Breaking News

রোমান্টিক অত্যাচার | পর্ব-২

মাহিঃ তুমি কি কারণে আমার কাছে ওকে পাঠালে?আমি বলেছি আমার সমস্ত কাজ আমাকে দেখাশোনা তোমাকেই করতে হবে।কারণ আমার এই অবস্থার জন্য তুমি দায়ী।তাই তুমি ছাড়া অন্য কেউ আমাকে দেখাশোনা করতে আসলে তাকে কিন্তু আমি চাকরি থেকে বের করে দিবো।দরকার হলে সবকয়টা সার্ভেন্টকে বের করে দেবো।তখন বুঝবে মজা।
আশফিঃআচ্ছা আর এমন হবেনা।তুমি প্লিজ একটু শান্ত হও।এতো চিল্লাচিল্লি করলে তোমার প্রবলেম হতে পারে।আমি আর তোমার কাছে অন্য কাউকে পাঠাবোনা।আমি নিজে এসে তোমার যা প্রয়োজন সেটা আমি দেখবো আর আমিই করবো।
মাহিঃ তাহলে তুমি কেনো ওকে পাঠালে?নিজে কেনো আসলেনা?
আশফিঃআমি আসলে আমার কিছু ক্লাইন্টদের সাথে কথা বলছিলাম।
মাহিঃ আমি কোনো অজুহাত শুনতে চাইনা।আমি তোমার কাছে খাবোনা তুমি যাও।আমি নিজেই খেয়ে নিবো।আর এখন তুমি আমার রুম থেকে বের হও।আজ তোমার আমার বেডে কোনো জায়গা নেই।
আশফিঃএটা কি বলছো তুমি?তাহলে আমি কোথায় থাকবো? আর তোমাকে ছাড়া তো আমার ঘুম ই আসতে চাইনা।
মাহিঃ জানিনা কিছু।এক্ষণি তুমি আমার রুম থেকে বের হও।না হলে কিন্তু আগামি ১ সপ্তাহের ভেতোরেও আমার মুখ দেখতে পারবেনা।
আশফিঃনাআআআ…. তাহলে তো আমি মরেই যাবো
এমন কোরোরা ডিয়ার প্লিজ।
মাহিঃ এই এসব আলতু ফালতু কথা বলবে না কিন্তু বলে দিলাম।না হলে এর থেকেও খুব খারাপ হবে।
আশফিঃ মাহি মাই নাইট কুইন প্লিজ মাফ করো আমাকে।আমি রাতে তোমাকে ছাড়া থাকতে পারিনা।
মাহিঃ তুমি যাবে নাকি আমি চলে যাবো?
আশফিঃ না না কোনো প্রয়োজন নেই।আমিই যাচ্ছি।তার আগে তোমাকে খাইয়ে দিই?
মাহিঃ না।কোনো দরকার নেই।আমি একাই খেতে পারবো।যাও তুমি।
আশফিঃ আচ্ছা ঠিক আছে।এই শোনো না যাওয়ার আগে একটা পাপ্পি দাও আমাকে।এখানে?
-“ডান গাল দেখিয়ে বললো।তারপর মাহি মুখটা গোমড়া করে রেখে ঠাস করে একটা চুমু দিয়ে মুখটা ঘুরিয়ে অন্য পাশে তাকিয়ে থাকলো।(অভিমানে)”
আশফিঃআর একটা দাও না জাদু।এখানে?
