গল্পঃ সাইকো কিলার | ২য় এবং অন্তিম পর্ব
জেবিনের মৃত্যুতে জারা অনেক ভেঙ্গে পড়ে। ভেঙ্গে পড়াটাই স্বাভাবিক জেবিন যে শুধুই তার ছোট বোন ছিলো তা না,সাথে সবচেয়ে ভালো বন্ধু,সবচেয়ে কাছের মানুষ এবং সবচেয়ে আদরের ব্যক্তি ছিলো। যে বোনটা তার পুরা কলিজাটা জুড়ে ছিলো আজ তাকেই সে হারিয়ে ফেলেছে। জেবিনের সাথে সাথে শরীরের ভেতর থেকে কলিজাটাও যেন উধাও হয়ে গেছে। জেবিনের শূণ্যতায় বুকের ভেতরটাও যেন চিন চিন করে ব্যাথা করে। চারিদিক থেকে আপু আপু ডাকটা এখনো তার কানে ভেসে আসে। রুমের ভিতরে গেলেই বুকটা হাহাকার করে উঠে। এই রুমেই তো জেবিন জারার সাথে সব সময় হাসি তামাশা করতো,বিভিন্ন জিনিস পত্র নিয়ে জারার সাথে ঝগড়া করতো এবং রাতে জারাকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে ঘুমিয়ে যেত। এখন জারা রুমে ঠিকই আছে কিন্তু কেউ আর তার সাথে হাসাহাসি করে না,কেউ আর তার সাথে জিনিসপত্র নিয়ে কাড়াকাড়ি করে না। কেউ আর আপু ভয় পাচ্ছি বলে জড়িয়ে ধরে না। শুধু একটা মানুষ না থাকায় শূণ্যতা যেন চারিদিক থেকে জারাকে গ্রাস করে ধরেছে। বোনের এমন অপমৃত্যু স্বপ্নেও ভাবেনি সে। কোথা থেকে কি হয়ে গেলো ভাবতেই অঝোরে কেঁদে ফেলে সে। বোনের কথা মনে হলেই দু চোঁখ পানির বন্যায় ভেসে যায়। কানে শুধু ভাসতে থাকে আপু,বাঁচাও আমাকে। আমি বাঁচতে চাই।
.
জারার এমন অবস্থায় জিসানই শুধু তার পাশে রয়েছে। যতটা সম্ভব পারে সে জারাকে শান্তনা দেয়ার চেষ্টা করে। কিন্তু শান্তনা দিয়েই বা কি লাভ? বোন তো আর ফিরে আসবে না। জিসান জারার মনের অবস্থাটা বুঝতে পেরেছে,তাই সব সময় তাকে হাসানোর চেষ্টা করে। মন ভাল করার নানা উপায় খুঁজে বের করে জারার সামনে এসে সেগুলা একের পর এক ট্রাই করতে থাকে। শত কষ্টের মাঝেও জিসানের এমন পাগলামী দেখে সে হেসে ফেলে। জারার বাবা মায়ের মনের অবস্থাও খুব একটা ভাল নয়। মেয়ে হারানোর বেদনায় তারাও অনেক ভেঙ্গে পড়েছে। দুটাই তো দুই চোঁখের নয়নের মণি ছিলো তাদের। একটা মণি হারিয়ে তারাও প্রায় অন্ধের মতো জীবন যাপন করছে। পরিবারের ছোট হওয়ায় একটা বিশেষ আদর পেতো জেবিন। জারা সব সময় জেবিনকে সেটা নিয়ে খোটা দিত অথচ এখন ছোট বোনকে একবার আদর করার জন্য মন ছটফট করছে। সুযোগ পেলে সব আদর গুলাই জেবিনকে দিয়ে দিত সে। যদি সব সুখ,আদরের বদলে তার বোনকে ফিরে পাওয়া যেত তাহলে হয়তো জারা নিজের সব সুখ, আদরই বিসর্জন দিয়ে দিতো।
.
জেবিনের হত্যার অনেক দিন পার হলেও পুলিশ এখনো কেসটা সলভ করতে পারেনি। অপরাধীকে ধরা তো দূরের কথা অপরাধী কে সেটাই জানতে পারেনি তারা। যদিও অপরাধী অনেক চালাক কিন্তু তার পরেও পুলিশের গাফিলতির কারণেই অপরাধী আজও ধরাছোঁয়ার বাইরে। পুলিশের পক্ষ থেকেও নতুন কোনো পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে না। পুলিশের এমন আচারণ দেখে জারা ঠিক করে সে একাই অপরাধীকে খুঁজে বের করবে এবং তাকে শাস্তি দিবে। হাজার হলেও জেবিন তার নিজের বোন, পুলিশ এখানে দায়িত্বহীনতা দেখালেও সে চুপ করে বসে থাকতে পারে না। বড় বোন হিসেবে তারও যে একটা দায়িত্ব রয়েছে। তাছাড়া জেবিনের আজকের এই পরিস্থিতির জন্য জারাই নিজেকে দায়ী মনে করে। বাবা মা অনেক বুঝিয়েছে যাতে তারা এমন উচ্ছৃঙ্খল ভাবে জীবন যাপন না করে। এতে বিপদের সম্ভাবনা অনেক বেশী। কিন্তু জারাই সেইসব কথা শুনেনি বরঞ্চ জেবিনকে আরও উৎসাহিত করেছে। যার বলিদান দিতে হলো জেবিনের জীবনের মাধ্যমে।
.......
...
