Breaking News

অহংকারী মেয়ে ও ভদ্র ছেলে | লেখকঃ Samadder Chayon

প্রতিদিনের মতো আজও রিকশাতে করে বাসায় ফিরছে কেয়া..আর তার রিকশার পিছন পিছন সাইকেলে করে আসছে চয়ন।ব্যাপারটা বেশ কয়েকদিন ধরেই খেয়াল করছে কেয়া..সে যখন কোচিং শেষে বাসায় ফিরে তখনই ছেলেটা তার পিছু পিছু আসে..তাই আজ কেয়া ছেলেটাকে শায়েস্তা করার জন্য রিক্সা থামালো..
হঠাৎ করে রিকশা থেমে যাওয়ায়..চয়ন সাইকেলে ব্রেক করার সময় পাইনি।তাই চয়ন সাইকেল নিয়ে রিকসার পেছনে ধাক্কা খায়..ঠিক তখনই রিকশা থেকে নামছিল কেয়া..আর চয়নের সাইকেল রিকশাতে ধাক্কা লাগার কারনে..রিকশা নড়ে ওঠে..আর কেয়া পড়ে যায়..এতে কেয়ার রাগ মাথায় উঠে যায়..আর তাই তাই সে দ্রুত চয়নের কাছে গিয়ে ওর গালে সজরে থাপ্পর মারে..
ঠাসসসসসসসস..
:-এই ছেলে তুই প্রতিদিন আমাকে ফলো করিস কেনো?বাড়িতে মা বোন নাই?রাস্তা ঘাটে মেয়েদের শান্তিতে চলে দিবিনা নাকি?আর আজ তোর জন্য আমি পড়ে গেলাম(কেয়া)
:-দেখুন আমি ইচ্ছা করে আপনাকে ফেলে দিইনি..হঠাৎ করে আপনার রিকশা থেমে গেলো..তাই সাইকেল কন্টোল করতে পারিনি(চয়ন)
:-ফালতু কথা রাখ..আমাকে প্রতিদিন ফলো করিস কেনো সেটা বল..সুন্দরি মেয়ে দেখলেই মাথা খারাপ হয়ে যায়..তাইনা?
:-আপনি যা ভাবছেন তা নয়..আমি আপনাকে........
:-থাক তোকে আর কিছু বলতে হবেনা..শোন আজকের পর থেকে যদি তুই আমার পিছু নিয়েছিস তাহলে তোর খবর খারাপ করে দিবো..
:-আচ্ছা..
চয়নকে ইচ্ছামতো বকা দিয়ে কেয়া আবার বাসার দিকে রওনা দিলো...এদিকে চয়ন দাড়িয়ে ভাবতে লাগলো..হঠাৎ করে মেয়েটা তাকে এমন কড়া কথা বলে গেলো কেনো?
ওহ আপনাদের তো ওদের দুজনের পরিচয় দেওয়া হয়নি..ছেলেটা চয়ন..গ্রামে তাদের বাড়ি।সেখানে তার মা থাকে।আর চয়ন পড়াশুনা শেষ করে দুই তিনটা কোচিং সেন্টারে পড়ায়..সেই সুবাদে শহরে থাকে।
আর অপরদিকে মেয়েটা হলো কেয়া..শহরের একজন ধনী ব্যাবসায়ীর মেয়ে..এজন্য কেয়া খুব অহংকারী।কেয়া এবার ইন্টার পরীক্ষা দিয়ে ভার্সিটি এডমিশনের জন্য কোচিং করছে..
কেয়া যখন কোচিং শেষে বাসায় ফিরে..ঠিক তখনি চয়ন কোচিং ক্লাস শেষ করে বাসাতে ফিরে..আর প্রতিদিন চয়ন ফেরার সময় দেখতে পায়..কেয়া রিকশাতে ফিরে।আর এজন্যই কেয়া ভুলবুঝে চয়নের সাথে খারাপ ব্যাবহার করলো..
কেয়া বাসায় ফিরে কলিংবেল চাপতেই তার মা দরজা খুলে দিলো
:-কিরে মামনি আজ এতো দেরি হলো..একি???তোর হাত থেকে রক্ত পড়ছে কেনো?
:-আর বলোনা..প্রতিদিন একটা ছেলে আমাকে ফলো করে..তাই ছেলেটাকে শায়েস্তা করার জন্য রিকশা থেকে নামছিলাম..
তখন সেই ছেলেটা রিকশাকে ধাক্কা মারে..ব্যাস রিকসার সাথে ধাক্কায় হাতটা কেটে গেছে
:-ওহ..মামনি আয় তোর হাতে মেডিসিন লাগিয়ে দেই
:-চলো...
অতঃপর বেশ কয়েকদিন পর..কেয়া কোচিং থেকে ফিরছিলো..সে দেখলো আগের সেই ছেলেটা তার পিছু না নিলেও..একটা নিদ্দিষ্ট স্থানে অপেক্ষা করে..ব্যাপটা কেয়া বেশ কয়েকদিন ধরেই খেয়াল করছে..তাই আজ আবার চয়নকে শায়েস্তা করার জন্য চয়নের দিকে এগোলো..চয়ন কেয়াকে দেখে পিছন দিকে চলে যাচ্ছিলো..তখন কেয়া বললো...