-“ঠোঁট দেখিয়ে বললো।”তখন মাহি চোখ বড় বড় করে চিৎকার করে বললো”।
মাহিঃ যাও বলছিইইই…।
আশফিঃ যাচ্ছি।এই মেয়েটা দিন দিন খিটখিটে বুড়ি হয়ে যাচ্ছে।সবসময় চিল্লাচিল্লি করে।বাসায় থাকলে ৫ টা মিনিট ওর চোখের সামনে না থাকলে চিল্লিয়ে ফাটিয়ে পুরো বাড়ি আর বাড়ির সার্ভেন্ট গুলোকে মাথায় তুলে ফেলে।আমার জন্য ওর এই অবস্থা বলে তাই ওর সবকিছু আমাকেই করতে হবে এমনটাই ওর নির্দেশ।সেদিন ফ্লোরে বমা করে ফেলেছে সেটাও আমাকে পরিষ্কার করতে হয়েছে।কোনো সার্ভেন্টকে পরিষ্কার করতে দেইনি।কিন্তু কথা তো এটা না।কথা হচ্ছে আমার কলিজাটা যে ওখানে রেখে এসেছি তো এখানে কি করে ঘুমাবো সেটাই ভাবছি।এই তিন বছরে ওকে ছাড়া একটা রাত ও একা ঘুমাইনি।আজকে কি করে ঘুমাবো?হুম, ও ঘুমিয়ে পড়লে চুপিচুপি ওর পাশে গিয়ে ঘুমিয়ে পড়বো।মেয়েটা আজকাল বড্ড পাগলামি করে
মাঝেমাঝে মনে হয় কোনো ছোটো বাচ্চা মেয়েকে আমি আদর করে তার অভিমান ভাঙ্গাচ্ছি।আমার ও খুব ভালো লাগে যখন ও বাচ্চাদের মত আহ্লাদ করে আর মুখটাও বাচ্চাদের মত করে ফুলিয়ে রাখে।আমি তো ওকে এভাবেই রাখতে চেয়েছি।ওকে আমার জীবনে পেতে যে কতোটা কষ্ট হয়েছে সেই কষ্টের বিনিময়ে ওকে আমি পেয়েছি।আর মামনি চলে যাওয়ার পর থেকে প্রমিস করেছি ওকে আমি কোনোদিনও দুঃখের ছোঁয়া পেতে দেবোনা।ওকে এতো ভালোবাসা দিবো যাতে ও ভুলে যায় ওর জীবনের কখনো কষ্টের ছায়া ছিলো।সেটা আমি কতোটা করতে পেরেছি জানিনা।ওকে যতই ভালোবাসি মনে হয় সেটা ওর জন্য কম।ও তার থেকেও অনেক বেশি ডিসার্ভ করে।তবে এতোগুলো দিনে ওকে কখনো কাঁদতে দেখিনি আমি।ওর এক ফোটা চোখের পানি যে আমার কাছে অনেক দামি।দিন শেষে ঘরে ফিরে ওবে জড়িয়ে ধরে ওর বুকে মাথা গুজে থাকার সুখটাই যে আমার কাছে পৃথিবীর সবথেকে বড় সুখ সেটা ওকে কাছে না পেলে জানতামনা। পৃথিবীর সমস্ত মায়া যে ওর মুখটার মাঝেই পাই আমি।কথাগুলো একপাশ হয়ে শুয়ে ভাবছিলাম হঠাৎ পেছন থেকে কেউ এসে জড়িয়ে ধরে আমার কাছে এসে শুয়ে পড়লো। কেউ টা আর কে ই বা হবে ওটা যে আমার খিটখিটে বুড়ি মাহি।আমি ওর স্পর্শ ওর নিঃশ্বাস নিঃশ্বাসের গন্ধ এখন চোখ বন্ধ করে থাকলেও বুঝতে পারি এটা আমার মাহি।ও ভেবেছে আমি ঘুমিয়ে পড়েছি।কিন্তু আমি বুঝতে পারছি ও আমার মুখের দিকে তাকিয়ে আছে।আমার চুলগুলোতে বিলি কাটাচ্ছে। আমার সারা মুখে চুমু দিচ্ছে। আমার মুখের সাথে ওর মুখটা লাগিয়ে ঘষছে।ও যেভাবে আমাকে আদর করছে আমার ইচ্ছে করছে ওকে জড়িয়ে ধরে আদর শুরু করে দিই।এখন তো সেটা সম্ভব না। আমাকে ধৈর্য রাখতে হবে নিজের প্রতি নিজের নিয়ন্ত্রণ আনতে হবে।
মাহিঃ ধুর। মুখে শুধু খোচা খোচা দাড়ি। মুখটা লাগাতেই পারিনে ওর মুখের সাথে। মুখে খোচা লাগে শুধু। কে যে বলে ওকে খোচা দাড়ি রাখতে?
আশফিঃ কে বলে মানে? তুমিই তো বলো। আমাকে ক্লিন শেভে ভালো লাগেনা। এর জন্যই হালকাভাবে শেভ করি।
মাহিঃ বদমাইশ ছেলে তুমি এখনো ঘুমাওনি?
-“মাথা নাড়িয়ে না সূচক উত্তর দিলো।”
মাহিঃ তাহলে আমার কাছে আসোনি কেনো?তুমি তো জানো যে আমি তোমাকে ছাড়া এখন একা থাকতে পারিনা।তাহলে এখানে শুয়ে পড়লে কেনো?
আশফিঃ শুয়ে পড়েছি কিন্তু ঘুমিয়ে তো পড়িনি।আমি ভেবেছিলাম আমার নাইট কুইনটা আমার ওপর রেগে আছে তাই সে ঘুমিয়ে পড়লে চুপিচুপি গিয়ে তাকে জড়িয়ে ধরে তার পাশে গিয়ে শুয়ে পড়বো।
মাহিঃ নাইট কুইন কে?আচ্ছা তুমি আমাকে হোয়াইট এন্জেল বলো সেটা বলার না হয় কারণ বুঝলাম কিন্তু নাইট কুইন বলো কেনো?