জারা জিসানের সাহায্যে সেই খুনীকে খুঁজে বের করার চেষ্টা করে। কিন্তু পুলিশের মতো সেও ব্যর্থতার পরিচয় দেয়। খুনির ব্যাপারে বিন্দু পরিমাণ তথ্যও সে জোগাড় করতে পারে না। এর পিছনেও অবশ্য কারণ রয়েছে। জিসানের সাথে খুঁজতে যেয়ে খোঁজার চেয়ে বিশ্রামই বেশী নেয়া হয়েছে। একটু খুঁজতে না খুঁজতেই জিসান জারাকে নিয়ে বিভিন্ন রেস্টুরেন্টে খেতে যায়। জারা খেতে খুব পছন্দ করে। জিসান এই ব্যাপারটা জানে তাই তার মন ভালো করার জন্য শহরের বিভিন্ন রেস্টুরেন্টে তাকে খেতে নিয়ে যায়। জারাও জিসানকে সরাসরি মানা করতে পারে না তাই বাধ্য হয়ে যেতেই হয়। জারার আর একটা দুর্বল বিষয়ে জিসান অবগত ছিলো। তাই প্রতিদিন নিয়ম করে তার জন্য টকটকে লাল গোলাপ নিয়ে আসতো। লাল গোলাপ পেয়ে জারার মন নিমিষেই ভাল হয়ে যেতো। জিসানের মাঝে খুব অদ্ভুত এক ধরনের ক্ষমতা রয়েছে। যা দিয়ে খুব সহজেই সে জারাকে বশ করতে পারে। জেবিন না থাকায় জিসান জারার এক্সট্রা কেয়ার নিতে থাকে। যার ফলে জিসান এবং জারার মাঝে দূরত্বটাও আগের চেয়ে কমে যায়। জারা জিসানের কাছে তার সব না বলা কথা গুলা শেয়ার করতে থাকে,তার পছন্দ অপছন্দ সব কিছু বলে দেয় জিসানকে।
.
জারা বুঝতে পারে জিসানের সাথে অতিরিক্ত সময় ব্যয় করায় সে তার লক্ষ্য থেকে সরে যাচ্ছে। এইভাবে চলতে থাকলে তো সে কিছুতেই জেবিনের খুনিকে খুঁজে পাবে না। তাই সে সিদ্ধান্ত নেয়,জিসানের সাথে যোগাযোগ কমে দিবে এবং জেবিনের খুনির ব্যাপারে সম্পূর্ণ মনোযোগ দিবে। কথা অনুযায়ী কাজে লেগে যায় জারা। অবাক করার বিষয় জিসানের সাথে যোগাযোগ বন্ধ করার পর খুব অল্প সময়ের মাঝেই সে খুনির ব্যাপারে অনেক কয়টা তথ্য খুঁজে পায়। জারার হঠাৎ ভিডিও গুলার কথা মনে পড়ে। ভিডিও গুলা থেকেও হয়তো কোনো না কোনো ক্লু পাওয়া যাবে। সাথে সাথেই ভিডিও গুলা অন করে ভালো করে দেখতে থাকে জারা। অনেকক্ষণ দেখার পর জারা ভিডিও গুলাতে একটা কমন জিনিস আবিষ্কার করে,আর সেটা হলো খুনির বা হাতে একটা দাগ রয়েছে। মনে হয় কেউ তার হাতে কামড় দিয়েছিলো। প্রথম প্রথম এটা তার চোঁখে পড়েনি এখন জুম করে ভালো ভাবে দেখতেই চোঁখে পড়ল সেটা। জারার বারবার মনে হতে লাগলো সে এই দাগটা কোথাও যেন দেখেছে,কিন্তু কিছুতেই যেন মনে পড়ছে না। কিছুক্ষণ ভাবার সাথেই মনে পড়লো এটা তো সে জিসানের হাতে দেখেছিলো। রেস্টুরেন্টে খাওয়ার সময় খুব ভালো ভাবেই দেখেছিলো সে। জিসানকে জিজ্ঞাসও করতে চেয়েছিলো কিন্তু পড়ে আর মনে না থাকায় জিজ্ঞাস করা হয়নি। তাহলে কি জিসানই এই কাজ করেছে? জিসানই কি তাহলে সেই সাইকো ঘাতক?
.
জারা জিসানের বিরুদ্ধে আরো তথ্য এবং প্রমাণ খুঁজে পায়। জিসান যে এতদিন তার সাথে নাটক করেছে তা আর বুঝতে বাকী রইলো না জারার। তাছাড়া জারা এবং জেবিনের বিষয়ে এত তথ্য তো সেই সাইকো ব্যক্তিটির পাওয়ার কথা নয়, জিসানের সাথেই তো তারা সেগুলা শেয়ার করেছে। এই সামান্য জিনিসটা বুঝতেই তার এত দেরী হয়ে গেলো? অল্প একটু ভুলের জন্যই আজ জেবিন তার কাছ থেকে হারিয়ে গেছে। জেবিনের ওই নৃশংস হত্যাকারী এতদিন তার সামনেই ছিলো অথচ জারা কিছুই করতে পারেনি। তবে এবার আর ছাড় নয় জিসানকে তার প্রাপ্য শাস্তি দিতেই হবে। তোর হত্যাকারীর প্রতিশোধ এবার আমি নিবোই নিব বোন। তোকে যেভাবে যন্ত্রণা দিয়ে হত্যা করেছে ওকেও ওই ভাবেই মারবো কথা গুলা বলেই জারা জিসানকে ফোন দিলো দেখা করার জন্য। জিসান আসার সাথে সাথেই জারা জিসানকে উদ্দেশ্য করে বলতে লাগলো তোর দিন শেষ কু** বাচ্চা। আমি তোর আসল পরিচয় জানতে পেরেছি। তুই সেই সাইকো ব্যক্তি যে আমার বোনকে মেরেছে। জারা কথা গুলা বলতে না বলতেই জিসান জারার মাথায় আঘাত করে। আর সাথে সাথেই জারা জ্ঞান হারিয়ে ফেলে।
......
...
