গল্পঃ - খলনায়ক | লেখকঃ - নিরব ইসলাম | পার্টঃ - ৩
লুবনা রাস্তার পাশে হাঁটতেছে নিচের দিকে তাকিয়ে।
গন্তব্য স্থান না থাকলে পথের সামনে তাকিয়ে কেউ হাঁটেনা।
তারা মাটির নিচে জায়গা খোঁজে বার বার...
হঠাৎ ই লুবনার নাম কারো গলায় শুনে চমকে লুবনা পিছনে তাকিয়ে দেখে চেনা মুখের কেউ...
লুবনার বাবার খুব কাছের বন্ধু আজমল সাহেব...
লুবনা: কাকা আপনি?
আজমল: কি মা এখানে কেন?জামাই কই?
লুবনা উত্তর না দিয়ে তাকিয়ে আছে বিপরীত দিকে।
আজমল: চলো বাসায়।
নতুন বাসা নিয়েছি, তোমার কাকিও আছে সেখানে..তোমায় দেখলে খুশি হবে।
লুবনা কিছু না বলেই তার সাথে চলতে লাগলো...
একেই চেনা জানা জায়গা নেই তার উপর টাকা ও নেই..
কার কাছে যাবে!কোথায় যাবে!উত্তর জানা নেই কিছু...
বাসায় গিয়ে খাবার খেতে খেতে আজমল সাহেবের স্ত্রী কে সব খুলে বলতেই, তারচোখ পানি ভর্তি হয়ে গেল।।
পানি আসার ই কথা...তার যে সন্তান এর খুব শখ ছিল..কিন্তু তার সন্তান নেই।
বোনের ছেলেকেই নিজের কাছে এনে রেখেছে।
লুবনার কষ্ট শুনে আজমল সাহেবের স্ত্রী তার বুকে লুবনাকে নিয়ে বললো,মা ভয় নেই তোর...
আজ থেকে তুই এখানেই থাকবি।
লুবনা: কাকি আমায় একটা কাজ দিবেন দয়াকরে?
আমি শুধু শুধু আর বোঝা হতে চাইনা।
আজমল সাহেবের স্ত্রী সাহানা উঠেই বলে,আচ্ছা আমার বোনের ছেলেটাকে পড়াবি?
লুবনা হেসে মাথা নাড়ালো।
দু গাল বেয়ে পানি টপ টপ করে গড়িয়ে পরছে...
এই বুঝি আস্থার পানি..
সব বাঁধা গুলি বুঝি পানি হয়ে ঝড়ে যাচ্ছে..
লুবনা: কাকি আমার ছাত্র কই?
সাহেলা ইকু বলে ডাক দিল।
এই নাম টা শুনেই লুবনার বুকে মোচর দিল।
নামটা খুব চেনা...খুব আপন এই নামটা।
অধীর আগ্রহে ইকুকে দেখার জন্য অপেক্ষা করছে।
একজোড়া চশমা পরে ইকু পর্দার আড়ালে এসে দাড়ালো।
লুবনা ইকুকে দেখেই বুক চিরে দীর্ঘনিঃশ্বাস ফেললো।
আনুমানিক ৫বছরের ইকু।
এ ইকু সে ইকু নয় যাকে ঘিরে একসময় লুবনার অনেক কল্পনা জমে ছিল।
অনেক রহস্য ছিল এ ইকুকে নিয়ে...
সাহেলা হেসে বলে আয় বাবা..দেখ এ তোর নতুন ম্যাডাম...
পছন্দ হয়েছে?
ইকু লজ্জা পেয়ে যেন পর্দাটা হাত থেকে সরাচ্ছেই না।
শক্ত হাতে পর্দাটা হাত এ রেখে মলাচ্ছে।
সাহেলা: ও মেয়েদের কাছে আসতে লজ্জা পায়।
লুবনা উঠে গিয়ে বাচ্চাকে কোলে নিয়ে বললো,ইকু তুমি কি জানো তোমার নামটা আমার খুব পছন্দের?
ইকু চশমার ভিতর দিকে বড় বড় চোখ দিয়ে তাকিয়ে আছে...
লুবনা মনে মনে ভাবে,সেই ইকু ও কি চশমা পরে?
আচ্ছা সেই ইকুকেও কি চশমাতে এতো সুন্দর লাগে?
১সপ্তাহ কেটে গেল...
মা আর ভাইকে দেখতে ইচ্ছে করে খুব...
