Breaking News

গল্প: অপূর্ন ভালবাসা | লেখক: সুজন মাহমুদ হৃদয় | পর্ব-১


এই হৃদয়,এই হৃদয়।
৭ দিন পর হৃদয় আজ কলেজে আসলো।
এসেই শুনতে পেলো,তাকে পেছন থেকে কে যেন ডাকছে।পিছন ফিরে দেখতে পেলো সেই মেয়েটা যে তাকে ৭ দিন আগে থাপ্পর মেরেছিলো
---এই হৃদয় শুনো.....!(শ্রুতি)
--ওহ আপনি কি বলবেন বলেন।নাকি আজ ও থাপ্পর দিবেন সেই দিনের মতো।.....(হৃদয়)
--আরে না...আসলে আমি খুব দুঃখিত সেই দিনের ঘটনার জন্য।......(শ্রুতি)
--থাক! আর এসব বলে লাভ কি।আমার কপাল ই এরকম, দোষ না করেও শাস্তি পাই।........(হৃদয়)
--প্লিজ আমায় ক্ষমা করে দেও।আসলে আমি ভেবে ছিলাম তুমি ঐ দিন আমার বই এ চিঠি টা দিয়ে ছিলে।আসলে আমি বুঝতে পারিনি এটা তুমার বন্ধু আকাশ এর কাজ।আসলে যা হয়েছে ভুল বুঝাবুঝির হয়েছে।........(শ্রুতি)
--হুম! ওকে। যা হবার হয়েই গেছে।তবে সবার সামনে কাল এভাবে চর টা না মারলেও পারতেন।আমার ক্লাস আছে,আমি আসি এখন। আর হে নেক্সট টাইম ভালো করে জেনে
বুঝে কাজ করবেন।..........(হৃদয়)
--ওকে।.....(শ্রুতি)
এই বলে হৃদয় চলে গেলো তার ক্লাস করতে। আর শ্রুতি চলে গেলো তার ক্লাসে।
আসুন এবার জেনে নেয়,সেই দিনের ঘটনা।
আসলে সেইদিন হৃদয় ক্লাসে বসে ছিলো আকাশের সাথে।
--→এই আকাশ বাংলা বই টা এনেছিস?.....(হৃদয়)
--→নারে দুস্ত...আনি নাই তো।.......(আকাশ)
--→কারো কাছে থেকে একটু বই টা আনতো একটু।......(হৃদয়)
--→ওকে দারা আনতাছি।......(আকাশ)
এই বলে আকাশ চলে গেলো ফারিয়ার কাছে বই আনতে।আসলে আকাশ আর ফারিয়ার মাঝে এক প্রকার সম্পর্ক গড়ে উঠেছে।মানে তারা দুজন দুজন কে ভালবাসে।কিন্তু কেও কাওকে বলতে পারেনি এখনো।
--→এই যে তোমার বাংলা বই টা একটু দিবে,এখনি দিয়ে যাচ্ছি আবার।....(আকাশ)
--→ এই নাও।.......(ফারিয়া)
কিন্তু ফারিয়া তার বই টা দিতে গিয়ে ভুল করে তার বান্ধবী শ্রুতির বইটা দিয়ে দিছে।এই খানে আবার আকাশ এর মাথাই আরেকটা বুদ্ধি আসলো।সে ভাবলো ফারিয়া কে আজ বলেই দিবে যে সে তাকে ভালবাসে।
হৃদয়ের যখন পড়া শেষ বই টা,তখন আকাশ সেই বইটার ভিতর একটা চিঠি দিলো। চিঠি তে লেখা ছিলো I love u যে এই বই এর মালিক তাকে।।।কিন্তু আকাশের সাহস হচ্ছিলো না বই টা দিয়ে আসতে।
--→এই হৃদয় যা দুস্ত এবার তুই বই টা দিয়ে আয়,আমি তো নিয়ে এসে দিলাম।এবার দিয়ে আয় তুই।.......(আকাশ)
--ওকে দে,দিয়ে আসতাছি।....(হৃদয়)
এই বলে হৃদয় বই টা দিয়ে আসতে গেলো।
শ্রুতি আর ফারিয়া বসে আছে একসাথে।
--এই যে নেন আপনার বইটা।....(হৃদয়)
এই বলে হৃদয় বই টা শ্রুতি আর ফারিয়ার সামনে রেখে আসলো।
কিছুক্ষন পর.........
হৃদয় আর তার বন্ধুরা কলেজ ক্যাম্পাস এ বসে আছে।
এমন সময় শ্রুতি এসে....