জ্ঞান ফেরার সাথে সাথেই জারা দেখতে পারে তাকেও ঠিক ওই রুমের ভেতরে চেয়ারের সাথে বেঁধে রাখা হয়েছে। যেখানে জেবিন সহ অসংখ্য মেয়েকে নৃশংস ভাবে হত্যা করা হয়েছে। যাদের বেশীর ভাগ লাশই পরে আর খুঁজে পাওয়া যায়নি। পাশেই জিসান ছুড়িতে ধার দিচ্ছে,হাতুড়ি,হ
কি স্টিক,ব্লেট সহ সব প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র তৈরী করে নিচ্ছে। জারাকে আরো নৃশংস ভাবে হত্যা করার জন্য কিছু রাসায়নিক দ্রব্য নিয়ে এসেছে। সাথে মধ্যযুগীয় কিছু অস্ত্রও আছে যেগুলা দিয়ে খুব সহজেই তীব্র যন্ত্রণা দেয়া যাবে। জারার জ্ঞান ফেরা দেখে জিসান তার সবগুলা দাঁত বের করে হাসতে লাগলো। আর বলতে লাগলো বে** মা** তুই আমার মাকে লেসবিয়ান বলেছিস। আমাকে আবার কু** বাচ্চা বলেছিস। কিছুক্ষণের মধ্যেই তুই এর জবাব পেয়ে যাবি। তোকে আমি তীব্র থেকে তীব্রতর যন্ত্রণা দিয়ে মারবো। যা দেখে যে কারও বুক কেঁপে উঠবে। যদিও জারার কপাল বেয়ে ঘাম পড়ছিলো তবুও জারা জিসানকে বলতে লাগলো হেসে নে কু** বাচ্চা। পরে আর সময় পাবি না, যেসব আস্ত্র এনেছিস ওগুলা দিয়ে তোকেই শাস্তি দেয়া হবে। জারার কথা শুনে জিসান আরও জোরে হেসে উঠে বলতে লাগলো কে শাস্তি দেবে তুই? তুই তো নিজেই আর থাকবিনা কিছুক্ষণ পর, শেষ ইচ্ছা কিছু থাকলে বল,পূরণ করার চেষ্টা করবো।
.
জারা জিসানের কথা শুনেই জিজ্ঞাস করে আমার আদরের বোনকে কেনো মারলি? ও তোর কি ক্ষতি করেছে? তোকে তো আমি গালি দিয়েছি, আমার বোন না, তাহলে ওকে মারলি কেনো? জিসান জারাকে বলতে লাগলো তাহলে এটাই তোর শেষ ইচ্ছা,তাহলে শোন ও আমার ব্যাপারে সবকিছু জেনে ফেলেছিলো তাই ওকে সরিয়ে দেয়া খুব জরুরী ছিলো। জারা যখন বললো মানে! জিসান তখন বলতে লাগলো তোর বোন হয়তো কিছু বলেনি কিন্তু ও তো তোর সাথেই ছিলো। তাই ওর বেঁচে থাকারও কোনো অধিকার ছিলো না। যদিও ওকে আগেই মারতে চাইনি কিন্তু ওর বেশী চালাকিই ওর পরিণতির জন্য দায়ী। তুই যে আমার সাথে নিজ থেকে বন্ধুত্ব করেছিলি ওটা ছিলো আমার প্রথম টোপ আর তুই সেখানে পা দিয়েছিলি। তোকে মারার জন্য কোনো ইনফোরমেশনই ছিলো না আমার কাছে তাই তোদের সাথে বন্ধুত্ব করাটা অত্যন্ত জরুরী ছিলো। তোরা কখন কি করিস,কোথায় যাস,কার সাথে থাকিস এগুলা জানা খুব জরুরী ছিলো। কারণ একটা নিখুঁত খুনের জন্য ছোট বড় সব তথ্যই প্রয়োজন। যত বেশী তথ্য জানা যাবে ততবেশী ধরার পরার সুযোগ কম থাকবে। আর এই জন্যই আমি ৪৫+ খুন করেও আজো ধরা পড়িনি। তোদের ব্যাপারে তথ্য নেয়ার জন্যই লোক দিয়ে তোদের পিছে ফলো করাই যাতে তোরা সব সময় ভয়ে থাকিস আর আমার সাথে বেশী বেশী সময় কাটাস। আর সেই সুযোগে যাতে আমি তোদের কাছে যেতে পারি। সবকিছু প্ল্যান মাফিকই চলছিলো কিন্তু সবকিছু নষ্ট করে দিলো তোর ওই বোন। আমার ফোনটা নিয়েই সোজা গ্যালারির ভেতরে ঢুকেছিলো। সেখানে আমার কিছু সাইকোপ্যাথিক ছবি ছিলো। যেগুলা আমি আমার বিভিন্ন আইডিতে ব্যবহার করতাম এবং ভিডিও করার সময় পড়তাম। তোর বোনকে দেখলাম খুব মনোযোগ সহকারে দেখছিলো এবং ঘাপড়ানোর সাথে সাথে আমার দিকে তাকাচ্ছিলো। ছবি গুলা দেখার পর ওর এমন আচারণ দেখে আমি ওকে জিজ্ঞাস করেছিলাম কোনো সমস্যা নাকি? কিন্তু ও চালাকির সাথে উত্তর দিয়েছিলো না,কিন্তু আমি তো জানি ও সব বুঝতে পেরেছে। তাই তখনই প্ল্যান করি ওকে মেরে ফেলার। আমি যেহেতু তোদের কম বেশী সব কিছুই জানতাম তাই জেবিন কখন বাহিরে বের হবে সেটাও জানতাম। আর সেই সুযোগটাই আমি কাজে লাগিয়েছি।
.
