গল্পঃ - খলনায়ক | লেখকঃ - নিরব ইসলাম | পার্টঃ - ২
হেল্পার এসে বললো,আফা নতুন বাজার আইয়া পরছে।
লুবনা নেমে গেল...
জীবনটা হুট করেই এক ধাক্কায় বদলে গেল।
সবচেয়ে কাছের বান্ধবীর বাসায় যাবে বলে সিদ্ধান্ত নিল।
কি বলবে!কি করবে কিছুই জানা নেই।
বান্ধবীর বাসায় গিয়ে দরজা নক করতেই দরজা খুললো বান্ধবীর বর।
কাকে চাই?
লুবনা: দুলাভাই চিনছেন না আমায়?আপনাদের বিয়েতে আমি ছিলাম তো।
রুনা আছে?
-রুনা...দেখতো কে আসছে?
রুনা এসে লুবনাকে দেখেই বলে,এ কি অবস্থা তোর লুবনা?
এই বলে জড়িয়ে ধরলো...
লুবনা: এক গ্লাস পানি দিবি?
রুনা: আয় ভেতরে।
কাকা মারা যাবার পর আর কলেজ এ আসলিনা।
ফোন নম্বর ও বন্ধ..
আমি অনেকবার কল দিয়েছিলাম।
লুবনা পানি খেয়ে স্বস্তির নিশ্বাস ফেললো।
লুবনা: আমায় কিছুদিন এখানে রাখবি রুনা?
রুনা তার বরের দিকে তাকালো..
রুনার বর উঠেই বলে,কয়দিন কি!আপনি চাইলে চিরদিন ই থাকতে পারেন।
লুবনা অনেকটা আস্থা পেল যেন।
রুনা পাশে এসে বলে এমন কিকরে হয়েছে?
আন্টি কই?আর তোর ভাই??
লুবনা ফুঁপিয়ে কেঁদে উঠলো..
রুনার বর বললো আগে তার কপালে মলম লাগাও।
রক্ত পরছে...
রুনা লুবনার কপালে মলম লাগাচ্ছে আর বলছে,কি করে হলো এমন?
লুবনা: কপালে বিয়ে ছিল,বিয়ে করলাম।
কপালটানা বিয়েটা নিতে পারেনি।
রুনা অবাক হয়ে মলম দেয়া রেখে লুবনার দিকে তাকিয়ে বলছে,তোর বিয়ে হয়েছে?কি বলিস?
লুবনা : হু।৫দিন আগে বিয়ে হয়েছে আমার।
আজ আমি পালিয়ে এসেছি।
রুনা: কেন?
লুবনা: ওরা ভালোনা।খুব খারাপ..খুব, এই বলে কেঁদে দিল...
রুনার বর উঠে বললো,রুনা এখন এসব না জানতে চেয়ে ওনাকে খেতে দেও।
রুনা যেতে নিল লুবনা হাত ধরে বললে,রুনা ক্ষুধা নেই আমার।আমি ঘুমাবো...অনেকদিন ঘুম হয়না আমার....
রুনা লুবনাকে রুমে নিয়ে বললো,এখানে থাক...
লুবনা বিছানায় শুয়ে ভাবছে,এই কদিন আগে বাবার পেটের উপর মাথা রেখে বলতাম,বাবা জানো তোমার পেট কি বলে?
বাবা হেসে বলতো কি?
বলে,অনেক ক্ষুধা পেয়েছে....
কিন্তু কবে যে আমি নিজেই নিজের বাবাটাকে খেয়ে ফেললাম...
এই তো সেদিন বাবা সকাল থেকেই খুব হাসিখুশি ছিল।
আমার কানের কাছে ভাইটা এসে বললো,আপু ক্যান্সার রোগী এমন হাসে?
তুই দেখিস বাবার ক্যান্সার হয়নি।
বাবা সেদিন কেমন অদ্ভুত আচরন করতে ছিল।
মাকে বললো,কই গো বাজারের ব্যাগ দেও...কি কি খাবে বলো..
পলাশটা উঠেই বলে,বাবা অনেকদিন ইলিশ মাছ খাইনা।আনবে?
আমি ওকে চোখ রাঙিয়ে ছিলাম..কেন যেন বাবার এ আচরণ আমার ভালো লাগেনি।
বাবা সেই যে গেল...২ঘন্টার মাঝেই খবর এলো বাবাকে হাসপাতাল নেয়া হয়েছে...
আমারা গিয়ে শুধু বাবার শরীরটাই পেয়েছিলাম।
ভিতরের বাবা আমাদের ফাকি দিয়ে চলে গেছে...
এর মাঝেই লুবনার চোখ লেগে এলো...
"লুবনা তলপেট এ হাত দিয়ে ফুঁপিয়ে বসে কাঁদছে।
এর মাঝেই লুবনার মামা এলো...
