অপেক্ষার শেষ প্রহর | লেখক:আকাশ আহম্মেদ | শেষ পর্ব
পাগলিটা আমার বড়ই লাজুক ….. আমি:আচ্ছা …মেহু আমাদের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা
কি???মেহু:এহহহ বিয়ে করেছে দুদিন হয় নি এখনই ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা…….আগে
পড়ালেখা শেষ হোক একটা ভালো চাকরি পাও তারপর আমাদের সংসার …… আমি:হুম তা
ঠিক বলেছো…… কিছু দিন পরে আমাদের পড়ালেখা শেষ হলো আর আমাদের নিজস্ব
অফিস আছে তাই আর কি জব করা শুরু করলাম …….সব কিছুর থেকে মূল্যবান আমার
ভালোবাসা…….অফিসে বসে মেহুর কথাই ভাবতেছি আর এমন সময় মেহুর কল
আসলো…….মেহু:এই খাইছো তুমি??? আমি:না এখনো খাই নি ……মেহু:কি এখনো
খাও নি কেনো …… আমি:এমনি বসে বসে তোমার কথা ভাবতেছি তাই আর খাওয়া হয়নি
………মেহু: হইছে আর ন্যাকামি না করে খেয়ে নিন সাহেব….আর শুনো
তারাতারি বাসায় আসো please একা একা আমার একদম ভালো লাগে না…..আর হুম আমার
জন্য আইসক্রিম আর চকলেট আনতে ভুলবে না আর হুম একটা বকুল ফুলের মালা নিয়ে
আসবা ………. আমি:আচ্ছা সোনা
ঠিক আছে…….না অফিসে আর ভালো লাগতেছে না বাসায় যেতে হবে বাবা মা
গ্রামের বাড়িতে গেছে তাই বাসায় মেহু একাই …….অফিস থেকে বের হয়ে বাসার
উদ্দৈশ্যে রওনা হলাম মাএ দশ মিনিট লাগবে দোকান থেকে পাগলির জন্য কিছু
চকলেট আইসক্রিম আর তার পছন্দের একটা বকুল ফুলের মালা নিলাম ……বাসায় এসে
কলিং বেল বাজাতেই পাগলিটা এসে দরজা খুললো আমাকে দেখে তো খুশিতে আত্নহারা
জড়িয়ে ধরে বললো তারাতারি আসতে বললাম তাই চলে আসলে থাংকু সোনা
……. আমি:এই নাও তোমার আইসক্রিম চকলেট…….মেহু:তোমাকে না বললাম আমার
জন্য বকুল ফুলের মালা নিয়ে আসতে আনলে না ……এই নাও তোমার আইসক্রিম
চকলেট আমি খাবো না তুমি বসে বসে খাও আমি গেলাম ………. পাগলিটা চলে
যাচ্ছে পেছন থেকে ওর হাতটা ধরে জড়িয়ে ধরলাম ….. আমি:এই পাগলি আমাকে ছেড়ে
কই যাও ….পকেট থেকে বকুল ফুলের মালাটা বের করে পাগলিটাকে বকুল ফুলের
মালাটা পরিয়ে দিলাম….মেহু:হি হি হি থাংকু গুলুগুলু আগে দাও নি কেনো
হুম………… আমি:তোমাকে রাগাতে …..মেহু:হি হি হি আমি তো রাগ করি নি
…….আর আমি তো ভেবে ছিলাম তুমি ভুলেই গেছো….. আমি:পাগলি খুব ভালোবাসি
তোমাকে ভুলতে কি পারি……মেহু:হি হি হি জানি তো পাগল…..খাওনি নিশ্চয়
তুমি ফ্রেস হয়ে নাও আমি খাবার
দিতেছি………ফ্রেস হয়ে দুজনে খেতে
বসলাম……মেহু :এই বাবু আমাকে খাইয়ে দাও না please……. আমি:ইসসসস
বাচ্চা মেয়ে কি বলে …..এদিকে আসো…… পাগলিটা কে কাছে বসিয়ে খাইয়ে
দিলাম….আর আমি ও খেয়ে নিলাম…..রাতে মেহু বায়না ধরলো ছাঁদে যাবে……এই
বাবু চলো না একটু ছাঁদে যাই …… আমি:না না সোনা
এতো রাতে ছাঁদে যাবো না …..মেহু:কেনো কেনো আমি চাদ দেখবো আমাকে নিয়ে
চলো please…….. আমি:আচ্ছা চলো কিন্তু বেশিক্ষন থাকবো না আকাশটা মেঘলা
বৃষ্টি আসতে পারে……..বাসার ছাঁদে দুজনে আসলাম……মেহু:জানো তোমাকে
এখানে কেনো নিয়ে সোনা……মেহু:কি
আর হবে তোমার মতো শয়তান হয়েছে একটা ….আমাকে লাথি দিলো…… আমি:হি হি
হি হি……মেহু :একদম হাসবা না তোমার মতোই দুষ্টু হবে……. আমি:আচ্ছা
মেহু আমাদের কিন্তু মেয়ে হবে মেহু:না ছেলে …… আমি:না
মেয়ে…….মেহু:বললাম না ছেলে…….. আমি:আচ্ছা ঠিক আছে
ছেলে……..আমাদের বেবির নাম কি রাখবা সোনা……….মেহু:ছেলে
হলে মেঘ আর মেয়ে হলে বৃষ্টি…… আমি: হুম নাম গুলা খুব ভালো…….এমন
দুষ্টু মিষ্টি ভালোবাসায় আমাদের খুব ভালোই কাটতেছে …….মেহুর ডেলিভারির
দিন খুব তারাতারি গনিয়ে আসতেছে আর আমার চিন্তাটা ও খুব বাড়তেছে…….রাতে
বাসার ছাঁদে দুজনে বসে আছি……মেহু:জানো বাবু আমার খুব ভয়
করতেছে……..আচ্ছা বাবু তুমি তো আমাকে খুব ভালোবাসো তাই না …..