যাজ্ঞে সেইসব কথা,তবে মরার সময় তোর বোন অনেক কাতরাচ্ছিল। ভিডিওতে তো অনেকটাই দেখেছিস তাই না,এবার তোর পালা। কথা গুলা বলে যেই জিসান জারার দিকে এগিয়ে আচ্ছিলো ঠিক তখনই একটা রড দিয়ে জিসানের মাথায় প্রচন্ড জোড়ে আঘাত করে জারা। জ্ঞান ফেরার পরে জিসান ঠিক জারার অবস্থায় নিজেকে আবিষ্কার করে। জারা যেমন চেয়ারে হাত পা বাধা অবস্থায় ছিলো জিসানও ঠিক চেয়ারে হাত পা বাঁধা অবস্থায় রয়েছে আর জারা জিসানের জায়গায় বসে আছে। জিসানের কৌতূহলী চাহনী দেখে জারা জিসানের উদ্দেশ্যে বলতে লাগলো তোকে আমি অনেক চালাক ভেবেছিলাম কিন্তু তুই তো দেখি বিশাল বড় গাঁধা। আমাকে এখানে তুই নিয়ে আসিস নি আমি নিজে এসেছি। জারার কথা শুনে জিসান আরও অবাক হয়। জিসানের এমন চেহারা দেখে জারা মুচকী হেসে বলে আমি যখন জানতে পেরেছি তুই সেই হত্যাকারী তখন তো আমি সোজা পুলিশ স্টেশনে যেতে পারতাম। অথবা তোকে যখন ডেকেছিলাম তখন আগাম ব্যবস্থাও করে রাখতে পারতাম যাতে তুই পালাতে না পারিস কারণ তুই আমার চেয়ে শারীরিক দিয়ে অনেকটাই শক্তিশালী। কিন্তু আমি এগুলার কিছুই করিনি। তোর অন্তত বোঝা উচিৎ ছিলো এর পিছনে নিশ্চয় কোনো কারণ আছে। কারণ এতটাও বোকা আমি নয় এটা তো তুই জানতি। আসলে আমার উদ্দেশ্য ছিলো তুই যেখানে আমার বোনকে মেরেছিলি ঠিক সেখানেই সেই ভাবে তোকেও হত্যা করবো। আর তোর মুখে অপরাধের সব ঘটনা শুনে রেকর্ড করবো যাতে পরবর্তীতে সবাইকে তোর আসল রূপ দেখাতে পারি। যা অন্য ভাবে কখনোই সম্ভব ছিলো না। আমি তো বেশ কয়েকদিন আগেই তোর আসল পরিচয় জানতে পেরেছি আর তখন থেকে ছদ্মবেশে তোকে ফলো করেছি। তুই কোথায় যাস,কি করিস ইত্যাদি সবকিছুর উপরেই নজর রেখেছি। তারপর তোর রুমেই তোর অগোচরে তোকে হত্যা করার সব ব্যবস্থা করেছি,যা তুই একটুও টের পাসনি। উলটা আমার ফাঁদেই তুই পা দিয়েছিস। এবার তোকে হাড়ে হাড়ে বুঝাবো বোনের প্রতিশোধ কতটা ভয়ংকর কু** বাচ্চা।
.
জারার কথা শুনে পুরাই ঘাবড়ে যায় জিসান। সে বারবার জারার কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করতে থাকে। কিন্তু জারা তার কোনো কথা না শুনেই পুরা শরীরের উপর টগবগে ফুটন্ত গরম পানি ঢেলে দেয়। গরম পানি দেয়ার সাথে সাথেই চিৎকার দিয়ে উঠে জিসান। এতটাই তীব্র গরম ছিলো যে শরীরের চামড়া খসে পড়ে যেতে লাগলো। সেই খসে পড়া চামরায় মরিচ এবং লবণের গুড়া ছিটিয়ে দিতে লাগলো। জিসানের রুমে সাইলেন্সার লাগানো ছিলো তাই হাজার চিৎকারেও বাইরে থেকে কিছু শোনা যেত না। জিসানের ফোসা পড়া শরীরে তীব্র লবণাক্ত সমুদ্রের পানি ঢেলে দিলো যা তার ফোসায় তীব্র ভাবে জ্বালাতন করতে লাগলো। জারা প্লাস বের করে জিসানের হাতের নখ তুলে ফেললো। তারপর সেখানেও লবণ মরিচ গুড়া লাগিয়ে দিলো। তারপর হাতুড়ি দিয়ে হাতের আঙ্গুল গুলি পিষে ফেললো। জিসানের মুখে কাপড় দিয়ে বেঁধে দেয়ায় সে ঠিক মতো চিৎকারও করতে পারছিলো না। জারা তার মুখ খুলে দিতেই এক নাগাড়ে চিৎকার করতে লাগলো সে। জারা জিসানের উদ্দেশ্যে বলতে লাগলো তোকেও শেষ ইচ্ছা পূরণের সুযোগ দিচ্ছি তবে অপশন আমার ইচ্ছা অনুযায়ী। বল তোর শেষ ইচ্ছা অনুযায়ী কোনটা আগে করবো? তোর ঠোঁট দুটা আগে কেটে নিবো নাকি চোঁখ দুটা আগে তুলে নিব? ভয়ানক এমন শেষ ইচ্ছা বোধয় জারাই প্রথম কাউকে অফার করছে। জিসান কিছু না বলাতে জারা রাগে তার ঠোঁট দুটাই কেটে নিলো আর বলতে লাগলো কিছু যখন বলবি না তখন এই ঠোঁট দুটা রেখেই বা কি লাভ? তারপর তার শরীরের লোম এবং মাথার চুল ভ্যাক্সিন দিয়ে টেনেই তুলে ফেললো। গরম পানি প্রয়োগ না করার সময় বেশীক্ষণ স্থায়িত্ব হওয়ায় আবার তার শরীরের উপর ফুটন্ত গরম পানি ঢেলে দিল। তারপর তার জিহ্বা টেনে তার মাঝে পেরেক গেঁথে দিতে লাগলো। যন্ত্রণায় কাতর হয়ে জিসান প্রায় একদম ক্লান্ত হয়ে পড়েছিলো তাই আর আগের মতো নড়াচড়া করছিলো না। যেটা জারার কিছুতেই সহ্য হচ্ছিলো না তাই প্লাস দিয়ে তার কান দুটাই ছিঁড়ে নিলো। কান ছিঁড়ে নেয়ার ব্যাথায় জিসান আবার নড়াচড়া করতে শুরু করলো। তারপর একে একে তার দুই চোঁখ এবং নাক উপড়ে ফেলা হলো। হাতুড়ি দিয়ে জিসানের পুরা শরীরের হাড় গুলা ভেঙ্গে দেয়া হলো। হাড় গুলা ভাঙ্গার পড় শেষ বারের মতো লবণ মরিচের ফুটন্ত গরম পানি জিসানের শরীরে ঢেলে দিলো। জিসান ততক্ষণে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েছে। জিসানের মৃত্যুর পরেও যেন জারা ক্ষান্ত হতে পারেনি। তাই তার মৃত শরীরকে কেটে টুকরা টুকরা করে ফেললো এবং টুকরা টুকরা ততক্ষণ পর্যন্ত করছিলো যতক্ষণ না পর্যন্ত তার রাগ শেষ হচ্ছিলো। জারা জিসানের মৃত শরীরের টুকরা গুলার দিকে তাকিয়ে বলতে লাগলো দেখেছিস একটা বোনের প্রতিশোধ কতটা ভয়ংকর হয়। যার ফলে তোর মতো সাইকোকেও এমন সাইকো পদ্ধতিতে মৃত্যু দেয়া হলো। কেনো ভুলে যাস এই বোনই কারো না কারো মা, স্ত্রী এবং কন্যার রূপ ধারণ করে। কেনো ভুলে যাস নারী শক্তির ক্রোধ সম্পর্কে?
