অপমানের পর ভালোবাসা | ৫ম পর্ব
মেঘ অবনির হাতে চড় খেয়ে দাঁড়িয়ে রইলো।।
আর ভাবতে লাগলো কিছু দিন আগের অবনিকে যদি আবার ফিরে পেতাম কত ভালোই না হত??
তখন ভালো না বাসলেও অবনি আমার সাথে তো এমন ব্যাবহার করে নাই।।
মেঘ অফিস চলে গেলো না খেয়ে অবনি মেঘকে খাওয়ার জন্য অনেক বার বলেছিলো কিন্তু মেঘ বলছে তার অফিসে নাকি জরুরি কাজ আছে তাই আজ সকাল সকাল যেতে হবে।।
অবনিও কিছুটা অবাক কারন এর আগে মেঘকে যতই মেরেছে বা যাই করেছে মেঘ কখনো না খেয়ে অফিস যাই নী???
অবনির একা একা খেতে কেনো জানিনা ইচ্ছা করছিলো না।।।
অল্প কিছু খেয়ে অবনি রুম এ চলে গেলো
ফোন এর কাছে বসে আছে অবনি অনেকক্ষন হয়ে গেলো,,,
মেঘ তো প্রতিদিন এই টাইম এ ফোন করে কিন্তু আজ করলো না এটা ভেবে অবনি আরো বেশি অবাক হয়ে যায়।।
কিন্তু অবনি এটা ভেবে খুশি হয় আজ তাকে কেও জ্বালাতন করে নাই।।
বদটা আজ তাহলে ঠিক হয়েছে গেছে
তার কিছুক্ষণ পর মেঘ এর কল আসলো
মেঘঃকি করো আমি বউটা???
অবনিঃএই তোর বউ কে শুনি???আমি তোর বউ না??
আর তুই এতক্ষণ কই ছিলি আজ এতো দেরিতে ফোন দিলি যে??
মেঘঃবউ আর বলো না অফিস এ কাজের অনেক চাপ সব চাপ শেষ করে তোমাকে ফোন দিলাম.....
অবনিঃকিছু খেয়েছিস???
মেঘঃনা সময় পাই নাই।।
অবনিঃএই বদ তুই সকালে কিছু খাস নাই?? বিকাল হতে চললো এখনো কিছু খাস নাই???
তখন মেঘ বললো বাহ বাহ বউ টা আমার কত ভালো হয়ে গেছে আমার কত কেয়ার করছে
অবনিঃআমি মতেও তোর কেয়ার করছি না।।
তুই যদি অসুস্থ হয়ে পরস সেই আমাকেইই তো তোর সেবা করতে হবে।।কিন্তু তুই হলি অসহ্য একটা তোর কাছে যেতেও ইচ্ছা করে না।।।তাই যাতে তুই সুস্থ থাকছ তাই খেতে বলছি যা এখনি হোটেলে গিয়ে কিছু খেয়ে নে।।
মেঘ বললো তুমি খেয়েছো??
অবনিঃনা খায়নি??
মেঘঃতুমি না খেয়ে আছো কেনো??
অবনিঃএমনি যা তুই খেতে যা।।আমি খেয়ে নিচ্ছি
এই বলে অবনি কলটা কেটে দিলো তারপর
অবনি খেতে গেলো।।
অন্যদিকে মেঘ ভাবছ
অবনির হঠাৎ কি হলো
আমার খাওয়া নিয়ে পরছে কেনো
কোনো দিন তো একবার এর জন্য জিজ্ঞাসো করে নাই আমি খেয়েছি কিনা???
কিন্তু
থাক বাবা আমার এই সব ভেবে কাজ নাই
পরে সত্যি যদি অসুস্থ হয়ে পড়ি,,, আমাকে দেখবে কে??
অবনি তো বলেই দিলো আমি নাকি অবনির কাছে অসহ্য
এই ভেবে মেঘ খেতে গেলো
অবনি খেতে বসেছে,,কি ভেবে জেনো মেঘকে কল দিলো
মেঘঃহ্যা বউ বলো
অবনিঃঅই তরে না বললাম আমাকে বউ বলবি না আবার বললি কেনো???
