দুদিন পরে ফোন দিল কেন | পর্ব -১ | Written by Ft
এক ‘তোকে একটা জরুরী কথা বলার ছিল।’
‘কী কথা? সামনাসামনি বলিস।
জরুরী কথা ফোনে কেন?’
‘কথাটা আসলে তোর
সামনে দাঁড়িয়ে বলতে পারব
না। তাই ফোনেই বলতে চাচ্ছি।’
‘ঠিক আছে বল।’ ‘কিভাবে বলব বুঝতে পারছি না।
তুই রাগ
করবি নাতো?’
‘কথাটা এখনও শুনলামই না! আগে বল?’
‘তোকে না আমার অনেক পছন্দ। আই লাভ ইউ।’
হুট করে কথা বলে ফেলল সাজেদ।ওপাশ
থেকে কোনো রেসপন্স আসছে না!
কিছুক্ষণ পর নিরবতা ভেঙ্গে আওয়াজ আসল,
‘বন্ধুত্বটা এভাবে নষ্ট করে দিলি?!’
সাজেদ কিছু বলতে যাবে, এর আগেই
ফোনের
লাইনটা টুট টুট করে কেটে গেল।
ও চিন্তায় পড়ে গেল। কাজটা কি ঠিক করেছে?
এতদিনের বন্ধুত্বটা কি আসলেই নষ্ট
হয়ে যাবে? একবার ফোন
করে সরি বলে নেয়া দরকার। নাহ্!
এখন ফোন দেয়া চলবে না। আবার
যদি বেঁকে বসে? নিজেকে কেমন নিচু
প্রকৃতির
মানুষ মনে হচ্ছে। প্যাকেট থেকে একট
সিগারেট
বের করে ঠোঁটে নিল। তারপর
দিয়াশিলাইয়ের
সাহায্যে সিগারেটটা ধরিয়ে কুন্ডলী
পাকিয়ে ধোঁয়া ছাড়তে লাগল।
******
সাজেদ ও তিন্নি একটা প্রাইভেট
ভার্সিটি থেকে বিবিএ করছে। ওদের পাঁচ
নাম্বার সেমিস্টার চলছে। বন্ধুত্বটা তিন
নাম্বার সেমিস্টারে উঠার পর হয়েছে।
বন্ধুত্বের গাঢ়তা আস্তে আস্তে বাড়তে থাকে।
সবসময় একে অন্যের খুঁজ- খবর নেয়। কিন্তু
সাজেদ
তিন্নির যতই কাছে আসছিল, ততই তিন্নির
প্রতি ওর দূর্বলতা বাড়ছিল।
যাকে ভালবাসা নামে আখ্যায়িত করা যায়। এর
ফলস্রুতিতে আজ বলে দিয়েছে মনের কথা।
কিন্তু হিতে বিপরীত হয়ে গেছে এখন। বন্ধুত্ব
টিকবে কি না- এই চিন্তা সাজেদের মনে,
ভালবাসার কথা তো ভুলেই গেছে। দুই দুদিন গত
হয়ে গেছে, তিন্নির সাথে সাজেদের
যোগাযোগ নেই। সেই সাথে ভার্সিটিও বন্ধ,
দেখা হওয়ার চান্স নেই।
সাজেদ বারান্দায় একা বসে আছে। পুরো এক
প্যাকেট সিগারেট কখন শেষ
হয়ে গেছে বুঝতেই
পারেনি। একটু আগে ফোন দিয়েছে এক
বন্ধুকে মদ জোগাড় করার জন্য। এমন
পরিস্থিতিতে মদই
কাছের বন্ধু। সিগারেটও অবশ্য।
রেডি হয়ে রুম থেকে বের হবে- তখনই
মোবাইল
ফোনটা বেজে উঠল। স্কিনে তিন্নির
নামটা জ্বলজ্বল করছে। নামটা চোখে পড়তেই
ও
ভুত দেখার মত চমকে উঠল! কী করবে মাথায়
আসছে না। দুদিন পরে ফোন দিল কেন ও?
কী বলবে এখন ফোন ধরার পর? এসব
ভাবতে ভাবতে ফোনের লাইন কেটে গেল।
আবার
রিং বেজে ওঠল। এবার ও সাত-পাঁচ না ভেবেই
সাথে সাথে রিসিভ করল। তারপর
কাঁপা কাঁপা কণ্ঠে বলল, ‘হ্যালো!’ ‘কী মিস্টার,
বিজি নাকি?’
‘না..মানে..’
‘দুদিন হয়ে গেল একটা ফোন দিলেন না?
আমি তো আপনার ফোনের অপেক্ষায় ছিলাম।’
সাজেদ ওর কথার মাহাত্ম্য বুঝতে পারছে না।
যে মেয়ে দুদিন আগে ওর সাথে রাগ
করে ফোন রেখে দিয়েছিল, ও আজ নিজেই
ফোন করে এমন
কথা বলছে কেন?
আসলে মেয়ে জাতিকে বোঝা সবচেয়ে দূরহ
কাজ!
No comments
info.kroyhouse24@gmail.com