আশফিঃ এটার পেছনে অনেক বড় একটা গল্প আছে সেটা না হয় অন্য একদিন শোনাবো। এখন একটু এসোনা তোমাকে আদর করি।
মাহিঃ একদম না। এমনিতেই আমার ঘুম আসছে না তার ওপর তুমি আদর করলে যেটুকু আসতে চাইবে সেটাও দৌড়ে পালাবে।
আশফিঃ কিচ্ছু হবেনা। একটু করবো বেশিনা। ওকে কাছে টেনে এনে বললাম।
মাহিঃ না আমি ঘুমাবো।
কিভাবে আমার ঘুম আসবে আগে সেই ব্যবস্থা করো।
আশফিঃ হুম।তার জন্যই তো বলছি।আমার কাছে আসলে আমার আদর নিলে এমনিতেই ঘুম চলে আসবে।
মাহিঃ দুষ্টুমি করছো না তো? সত্যি বলছো?
আশফিঃ একদম।
মাহিঃ পাগল একটা।ও আমার কাছে এসে আমাকে খুব করে আদর করে দিলো।আমি চোখ বন্ধ করে অনুভব করছিলাম আমার শরীরে ওর ঠোঁটের স্পর্শ গুলো।ওর ভালোবাসাটা আমার কাছে এমনই একটা জিনিস যা সারাজীবন গ্রহণ করলেও আমার মন ভরবেনা।
আশফিঃ ডিয়ার তুমি কৈ? আমি তোমাকে খুঁজছি তো। মেয়েটা ১টা মিনিটের জন্য ও কোথাও বসে থাকতে চাইনা।সবসময় শুধু ঘুরঘুর আর ঘুরঘুর। আমি যে বাইরে যাওয়ার আগে ওর ঠোঁটের ইয়াম্মি পাপ্পিটা না নিয়ে বের হইনা সেই জিনিসটা মেয়েটা এখনো মাঝে মাঝে ভুলে যায়।মনে হচ্ছে ওর ওপর আগের সেই অত্যাচার গুলো শুরু করতে হবে।একবার ডাবল থেকে সিঙ্গেল হও তারপর নতুন করে নতুন পদ্ধতিতে শুরু করছি সবকিছু।
মাহিঃ একা একা কি বকছো?আর এখন সেজেগুজে কোথায় বের হওয়া হচ্ছে শুনি?
আশফিঃভাগ্যিস কিছু শোনোনি।
মাহিঃ কি শুনিনি?কি বলছিলে আমাকে?
আশফিঃ আরে কিছুনা। আমি তো এখন বাইরে বের হবো তাইনা?তো আমার একটা দরকারি জিনিস নেওয়ার আছে কিন্তু সেটা খুঁজে পাচ্ছিনা তাই তোমাকে স্মরন করছিলাম।
মাহিঃ কি খুঁজে পাচ্ছোনা?
আশফিঃ আমার কাছে না আসলে কিভাবে বলবো?
মাহিঃ ও তাহলে এই ব্যাপার?তো সেটা কি খুব দরকারি জিনিস?
আশফিঃহুম খুব। ওকে কাছে টেনে ওর ঠোঁটে চুমু দিলাম।আর এতো জোড়ে ওর ঠোঁটটা চেপে ধরেছি যে বেচারির ঠোঁট দুটো লাল মরিচের মত লাল হয়ে গেছে।
মাহিঃ তুমি আজকে এভাবে দিলে কেনো?আমি কত ব্যাথা পেয়েছি ঠোঁটে।
আশফিঃ তো কি করবো? তুমি রোজ ভুলে যাও কেনো এই বিষয়টা?আমার কিন্তু আগের মত আবার রাগ চেপে গেলে তোমার অবস্থা কিন্তু দেখার মত হবেনা।
মাহিঃহাআআআ?তুমি আমার এই অবস্থাতেও টর্চার করতে চাও?এতো নিষ্ঠুর তুমি?
আশফিঃ মহারাণী??
মাহিঃ বলুন সম্রাট?