জানালার গ্রিল ধরে দাড়িয়ে লুবনা ভাবছে ভাইটার মুখ।
বিয়ে করে যখন শ্বশুর ঘরে এসেছিল পলাশ কেঁদে কেঁদে বলেছিল,আপু আমার বুকের মধ্যে খুব ব্যাথা করে রে...
সেদিন লুবনা বুঝেছিল ভাইটা এখনো বড় হয়নি...
আগে মা তরকারি তে লবন দেখতে বললে পলাশ বুঝতোনা লবন হয়েছে কিনা...
আর আজ ও বোন চলে যাচ্ছে তাই কষ্টে বুক ফেটে যাচ্ছে তার কারন বুঝছেনা।
লুবনা হেসে বলে ভাই তোর খুব কষ্ট হচ্ছে তাইনা?
আমার সাথে দেখি কত ঝগড়া করতিস তুই?
কত অভিশাপ দিতি রেগে যাতে বিদায় হই তাড়াতাড়ি আজ, কেন কষ্ট পাছসিস?
পলাশ হেসে বলে কই কষ্ট পাচ্ছিনাতো...
লুবনা: এই যে বললি বুকে ব্যাথা?
পলাশ: আরে খাওয়া দাওয়া বেশি হয়েছে তাই গ্যাস বেড়ে গেছে।
লুবনা তখন বুঝে গিয়েছিল,ভাই আমার খুব বড় হয়ে গেছে।খুব লুকাতে শিখে গেছে।
এর পর ভাইটা আর লুবনার কাছেই আসেনি।
পরে মায়ের কাছে জেনেছিল,ভাইটা রোজ রাতে লুকিয়ে কাঁদতো।
লুবনা কাঁদছে আর ভাবছে,পলাশ তুই কি এখনো লুকিয়ে কাঁদিস?
আগে ঝগড়া হয়ে আলাদা ঘুমাতি আর ভোর রাতে ঠিক ই ভয় পেয়ে আমার পাশে এসে ঘুমাতি..
এখনো কি ঘুম ভেঙে আমায় খুঁজিস?
খুব জানতে ইচ্ছে করে পলাশ...
বুকের গ্যাস টা কি এখনো খুব পিড়া দেয় তোকে?
নাকি তাও চেপে রাখার মতন বড় হয়ে গেছিস ভাই!
এই ভেবে ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদতে লাগলো লুবনা...
বাইরের প্রবল বাতাস ও লুবনার চোখের পানির পথ বিচ্ছিন্ন করতে পারছেনা আজ।
" চলবে..................
গন্তব্য স্থান না থাকলে পথের সামনে তাকিয়ে কেউ হাঁটেনা।
তারা মাটির নিচে জায়গা খোঁজে বার বার...
হঠাৎ ই লুবনার নাম কারো গলায় শুনে চমকে লুবনা পিছনে তাকিয়ে দেখে চেনা মুখের কেউ...
লুবনার বাবার খুব কাছের বন্ধু আজমল সাহেব...
লুবনা: কাকা আপনি?
আজমল: কি মা এখানে কেন?জামাই কই?
লুবনা উত্তর না দিয়ে তাকিয়ে আছে বিপরীত দিকে।
আজমল: চলো বাসায়।
নতুন বাসা নিয়েছি, তোমার কাকিও আছে সেখানে..তোমায় দেখলে খুশি হবে।
লুবনা কিছু না বলেই তার সাথে চলতে লাগলো...
একেই চেনা জানা জায়গা নেই তার উপর টাকা ও নেই..
কার কাছে যাবে!কোথায় যাবে!উত্তর জানা নেই কিছু...
বাসায় গিয়ে খাবার খেতে খেতে আজমল সাহেবের স্ত্রী কে সব খুলে বলতেই, তারচোখ পানি ভর্তি হয়ে গেল।।
পানি আসার ই কথা...তার যে সন্তান এর খুব শখ ছিল..কিন্তু তার সন্তান নেই।
বোনের ছেলেকেই নিজের কাছে এনে রেখেছে।
লুবনার কষ্ট শুনে আজমল সাহেবের স্ত্রী তার বুকে লুবনাকে নিয়ে বললো,মা ভয় নেই তোর...
আজ থেকে তুই এখানেই থাকবি।
লুবনা: কাকি আমায় একটা কাজ দিবেন দয়াকরে?
আমি শুধু শুধু আর বোঝা হতে চাইনা।
আজমল সাহেবের স্ত্রী সাহানা উঠেই বলে,আচ্ছা আমার বোনের ছেলেটাকে পড়াবি?
লুবনা হেসে মাথা নাড়ালো।
দু গাল বেয়ে পানি টপ টপ করে গড়িয়ে পরছে...
এই বুঝি আস্থার পানি..