মেঘঃআচ্ছা বাবা সরি,আর বলবো না,,
অবনিঃখেয়েছিস???
মেঘঃহুম খাচ্ছি,,,তুমি খেয়েছো,,
অবনিঃনা তবে এখন খাবো,,,রাখি
এই বলে অবনি কলটা কেটে খেতে বলে পড়লো,,,
অবনি এর অপমান সয্য চড় সয্য করতে করতে তাদের বিয়ের ১বছর হতে চলেছে
মেঘ রাত করে বাসায় আসলো
এসে অবনিকে নিয়ে খাবার টেবিলে খেতে গেলো।।
তখন মেঘ এর মনে পড়লো আগামি কাল তাদের প্রথম বিবাহ বার্ষিক তাই তখন মেঘ বললো আচ্ছা বাবা
কাল তো আমাদের বিয়ের ১বছর পুরন হবে।।আমি আপনার মেয়ের কাছে যদি কিছু চাই আপনার মেয়ে আমাকে দিবে তো???
মেঘ এই কথাটি অবনির বাবার সামনে বললো এই কারনে কারন অবনিকে বললে অবনি কোনো দিন রাজি হবে না,,,কিন্তু অবনি তার বাবার কথা ফেলতে পারবে না
তখন অবনির বাবা বললো হ্যা বাবা বলো নিশ্চয় রাখবে,,কি মা অবনি রাখবি তো মেঘ বাবার কথা???
অবনিঃআগে তো শুনি কি কথা তার পর না হয় ভেবে দেখবো
তখন অবনির বাবা বললো আচ্ছা বাবা বলো এবার তুমি আমার মেয়ের কাছে থেকে কি চাও।।
তেমন কিছু না আব্বু বিয়ের ১বছর হয়ে গেলো
শুনলাম অবনি খুব ভালো রান্না করতে পারে তাই যদি কাল অবনি রান্না করতো
এই কথা শুনে অবনির বাবা হাসতে হাসতে বললো এই ব্যাপার
আচ্ছা মা তুমি কাল মেঘ এর জন্য রান্না করবে কেমন
যদিও অবনি মেঘ এর কথা শুনে ক্ষেপে গেছে
কিন্তু বাবার সামনে না করা যাবে না তাই অবনি রাজি হয়ে গেলো।।।
বললো ঠিক আছে বাবা,,,
আমি কাল রান্না করবো
এই বলে খাওয়া শেষ করে তারা রুম এ চলে গেলো অবনি কিছু না বলেই শুয়ে পরলো।।
কারন অবনি জানে কিছু বলেও কিছু লাভ হবে না মেঘ এর জন্য রান্না করতেই হবে।।
পরদিন সকালে অবনি খুব ভোর এউঠে রান্নার কাজে মন দিলো
মেঘ উঠে দেখে অবনি বিছানায় নায়
মেঘ ভাবলো গেলো কই মেয়েটা
তারপরর মেঘ এর মনে পরলো আজ তো অবনির আমার জন্য রান্না করার কথা ছিলো যাই দেখি তো।।।
মেঘ গিয়ে দেখে অবনি রান্না করছে অনেক সুন্দর ঘ্রান বের হয়েছে।।
অবনি মেঘকে দেখে বললো এভাবে কি দেখছো যাও ফ্রেশ হয়ে আসো আমি খাবার দিচ্ছি
মেঘ তারপর উপরে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে এসে খেতে বসলো
কিন্তু মেঘ এর চোখ মুখ দেখে বোঝা যাচ্ছিলো কিছু একটা গণ্ডগোল হয়েছে
মেঘ চুপচাপ খেয়ে অফিস এর জন্য বের হয়ে গেলো
অবনির বাবা খেতে বসেছে যেই খাবার মুখে নিয়েছে বললো তাড়াতাড়ি আমাকে পানি দাও কি ঝাল কি ঝাল।।।
অবনির বাবাব বললো কিরে এত ঝাল দিয়ে তরকারি রান্না করেছিস কেনো???