ঠাসসসসসসসসসসসসসসসসসস...
এই তর সাহস হয় কি করে আমাই I love u বলার।আজ কের পর যদি এসব ভাবিস আমায় নিয়ে তাহলে তর খবর আছে।
এসব বলে চলে গেলো শ্রুতি।
সবাই অবাক হয়ে হৃদয়ের দিকে তাকিয়ে আছে।
হৃদয় বুঝতে পারছেনা কিছুই।
হৃদয় চুপচাপ কলেজ থেকে বের হয়ে গেলো।
কিন্তু আকাশ সব বুঝতে পারলো আর তাড়াতাড়ি ফারিয়া আর শ্রুতি কে সব বললো।
শ্রুতি পরে সব বুঝতে পারলো এবং হৃদয় কে খুজতে লাগলো,কিন্তু পেল না।
৭ দিন ধরে হৃদয় কে খুজছে শ্রুতি কিন্তু হৃদয় সেই দিনের পর থেকে কলেজে আসেনা।
শ্রুতি কলেজ ক্যাম্পাসে বসে ছিলো।এমন সময় দেখতে পেলো হৃদয় কে।
তাই সে দৌড়ে গেলো হৃদয়ের কাছে।
আর পেছন থেকে ডাকতে লাগলো।
এই হৃদয়,এই হৃদয়।
"
"
"
ক্লাস শেষে হৃদয় আর আকাশ বাড়িতে আসছিলো।
এমন সময় আকাশ বললো।
--দুস্ত ১০ টা মিনিট দাড়া।.........(আকাশ)
--কেন? কি করবি এখন।....(হৃদয়)
---আরে ফারিয়ার সাথে দেখা করবো।
--কি বলিস ফারিয়া আর তর ইয়ে হয়ে গেছে।
---হুম! দুস্ত তকে যেদিন থাপ্পর দিলো শ্রুতি,সে দিন আমি তাদের কে সব বলেছি।আর ফারিয়াও আমায় ভালবাসতো।
---এই দেখ! তর ফারিয়া আসছে,আর সাথে শ্রতি ও আছে।
এই বলে হৃদয় একটু দূরে সরে গেলো।
আকাশ আর ফারিয়া কথা বলছে এক সাথে।আর শ্রুতি ও একটু দূরে বসে আছে।
আকাশ আর ফারিয়ার কথা বলা শেষ।এবার তারা চলে গেলো, আর হৃদয় আর আকাশ ও চলে আসলো তাদের বাসায়।
পরের দিন কলেজে,,,,,,
এই যে হৃদয় শুনো,,
পিছন ফিরে হৃদয় বলো,,,,,
---ওহ তুমি,কেমন আছো।.....(হৃদয়)
---হুম ভালো! তোমার তো আজ কাল দেখাই পাওয়া যায় না।.......(মিম)
---ওওওহ তাই নাকি,এই ক্লাস এর সময় হয়ছে আমি আসি এখন।....(হৃদয়)
---ওকে,,,পরে কথা হবে।......(মিম)
আসলে এই মিম নামের মেয়েটা হলো হৃদয়ের খুব ভালো বন্ধু।মিম হলো খুব বড়লোক ঘরের মেয়ে।হৃদয় কে সে সব সময় সব ধরনের সাহায্য করে।
💜
💜হৃদয়ের শরীর টা ইদানিং ভালো যাচ্ছে না।
আকাশ,মিম আর হৃদয় এক সাথে ক্যাম্পাসে বসে আছে।
এমন সময় ফারিয়া আর শ্রুতি আসলো
--আমি জানি হৃদয় তুমি এখনো আমার উপর রেগে আছো।আসলে রেগে থাকাটাই স্বাভাবিক।.......(শ্রুতি)
--না,রেগে থাকবো কেন,যা হয়েছে ভুল বুঝাবুঝির জন্যই হয়েছে।......(হৃদয়)
---আমরা তো বন্ধু হতে পারি, তাই না।......(শ্রুতি)
---হুম,অবশ্যই।.......(হৃদয়)
---তাহলে আপনি করে না,বলে তুমি করে বললেই আমি খুশি হবো।প্লিজ, আমায় তুমি করে বলবে।.......(শ্রুতি)
----আচ্ছা,ঠিক আছে।......(হৃদয়)
"
এখন থেকে শুরু হলো হৃদয় আর শ্রুতির বন্ধুত্ব।
তাদের বন্ধুত্ব টা ভালোই চলছিলো।
এভাবে,প্রায় ৬ মাস চলে তাদের বন্ধত্বের।
তাদের বন্ধত্ব টা খুব গভীরে চলে গেছে।