.
জিসানের কর্মকান্ড এবং তার শাস্তির ভিডিও জারা সকল সোশ্যাল মাধ্যমে ছেড়ে দেয়। মুহূর্তের মধ্যেই তা ভাইরাল হয়ে যায়। আর সাথে সাথেই উত্তর আসতে থাকে একদম সঠিক কাজ করা হয়েছে। কারণ জারা ভিডিও এর শেষে প্রশ্ন ছুড়েছিলো জিসানকে দেয়া শাস্তিটা কি ঠিক আছে??
.
( আপনাদের কাছেও জারার মতো একই প্রশ্ন, জিসানকে দেয়া শাস্তিটা কি ঠিক আছে?)
.
জারার এমন অবস্থায় জিসানই শুধু তার পাশে রয়েছে। যতটা সম্ভব পারে সে জারাকে শান্তনা দেয়ার চেষ্টা করে। কিন্তু শান্তনা দিয়েই বা কি লাভ? বোন তো আর ফিরে আসবে না। জিসান জারার মনের অবস্থাটা বুঝতে পেরেছে,তাই সব সময় তাকে হাসানোর চেষ্টা করে। মন ভাল করার নানা উপায় খুঁজে বের করে জারার সামনে এসে সেগুলা একের পর এক ট্রাই করতে থাকে। শত কষ্টের মাঝেও জিসানের এমন পাগলামী দেখে সে হেসে ফেলে। জারার বাবা মায়ের মনের অবস্থাও খুব একটা ভাল নয়। মেয়ে হারানোর বেদনায় তারাও অনেক ভেঙ্গে পড়েছে। দুটাই তো দুই চোঁখের নয়নের মণি ছিলো তাদের। একটা মণি হারিয়ে তারাও প্রায় অন্ধের মতো জীবন যাপন করছে। পরিবারের ছোট হওয়ায় একটা বিশেষ আদর পেতো জেবিন। জারা সব সময় জেবিনকে সেটা নিয়ে খোটা দিত অথচ এখন ছোট বোনকে একবার আদর করার জন্য মন ছটফট করছে। সুযোগ পেলে সব আদর গুলাই জেবিনকে দিয়ে দিত সে। যদি সব সুখ,আদরের বদলে তার বোনকে ফিরে পাওয়া যেত তাহলে হয়তো জারা নিজের সব সুখ, আদরই বিসর্জন দিয়ে দিতো।
.
জেবিনের হত্যার অনেক দিন পার হলেও পুলিশ এখনো কেসটা সলভ করতে পারেনি। অপরাধীকে ধরা তো দূরের কথা অপরাধী কে সেটাই জানতে পারেনি তারা। যদিও অপরাধী অনেক চালাক কিন্তু তার পরেও পুলিশের গাফিলতির কারণেই অপরাধী আজও ধরাছোঁয়ার বাইরে। পুলিশের পক্ষ থেকেও নতুন কোনো পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে না। পুলিশের এমন আচারণ দেখে জারা ঠিক করে সে একাই অপরাধীকে খুঁজে বের করবে এবং তাকে শাস্তি দিবে। হাজার হলেও জেবিন তার নিজের বোন, পুলিশ এখানে দায়িত্বহীনতা দেখালেও সে চুপ করে বসে থাকতে পারে না। বড় বোন হিসেবে তারও যে একটা দায়িত্ব রয়েছে। তাছাড়া জেবিনের আজকের এই পরিস্থিতির জন্য জারাই নিজেকে দায়ী মনে করে। বাবা মা অনেক বুঝিয়েছে যাতে তারা এমন উচ্ছৃঙ্খল ভাবে জীবন যাপন না করে। এতে বিপদের সম্ভাবনা অনেক বেশী। কিন্তু জারাই সেইসব কথা শুনেনি বরঞ্চ জেবিনকে আরও উৎসাহিত করেছে। যার বলিদান দিতে হলো জেবিনের জীবনের মাধ্যমে।
.......
...
জারা জিসানের সাহায্যে সেই খুনীকে খুঁজে বের করার চেষ্টা করে। কিন্তু পুলিশের মতো সেও ব্যর্থতার পরিচয় দেয়। খুনির ব্যাপারে বিন্দু পরিমাণ তথ্যও সে জোগাড় করতে পারে না। এর পিছনেও অবশ্য কারণ রয়েছে। জিসানের সাথে খুঁজতে যেয়ে খোঁজার চেয়ে বিশ্রামই বেশী নেয়া হয়েছে। একটু খুঁজতে না খুঁজতেই জিসান জারাকে নিয়ে বিভিন্ন রেস্টুরেন্টে খেতে যায়। জারা খেতে খুব পছন্দ করে। জিসান এই ব্যাপারটা জানে তাই তার মন ভালো করার জন্য শহরের বিভিন্ন রেস্টুরেন্টে তাকে খেতে নিয়ে যায়। জারাও জিসানকে সরাসরি মানা করতে পারে না তাই বাধ্য হয়ে যেতেই হয়। জারার আর একটা দুর্বল বিষয়ে জিসান অবগত ছিলো। তাই প্রতিদিন নিয়ম করে তার জন্য টকটকে লাল গোলাপ নিয়ে আসতো। লাল গোলাপ পেয়ে জারার মন নিমিষেই ভাল হয়ে যেতো। জিসানের মাঝে খুব অদ্ভুত এক ধরনের ক্ষমতা রয়েছে। যা দিয়ে খুব সহজেই সে জারাকে বশ করতে পারে। জেবিন না থাকায় জিসান জারার এক্সট্রা কেয়ার নিতে থাকে। যার ফলে জিসান এবং জারার মাঝে দূরত্বটাও আগের চেয়ে কমে যায়। জারা জিসানের কাছে তার সব না বলা কথা গুলা শেয়ার করতে থাকে,তার পছন্দ অপছন্দ সব কিছু বলে দেয় জিসানকে।
.