এতো মুখেই নেওয়া যায় না।।
অবনিঃবাবা তোমার কোথাও ভুল হচ্ছে মেঘ তো মাত্র এই তরকারী দিয়ে খেয়ে অফিস চলে গেলো।।।
বলিস কি এতো ঝাল তরকারি দিয়ে খেয়ে গেলো
তুই একটু মুখে নিয়ে দেখতো খেতে পারিস কিনা???
অবনি যেই একটু মুখে নিয়েছে
তখন বুঝতে পারলো তরকারি সত্যি অনেক ঝাল হয়েছে।।
অবনি অনেকটা অবাক হয়ে গেলো
এতো ঝাল হয়েছে তরকারী কিন্তু মেঘ একবারো বললো না
সেদিন দুপুরে মেঘ আর অবনিকে ফোন দেইনি
রাত এ মেঘ বাসায় আসলো রুম এ গিয়ে দেখে অবনি শুয়ে আছে।।
মেঘ বললো এরকম করার কি খুব দরকার ছিলো???
অবনিঃকি রকম??
মেঘঃআমি না হয় তোমার হাত এর রান্না খেতে চেয়েছিলাম।।।তুম
ি আগেই বলে দিতে তুমি রান্না করতে পারবা না,,,
এভাবে প্রতিশোধ নেওয়ার কি ছিলো।।।
অবনিঃ বিশ্বাস করো আমি ইচ্ছা করে তরকারি তে এতো ঝাল দেইনি।।
মেঘঃথাক আর মিথ্যা বলতে হবে না,,,,,,,,,,,
এই কথা বলে মেঘ চলে গেলো
অবনি কিন্ত ইচ্ছা করে এতো ঝাল দেইনি কিভাবে কি হয়ে গেলো সেটা নিয়েই অবনি ভাবছে
মেঘ আসার পর অবনি জিজ্ঞাস করলো রাত এ কিছু খেয়েছো??
মেঘঃনা
অবনিঃচলো নিচে চলো খাবো।।
মেঘঃআমার ক্ষিদে নেই,সারা দিন পানি খেয়েই পেট ভরে গেছে
মেঘ বাবা একথা বললে কি করে হবে
মেয়েটা সারাদিন না খেয়ে আছে আবার কষ্ট করে তোমার জন্য রান্ন করেছে আর তুমি বলছো খাবে না(((অবনির বাবা কথাটা বললো))
মেঘঃমানে কি বলছেন
মানে হলো তুমি চলে যাবার পর আমি আর অবনি বুঝতে পেরেছিলাম কতটা ঝাল হয়েছে
এতো ঝাল হয়েছে যে একটু মুখে নেওয়া যাচ্ছিলো না
পরে অবনি আবার তোমার জন্য রান্না করেছে,,,কিন্তু মেয়েটা সকাল থেকে কিছু খায়নি।।।
যতবার বলেছি মা খেয়ে নে
মেয়েটা বলেছে যার জন্য রান্না করেছে আগে সে এসে খাবে তারপর
একথা শুনে মেঘ এর চোখে পানি চলে আসলো হয়তো আনন্দের পানি।।।
অবনি তার জন্য না খেয়ে আছে এটা ভেবে
তারপর তারা নিচে চলে গেলো
মেঘ দেখলো যা রান্না হয়েছে বেশির ভাগ মিষ্টি জাতীয় খাবার
অবনি অনেক কিছু রান্না করেছে মেঘ এর জন্য
মেঘ খাচ্চে আর বলছে বাহ দারুন মজা তো
আমার বউটা অনেক ভালো রান্না করতে পারে দেখছি।
খাবার শেষ করে এসে মেঘ রুম এ আসলো কিছুক্ষণ পর অবনি আসলো
মেঘ বললো সকালে ঝাল খাইয়ে এখন মিষ্টি খাওয়ানো হলো???