একে অপর কে না দেখলে থাকতে পারেনা।
বলতে গেলে তারা একে অপরের প্রেমে পড়ে গেছে।শ্রুতি আর থাকতে পারছেনা না বলে।
শ্রুতি আজ নিয়ত করে এসেছে যে হৃদয় কে বলেই দিবে,যে তাকে সে ভালবাসে।আর তাকে এই কাজ এ সাহায্য করতে পারে আকাশ।
""
শ্রুতি কলেজে এসেই আকাশ কে খুজতে লাগলো এবং দেখতে পেলো আকাশ,ফারিয়া আর মিম গল্প করছে একসাথে।
"
"
---এই যে,তোমরা এখানে আর আমি তোমাদের সারা কলেজ খুজে বেরাচ্ছি,এই আকাশ তোমায় একটা কথা বলি,সত্যি করে বলবা।.......(শ্রুতি)
----হুম,বলো কি কথা।......(আকাশ)
---হৃদয় আমায় ভালবাসে কি না।.......(শ্রুতি)
-----হুম, বাসে তো অনেক ভালবাসে,আর তুমি ও তো তাকে ভালবাসো আমরা কি কিছু বুঝিনা।........(আকাশ)
---এই এসব বাদ দাও,আর শ্রুতি তুমি যে হৃদয় কে ভালবাসো সেটা আজ বলে দাও হৃদয় কে।........(মিম)
----হুম আজ এটা বলার জন্যই তোমাদের কাছে আসছি আমি।......(শ্রুতি)
---ওওওও তাই নাকি, তোমার আর দেরি সইছে না,,,এই যাও হৃদয় কে খুজে বের করো।.....(ফারিয়া)
এই বলে চার জন হৃদয় কে খুজতে লাগলো
"
"
হৃদয় কলেজে তার ক্লাস শেষ করে ক্যাম্পাসে বসে আছে।
এমন সময় আকাশ,ফারিয়া,মিম আর শ্রুতি আসলো।
তারা সবাই হৃদয় কে দেখে মুচকি মুচকি হাসতাছে।
হৃদয় কিছু বুঝে উঠতে পারছেনা।
এমন সময় শ্রুতি বললো,,,,,
"
"
---হৃদয়,একটা কথা ছিলো তোমার সাথে।.....(শ্রুতি)
---হুম,বলো কি কথা।......(হৃদয়)
---আমি তোমাকে ভালবাসি।....(শ্রুতি)...(এই কথা বলেই শ্রুতি একটু ওদিকে চলে গেলো একটু দূরে।
"
"
হৃদয় তো মনে মনে অনেক খুশি,কারন এই কথা টা শুনার জন্য কত দিন থেকে অপেক্ষা করছিলো।
---এই দুস্ত যা,বলে দে তুই ও তাকে ভালবাসিস।.......(আকাশ)
---এই হৃদয় বসে না থেকে যাও।তুমার রাজকুমারী লজ্জা পেয়েছে।......(মিম)
এবার হৃদয় গেলো শ্রুতির কাছে।
শ্রতি দাঁড়িয়ে আছে,হৃদয়ের দিকে তাকাতে পারছেনা লজ্জায়।
হৃদয় হালকা কাশি দিয়ে,,,,
---এই ম্যাডাম,ভালবাসো সেটা বলেই চলে এলে,আমি ও তোমায় ভালবাসি শ্রুতি।........হৃদয়
এই কথা শুনে শ্রুতি হৃদয় কে জড়িয়ে ধরলো। অবশেষে বন্ধুত্ব থেকে শুরু হলো প্রেম।
সারাক্ষন ফোনে কথা বলা,রাত জেগে ফেসবুকে চ্যাট করে হৃদয় আর শ্রুতির দিন গুলি ভালোই কাটছিলো।দুজন দুজন কে না দেখলে এক মুহুর্ত থাকতে পারে না।
দেখতে দেখতে প্রায় ১ বছর হয়ে গেছে তাদের প্রেমের।
,
,
হৃদয় আর শ্রুতি পাশাপাশি ক্যাম্পাসে বসে আছে।
এমন সময় হৃদয় বললো।
---এই শ্রুতি,মনে করো আমি যদি মরে যায়,তখন তুমি কি করবে।.....(হৃদয়)
--- এই এসব কি বলো।তুমার কিছু হলে আমি সাথে সাথে মারা যাবো।এসব আর কখনো বলবানা।.......(শ্রুতি)