লুবনা,মামাকে দেখে উঠে বলে,মামা আমায় এ কোন নরকে ফেললা?
জানো ওই লোক আমায় ঘরে আটকে রেখেছে?
মামা উঠেই লুবনার গালে চর লাগিয়ে দিল..
বিয়ে হলে মেয়েদের একটু এমন সহ্য করতে হয়।
এতো বড় ঘরের বউ..হতে গেলে এমন অনেক কিছু মেনে নিতে হয়।
লুবনা: মামা এতো বড় ঘর আমি তো চাইনি।
আমি এখনই বাড়ি যাব।
মামা উঠেই বলে কিসের বাড়ি? তুই জানিস আমার খরচ চালাতে কত কষ্ট হয়?
জামাই বলেছে,আপা,পলাশকেও নিয়ে আসবে।
লুবনার চুল ধরে বলে এর পর কিছু টু টা শব্দ করবি আমি কাউকে ঘরে তুলবো না।আমি জামাইয়ের কাছ থেকে অনেক টাকা নিয়েছি।তা আমি ফিরত দিতে পারবো না।
আমার ঘরে আর কোন জায়গা নেই..কোন জায়গা নেই..
এই শব্দেই লুবনার ঘুম ভেঙে যায়। এতক্ষণ স্বপ্নে দেখতেছিল।
স্বপ্ন কি সুন্দর বাস্তবে ঘটে যাওয়া মুহূর্ত গুলি প্রচার করতে থাকে।
তাতে কোন দাড়ি -কমা ও ভুল হয়না।
ভুলতে চাইলেও স্বপ্ন বার বার মনে করিয়ে দিবে।
এর মাঝে পাশের রুমেও শুনছে,এ ঘরে জায়গা হবেনা।
লুবনা উঠে রুনার রুমের পাশে গিয়ে দাড়ালো...
রুনা তার বরের সাথে তর্ক করছে।
রুনা-আমি না হয় ওর বান্ধবী, তুমি বলে দিতা আমরা পরের মাসে বাহিরে যাব।
রুনা মিথ্যে বলতে যাব কেন?মেয়েটা বড্ড অসহায়।
রুনা- ও বাবা,মেয়ের প্রতি খুব দরদ দেখছি।পুরুষ রা এমন ই হয়। মেয়ে দেখলেই চুকচুক শুরু।
-রুনা কথা ভালো ভাবে বলো।
ও বান্ধবী তোমার।
রুনা: বান্ধবী শুধু কলেজে এর ক্লাসরুমে।আমার সংসারে তার জায়গা নেই।
আমি জানি ওর আরেক জায়গায় সম্পর্ক আছে তাই বিয়ে করে পালিয়েছে।
এখন মনে হয় সেই প্রেমিক ও নেই নি।
দুকূল গেছে।
ভালো ই হয়েছে...কোন ছেলে বিবাহিতা মেয়েকে ভালোবাসে!
বিয়ের আগে জানতাম এক ছেলে ফুল দিয়ে যায় ঘরের সামনে...
কেউ সেই ছেলের জন্য বর কে ছাড়ে?
ছিঃ ছিঃ ছিঃ
এই মেয়েকে ঘরে জায়গা দিয়ে আমি কাল সাপ পুষি আরকি?
লুবনা চোখ ঝাপসা হয়ে এলো..
এতোকিছু নিতে ও তৈরী ছিলনা।
লুবনা পর্দার আড়াল থেকে বের হয়ে বললো,রুনা...দরজাটা লাগিয়ে দিয়ে যা।
রুনা থতমত খেয়ে বললো কেন?
লুবনা: আমি বের হবো,দরজা দিয়ে যা।
রুনা: কই যাস? খেয়ে যা।
লুবনা: মা এসেছে নিতে...
এখনি যেতে হবে রে।
আরেকদিন খাব এসে।
এই বলে চলে যেতে নিল।
রুনার বর পিছনে এসে বলে আপু আমি আগিয়ে দিব?
লুবনা পিছন ফিরে দেখে রুনা ওর বরের হাত চেপে দাড়িয়ে আছে।
লুবনা হেসে বলে না ভাই...যে মেয়ে মাতাল বরকে দেখেও ভয় পায়না সে এই দিন দুপুরে রাস্তা একাই চলতে পারে।
লুবনা ঘর থেকে বেরিয়ে গেল।
রুনার বর রাগ করে বলে সব শুনে গেল।
রুনা: শোনে শুনুক...ভালোই হয়েছে।আপদ আসে...
বান্ধবী এতই যদি হতো বিয়েতে দাওয়াত দিত...
রাস্তায় একা লুবনা হাটছে...কোথায় যাবে!কার কাছে যাবে!