জারা বুঝতে পারে জিসানের সাথে অতিরিক্ত সময় ব্যয় করায় সে তার লক্ষ্য থেকে সরে যাচ্ছে। এইভাবে চলতে থাকলে তো সে কিছুতেই জেবিনের খুনিকে খুঁজে পাবে না। তাই সে সিদ্ধান্ত নেয়,জিসানের সাথে যোগাযোগ কমে দিবে এবং জেবিনের খুনির ব্যাপারে সম্পূর্ণ মনোযোগ দিবে। কথা অনুযায়ী কাজে লেগে যায় জারা। অবাক করার বিষয় জিসানের সাথে যোগাযোগ বন্ধ করার পর খুব অল্প সময়ের মাঝেই সে খুনির ব্যাপারে অনেক কয়টা তথ্য খুঁজে পায়। জারার হঠাৎ ভিডিও গুলার কথা মনে পড়ে। ভিডিও গুলা থেকেও হয়তো কোনো না কোনো ক্লু পাওয়া যাবে। সাথে সাথেই ভিডিও গুলা অন করে ভালো করে দেখতে থাকে জারা। অনেকক্ষণ দেখার পর জারা ভিডিও গুলাতে একটা কমন জিনিস আবিষ্কার করে,আর সেটা হলো খুনির বা হাতে একটা দাগ রয়েছে। মনে হয় কেউ তার হাতে কামড় দিয়েছিলো। প্রথম প্রথম এটা তার চোঁখে পড়েনি এখন জুম করে ভালো ভাবে দেখতেই চোঁখে পড়ল সেটা। জারার বারবার মনে হতে লাগলো সে এই দাগটা কোথাও যেন দেখেছে,কিন্তু কিছুতেই যেন মনে পড়ছে না। কিছুক্ষণ ভাবার সাথেই মনে পড়লো এটা তো সে জিসানের হাতে দেখেছিলো। রেস্টুরেন্টে খাওয়ার সময় খুব ভালো ভাবেই দেখেছিলো সে। জিসানকে জিজ্ঞাসও করতে চেয়েছিলো কিন্তু পড়ে আর মনে না থাকায় জিজ্ঞাস করা হয়নি। তাহলে কি জিসানই এই কাজ করেছে? জিসানই কি তাহলে সেই সাইকো ঘাতক?
.
জারা জিসানের বিরুদ্ধে আরো তথ্য এবং প্রমাণ খুঁজে পায়। জিসান যে এতদিন তার সাথে নাটক করেছে তা আর বুঝতে বাকী রইলো না জারার। তাছাড়া জারা এবং জেবিনের বিষয়ে এত তথ্য তো সেই সাইকো ব্যক্তিটির পাওয়ার কথা নয়, জিসানের সাথেই তো তারা সেগুলা শেয়ার করেছে। এই সামান্য জিনিসটা বুঝতেই তার এত দেরী হয়ে গেলো? অল্প একটু ভুলের জন্যই আজ জেবিন তার কাছ থেকে হারিয়ে গেছে। জেবিনের ওই নৃশংস হত্যাকারী এতদিন তার সামনেই ছিলো অথচ জারা কিছুই করতে পারেনি। তবে এবার আর ছাড় নয় জিসানকে তার প্রাপ্য শাস্তি দিতেই হবে। তোর হত্যাকারীর প্রতিশোধ এবার আমি নিবোই নিব বোন। তোকে যেভাবে যন্ত্রণা দিয়ে হত্যা করেছে ওকেও ওই ভাবেই মারবো কথা গুলা বলেই জারা জিসানকে ফোন দিলো দেখা করার জন্য। জিসান আসার সাথে সাথেই জারা জিসানকে উদ্দেশ্য করে বলতে লাগলো তোর দিন শেষ কু** বাচ্চা। আমি তোর আসল পরিচয় জানতে পেরেছি। তুই সেই সাইকো ব্যক্তি যে আমার বোনকে মেরেছে। জারা কথা গুলা বলতে না বলতেই জিসান জারার মাথায় আঘাত করে। আর সাথে সাথেই জারা জ্ঞান হারিয়ে ফেলে।
......
...
জ্ঞান ফেরার সাথে সাথেই জারা দেখতে পারে তাকেও ঠিক ওই রুমের ভেতরে চেয়ারের সাথে বেঁধে রাখা হয়েছে। যেখানে জেবিন সহ অসংখ্য মেয়েকে নৃশংস ভাবে হত্যা করা হয়েছে। যাদের বেশীর ভাগ লাশই পরে আর খুঁজে পাওয়া যায়নি। পাশেই জিসান ছুড়িতে ধার দিচ্ছে,হাতুড়ি,হ
কি স্টিক,ব্লেট সহ সব প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র তৈরী করে নিচ্ছে। জারাকে আরো নৃশংস ভাবে হত্যা করার জন্য কিছু রাসায়নিক দ্রব্য নিয়ে এসেছে। সাথে মধ্যযুগীয় কিছু অস্ত্রও আছে যেগুলা দিয়ে খুব সহজেই তীব্র যন্ত্রণা দেয়া যাবে। জারার জ্ঞান ফেরা দেখে জিসান তার সবগুলা দাঁত বের করে হাসতে লাগলো। আর বলতে লাগলো বে** মা** তুই আমার মাকে লেসবিয়ান বলেছিস। আমাকে আবার কু** বাচ্চা বলেছিস। কিছুক্ষণের মধ্যেই তুই এর জবাব পেয়ে যাবি। তোকে আমি তীব্র থেকে তীব্রতর যন্ত্রণা দিয়ে মারবো। যা দেখে যে কারও বুক কেঁপে উঠবে। যদিও জারার কপাল বেয়ে ঘাম পড়ছিলো তবুও জারা জিসানকে বলতে লাগলো হেসে নে কু** বাচ্চা। পরে আর সময় পাবি না, যেসব আস্ত্র এনেছিস ওগুলা দিয়ে তোকেই শাস্তি দেয়া হবে। জারার কথা শুনে জিসান আরও জোরে হেসে উঠে বলতে লাগলো কে শাস্তি দেবে তুই? তুই তো নিজেই আর থাকবিনা কিছুক্ষণ পর, শেষ ইচ্ছা কিছু থাকলে বল,পূরণ করার চেষ্টা করবো।
.
