমার…যে কিনা দুনিয়াতে এত মেয়ে থাকতে আমার প্রেমিকার সাথে প্রেম করে।
মামুন কি করে এই কাজ টা করতে পারলো??যেখানে ও নিজেই জোড় করছিলো আমাকে ঈশার সাথে প্রেম করতে??
কষ্টে বুকটা ফেটে যাচ্ছিলো।হাত পা গুলো কাপঁছিল। এত বড় বিশ্বাসঘাতকতা??কিভাবে মেনে নেবো আমি??
দুনিয়াতে আর কাকে বিশ্বাস করবো।ইচ্ছে হচ্ছিলো মামুন কে কল করে বলতে,,,ও চাইলো তো আমি নিজেই ঈশা কে ছেড়ে দিতাম।কিন্তু ও আমার আড়ালে কেন আমাকে ঈশার চোখে খারাপ প্রমান করে। আমার নামে মিথ্যা বলে ওর সাথে প্রেম টা করলো??
কিছুতেই হিসেব মেলাতে পারছিলাম না।
আমি কি এতটাই বোকা?ওরা আমাকে নিয়ে খেললো,আর আমি বুঝতেই পারলাম না??
সাথে সাথে ঈশার ফোন টা ইমনের হাতে দিয়ে বাসায় চলে আসলাম।পরে সব বন্ধুরা ইমনের দ্বারা ব্যাপারটা যেনে গেলো।
যার বোনের বিয়ে, সে বিয়েতে যাওয়ার জন্য অনেক কল ও করলো।কিন্তু আমি যাইনি।কারণ আমি আর কোন মতেই ওই বিশ্বাসঘাতকের মুখ টা দেখতে চাচ্ছিলাম না।
গা জ্বলছিল আমার।
মনটাই ভেঙে গেছে।
বিশ্বাস শব্দটা থেকেই বিশ্বাস উঠে গেছে।
সেই ছোটকাল থেকেই একসাথে বড় হয়েছি আমি আর মামুন।পরিবারের শত বারন সত্বেও ওর সাথেই মিশেছি।সেই বন্ধু কিনা একটা মেয়ের জন্য এত বড় গেইম খেলল আমার সাথে??
আরে চাইলে এমন হাজার টা প্রেম করতে পারি,কিন্তু মন থেকে ভালো তো আর সবাই কে বাসতে পারবোনা।
সেই ভালো শুধু ঈশাকেই বেসেছি।সাথে সাথে দুইটারেই ব্লক দিয়ে দিলাম।নিজেকে কিছুতেই বুঝাতে পারছিলাম না।তাই ঈশাকে কল করে ফেললাম।ঈশাকে বললাম,তোমার যদি আমার বন্ধুটাকে এতই পছন্দ,তবে আমার সাথে কেন প্রেম করলা??আর আমার সাথে প্রেম করার পরেও যদি ওরে আমার চেয়ে বেশি ভালো লেগে গেছে, তবে আমাকে কেন বলো নি??একটা বার বলেই দেখতে।আমি না হয় তোমাদের সুখের জন্য, আমার সুখ টাকে বিসর্জন দিতাম।তা ও তো নিজের মনটাকে মানাতে পারতাম।এখন তো দুই কুলের কারো বেঈমানী টা রে ই মেনে নিতে পারছিনা।পরে ঈশা অনেক কান্না করলো।বলল,মামুন নাকি আমার নামে ওরে কি সব ওলটা পালটা বলছে। আমি একটু হাসি দিয়ে বললাম,তুমি যে আমাকে এত ভালোবাসো??তবে তুমি কেন যাচাই না করে মামুনের কথা বিশ্বাস করেছো??আবারো ওর সাথে প্রেম শুরু করে দিয়েছো।আর আমার সাথে ও প্রেম চালাচ্ছো।তুমি কি ভেবে দেখছো,তুমি কতটা বুদ্ধিমাতি??আরে আমি তো ভাবছিলাম,ছোট মেয়ে কিছুই বুঝোনা,নিজের মনের মতো করে গড়ে নেবো।এখন দেখি আমাকে নিয়েই খেলতে শুরু করে দিয়েছো।ভাগ্য ভালো আজ ইমন সব দেখে ফেলেছে।না হলে তো দিনের পর দিন আমাকে দিয়ে স্বপ্ন দেখিয়ে তা এক নিমিষে ভেঙে দিতে।কথা গুলো বলেই কল কেটে দিলাম।ঈশার মন ভুলানো কান্নাটা আজ কেন যানি হৃদয় টা ছুঁয়ে দিতে পারেনি।নতুন করে আর বেঈমান টা কে বিশ্বাস করার সাহস পাইনি।তবে ততক্ষনে আমি খুব কাদঁতেছিলাম।পরে ঈশার পিক,নম্বর সব ডিলিট করে ফেললাম।যাতে করে কোন স্মৃতিই পিছু টানতে না পারে।
–
একবার ইচ্ছে হচ্ছিলো মামুন বেঈমান টারে আচ্ছা মতো শাস্তি দেই।পরে ভেবে দেখলাম,ওর সাথে লড়ে নিজেকে আর ছোট করার দরকার নেই।মাফ করে দেই।
তবে এখন আর আমাদের বন্ধু মহলের কেউ মামুন কে পছন্দ করেনা।ওর নাম টা ও নেয় না।অনেকেই নানা রকম ভাবে আমাকে শান্তনা দিয়েছে।তবে শান্তনাই যদি সব কষ্ট ভুলিয়ে দিতো,দুনিয়াতে কউ একই কষ্ট নিয়ে দিনের পর দিন কষ্ট পেতো না।
কিন্তু ওরা বন্ধু হয়ে তো ওদের দায়িত্ব পালন করবেই।
এখন আছি নিজের মতো।কাউকে ভালোবাসার মতো মিথ্যা সাহস আর দেখাই না।
.
...সমাপ্ত...
No comments
info.kroyhouse24@gmail.com