অবনিঃআমি সরি আসলে আমি নিজেও বুঝতে পারি নাই তরকারি তে এতো ঝাল কি করে হয়েছিল।।
মেঘ তূমি কিন্তু অনেক ভালো রান্না করতে পারো
অবনিঃহয়ছে আর পামম দিতে হবে না
এবার ঘুমিয়ে পরো
মেঘ ঘুমিয়ে পরলো
এভাবে চলে গেলো আরো বেশ কিছুদিন
মেঘকে কিন্তু অবনি এখনো তার কাছে যাবার অধিকার দেই নাই।।।।
একদিন মেঘ হঠাৎ করে দুপুরে বাসায় চলে আসলো
এসে দেখে অবনি ঘুমাচ্ছে
মেঘ ডাক দিলো কিন্ত অবনির ঘুম ভাঙলো না
তাই মেঘ অবনিকে ধাক্কা দিতে শুরু করলো।।
অবনি রেগে উঠে গিয়ে
মেঘকে চড় বসিয়ে বলতে শুরু করলো অই ফকির তোর সাথে একটু ভালো ব্যাবহার করেছি বলে
তুই আমাকে স্পর্শ করলো???
তোর সাথে ভালো ব্যাবহার করাটাই আমার ভুল হয়েছে
এই বলে অবনি মেঘকে আরো একটা চড় বসিয়ে দিলো।।।
মেঘ বললো আমার একটা কথা বলার ছিলো
অবনিঃআমি তোর কোনো কথা শুনতে চাই না
এই বলে অবনি সেখান থেকে চলে গেলো
রাত হয়ে গেছে
মেঘ এখনো বাসায় ফিরেনী সেই কখন বের হয়েছে
অনেক রাত অবধি অবনি জেগে ছিলো কিন্তু মেঘ বাসায় আসলো না
অবনি খুশি হলো যাক আজ আর আপদটাকে সহ্য করতে হবে না
পরদিন সকাল হয়ে গেলো তাও মেঘ বাসায় আসেনি
সকাল পেরিয়ে দুপুর দুপুর পেরিয়ে রাত হয়ে গেলো মেঘের আসার কোনো খবরই নাই সারা দিন অবনি খুব খুশি ছিলো যে মেঘ আর তাকে জ্বালাতন করছে না এটা ভেবে
রাত এ খাবার টেবেলি অবনি খেতে বসেছে ঠিক তখনি মেঘ এর কথা মনে পরে গেলো
প্রতিদিন কত মজার মজার কথা বলে খাবার টেবিলে
কিন্তু আজ কেমন জানি ফাকা ফাকা লাগছে টেবিল টা।।
অবনি না খেয়ে রুম এ চলে আসলো
রুম এ আসলো ঘর তাও ফাকা ফাকা লাগতে শুরু করেছে
অবনির চোখে হঠাৎ করেই পানি চলে আসলো মেঘকে ছাড়া সব কিছু এতো ফাকা ফাকা লাগছে কেনো
আর মেঘ গেলোই বা কোথায় ফোন দিচ্ছে ফোন অফ বলছে,,,
যেখানে মেঘ ঘুমায় অবনি সেখানে বসে রইলো
ছেলেটা কত হাসিখুশি ছিলো
এতো অপমান সয্য করেছে মার খেয়েছে তবুও আমাকে কিছু বলেনি অবনি এই সব ভাবতে লাগলো
মেঘকে দেখতে খুব ইচ্ছে করছে অবনির
কিন্তু মেঘ এর ছবি তার কাছে নেইই
থাকার কথাও না
হঠাৎ। অবনির মনে পরলো তাদের বিয়ের ছবি তার বাবার ঘরে আছে অবনি তার বাবার ঘর থেকে তাদের বিয়ের ছবি এনে দেখতে লাগলো কত হাসিখুশি একটা ছেলে
অবনি মাথায় ঘোমটা দিয়ে বসে আছে সাথে মেঘ
অবনি মেঘের ছবির উপর হাত বোলাতে লাগলো
অনেক মিস করছে মেঘকে
মেঘকে ছাড়া অবনির কিছু ভালো লাগছে না
কেনো জানিনা অবনির চোখ দিয়ে অনবরত পানি পরছে
এই সব ভাবতে ভাবতে অবনি তাদের
বিয়ের ছবি বুকে নিয়ে অবনি মেঘ যেখানে ঘুমাতো সেখানেই ঘুমিয়ে পরলো
চলবে
আর ভাবতে লাগলো কিছু দিন আগের অবনিকে যদি আবার ফিরে পেতাম কত ভালোই না হত??
