Breaking News

গল্প : ভালবাসা প্লাস নতুন একটা পরিচয় | Writer : Rabiul islam Rabi

সকাল সকাল কোন সালা মুখে পানি দিলরে।
ও সরি আমি আপনারে দেখতে পাই নাই একটা
মেয়ে বলল।
-তা দেখবেন ক্যান বড় লোক বাবার আদরের দুলালী না দেখবেন ক্যামনে।
– তো আপনি এই খানে শুয়ে আছেন ক্যান, এটা কী ঘুমানোর জায়গা । (মেয়ে)
– ওকে ওকে ঠিক আছে, দূর ঘুমটাই নষ্ট।
কী আর করার আছে, এইটা তো আর বাবার
হোটেল না যে আরাম ছে ঘুমানো যাবে।
এই না না আপনারা আবার ভাইবেন না যে
হোটের এর বারান্দাই ঘুমাইছি।
আমি তো ভাই স্টেশন এ ঘুমাই আছি,
বাপ মা গত হইছে সেই কবে।
এতদিন কাকুর ঘাড়ে চরে খাইছিলাম,
সেইটা ও বন্ধ হইয়া গেছে।
তাই ঢাকাই যাচ্ছি দেখি কপালডা বড় হয় নাকি সেই উদ্দেশ্যে।
আপন বলতে ছিল একটা গিটার সেটা বিক্রি করছি গত রাতে ৭৭৫ টাকা দিয়া।
বলে না বিপদ আসলে চারিদিকে দিয়া আসে,
সালা হারামি কাকু কম্পিউটারটা ও নিতে দেই
নাই।
ও হ্যা নামটা তো বলি নাই, আমি Rabiul
ঢাকাই যামু খালি ভাড়াটা আছে।
আহা ফাটাফাটি খিদা লাগছে কাল রাত থেইকা স্টেশন এ শুয়ে আছি।
কী যে করি ভাড়া ৪৮০ টাকা, খামু কী যাইতাম কেমনে।
শুনছিলাম নায়ক রাজ্জাক নাকি আগে কুলি ছিল, দূর আমার আবার কে আছে তাই এত্ত
লজ্জা পাইয়া লাভ নাই।
– ওইতো একটা লোক অনেক গুলো ব্যাগ নিয়া এইদিক ওইদিক তাকাইতেছে, যা রবি
কাজে লাইগা পর, আমার পিচ্চি ব্যাগটা ঘাড়ে নিয়া, লোকটার সামনে গিয়া
কইলাম।
– স্যার আপনার ব্যাগ গুলো আমি নিয়া গিয়া দিতাছি।
– না না বাবা তুমি নিবা ক্যান আমরা কুলি ডাকতেছি।(লোকটার বউ)
– না ম্যাডাম মনে করের আমি সে রকমই।
– তোমারে দেখেতো তেমন মনে হচ্ছে না। (লোকটা)।
– আচ্ছা এখন কথা বাদ দেন ট্রেন ছেরে দিবে, বলে ব্যাগ গুলো নিয়া গেলাম, গিয়ে দেখি ওই
পানি ফেলা মেয়েটা বসে আছে।
ওই উঠেন এই খানে স্যার ম্যাম বসবে,
– ওই আপনি কে হ্যা এইটা আমার সিট (মেয়ে)।
– কীইইইই হইছেরে মিম (ম্যাম)
– দেখ না মা ওই ছেলেটা বলছে, এই খানে নাকি ওর ম্যাডাম আর স্যার বসবে।
– আমি বুঝতে পারিনাই ওনি আপনার মা,সব ব্যাগ নিয়ে আসলাম। এর মধ্যে ট্রেন ছেরে দিছে। দূর টিকেট টা ও করা হল না।
টাকা চাইতে ও সরম লাগছে, তাই বললাম
স্যার আমি গেলাম।
– এই দাঁড়াও,, তুমি কই থাক। (ম্যাম)
-আসলে ম্যাম,,,, আমি মানে।
– মা ও স্টেশন এ শুয়ে ছিল। (মিম)
– কীইইইই,,,, স্টেশন মানে (স্যার)।
তারপর সব কিছু খুলে বললাম।
