Breaking News

অহংকারী মেয়ে ও ভদ্র ছেলে | পর্বঃ০২

ইমন আর চয়ন বিয়ে বাড়িতে যেয়ে..খাওয়া দাওয়া সেরে নিলো..এবার বিয়ের উপহার দেওয়ার জন্য তারা দুজন বৌ যে রুমে আছে সেই রুমে গেলো..বৌ দেখে চয়ন অবাক কারন এই সেই মেয়ে যে তাকে দুইদিন বিনা কারনে যা নয় তা বলেছে..তাই চয়ন রুমে না ঢুকে বাইরে চলে আসলো..কেয়া তার বান্ধবীদের সাথে গল্প করছিলো তাই চয়নকে দেখতে পাইনি..ইমন উপহার দিয়ে বাইরে চলে আসলো..
:-দোস্ত চল..(চয়ন)
:-কোথায়?(ইমন)
:-কোথায় আবার বাসায়..এখানে বেশিক্ষন থাকা রিক্স..
:-ধুর ব্যাটা ভিতু..কোনো সমস্যা নাই..বিয়েটা দেখে চলে যাবো
:-দোস্ত..চল প্লিজ।।তোর কথা রাখার জন্য এসেছি..এবার আমার কথাটা রাখ
:-পারবোনা..আমি বিয়ে দেখে তারপর যাবো..তোর ইচ্ছে হলে তুই একা চলে যা
:-বেঈমান..
রাগে গজগজ করতে করতে চয়ন চলে আসছিল..অল্প একটু আসার পর বিয়ে বাড়ির বাজনা থেমে গেলো এবং পরিবেশটা কেমন থমথমে হয়ে গেলো..তাই আবার ইমনের কাছে ফিরে আসলো..
:-দোস্ত কি ব্যাপার বলতো?হটাৎ করে পরিবেশটা থমথমে হয়ে গেলো কেনো?(চয়ন)
:-কি জানি?চলতো ভিতরে গিয়ে দেখি..
:-না দোস্ত দরকার নাই..বিনা নিমন্ত্রনে খেতে এসেছি..তার উপর পরিবেশটা সুবিধার মনে হচ্ছেনা..যদি ধরা পড়ে যাই তাহলে মেরেই ফেলবে..
:-ধুর ভিতুর ডিম চলতো..
অতঃপর দুইবন্ধু একটু ভিতরে গেলো..ভিতরে সবাই একসাথে মনমরা হয়ে বসে আছে..তাই ইমন একটা ছেলেকে জিজ্ঞাস করলো…
:-ভাইয়া কি হলো হঠাৎ করে?
:-ভাইয়া বর স্টোক করে মারা গেছে..তাই বিয়েটা হচ্ছেনা..
:-ওহ আচ্ছা..
কথাটা শোনার পর তারা দুজন ফিরে আসছিলেন..তখনই কেয়ার বাবা সবার উদ্দেশ্যে বললেন
:-এমন কেউ আছেন?যে এইমূহুর্তে আমার মেয়েকে বিয়ে করবেন?
বেশ কিছুক্ষন সবাই চুপ থকলেন..কেউ বিয়ে করতে রাজি হলেননা..কারন হিন্দুসমাজে এমন মেয়েদের অলক্ষী বলা হয়ে থাকে..
হঠাৎ করে ইমন তার বন্ধু চয়নের হাত উচু করে বললো..
:-আংকেল আমার বন্ধু আপনার মেয়েকে বিয়ে করবে..
:-ঠিক আছে তোমরা দুজন আসো আমার সাথে..
:-ইমন তুই পাগল হয়েছিস?আমি কেনো বিয়ে করবো?আমি পারবোনা(চয়ন)
:-দোস্ত বিপদে মানুষকে সাহায্যে করা পরম ধর্ম
:-তাহলে বিয়েটা তুই করলে পারতিস..আমাকে টানলি কেনো?
:-কারন তুই অর্থ উপার্জন করিস..আর আমি বেকার..
:-দোস্ত তাই বলে আমি মায়ের অনুমতি ছাড়া এভাবে বিয়ে করতে পারবোনা..
:-দোস্ত আন্টিকে আমি ম্যানেজ করবো
:-কিন্তু..
:-আবে!চলতো
অতঃপর ইমন চয়নকে নিয়ে কেয়ার বাবাকে অনুসরন করে একটা ফাকা জায়গায় আসলো..তারপর কেয়ার বাবা ইমনে একটু আলাদা করে ডাকলো..
:-তোমাদের নাম কি?(কেয়ার বাবা)
:-আংকেল আমি ইমন..আর ও আমার বন্ধু চয়ন
:-আচ্ছা বিয়েটা কে করবে?
:-আমার বন্ধু
:-তোমার বন্ধু কি করে?
:-পড়াশোনা শেষ করে কয়েকটা কোচিং প্রতিষ্ঠানে পড়ায়..খুব ভালো ছেলে।