সব বাঁধা গুলি বুঝি পানি হয়ে ঝড়ে যাচ্ছে..
লুবনা: কাকি আমার ছাত্র কই?
সাহেলা ইকু বলে ডাক দিল।
এই নাম টা শুনেই লুবনার বুকে মোচর দিল।
নামটা খুব চেনা...খুব আপন এই নামটা।
অধীর আগ্রহে ইকুকে দেখার জন্য অপেক্ষা করছে।
একজোড়া চশমা পরে ইকু পর্দার আড়ালে এসে দাড়ালো।
লুবনা ইকুকে দেখেই বুক চিরে দীর্ঘনিঃশ্বাস ফেললো।
আনুমানিক ৫বছরের ইকু।
এ ইকু সে ইকু নয় যাকে ঘিরে একসময় লুবনার অনেক কল্পনা জমে ছিল।
অনেক রহস্য ছিল এ ইকুকে নিয়ে...
সাহেলা হেসে বলে আয় বাবা..দেখ এ তোর নতুন ম্যাডাম...
পছন্দ হয়েছে?
ইকু লজ্জা পেয়ে যেন পর্দাটা হাত থেকে সরাচ্ছেই না।
শক্ত হাতে পর্দাটা হাত এ রেখে মলাচ্ছে।
সাহেলা: ও মেয়েদের কাছে আসতে লজ্জা পায়।
লুবনা উঠে গিয়ে বাচ্চাকে কোলে নিয়ে বললো,ইকু তুমি কি জানো তোমার নামটা আমার খুব পছন্দের?
ইকু চশমার ভিতর দিকে বড় বড় চোখ দিয়ে তাকিয়ে আছে...
লুবনা মনে মনে ভাবে,সেই ইকু ও কি চশমা পরে?
আচ্ছা সেই ইকুকেও কি চশমাতে এতো সুন্দর লাগে?
১সপ্তাহ কেটে গেল...
মা আর ভাইকে দেখতে ইচ্ছে করে খুব...
জানালার গ্রিল ধরে দাড়িয়ে লুবনা ভাবছে ভাইটার মুখ।
বিয়ে করে যখন শ্বশুর ঘরে এসেছিল পলাশ কেঁদে কেঁদে বলেছিল,আপু আমার বুকের মধ্যে খুব ব্যাথা করে রে...
সেদিন লুবনা বুঝেছিল ভাইটা এখনো বড় হয়নি...
আগে মা তরকারি তে লবন দেখতে বললে পলাশ বুঝতোনা লবন হয়েছে কিনা...
আর আজ ও বোন চলে যাচ্ছে তাই কষ্টে বুক ফেটে যাচ্ছে তার কারন বুঝছেনা।
লুবনা হেসে বলে ভাই তোর খুব কষ্ট হচ্ছে তাইনা?
আমার সাথে দেখি কত ঝগড়া করতিস তুই?
কত অভিশাপ দিতি রেগে যাতে বিদায় হই তাড়াতাড়ি আজ, কেন কষ্ট পাছসিস?
পলাশ হেসে বলে কই কষ্ট পাচ্ছিনাতো...
লুবনা: এই যে বললি বুকে ব্যাথা?
পলাশ: আরে খাওয়া দাওয়া বেশি হয়েছে তাই গ্যাস বেড়ে গেছে।
লুবনা তখন বুঝে গিয়েছিল,ভাই আমার খুব বড় হয়ে গেছে।খুব লুকাতে শিখে গেছে।
এর পর ভাইটা আর লুবনার কাছেই আসেনি।
পরে মায়ের কাছে জেনেছিল,ভাইটা রোজ রাতে লুকিয়ে কাঁদতো।
লুবনা কাঁদছে আর ভাবছে,পলাশ তুই কি এখনো লুকিয়ে কাঁদিস?
আগে ঝগড়া হয়ে আলাদা ঘুমাতি আর ভোর রাতে ঠিক ই ভয় পেয়ে আমার পাশে এসে ঘুমাতি..
এখনো কি ঘুম ভেঙে আমায় খুঁজিস?
খুব জানতে ইচ্ছে করে পলাশ...
বুকের গ্যাস টা কি এখনো খুব পিড়া দেয় তোকে?
নাকি তাও চেপে রাখার মতন বড় হয়ে গেছিস ভাই!
এই ভেবে ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদতে লাগলো লুবনা...
বাইরের প্রবল বাতাস ও লুবনার চোখের পানির পথ বিচ্ছিন্ন করতে পারছেনা আজ।
" চলবে..................
No comments
info.kroyhouse24@gmail.com