Breaking News

গল্পঃ অভিমান । পর্ব- ৩য়। লেখাঃ পাগল লেখক

- সেদিন প্রথম কাউকে ফোন দিতে গিয়ে ঘাবরে গিয়েছিলাম । তার পরও ফোন দিয়েছিলাম । ফোন দেওয়ার সাথে সাথেই রিসিভ করলো মেঘা । যেন আমার ফোনের অপেক্ষায় ছিলো ।
.
- হ্যালো ...( আবির )
.
- হুমম বলুন .( মেঘা )
.
- তুমি আবার আপনি করে বলছ ।
.
- সরি ....বল ....?
.
- ফোন দেওয়ার সাথে সাথেই যে রিসিভ করলে ....।
.
- তোমার ফোনের অপেক্ষাই ছিলাম । আর এখন আমার কথা মনে পরলো ।
.
- হুমম আসলেই দেরি হয়ে গেল ।
.
- এরপর দুজনের মাঝে অনেক কথা হলো ।
.
- কাল কি আমার স্কুলের সামনে একটু আসতে পারবা ......? ( মেঘা )
.
- কেন ....? (আবির )
.
- তোমাকে দেখবো তাই ...।
.
- আাচ্ছা দেখি কি করা যায় .......।
.
- পরের দিন সকালে ......
.
- মারিয়া ..মারিয়া ...কোথায় তুই .....।
.
- কি হলো ভাইয়া এভাবে ডাকছিস কেন ....?
.
- তারাতারি তৈরি হয়ে নে , তোকে স্কুলে নামিয়ে দিয়ে আমি কলেজে যাবো ....।
.
- কি ...ভাইয়া তোমার মতলব তো আমার কাছে ভালো লাগছে না । খবর কি .....?
.
- ওই মতলব মানে ....তুই একা একা স্কুল যাস । আমি ভাবলাম তোকে স্কুলে নামিয়ে দিয়ে আমি কলেজে যাব।
.
- নাহ ,,, তুই এটা ভাবার মানুষ না । আমি এতদিন এত করে বলেছি তুই তবুও আমায় নিয়ে যাস না । আর আজ নিজেই নিয়ে যেতে চাইছিস । নিশ্চই কোন গরবর আছে .....
.
- থাক তোকে যেতে হবে না । আমি একাই যাব ....
.
- আরে রাগিস কেন । একটু দাড়া আমি এক্ষনি আসছি ।
.
- স্কুল যাওয়ার পথে ......
.
- আচ্ছা ভাইয়া সত্যি করে বলতো । আমি একা যাই বলে তুই আমাকে নিয়ে যাচ্ছিস না কি অন্য কিছু ।
.
- আরে কিছু না । চুপ থাক তো । নাহলে এখানেই নামিয়ে দেব ....
.
- থাক নামাতে হবে না । আমি কিন্তু জানতে পারবো তোর মতলব টা কি ....?
.
-যখন জানবি তখন বুঝে নিস .....।
.
- আরে ভাইয়া স্কুলের গেটে দাড়িয়ে ওটা মেঘা আপু না ....?
.
- হবে হয়তো .....নাম এখন ..।
.
- একি মেঘা আপু তো এদিকেই আসছে ।
.
- আসুক তাতে আমার কি ...? ( আর আসার সময় পেলো না । একটু পরে আসলে কি হত ।)
.
- এই জন্যই তো বলি আজ সাহেবের এত তারা কিসের । কি ভাইয়া জল কতদুর গড়ালো ।
.
- একটা দিব থাপ্পর বেশী কথা বলিস ।
.
- দেখেছ মেঘা আপু তোমার সামনে আমাকে থাপ্পর মারতে চাইছে .....।
.
- তুমি ওকে রাগ হচ্ছো কেন ...? (মেঘা )
.
- তো কি করবো । দেখনা কিসব আজে বাজে কথা বলছে ।
.
- হয়েছে আর বলতে হবে না । আমি যাচ্ছি তোমরা মনের সুখে কথা বলো । ....( মারিয়া )
.
- চলো ওই দিকটায় একটু বসি । ( আবির )
.
- তুমি কলেজ এ যাবা না । ( মেঘা )
.
- একদিন কলেজ না গেলে কিছুই হবে না ।
.
- তাহলে চলো ......
.
- সেদিন দুজনে অনেক কথা বলছিলাম । সেদিন থেকে দুজনের সম্পর্ক অনেকটা গাড়ো হয় । আমরা দুজনেই বুঝতে পারি যে আমরা একে অপরকে ভালোবেসে ফেলেছি । কিন্তু কেউ কাউকে বলার সাহস পাচ্ছিলাম না । এদিকে মারিয়াও অনেকটা বুঝতে পেরেছিলো যে আরা দুজন একে অপরের প্রতি দুর্বল । আমিও অস্থির হয়ে উঠি মেঘাকে ভালোবাসার কথাটা বলার জন্য । কিন্তু কিভাবে বলবো তার সাহস পাচ্ছিলাম না ।
.
- ডিসেম্বর মাসের পনেরো তারিখ মেঘার জন্মদিন ছিলো । ভেবেছিলাম সেদিনই ওকে ভালোবাসার কথাটা বলে দিব । তাই ওর জন্য একটা আংটি কিনে রাখি ।
.
- মেঘার জন্মদিনের আগের রাতে মেঘা আমাকে ফোন দিয়ে বলে ওর জন্মদিনে যেন নীল পান্জাবী পরে যাই । যেদিন মেঘার জন্মদিন সেদিন আমরা সবাই একসাথে মেঘাদের বাসায় গিয়েছিলাম । যাওয়ার সময় মারিয়া আমার কানে কানে বলেছিলো ভাইয়া আজ মনের কথাটা মেঘা আপুকে বলে দিস । সেদিন ওর কথার কোন পতিক্রিয়া আমি দিতে পারিনি ।