তখন ভালো না বাসলেও অবনি আমার সাথে তো এমন ব্যাবহার করে নাই।।
মেঘ অফিস চলে গেলো না খেয়ে অবনি মেঘকে খাওয়ার জন্য অনেক বার বলেছিলো কিন্তু মেঘ বলছে তার অফিসে নাকি জরুরি কাজ আছে তাই আজ সকাল সকাল যেতে হবে।।
অবনিও কিছুটা অবাক কারন এর আগে মেঘকে যতই মেরেছে বা যাই করেছে মেঘ কখনো না খেয়ে অফিস যাই নী???
অবনির একা একা খেতে কেনো জানিনা ইচ্ছা করছিলো না।।।
অল্প কিছু খেয়ে অবনি রুম এ চলে গেলো
ফোন এর কাছে বসে আছে অবনি অনেকক্ষন হয়ে গেলো,,,
মেঘ তো প্রতিদিন এই টাইম এ ফোন করে কিন্তু আজ করলো না এটা ভেবে অবনি আরো বেশি অবাক হয়ে যায়।।
কিন্তু অবনি এটা ভেবে খুশি হয় আজ তাকে কেও জ্বালাতন করে নাই।।
বদটা আজ তাহলে ঠিক হয়েছে গেছে
তার কিছুক্ষণ পর মেঘ এর কল আসলো
মেঘঃকি করো আমি বউটা???
অবনিঃএই তোর বউ কে শুনি???আমি তোর বউ না??
আর তুই এতক্ষণ কই ছিলি আজ এতো দেরিতে ফোন দিলি যে??
মেঘঃবউ আর বলো না অফিস এ কাজের অনেক চাপ সব চাপ শেষ করে তোমাকে ফোন দিলাম.....
অবনিঃকিছু খেয়েছিস???
মেঘঃনা সময় পাই নাই।।
অবনিঃএই বদ তুই সকালে কিছু খাস নাই?? বিকাল হতে চললো এখনো কিছু খাস নাই???
তখন মেঘ বললো বাহ বাহ বউ টা আমার কত ভালো হয়ে গেছে আমার কত কেয়ার করছে
অবনিঃআমি মতেও তোর কেয়ার করছি না।।
তুই যদি অসুস্থ হয়ে পরস সেই আমাকেইই তো তোর সেবা করতে হবে।।কিন্তু তুই হলি অসহ্য একটা তোর কাছে যেতেও ইচ্ছা করে না।।।তাই যাতে তুই সুস্থ থাকছ তাই খেতে বলছি যা এখনি হোটেলে গিয়ে কিছু খেয়ে নে।।
মেঘ বললো তুমি খেয়েছো??
অবনিঃনা খায়নি??
মেঘঃতুমি না খেয়ে আছো কেনো??
অবনিঃএমনি যা তুই খেতে যা।।আমি খেয়ে নিচ্ছি
এই বলে অবনি কলটা কেটে দিলো তারপর
অবনি খেতে গেলো।।
অন্যদিকে মেঘ ভাবছ
অবনির হঠাৎ কি হলো
আমার খাওয়া নিয়ে পরছে কেনো
কোনো দিন তো একবার এর জন্য জিজ্ঞাসো করে নাই আমি খেয়েছি কিনা???
কিন্তু
থাক বাবা আমার এই সব ভেবে কাজ নাই
পরে সত্যি যদি অসুস্থ হয়ে পড়ি,,, আমাকে দেখবে কে??
অবনি তো বলেই দিলো আমি নাকি অবনির কাছে অসহ্য
এই ভেবে মেঘ খেতে গেলো
অবনি খেতে বসেছে,,কি ভেবে জেনো মেঘকে কল দিলো
মেঘঃহ্যা বউ বলো
অবনিঃঅই তরে না বললাম আমাকে বউ বলবি না আবার বললি কেনো???