:-এই ছেলে এইখানে দাড়া..একপা পিছলে খবর আছে..
কেয়ার কথায় চয়ন দাড়িয়ে গেলো..কেয়া চয়নের কাছে এসেই তাকে ধমকাতে শুরু করলো..
:-এই বেয়াদ্দপ..তোকে না কয়েকদিন আগেই বললাম আমাকে ফলো করবিনা?তাহলে প্রতিদিন এখানে দাড়িয়ে থাকিস কেনো?
:-দেখুন আপু..আমি কোনদিন আপনাকে ফলো করিনি।
:-ওই তাহলে প্রতিদিন আপার পিছু পিছু আসতিস কেনো?আর এখন এখানে দাড়িয়ে থাকিস কেনো?
:-আমি এখানে একটা কোচিং এ পড়াই..আর কোচিং থেকে যখন আমি বাড়ি ফিরতাম..ঠিক তখনি আপনি বাড়ি ফিরতেন..তাই আপনি ভেবেছেন আমি আপনাকে ফলো করি..তাই আপনি আমাকে সেদিন চড় মেরে কিছু কথাও শুনিয়েছিলেন..তাই এখন আর আপনার পিছে যাইনা..এখানে দাড়িয়ে থাকি আপনি যাওয়ার পর আমি যাই..
:-এখনতো অজুহাত দিবিই..ধরা পড়ে গেছিস না?তোদের মতো ছেলেদের আমার ভালো করেই চেনা আছে..আর শুন এর পর থেকে যদি আমার আশেপাশে দেখি।তাহলে তোর একটা হাড় আস্ত থাকবেনা..
:-জ্বি..
এরপর থেকে কেয়া কোচিং থেকে ফেরার পথে আর চয়নকে দেখতে পাইনি..কারন চয়ন এখন অন্য রাস্তা দিয়ে যাওয়া আসা করে..চয়নকে দেখতে না পেয়ে কেয়া এখন অনেক খুশি..
এভাবেই বেশ কয়েকমাস কেটে গেলো..একদিন সন্ধায় চয়ন আর তার বন্ধু ইমন বসে গল্প করছিলো..হঠাৎ করে ইমন বললো
:-দোস্ত একটা কাজ করলে কেমন হয়?
:-কি কাজ?
:-আগামিকাল এক বড়লোকের মেয়ের বিয়ে..চল কাল বিয়ে বাড়ি থেকে ভুড়িভোজ করে আসবো।
:-না দোস্ত বিনা নিমন্ত্রনে খেতে গেলে যদি ধরতে পারে তাহলে রাম ক্যালানি দিবে..তার চেয়ে বরং তুই আমার আমার বাসায় আসিস তোকে মাংস পোলাও খাওয়াবো
:-না দোস্ত..বিনা নিমন্ত্রনে খাওয়ার মজাই আলাদা..চলনা প্লিজ
:-না দোস্ত আমি পারবোনা
:-প্লিজ দোস্ত..প্লিজ প্লিজ
শেষমেষ ইমনের জোরাজোরিতে চয়ন রাজি হয়ে গেলো..সেদিনের মতো আড্ডা দিয়ে চয়ন আর ইমন তাদের বাড়িতে ফিরে গেলো...
পরেরদিন সন্ধায় ইমন ফোন দিল চয়নকে..
:-হ্যালো দোস্ত কই তুই?(ইমন)
:-দোস্ত আমি রেডি হচ্ছি..
:-তাড়াতাড়ি..বাজারের বটতলায় চলে আয়..আমি ওখানেই
:-তাড়াতাড়ি..বাজারের বটতলায় চলে আয়..আমি ওখানেই অপেক্ষা করছি
:-ঠিক আছে..আসছি
তারপর চয়ন দ্রুত রেডি হলো..কিন্তু ওর মন যেতে সায় দিচ্ছেনা..যদি কোন বিপদ হয়?কিন্তু না যেয়েও পারছেনা..না গেলে ইমন তাকে ভুল বুঝবে..ইতঃমধ্যে চয়ন বটতলায় চলে এসেছে..ইমনের হাতে বড় একটা রঙ্গিন কাগজে মোড়ানো প্যাকেট..
:-দোস্ত তোর হাতে এইটা কি?(চয়ন)
:-দোস্ত এইটা গিফ্ট..বিয়েতে দিতে হবেনা?
:-শালা এই গিফ্টের টাকা দিয়ে রেষ্টুরেন্স এ খেতে পারতিস..তাহলে চুরি করে বিয়ের দাওয়াত খেতে হতোনা
:-চুরি করে বিয়ের দাওয়াত খাওয়ার মজাই আলাদা..চলতো
:-যেতেই হবে?
:-হুম চল
অতঃপর ওরা দুজন বিয়ে বাড়ির দিকে রওনা দিলো................






                                                                       To Be Continue.....

No comments

info.kroyhouse24@gmail.com