– তো ঢাকাই কই যাবা থাকবা কই কিছু ঠিক
করছ। (স্যার)
– না,,,,, আমি রাজ্জাক এর মতো স্টেশনে কুলি হয়ে থাকতে থাকতে নায়ক হয়ে যাব।
সবাই তো হেঁসে হেঁসে শেষ। মিম মেয়েটা ভালই কী সুন্দর করে হাঁসে।
-তো পড়া শুনা করছ কত দূর (ম্যাম)
– আমি ইন্টার পাস করছি এই একমাস আগে ।
– ওহহহ তার মানে মিমের সাথে,, (ম্যাম)
– আচ্ছা তোমার জিপিএ কত। (মিম)
– আমার ৪.০০,,, হি হি হি। সারাদিন ঘুরে খাইছি
কেমনে রেজাল্ট হইব, জানতাম নাকি এমন ভাবে বাড়ি ছারতে হইব।
আচ্ছা তোমার রেজাল্ট কত।
– আমি গোল্ডেন পাইছি (মিম)
– আচ্ছা তুমি কী করবা ঢাকাই গিয়ে। (স্যার)
– জানি না স্যার আগে যাই কিছু একটা হইবই।
– আচ্ছা শোন স্যার স্যার করো না আঙ্কেল বলবা এই বার থেকে। (আঙ্কেল)
– আচ্ছা আঙ্কেল।
– আচ্ছা তুমি কী কী পারো (আন্টি)
– আমি ফোন, কম্পিউটার, ল্যাপটপ এর সকল সমস্যার সমাধান করতে পারি, ও হ্যা গেম খেলতে পারি আর রুবিক্স কিউব ১ মিনিটে
মিলাইতে পারি।
-সবাইতো হা করে আছে আমার দিকে।
– কীইইইই এই সব দিয়ে কী করবা, করে খাবার মতো কী জানো (আঙ্কেল)
– আসলে আঙ্কেল আগে কোনদিন করে খাই নাই তো তাই তাই কিচ্ছু জানি না।
– হুমমমমমমম ভালই (মিম)
– তো টিকেট কাটছ নাকি কাটার সময়ই পাও নাই (আন্টি)।
– না মানে আন্টি কাঁটা হয় নাই, মোটেই ৭৫০ টা পকেট এ আছে, তাও আবার প্রিয় গিটারটা বেঁচে দিয়া।
– তার মানে তুমি গিটার ও বাঁজাতে পার, (মিম)
– হুমমমমমমম, এইটা তো আমার প্রতিদিনের কাজ ছিল। একি রুবিক্স কিউব তুমি মিলাতে পার।
– না না অনেক দিন থেকে চেষ্টা করছি পারছিই না। (মিম)
– আমি পারি দাও।
– এই নাও দেখি কেমন পার।(মিম)
– হা হা এইটা তো আমার কোন ব্যাপারই না।
– এমা এত তারাতারি কেমনে করলে, (মিম)
– ভাল কাজ পারি না তো তাই সব আজাইরা কাজ ভালপারি।
-মা আমার ফোনটার পাসওয়ার্ড কেমন খুলছে না, এখন কী হবে।
– পাসওয়ার্ড হি হি এই ব্যাপার, দেখি ফোনটা।
– ওয়াও এইটা কেমনে করলে আমাকে শিখাও না একটু। (মিম)
– না মানে এই খানে কেমনে হবে।
-ও হ্যা তোমার তোমার নামটাই তো শোনা হল না
কী নাম তোমার (আন্টি)
– আমার নাম রবি আন্টি।
– আচ্ছা তোমার তো কোন থাকার জায়গা নাই
আর আমাদের ও বাসাই কোন ছেলে নাই, আমার আফিসের কাজে বাসাই থাকা ও হয় না।
তুমি একটু বাজার করলা আর মিম কে ও সব শিখাইলা, এতে কত টাকা মাসে দিতে হবে বল।(আঙ্কেল)
– ছি ছি আঙ্কেল টাকা কেন দিতে হবে দুই বেলা দুই মুঠো খাইতে দিয়েন তা হলেই হবে।