এতো বড় দুনিয়া লুবনার যাবার জায়গা একটিও নেই...একটিও না..
" চলবে...................
লুবনা নেমে গেল...
জীবনটা হুট করেই এক ধাক্কায় বদলে গেল।
সবচেয়ে কাছের বান্ধবীর বাসায় যাবে বলে সিদ্ধান্ত নিল।
কি বলবে!কি করবে কিছুই জানা নেই।
বান্ধবীর বাসায় গিয়ে দরজা নক করতেই দরজা খুললো বান্ধবীর বর।
কাকে চাই?
লুবনা: দুলাভাই চিনছেন না আমায়?আপনাদের বিয়েতে আমি ছিলাম তো।
রুনা আছে?
-রুনা...দেখতো কে আসছে?
রুনা এসে লুবনাকে দেখেই বলে,এ কি অবস্থা তোর লুবনা?
এই বলে জড়িয়ে ধরলো...
লুবনা: এক গ্লাস পানি দিবি?
রুনা: আয় ভেতরে।
কাকা মারা যাবার পর আর কলেজ এ আসলিনা।
ফোন নম্বর ও বন্ধ..
আমি অনেকবার কল দিয়েছিলাম।
লুবনা পানি খেয়ে স্বস্তির নিশ্বাস ফেললো।
লুবনা: আমায় কিছুদিন এখানে রাখবি রুনা?
রুনা তার বরের দিকে তাকালো..
রুনার বর উঠেই বলে,কয়দিন কি!আপনি চাইলে চিরদিন ই থাকতে পারেন।
লুবনা অনেকটা আস্থা পেল যেন।
রুনা পাশে এসে বলে এমন কিকরে হয়েছে?
আন্টি কই?আর তোর ভাই??
লুবনা ফুঁপিয়ে কেঁদে উঠলো..
রুনার বর বললো আগে তার কপালে মলম লাগাও।
রক্ত পরছে...
রুনা লুবনার কপালে মলম লাগাচ্ছে আর বলছে,কি করে হলো এমন?
লুবনা: কপালে বিয়ে ছিল,বিয়ে করলাম।
কপালটানা বিয়েটা নিতে পারেনি।
রুনা অবাক হয়ে মলম দেয়া রেখে লুবনার দিকে তাকিয়ে বলছে,তোর বিয়ে হয়েছে?কি বলিস?
লুবনা : হু।৫দিন আগে বিয়ে হয়েছে আমার।
আজ আমি পালিয়ে এসেছি।
রুনা: কেন?
লুবনা: ওরা ভালোনা।খুব খারাপ..খুব, এই বলে কেঁদে দিল...
রুনার বর উঠে বললো,রুনা এখন এসব না জানতে চেয়ে ওনাকে খেতে দেও।
রুনা যেতে নিল লুবনা হাত ধরে বললে,রুনা ক্ষুধা নেই আমার।আমি ঘুমাবো...অনেকদিন ঘুম হয়না আমার....
রুনা লুবনাকে রুমে নিয়ে বললো,এখানে থাক...
লুবনা বিছানায় শুয়ে ভাবছে,এই কদিন আগে বাবার পেটের উপর মাথা রেখে বলতাম,বাবা জানো তোমার পেট কি বলে?
বাবা হেসে বলতো কি?
বলে,অনেক ক্ষুধা পেয়েছে....
কিন্তু কবে যে আমি নিজেই নিজের বাবাটাকে খেয়ে ফেললাম...
এই তো সেদিন বাবা সকাল থেকেই খুব হাসিখুশি ছিল।
আমার কানের কাছে ভাইটা এসে বললো,আপু ক্যান্সার রোগী এমন হাসে?
তুই দেখিস বাবার ক্যান্সার হয়নি।
বাবা সেদিন কেমন অদ্ভুত আচরন করতে ছিল।
মাকে বললো,কই গো বাজারের ব্যাগ দেও...কি কি খাবে বলো..
পলাশটা উঠেই বলে,বাবা অনেকদিন ইলিশ মাছ খাইনা।আনবে?
আমি ওকে চোখ রাঙিয়ে ছিলাম..কেন যেন বাবার এ আচরণ আমার ভালো লাগেনি।
বাবা সেই যে গেল...২ঘন্টার মাঝেই খবর এলো বাবাকে হাসপাতাল নেয়া হয়েছে...
আমারা গিয়ে শুধু বাবার শরীরটাই পেয়েছিলাম।
ভিতরের বাবা আমাদের ফাকি দিয়ে চলে গেছে...
এর মাঝেই লুবনার চোখ লেগে এলো...
"লুবনা তলপেট এ হাত দিয়ে ফুঁপিয়ে বসে কাঁদছে।
এর মাঝেই লুবনার মামা এলো...
লুবনা,মামাকে দেখে উঠে বলে,মামা আমায় এ কোন নরকে ফেললা?