.
- আরে বন্ধু আসো ভিতরে আসো । কেমন আছেন ভাবি । ( আংকেল )
.
- জ্বী ভাই ভালো আছি ....( মা )
.
- তার পর আমরা অনেকের সাথেই পরিচিত হলাম । কিন্তু মন যেন শুধু মেঘাকে দেখার জন্য ব্যকুল হয়ে আছে । তাই বার বার চারপাশে তাকাচ্ছিলাম ।
.
- কি ভাইয়া এত চারপাশে কি দেখছো । ধৈর্য ধরো ,, দেখবে ঠিক চলে আসবে ।
.
- উফফফ ....এই মেয়েতো দেখি আমায় একটুও শান্তিতে থাকতে দিবে না । সব সময় আমার পিছে লেগে থাকে ।
.
- একটু পর মেঘা ওর রুম থেকে বের হলো ....আমি সেদিন ওকে দেখে মুগ্ধ হয়েছিলাম । যেন আমার চোখের সামন দিয়ে কোন নীল পরি আসছিলো । সেদিন ওকে নীল শাড়িতে অনেক সুন্দর লাগছিলো । তখন বুঝতে পারছিলাম ও কেন আমায় নীল পান্জাবী পরে আসতে বলছিলো ।
.
- আসার সময় মেঘাও আমার দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে ছিলো । ওর চোখের ওই কামুক দৃষ্টি টা আমাকে এতই জড়িয়ে নিয়েছিলো যে মনে হয়েছিলো সারাজীবন ওই দৃষ্টিতে ডুবে থাকি ।
.
- তারপর মেঘার জন্মদিনের কাজ শুরু হতে লাগলো । আর আমি ভাবছি কিভাবে ওকে আমার মনের কথাটা বলব ।
.
- তারপর মমবাতি নিভিয়ে কেক কাটা শুরু হয়ে গেল । মেঘা কয়েকজন কে নিজ হাতে কেক খাওয়ালো । তার পর এক পিচ কেক নিয়ে আমার সামনে এসে দারিয়ে বলল । হা করো .....
.
- আমিয়ো আর কিছি না বলে হা করলাম ।
.
- ও আমাকে কেক খাইয়ে দেওয়ার সময় আস্তে করে বলল । সারা জীবন যেন খাওয়াতে পারি সেই অধিকারটা দিলেই তো হয় । বলে আস্তে করে আমার হাতে একটা চিরকুট দিয়ে চলে গেল ।
.
- আমিতো অবাক হয়ে দাড়িয়ে আছি ওর কথাটা শুনে । তারপর একটু সাইড হয়ে চিরকুট টা খুললাম । ওখানে লেখা " তোমাকে আজ খুব সুন্দর লাগছে । একদম আমার মনের রাজপুত্রের মতো " । লেখাটি পরার পর নিজের ভিতর একটা ভালোলাগা অনুভুত হতে লাগলো । তরপর জন্মদিনের সকল কাজ শেষ । আংকেল আর বাবা মা বসে গল্প করছেন । সেই সময় ফোনে একটা মেসেজ আসে । মেসেজ টা ছিলো " একটু ছাদে আসবা "
.
- আমি আর একটুও দেড়ি না করে ছাদে চলে গেলাম । গিয়ে দেখি মারিয়া আর মেঘা গল্প করছে । আমায় আসতে দেখে মারিয়া বলল...ওই যে তোমার মজনু এসে গেছে ওর সাথেই এখন গল্প করো আমি গেলাম .....বলেই চলে গেল....।
.
- আমি গিয়ে মেঘার পাশে দারালাম ।
.
- আজ তোমাকে খুব সুন্দর লাগছে । ( আবির )
.
- মেঘার মুখে লজ্জার ছাপ দেখা গেল । বাঙ্গালী মেয়েদের লজ্জা ভরা মুখ সব সময়ই ছেলেদের আকর্ষন করে । যার ব্যতিক্রম আবিরও ছিলো না ।
.
- হয়েছে আর লজ্জা পেতে হবে না । আমার দিকে তাকাও ।
.
- মেঘা আবিরের দিকে তাকাতেই আবির মেঘার সামনে হাটু গেরে বসে পরে ....
.
- এই কি করছো .....
.
- তোমাকে আজ সারাজীবন আমাকে খাইয়ে দেওয়ার অধিকার দিব ।
.
- মেঘা চুপ ...
.
- তুমি কি আমার ভোরের আলো দেখার সঙ্গী হবে । হবে কি শীতের সকালের শিশির ভেজা ঘাসের উপর খালি পায়ে হাটার সঙ্গী । বেশী কিছু চাইবো না শুধু তোমার নরম হাতে একটু উষ্ম ছোয়া দিও । হবে কি আমার জোৎনা রাতের চাদ দেখার সঙ্গী । বেশী কিছু চাইবো না । শুধু জোৎনা রাতে তোমার কোলে মাথা রাখবো । আর তোমার ওই হাত দিয়ে আমার মাথায় একটা ভালোবেসে ছুয়ে দিও । করবে কি আমায় তোমার জীবনের সঙ্গী কথা দিচ্ছি কোনদিন তোমার বিশ্বাস ভাঙ্গবো না । জীবনে মরনে শুধু তোমারি রবো ।
.
- বলেই আবির মেঘার হাতে আংটি টা পরিয়ে দেয় । আর মেঘা কোন কথা না বলে সোজা এসে আবিরকে জড়িয়ে ধরে ......
.
- চলবে.........

No comments

info.kroyhouse24@gmail.com