মেঘঃআচ্ছা বাবা সরি,আর বলবো না,,
অবনিঃখেয়েছিস???
মেঘঃহুম খাচ্ছি,,,তুমি খেয়েছো,,
অবনিঃনা তবে এখন খাবো,,,রাখি
এই বলে অবনি কলটা কেটে খেতে বলে পড়লো,,,
অবনি এর অপমান সয্য চড় সয্য করতে করতে তাদের বিয়ের ১বছর হতে চলেছে
মেঘ রাত করে বাসায় আসলো
এসে অবনিকে নিয়ে খাবার টেবিলে খেতে গেলো।।
তখন মেঘ এর মনে পড়লো আগামি কাল তাদের প্রথম বিবাহ বার্ষিক তাই তখন মেঘ বললো আচ্ছা বাবা
কাল তো আমাদের বিয়ের ১বছর পুরন হবে।।আমি আপনার মেয়ের কাছে যদি কিছু চাই আপনার মেয়ে আমাকে দিবে তো???
মেঘ এই কথাটি অবনির বাবার সামনে বললো এই কারনে কারন অবনিকে বললে অবনি কোনো দিন রাজি হবে না,,,কিন্তু অবনি তার বাবার কথা ফেলতে পারবে না
তখন অবনির বাবা বললো হ্যা বাবা বলো নিশ্চয় রাখবে,,কি মা অবনি রাখবি তো মেঘ বাবার কথা???
অবনিঃআগে তো শুনি কি কথা তার পর না হয় ভেবে দেখবো
তখন অবনির বাবা বললো আচ্ছা বাবা বলো এবার তুমি আমার মেয়ের কাছে থেকে কি চাও।।
তেমন কিছু না আব্বু বিয়ের ১বছর হয়ে গেলো
শুনলাম অবনি খুব ভালো রান্না করতে পারে তাই যদি কাল অবনি রান্না করতো
এই কথা শুনে অবনির বাবা হাসতে হাসতে বললো এই ব্যাপার
আচ্ছা মা তুমি কাল মেঘ এর জন্য রান্না করবে কেমন
যদিও অবনি মেঘ এর কথা শুনে ক্ষেপে গেছে
কিন্তু বাবার সামনে না করা যাবে না তাই অবনি রাজি হয়ে গেলো।।।
বললো ঠিক আছে বাবা,,,
আমি কাল রান্না করবো
এই বলে খাওয়া শেষ করে তারা রুম এ চলে গেলো অবনি কিছু না বলেই শুয়ে পরলো।।
কারন অবনি জানে কিছু বলেও কিছু লাভ হবে না মেঘ এর জন্য রান্না করতেই হবে।।
পরদিন সকালে অবনি খুব ভোর এউঠে রান্নার কাজে মন দিলো
মেঘ উঠে দেখে অবনি বিছানায় নায়
মেঘ ভাবলো গেলো কই মেয়েটা
তারপরর মেঘ এর মনে পরলো আজ তো অবনির আমার জন্য রান্না করার কথা ছিলো যাই দেখি তো।।।
মেঘ গিয়ে দেখে অবনি রান্না করছে অনেক সুন্দর ঘ্রান বের হয়েছে।।
অবনি মেঘকে দেখে বললো এভাবে কি দেখছো যাও ফ্রেশ হয়ে আসো আমি খাবার দিচ্ছি
মেঘ তারপর উপরে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে এসে খেতে বসলো
কিন্তু মেঘ এর চোখ মুখ দেখে বোঝা যাচ্ছিলো কিছু একটা গণ্ডগোল হয়েছে
মেঘ চুপচাপ খেয়ে অফিস এর জন্য বের হয়ে গেলো
অবনির বাবা খেতে বসেছে যেই খাবার মুখে নিয়েছে বললো তাড়াতাড়ি আমাকে পানি দাও কি ঝাল কি ঝাল।।।
অবনির বাবাব বললো কিরে এত ঝাল দিয়ে তরকারি রান্না করেছিস কেনো???