জানো ওই লোক আমায় ঘরে আটকে রেখেছে?
মামা উঠেই লুবনার গালে চর লাগিয়ে দিল..
বিয়ে হলে মেয়েদের একটু এমন সহ্য করতে হয়।
এতো বড় ঘরের বউ..হতে গেলে এমন অনেক কিছু মেনে নিতে হয়।
লুবনা: মামা এতো বড় ঘর আমি তো চাইনি।
আমি এখনই বাড়ি যাব।
মামা উঠেই বলে কিসের বাড়ি? তুই জানিস আমার খরচ চালাতে কত কষ্ট হয়?
জামাই বলেছে,আপা,পলাশকেও নিয়ে আসবে।
লুবনার চুল ধরে বলে এর পর কিছু টু টা শব্দ করবি আমি কাউকে ঘরে তুলবো না।আমি জামাইয়ের কাছ থেকে অনেক টাকা নিয়েছি।তা আমি ফিরত দিতে পারবো না।
আমার ঘরে আর কোন জায়গা নেই..কোন জায়গা নেই..
এই শব্দেই লুবনার ঘুম ভেঙে যায়। এতক্ষণ স্বপ্নে দেখতেছিল।
স্বপ্ন কি সুন্দর বাস্তবে ঘটে যাওয়া মুহূর্ত গুলি প্রচার করতে থাকে।
তাতে কোন দাড়ি -কমা ও ভুল হয়না।
ভুলতে চাইলেও স্বপ্ন বার বার মনে করিয়ে দিবে।
এর মাঝে পাশের রুমেও শুনছে,এ ঘরে জায়গা হবেনা।
লুবনা উঠে রুনার রুমের পাশে গিয়ে দাড়ালো...
রুনা তার বরের সাথে তর্ক করছে।
রুনা-আমি না হয় ওর বান্ধবী, তুমি বলে দিতা আমরা পরের মাসে বাহিরে যাব।
রুনা মিথ্যে বলতে যাব কেন?মেয়েটা বড্ড অসহায়।
রুনা- ও বাবা,মেয়ের প্রতি খুব দরদ দেখছি।পুরুষ রা এমন ই হয়। মেয়ে দেখলেই চুকচুক শুরু।
-রুনা কথা ভালো ভাবে বলো।
ও বান্ধবী তোমার।
রুনা: বান্ধবী শুধু কলেজে এর ক্লাসরুমে।আমার সংসারে তার জায়গা নেই।
আমি জানি ওর আরেক জায়গায় সম্পর্ক আছে তাই বিয়ে করে পালিয়েছে।
এখন মনে হয় সেই প্রেমিক ও নেই নি।
দুকূল গেছে।
ভালো ই হয়েছে...কোন ছেলে বিবাহিতা মেয়েকে ভালোবাসে!
বিয়ের আগে জানতাম এক ছেলে ফুল দিয়ে যায় ঘরের সামনে...
কেউ সেই ছেলের জন্য বর কে ছাড়ে?
ছিঃ ছিঃ ছিঃ
এই মেয়েকে ঘরে জায়গা দিয়ে আমি কাল সাপ পুষি আরকি?
লুবনা চোখ ঝাপসা হয়ে এলো..
এতোকিছু নিতে ও তৈরী ছিলনা।
লুবনা পর্দার আড়াল থেকে বের হয়ে বললো,রুনা...দরজাটা লাগিয়ে দিয়ে যা।
রুনা থতমত খেয়ে বললো কেন?
লুবনা: আমি বের হবো,দরজা দিয়ে যা।
রুনা: কই যাস? খেয়ে যা।
লুবনা: মা এসেছে নিতে...
এখনি যেতে হবে রে।
আরেকদিন খাব এসে।
এই বলে চলে যেতে নিল।
রুনার বর পিছনে এসে বলে আপু আমি আগিয়ে দিব?
লুবনা পিছন ফিরে দেখে রুনা ওর বরের হাত চেপে দাড়িয়ে আছে।
লুবনা হেসে বলে না ভাই...যে মেয়ে মাতাল বরকে দেখেও ভয় পায়না সে এই দিন দুপুরে রাস্তা একাই চলতে পারে।
লুবনা ঘর থেকে বেরিয়ে গেল।
রুনার বর রাগ করে বলে সব শুনে গেল।
রুনা: শোনে শুনুক...ভালোই হয়েছে।আপদ আসে...
বান্ধবী এতই যদি হতো বিয়েতে দাওয়াত দিত...
রাস্তায় একা লুবনা হাটছে...কোথায় যাবে!কার কাছে যাবে!
এতো বড় দুনিয়া লুবনার যাবার জায়গা একটিও নেই...একটিও না..
" চলবে...................
No comments
info.kroyhouse24@gmail.com