---- ওকে পাগলী,,আর বলবো না।.....(হৃদয়)
----এই তুমি কি ঠিক মতো খাওয়া দাওয়া করো না,নিজের খেয়াল ই রাখো না।কিরকম রোগা হয়ে গেছো।.......(শ্রুতি)
-----তুমি থাকলেই চলবে আমার আর কিছুই লাগবে না পাগল।আর হে তুমাই তো একটা কথা বলাই হয়নি আমি কিছু দিনের জন্য ঢাকায় যাবো আমার মামার কাছে।.......(হৃদয়)
---ওহহ কবে যাবে। আর চলে আসবে কবে।......(শ্রুতি)
---কালকের পরের দিন ই যাবো আর ৭/৮ দিনের মধ্যেই চলে আসবো।.......(হৃদয়)
----ওহ,এতো দিন তোমাই ছাড়া থাকতে পারবো না আমি।একদিন না দেখে থাকতে পারিনা আর এতো দিন।........(মন খারাপ করে)(শ্রুতি)
---এই দেখো মন খারাপ করছো কেন।মাত্র কয়টা দিন আর আমি তো ফোনে কথা বলবোই প্রতিদিন। পাগলী মন খারাপ করো না।তুমি যদি মন খারাপ করো তাহলে কি আমি ভালো ভাবে যেতে পারবো।......(হৃদয়)
----ওখানে যেয়ে ফোন খোলা রাখবা সব সময়,আর ঠিক মতো খাওয়া দাওয়া করবা।নিজের খেয়াল রাখবা।আর সাবধানে যাবে বুঝছো।........(শ্রুতি)
----ম্যাডাম,বুঝেছি।তো এবার বাসায় যাও,দেরি হয়ে যাচ্ছে তোমার।....(হৃদয়)
----হুম,চলে যাবো এখন।আসলে বেশি দেরি করে গেলে মা বকা দিবে।আর ইদানিং মা আমাকে সন্দেহ করা শুরু করে দিয়েছে।......(শ্রুতি)
----ওকে যাও,,আমি একটু এগিয়ে দিয়ে আসি।......
এই বলে হৃদয় শ্রুতি কে এগিয়ে দিয়ে আসতে গেলো তার বাসায়।
এর মধ্যে হৃদয় ঢাকা চলে গেছে।শ্রুতির কিছুই ভালো লাগেনা।
সব সময় শ্রুতি হৃদয় কে ফোন দিয়ে খোজ খবর নেই।আজ ৫ দিন হয়ে গেছে হৃদয় ঢাকা চলে গেছে।শ্রুতির মন টা খুব খারাপ থাকে।কলেজে কারো সাথে ঠিকমতো কথাও বলেনা।
আজ ৬ দিন হয়ে গেছে হৃদয় ঢাকায়।আজ সকালে অনেক বার ফোন দিয়েছে কিন্তু হৃদয় এর ফোন অফ।শ্রুতির খুব চিন্তা হচ্ছে।এভাবে আরো ৩ দিন হয়ে গেলো হৃদয়ের কোনো খবর নেই।তাকে ফোনেও পাওয়া যায়না।সব সময় ফোন অফ। শ্রুতি পাগলের মতো চেষ্টা করছে হৃদয়ের সাথে যোগাযোগ করার জন্য।
মনে মনে শুধু রাগ করছে শ্রুতি।অনেক কষ্ট হচ্ছিলো তার।
আজ ৯ দিন হয়ে গেলো এর মধ্যে প্রথম ৫ দিন হৃদয়ের সাথে ফোনে যোগাযোগ ছিলো।কিন্তু এর পরের ৪ দিন থেকে হৃদয়ের সাথে সব ধরনের যোগাযোগ বন্ধ।
হৃদয়ের সব বন্ধুদের সাথে শ্রুতি চেষ্টা করেছে তার খবর জানতে,কিন্তু কেও কিছুই বলতে পারিনি।
,,
,,
১০ দিন হয়ে গেলো হৃদয়ের কোনো খবর পাইনি শ্রুতি।
শ্রুতি আজ কলেজে এসেছে আর এসেই দেখতে পেলো দূর থেকে হৃদয়ের মতো দেখতে কে যেন আসছে। আরে হে এটা তো হৃদয় ই,শ্রুতি যেন তার প্রান ফিরে পেলো।দৌড়ে চলে গেলো হৃদয়ের দিকে।

আজ এই পর্যন্ত....
বাকি শেষ পর্ব টার জন্য অপেক্ষা করুন।..............

No comments

info.kroyhouse24@gmail.com