এতো মুখেই নেওয়া যায় না।।
অবনিঃবাবা তোমার কোথাও ভুল হচ্ছে মেঘ তো মাত্র এই তরকারী দিয়ে খেয়ে অফিস চলে গেলো।।।
বলিস কি এতো ঝাল তরকারি দিয়ে খেয়ে গেলো
তুই একটু মুখে নিয়ে দেখতো খেতে পারিস কিনা???
অবনি যেই একটু মুখে নিয়েছে
তখন বুঝতে পারলো তরকারি সত্যি অনেক ঝাল হয়েছে।।
অবনি অনেকটা অবাক হয়ে গেলো
এতো ঝাল হয়েছে তরকারী কিন্তু মেঘ একবারো বললো না
সেদিন দুপুরে মেঘ আর অবনিকে ফোন দেইনি
রাত এ মেঘ বাসায় আসলো রুম এ গিয়ে দেখে অবনি শুয়ে আছে।।
মেঘ বললো এরকম করার কি খুব দরকার ছিলো???
অবনিঃকি রকম??
মেঘঃআমি না হয় তোমার হাত এর রান্না খেতে চেয়েছিলাম।।।তুম
ি আগেই বলে দিতে তুমি রান্না করতে পারবা না,,,
এভাবে প্রতিশোধ নেওয়ার কি ছিলো।।।
অবনিঃ বিশ্বাস করো আমি ইচ্ছা করে তরকারি তে এতো ঝাল দেইনি।।
মেঘঃথাক আর মিথ্যা বলতে হবে না,,,,,,,,,,,
এই কথা বলে মেঘ চলে গেলো
অবনি কিন্ত ইচ্ছা করে এতো ঝাল দেইনি কিভাবে কি হয়ে গেলো সেটা নিয়েই অবনি ভাবছে
মেঘ আসার পর অবনি জিজ্ঞাস করলো রাত এ কিছু খেয়েছো??
মেঘঃনা
অবনিঃচলো নিচে চলো খাবো।।
মেঘঃআমার ক্ষিদে নেই,সারা দিন পানি খেয়েই পেট ভরে গেছে
মেঘ বাবা একথা বললে কি করে হবে
মেয়েটা সারাদিন না খেয়ে আছে আবার কষ্ট করে তোমার জন্য রান্ন করেছে আর তুমি বলছো খাবে না(((অবনির বাবা কথাটা বললো))
মেঘঃমানে কি বলছেন
মানে হলো তুমি চলে যাবার পর আমি আর অবনি বুঝতে পেরেছিলাম কতটা ঝাল হয়েছে
এতো ঝাল হয়েছে যে একটু মুখে নেওয়া যাচ্ছিলো না
পরে অবনি আবার তোমার জন্য রান্না করেছে,,,কিন্তু মেয়েটা সকাল থেকে কিছু খায়নি।।।
যতবার বলেছি মা খেয়ে নে
মেয়েটা বলেছে যার জন্য রান্না করেছে আগে সে এসে খাবে তারপর
একথা শুনে মেঘ এর চোখে পানি চলে আসলো হয়তো আনন্দের পানি।।।
অবনি তার জন্য না খেয়ে আছে এটা ভেবে
তারপর তারা নিচে চলে গেলো
মেঘ দেখলো যা রান্না হয়েছে বেশির ভাগ মিষ্টি জাতীয় খাবার
অবনি অনেক কিছু রান্না করেছে মেঘ এর জন্য
মেঘ খাচ্চে আর বলছে বাহ দারুন মজা তো
আমার বউটা অনেক ভালো রান্না করতে পারে দেখছি।
খাবার শেষ করে এসে মেঘ রুম এ আসলো কিছুক্ষণ পর অবনি আসলো
মেঘ বললো সকালে ঝাল খাইয়ে এখন মিষ্টি খাওয়ানো হলো???