আশফিঃআমি আপনাকে এখন তেমন কিছুই করছিনা। জাস্ট ওয়ার্নিং দিলাম। মনে থাকে যেনো।আমি এখন আসছি।আলিশাকে রিসিভ করতে যাবো।তুমি রেডি হয়ে থেকো।
মাহিঃ ওকে সাবধানে যেও।
“এয়ারপোর্টে আলিশাকে রিসিভ করতে এসে আশফি তো ওকে খুঁজেই মরছে। সামনে এতো সুন্দরি মেয়ে যার ভীড়ের মাঝে ওকে চোখেই পড়ছেনা ওর।হুট করেই সামনে থেকে একটা মেয়ে দৌড়ে এসে আশফির সাথে জাপ্পি শুরু করে দিলো।আশফির রিয়্যাকশান যথেষ্ট স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা করছে।তারপর মেয়েটার জাপ্পির পালা শেষ হলে আশফি ওর মুখের দিকে তাকিয়ে ফোনে ছবির সাথে ভালো করে মিলিয়ে দেখলো।হ্যা এটাই আলিশা।”
আশফিঃতুমি এতো স্লিম হয়ে গেছো যে তোমাকে আমি চিনতেই পারিনি।আমার কাছে তোমার যে ফটোগুলো ছিলো সেগুলোতে তুমি বেশ ভালোই healthy ছিলে।
আলিশাঃ হুম ঐ ফটোগুলো তো আমার ৩ থেকে ৪ বছর আগের ছবি।এর জন্যই চিনতে পারোনি।কিন্তু আমি কি দেখতে আগের থেকে খুব খারাপ হয়ে গেছি?
আশফিঃএকদম না।আরো বেশি কিউট হয়ে গেছো।
আলিশাঃআমি কিন্তু তোমাকে একবার দেখেই চিনতে পেরেছি।কারণ তুমি সেই আগের মতই আছো।একদম dangerous handsome.
আশফিঃ Dangerous handsome?? হা হা হা।
-“গাড়িতে আসতে আসতে ওরা কথাগুলো বলছিলো।”
আলিশাঃ আরে আমি তো ভাবলাম তোমার হোয়াইট এন্জেল এর মুখটা দেখে ঘরে প্রবেশ করবো কিন্তু সে কোথায়?তাকে তো কোথাও দেখছিইনা।আমি যে তাকে দেখার জন্য ব্যাপক exited.
আশফিঃ হুম।আমার হোয়াইট এন্জেলকে দেখার জন্য তোমার যে উত্তেজনা সেটা বৃথা যাবেনা।এসো আমার রুমে এসো তাহলেই দেখতে পারবে।
“আলিশা রুমে ঢোকার পর মাহির আইডলটার দিকে চোখ পড়লো”।
আলিশাঃ এটা কি?
আশফিঃ আহহা ছুঁইয়োনা।আমি দেখাচ্ছি। আমি মাহির আইডলটার মুখের ওপর থেকে হোয়াইট নেট ক্লোথটা সরিয়ে দিলাম।
আলিশা, Just look.This is my white angel.
-“মাহির আইডলটা দেখার পর আলিশা সেটা থেকে চোখ ফেরাতে পারছেনা।অন্তত তিন মিনিটের মত নিরব দৃষ্টিতে চেয়ে রইলো।”
আলিশাঃ Its really a amazing idol. যে মেয়ে এতোটা সুন্দর হতে পারে সে সত্যি একজন এন্জেলের থেকে কম কিছুনা। আমি সত্যি মুগ্ধ। এতোটা নিখুঁত সুন্দর করে ওকে কিভাবে তৈরি করেছো?
আশফিঃ অসম্ভব ভালোবাসা থাকলে সবই সম্ভব।
আলিশাঃ সত্যি।কতোটা ভালোবাসলে একজন কে এতো সুন্দর করে তৈরি করা যায়।না জানি বাস্তবে গড তাকে কতোটা সুন্দর করে তৈরি করেছে।
আশফিঃবলেছিলাম না তুমি নজর ফেরাতে পারবেনা।এর জন্যই বলেছিলাম নজর লেগে যাবে।
আলিশাঃ ওকে। তোমার বৌ কে সামনাসামনি উপস্থিত করো।তাহলে এটার দিকে আর নজর দিবোনা।
আশফিঃ মাহি? মাহি? মাহি তুমি কোথায়?আলিশা ইজ কামিং। ডিয়ার জলদি এসো।
অদ্ভুত মেয়েটা কোথায় গেলো?
এতোবার ডাকছি তবুও সাড়া দিচ্ছেনা?সার্ভেন্ট?
সার্ভেন্টঃ ইয়েস স্যার?
আশফিঃ Where is your mam?
সার্ভেন্টঃ স্যার আমি তো ম্যাম কে লাস্ট ৩০ মিনিট আগে রুমে দেখেছি তারপর আমি আমার কাজে ছিলাম।
আশফিঃ হোয়াট? তার মানে ৩০ মিনিট পর ওকে তোমরা খেয়াল করোনি????
সার্ভেন্টঃ নো স্যার।?
চলবে।

No comments

info.kroyhouse24@gmail.com