:-তোমার বন্ধুর এড্রেসটা দাও
:-নিন..
:-তোমার বন্ধুকে বিয়ের জন্য তৈরি করো..এখনি বিয়ে হবে..
:-জ্বি
অতঃপর কেয়া আর চয়নের বিয়েটা হয়ে গেলো..তারপর ইমন,চয়ন আর কেয়া একটা সি এন জি করে চয়নের বাড়িতে আসলো..চয়ন আর কেয়াকে রেখে ইমন তার বাড়িতে ফিরে গেলো..
চয়ন কেয়াকে তার রুমে নিয়ে গেলো..তখনই কেয়া বললো..
:-এই ছোটলোক তুই আমাকে কেনো বিয়ে করলি?
:-কথা ভালো করে বলুন..বিয়েটা আমি নিজের ইচ্ছায় করিনি..আমার বন্ধু আপনার বাবাকে কথা দিয়ে ফেলেছিলো।তাই বিয়েটা করতে বাধ্য হয়েছি..
:-আমাকে উদ্ধার করেছিস..ভাবলাম বিয়েটা হবেনা..বেচে গেলাম।।আর তুই গিয়ে একদম শেষ করেদিলি..
:-শেষ করে দিলাম মানে?
:-তুই যদি আমাকে বিয়ে না করতিস..তাহলে আমার আজ বিয়ে হতনা..আমি পড়াশোনা করতে পারতাম
:-তো আপনি কেনো বিয়ের জন্য রাজি হলেন?
:-রাজি না হয়ে উপায় আছে..আমার কাকাতো বোন তার প্রেমিকের সাথে পালিয়ে গেছে..সেজন্য তোর সাথেই আমাকে বিয়ে দিলো..
:-ওহ..আচ্ছা আপনি খাটে ঘুমান আমি ফ্লোরে শুয়ে পড়ছি
:-না..তোর সাথে একঘরে আমি থাকতে পারবোনা..তুই অন্য রুমে যা
:-ঠিক আছে..
অতঃপর চয়ন অন্য রুমে চলে আসলো..তখন ইমন ফোন দিলো
:-হ্যালো দোস্ত(ইমন)
:-হুম বল
:-আমি আন্টিকে তোর বিয়ের খবরটা দিয়েছি..আন্টি কাল তার বৌমাকে দেখতে আসছে..
:-ওহ..মা মেনে নিয়েছে?
:-হুম..
পরেইদিন সকালে কেয়া ঘুম থেকে উঠে চিৎকার করতে লাগলো..
:-এই ছোটলোকের বাচ্চা এদিকে আয়..
কেয়ার ডাক শুনে চয়ন দ্রুত রুমে আসলো
:-কি হয়েছে?
:-আমার ক্ষুদা লেখেছে..ব্রেকফাস্ট কই?
:-একটু অপেক্ষা করুন আনছি..
:-তাড়াতাড়ি..
চয়ন দ্রুত রুটি,আলুভাজি,ডিমভাজি­ করে প্লেটে করে কেয়াকে দিলো..
:-এইটা খেতে হবে আমাকে?
:-সকালে এর থেকে বেশি কিছু করতে পারবোনা
:-হুম..
কেয়ার অনেক ক্ষুধা লেগেছিলো..তাই আর কিছু বললোনা..তাই রুটি,আলুভাজিই খেতে লাগলো…
:-আজ আমার মা আসবে এখানে..তাকে বুঝতে দিবেননা আমাদের ভেতরে স্বামী স্ত্রীর সম্পর্ক নেই
:-হুম..
যথাসময়ে চয়নের মা আসে..কেয়ার তার খুব পছন্দ হয়..চয়নের মা যতদিন ছিলো ততদিন কেয়া খুব ভালো একটা মেয়ে সেজে ছিলো..কিন্তু চয়নের মা চলে যাওয়ার পর কেয়া আবার আগের মতো হয়ে গেলো..চয়নের সাথে খুব খারাপ ব্যাবহার করতো..কারন কেয়া চয়নকে মেনে নিতে পারেনি..এক পর্যায়ে চয়ন আর কেয়ার ডিভোর্স হয়ে যায়..
প্রায় ২মাস পর চয়নের মা খুব ভালো একটা মেয়ে দেখে চয়নের বিয়ে দেই..মেয়েটার নাম অন্তি..খুব সহজ সরল একটা মেয়ে..অন্তি আর চয়ন দাম্পত্য জীবনে অনেক সুখি আছে..
আর অপরদিকে মিসঃঅহংকারী কেয়াকে তার বাবা বাড়ি থেকে বের করে দেয়..চয়নের সাথে ডিভোর্স হওয়াতে..
                                                               >>THE END<<

No comments

info.kroyhouse24@gmail.com