অবনিঃআমি সরি আসলে আমি নিজেও বুঝতে পারি নাই তরকারি তে এতো ঝাল কি করে হয়েছিল।।
মেঘ তূমি কিন্তু অনেক ভালো রান্না করতে পারো
অবনিঃহয়ছে আর পামম দিতে হবে না
এবার ঘুমিয়ে পরো
মেঘ ঘুমিয়ে পরলো
এভাবে চলে গেলো আরো বেশ কিছুদিন
মেঘকে কিন্তু অবনি এখনো তার কাছে যাবার অধিকার দেই নাই।।।।
একদিন মেঘ হঠাৎ করে দুপুরে বাসায় চলে আসলো
এসে দেখে অবনি ঘুমাচ্ছে
মেঘ ডাক দিলো কিন্ত অবনির ঘুম ভাঙলো না
তাই মেঘ অবনিকে ধাক্কা দিতে শুরু করলো।।
অবনি রেগে উঠে গিয়ে
মেঘকে চড় বসিয়ে বলতে শুরু করলো অই ফকির তোর সাথে একটু ভালো ব্যাবহার করেছি বলে
তুই আমাকে স্পর্শ করলো???
তোর সাথে ভালো ব্যাবহার করাটাই আমার ভুল হয়েছে
এই বলে অবনি মেঘকে আরো একটা চড় বসিয়ে দিলো।।।
মেঘ বললো আমার একটা কথা বলার ছিলো
অবনিঃআমি তোর কোনো কথা শুনতে চাই না
এই বলে অবনি সেখান থেকে চলে গেলো
রাত হয়ে গেছে
মেঘ এখনো বাসায় ফিরেনী সেই কখন বের হয়েছে
অনেক রাত অবধি অবনি জেগে ছিলো কিন্তু মেঘ বাসায় আসলো না
অবনি খুশি হলো যাক আজ আর আপদটাকে সহ্য করতে হবে না
পরদিন সকাল হয়ে গেলো তাও মেঘ বাসায় আসেনি
সকাল পেরিয়ে দুপুর দুপুর পেরিয়ে রাত হয়ে গেলো মেঘের আসার কোনো খবরই নাই সারা দিন অবনি খুব খুশি ছিলো যে মেঘ আর তাকে জ্বালাতন করছে না এটা ভেবে
রাত এ খাবার টেবেলি অবনি খেতে বসেছে ঠিক তখনি মেঘ এর কথা মনে পরে গেলো
প্রতিদিন কত মজার মজার কথা বলে খাবার টেবিলে
কিন্তু আজ কেমন জানি ফাকা ফাকা লাগছে টেবিল টা।।
অবনি না খেয়ে রুম এ চলে আসলো
রুম এ আসলো ঘর তাও ফাকা ফাকা লাগতে শুরু করেছে
অবনির চোখে হঠাৎ করেই পানি চলে আসলো মেঘকে ছাড়া সব কিছু এতো ফাকা ফাকা লাগছে কেনো
আর মেঘ গেলোই বা কোথায় ফোন দিচ্ছে ফোন অফ বলছে,,,
যেখানে মেঘ ঘুমায় অবনি সেখানে বসে রইলো
ছেলেটা কত হাসিখুশি ছিলো
এতো অপমান সয্য করেছে মার খেয়েছে তবুও আমাকে কিছু বলেনি অবনি এই সব ভাবতে লাগলো
মেঘকে দেখতে খুব ইচ্ছে করছে অবনির
কিন্তু মেঘ এর ছবি তার কাছে নেইই
থাকার কথাও না
হঠাৎ। অবনির মনে পরলো তাদের বিয়ের ছবি তার বাবার ঘরে আছে অবনি তার বাবার ঘর থেকে তাদের বিয়ের ছবি এনে দেখতে লাগলো কত হাসিখুশি একটা ছেলে
অবনি মাথায় ঘোমটা দিয়ে বসে আছে সাথে মেঘ
অবনি মেঘের ছবির উপর হাত বোলাতে লাগলো
অনেক মিস করছে মেঘকে
মেঘকে ছাড়া অবনির কিছু ভালো লাগছে না
কেনো জানিনা অবনির চোখ দিয়ে অনবরত পানি পরছে
এই সব ভাবতে ভাবতে অবনি তাদের
বিয়ের ছবি বুকে নিয়ে অবনি মেঘ যেখানে ঘুমাতো সেখানেই ঘুমিয়ে পরলো
চলবে
No comments
info.kroyhouse24@gmail.com