জারা জিসানের কথা শুনেই জিজ্ঞাস করে আমার আদরের বোনকে কেনো মারলি? ও তোর কি ক্ষতি করেছে? তোকে তো আমি গালি দিয়েছি, আমার বোন না, তাহলে ওকে মারলি কেনো? জিসান জারাকে বলতে লাগলো তাহলে এটাই তোর শেষ ইচ্ছা,তাহলে শোন ও আমার ব্যাপারে সবকিছু জেনে ফেলেছিলো তাই ওকে সরিয়ে দেয়া খুব জরুরী ছিলো। জারা যখন বললো মানে! জিসান তখন বলতে লাগলো তোর বোন হয়তো কিছু বলেনি কিন্তু ও তো তোর সাথেই ছিলো। তাই ওর বেঁচে থাকারও কোনো অধিকার ছিলো না। যদিও ওকে আগেই মারতে চাইনি কিন্তু ওর বেশী চালাকিই ওর পরিণতির জন্য দায়ী। তুই যে আমার সাথে নিজ থেকে বন্ধুত্ব করেছিলি ওটা ছিলো আমার প্রথম টোপ আর তুই সেখানে পা দিয়েছিলি। তোকে মারার জন্য কোনো ইনফোরমেশনই ছিলো না আমার কাছে তাই তোদের সাথে বন্ধুত্ব করাটা অত্যন্ত জরুরী ছিলো। তোরা কখন কি করিস,কোথায় যাস,কার সাথে থাকিস এগুলা জানা খুব জরুরী ছিলো। কারণ একটা নিখুঁত খুনের জন্য ছোট বড় সব তথ্যই প্রয়োজন। যত বেশী তথ্য জানা যাবে ততবেশী ধরার পরার সুযোগ কম থাকবে। আর এই জন্যই আমি ৪৫+ খুন করেও আজো ধরা পড়িনি। তোদের ব্যাপারে তথ্য নেয়ার জন্যই লোক দিয়ে তোদের পিছে ফলো করাই যাতে তোরা সব সময় ভয়ে থাকিস আর আমার সাথে বেশী বেশী সময় কাটাস। আর সেই সুযোগে যাতে আমি তোদের কাছে যেতে পারি। সবকিছু প্ল্যান মাফিকই চলছিলো কিন্তু সবকিছু নষ্ট করে দিলো তোর ওই বোন। আমার ফোনটা নিয়েই সোজা গ্যালারির ভেতরে ঢুকেছিলো। সেখানে আমার কিছু সাইকোপ্যাথিক ছবি ছিলো। যেগুলা আমি আমার বিভিন্ন আইডিতে ব্যবহার করতাম এবং ভিডিও করার সময় পড়তাম। তোর বোনকে দেখলাম খুব মনোযোগ সহকারে দেখছিলো এবং ঘাপড়ানোর সাথে সাথে আমার দিকে তাকাচ্ছিলো। ছবি গুলা দেখার পর ওর এমন আচারণ দেখে আমি ওকে জিজ্ঞাস করেছিলাম কোনো সমস্যা নাকি? কিন্তু ও চালাকির সাথে উত্তর দিয়েছিলো না,কিন্তু আমি তো জানি ও সব বুঝতে পেরেছে। তাই তখনই প্ল্যান করি ওকে মেরে ফেলার। আমি যেহেতু তোদের কম বেশী সব কিছুই জানতাম তাই জেবিন কখন বাহিরে বের হবে সেটাও জানতাম। আর সেই সুযোগটাই আমি কাজে লাগিয়েছি।
.
যাজ্ঞে সেইসব কথা,তবে মরার সময় তোর বোন অনেক কাতরাচ্ছিল। ভিডিওতে তো অনেকটাই দেখেছিস তাই না,এবার তোর পালা। কথা গুলা বলে যেই জিসান জারার দিকে এগিয়ে আচ্ছিলো ঠিক তখনই একটা রড দিয়ে জিসানের মাথায় প্রচন্ড জোড়ে আঘাত করে জারা। জ্ঞান ফেরার পরে জিসান ঠিক জারার অবস্থায় নিজেকে আবিষ্কার করে। জারা যেমন চেয়ারে হাত পা বাধা অবস্থায় ছিলো জিসানও ঠিক চেয়ারে হাত পা বাঁধা অবস্থায় রয়েছে আর জারা জিসানের জায়গায় বসে আছে। জিসানের কৌতূহলী চাহনী দেখে জারা জিসানের উদ্দেশ্যে বলতে লাগলো তোকে আমি অনেক চালাক ভেবেছিলাম কিন্তু তুই তো দেখি বিশাল বড় গাঁধা। আমাকে এখানে তুই নিয়ে আসিস নি আমি নিজে এসেছি। জারার কথা শুনে জিসান আরও অবাক হয়। জিসানের এমন চেহারা দেখে জারা মুচকী হেসে বলে আমি যখন জানতে পেরেছি তুই সেই হত্যাকারী তখন তো আমি সোজা পুলিশ স্টেশনে যেতে পারতাম। অথবা তোকে যখন ডেকেছিলাম তখন আগাম ব্যবস্থাও করে রাখতে পারতাম যাতে তুই পালাতে না পারিস কারণ তুই আমার চেয়ে শারীরিক দিয়ে অনেকটাই শক্তিশালী। কিন্তু আমি এগুলার কিছুই করিনি। তোর অন্তত বোঝা উচিৎ ছিলো এর পিছনে নিশ্চয় কোনো কারণ আছে। কারণ এতটাও বোকা আমি নয় এটা তো তুই জানতি। আসলে আমার উদ্দেশ্য ছিলো তুই যেখানে আমার বোনকে মেরেছিলি ঠিক সেখানেই সেই ভাবে তোকেও হত্যা করবো। আর তোর মুখে অপরাধের সব ঘটনা শুনে রেকর্ড করবো যাতে পরবর্তীতে সবাইকে তোর আসল রূপ দেখাতে পারি। যা অন্য ভাবে কখনোই সম্ভব ছিলো না। আমি তো বেশ কয়েকদিন আগেই তোর আসল পরিচয় জানতে পেরেছি আর তখন থেকে ছদ্মবেশে তোকে ফলো করেছি। তুই কোথায় যাস,কি করিস ইত্যাদি সবকিছুর উপরেই নজর রেখেছি। তারপর তোর রুমেই তোর অগোচরে তোকে হত্যা করার সব ব্যবস্থা করেছি,যা তুই একটুও টের পাসনি। উলটা আমার ফাঁদেই তুই পা দিয়েছিস। এবার তোকে হাড়ে হাড়ে বুঝাবো বোনের প্রতিশোধ কতটা ভয়ংকর কু** বাচ্চা।
.