– আচ্ছা রবি তোমার বাবা মা কেমনে মারা
গেছে (আন্টি)
– জানি না আন্টি সবাই বলে ব্যাস আক্সিডেন্ট এ নাকি।
– মা তুমি ও দেখছ না ওর মন খারাপ, (মিম)
-আচ্ছা বাবা তুমি কী কিছু খেয়েছ (আন্টি)
– না মানে আন্টি।
– আচ্ছা থাক আর কিছু বলতে হবে না, মিম মা
ওকে কেক আর জুস দে,, মুখটা কেমন শুকিয়ে
ফেলেছে।
– এই নাও ধরো খেয়ে নাও বাবু (মিম)
-একিরে আমি সোজা বাবু হয়ে গেলাম,
হি হি আর যাই হোক থাকা খাওয়া ফ্রি।
ওরে বাবারে কত্ত বড় বাড়ি ১৮ বছর এর লাইফ
এ জীবনে ও দেখিনি।
আচ্ছা মিম এইটা তোমাদের বাড়ি।
-হুমমমমমমম, কেন।
– না মানে এমনি, মনে মনে ভাবছি সালা
কোন মোরগ এইটার মালিক হইব আল্লাই
জানে।
– ওই কী ভাবছ,,, (মিম)
– না না কিছু না।
– রবি এই দিকে আয়তো বাবা, একটু হেল্প কর এই গুলো একটু ভেতরে নিয়ে যা। (আন্টি)
-হুমমমমমমম আন্টি।
– তোকে কত কষ্ট দিচ্ছিরে বাবা (আঙ্কেল)
না না আঙ্কেল আপনারা কত ভাল একটা
ছেলেকে জানেন না চিনিন না নিজের বাড়িতের
জায়গা দিলেন,, আমার নিজের বলতে কেউ
নাই কিন্তুু এমন কাউকে পাব ভাবিনি।
(কেঁদে ফেলছি)
– আরে কাঁদছ কেন আজকে থেকে আমাদের
কে নিজের মতো দেখবা। (আন্টি)
– হুমমমমমমম।
– মিম।।মা ওকে ঘরটা দেখিয়ে দে তো।
– এই দিকে আস পিচ্চি বাবু হি হি (মিম)
– এত বড় রুম জীবনে দেখিনি।
– এই যে মি.পিচ্চি খেতে এসো, (মিম)
– ওরে ব্যাস এতো কিছু, কোনটা খাব আর না খাব বুঝতে পারছিলাম না।
খাওয়া শেষে ছাঁদা চলে গেলাম একা একা বসে
আছি।
হঠাৎ মিম কই থেকে একটা গিটার নিয়ে আসল
,
আরে এটাতো আমার কই পাইলা এইটা তো আমি।
– তুমি যখন গিটারটা নিয়ে ওই দোকানে গেছিলা
আমি তোমাকে দেখছিলাম।
দোকান থেকে বের হবার পর কেমন জানি লাগল তোমার মুখটা,বুঝতে পারলাম বিপদে না
পড়লে কেউ গিটার বিক্রি করে না, তাই কিনে
ফেল্লাম, আর সকালে ও ইচ্ছে করেই তোমার মুখে পানি দিছিলাম। (মিম)
– কীইইইই? কত দিয়ে গিটারটা কিনছ।
– ১২৫০ টাকা। (রিয়া)
– ও মা গো। সালা ৫ মিনিটে ৫০০ লাভ করছে।
– আচ্ছা ওই সব বাদ দাও একটা গান শোনাও
দেখি। (মিম)
– গিটার টা আমার হাতে নিয়ে গান গাইতে লাগলাম।
( একটা গোপন কথা ছিল বলবার
বন্ধু সময় হবে কী তোমার।
একবার শুনে ভুলে যেও বার বার
ভুলেও কাউকে বলো না আবার)
– ওয়াও তুমি যেমন কিউট তোমার গান গাওয়াটা ও অনেক কিউট। হি হি হি
– বলেই মিম দৌড়ে চলে গেল।

No comments

info.kroyhouse24@gmail.com