জারার কথা শুনে পুরাই ঘাবড়ে যায় জিসান। সে বারবার জারার কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করতে থাকে। কিন্তু জারা তার কোনো কথা না শুনেই পুরা শরীরের উপর টগবগে ফুটন্ত গরম পানি ঢেলে দেয়। গরম পানি দেয়ার সাথে সাথেই চিৎকার দিয়ে উঠে জিসান। এতটাই তীব্র গরম ছিলো যে শরীরের চামড়া খসে পড়ে যেতে লাগলো। সেই খসে পড়া চামরায় মরিচ এবং লবণের গুড়া ছিটিয়ে দিতে লাগলো। জিসানের রুমে সাইলেন্সার লাগানো ছিলো তাই হাজার চিৎকারেও বাইরে থেকে কিছু শোনা যেত না। জিসানের ফোসা পড়া শরীরে তীব্র লবণাক্ত সমুদ্রের পানি ঢেলে দিলো যা তার ফোসায় তীব্র ভাবে জ্বালাতন করতে লাগলো। জারা প্লাস বের করে জিসানের হাতের নখ তুলে ফেললো। তারপর সেখানেও লবণ মরিচ গুড়া লাগিয়ে দিলো। তারপর হাতুড়ি দিয়ে হাতের আঙ্গুল গুলি পিষে ফেললো। জিসানের মুখে কাপড় দিয়ে বেঁধে দেয়ায় সে ঠিক মতো চিৎকারও করতে পারছিলো না। জারা তার মুখ খুলে দিতেই এক নাগাড়ে চিৎকার করতে লাগলো সে। জারা জিসানের উদ্দেশ্যে বলতে লাগলো তোকেও শেষ ইচ্ছা পূরণের সুযোগ দিচ্ছি তবে অপশন আমার ইচ্ছা অনুযায়ী। বল তোর শেষ ইচ্ছা অনুযায়ী কোনটা আগে করবো? তোর ঠোঁট দুটা আগে কেটে নিবো নাকি চোঁখ দুটা আগে তুলে নিব? ভয়ানক এমন শেষ ইচ্ছা বোধয় জারাই প্রথম কাউকে অফার করছে। জিসান কিছু না বলাতে জারা রাগে তার ঠোঁট দুটাই কেটে নিলো আর বলতে লাগলো কিছু যখন বলবি না তখন এই ঠোঁট দুটা রেখেই বা কি লাভ? তারপর তার শরীরের লোম এবং মাথার চুল ভ্যাক্সিন দিয়ে টেনেই তুলে ফেললো। গরম পানি প্রয়োগ না করার সময় বেশীক্ষণ স্থায়িত্ব হওয়ায় আবার তার শরীরের উপর ফুটন্ত গরম পানি ঢেলে দিল। তারপর তার জিহ্বা টেনে তার মাঝে পেরেক গেঁথে দিতে লাগলো। যন্ত্রণায় কাতর হয়ে জিসান প্রায় একদম ক্লান্ত হয়ে পড়েছিলো তাই আর আগের মতো নড়াচড়া করছিলো না। যেটা জারার কিছুতেই সহ্য হচ্ছিলো না তাই প্লাস দিয়ে তার কান দুটাই ছিঁড়ে নিলো। কান ছিঁড়ে নেয়ার ব্যাথায় জিসান আবার নড়াচড়া করতে শুরু করলো। তারপর একে একে তার দুই চোঁখ এবং নাক উপড়ে ফেলা হলো। হাতুড়ি দিয়ে জিসানের পুরা শরীরের হাড় গুলা ভেঙ্গে দেয়া হলো। হাড় গুলা ভাঙ্গার পড় শেষ বারের মতো লবণ মরিচের ফুটন্ত গরম পানি জিসানের শরীরে ঢেলে দিলো। জিসান ততক্ষণে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েছে। জিসানের মৃত্যুর পরেও যেন জারা ক্ষান্ত হতে পারেনি। তাই তার মৃত শরীরকে কেটে টুকরা টুকরা করে ফেললো এবং টুকরা টুকরা ততক্ষণ পর্যন্ত করছিলো যতক্ষণ না পর্যন্ত তার রাগ শেষ হচ্ছিলো। জারা জিসানের মৃত শরীরের টুকরা গুলার দিকে তাকিয়ে বলতে লাগলো দেখেছিস একটা বোনের প্রতিশোধ কতটা ভয়ংকর হয়। যার ফলে তোর মতো সাইকোকেও এমন সাইকো পদ্ধতিতে মৃত্যু দেয়া হলো। কেনো ভুলে যাস এই বোনই কারো না কারো মা, স্ত্রী এবং কন্যার রূপ ধারণ করে। কেনো ভুলে যাস নারী শক্তির ক্রোধ সম্পর্কে?
.
জিসানের কর্মকান্ড এবং তার শাস্তির ভিডিও জারা সকল সোশ্যাল মাধ্যমে ছেড়ে দেয়। মুহূর্তের মধ্যেই তা ভাইরাল হয়ে যায়। আর সাথে সাথেই উত্তর আসতে থাকে একদম সঠিক কাজ করা হয়েছে। কারণ জারা ভিডিও এর শেষে প্রশ্ন ছুড়েছিলো জিসানকে দেয়া শাস্তিটা কি ঠিক আছে??
.
( আপনাদের কাছেও জারার মতো একই প্রশ্ন, জিসানকে দেয়া শাস্তিটা কি ঠিক আছে?)
No comments
info.kroyhouse24@gmail.com