আমার যদি কিছু হয়ে যায় তুমি আমার সন্তানকে দেখে রেখো ……আর হুম কখনো
ওরে কষ্ট দিও না আমার থেকে বেশি ভালোবাসবা ……আর শুনো আমার যদি কিছু হয়ে
যায় please তুমি নতুন করে কাউকে ভালোবেসো না কারন তোমাকে এতোটাই
ভালোবেসেছি যে মৃত্যুর পরে ও আমার ভালোবাসার ভাগ কাউকে দিতে পারবো না
…… আমি:পাগলিটাকে জড়িয়ে ধরে please জান এমন কথা বলো না তোমাকে ছাড়া আমি
বাঁচতে পারবো না খুব ভালোবাসি তোমাকে তুমি আর কখনো এমন কথা বলবে না
…….সকাল হতে অফিসে বসে আছি কিচ্ছু ভালো লাগতেছে না পাগলিটাকে কত করে
বললাম আজকে অফিসে যাবো না তবুও শুনলো না হঠাৎ মায়ের ফোনটা বেজে
উঠলো…..মা:বাবা তারাতারি #### হাসপাতালে আয় মেহু বাতরুমে স্লিপ খেয়ে পড়ে
গেছে ……মায়ের কথা শুনে কলিজাটা যেনো ছিড়ে যাচ্ছে তারাতারি হাসপাতালে
পৌছালাম……. আমি:মা মেহু কোথায় …….মা: অপারেশান থিয়েটারের নিয়ে গেছে
……..বাবা আমার খুব ভয় করতেছে পড়ে গিয়ে ওর প্রচুর পরিমানে ব্লেড়িং
হচ্ছে……….. আমি হাসপাতালের এক কোনে বসে আছি দুচোখ বেয়ে অঝোর বৃষ্টি
নামতেছে ………প্রায় দুইঘন্টা পর ডাক্তার অফারেশান থিয়েটারের থেকে
বের হলো……ডাক্তার:কোলে করে একটা ফুটফুটে বেবি নিয়ে আসলো……আমার হাতে
তুলে দিয়ে আপনার কন্যা সন্তান হয়েছে……. আমি:ম্যাডাম আমার মেহু কেমন
আছে কি বলো কথা বলতেছেন না কেনো…….ডাক্তার :সরি আমরা বাচ্চার মাকে
বাঁচাতে পারি নি…….এক মূহুর্তে আমার পুরো পৃথিবী থমকে
গেলো……বাকরুদ্ধ হয়ে গেলাম……জ্ঞান হারিয়ে ফেলি….জ্ঞান ফেরার পর
মেহুর কাছে ছুটে যাই ……. আমি:এই মেহু কলিজা উঠো না কথা বলো please দেখো
আমাদের বৃষ্টি…….. এই মেহু কি হইছে কথা বলবা না বৃষ্টিকে আদর করবা না
মেহু……… মেহু দেখো আমাদের বাবুনিটা তোমার মতো দেখতে মেহু কথা বলো না সোনা
আমার খুব কষ্ট হচ্ছে……… কিছু লোক আমার মেহুকে দিয়ে যাচ্ছে চিৎকার
করে বলতেছি আমার মেহুকে নিয়ে যেওনা আমার মেহুকে ছাড়া আমি থাকতে পারবো
না……….
বৃষ্টির ডাকে বাস্তবে ফিরলাম বাবা ও বাবা নিচে সবাই
অপেক্ষা করতেছে চলো …..চোখের জল লুকিয়ে চলি মা …….আজ আমার বৃষ্টিটা
পাঁচ বছরের দেখতে আমার মেহু……….আজও পাগলিটার অপেক্ষায় পথ চেয়ে বসে
আছি কখন এসে বলবে বাবু আমার জন্য চকলেট আনবা আইসক্রিম আনবা চুড়ি আনবা আর
আমার পছন্দের বকুল ফুলের মালা…… কিছু সৃতি এমনই থেকে যায় আর আমার
ভালোবাসার সৃতি আমার বৃষ্টিকে আঘলে আমি বেঁচে আছি……… কিছু অপেক্ষা
শুধু মাএ অপেক্ষাই থেকে যার কখনো শেষ প্রহর হয় না
আসলাম…… আমি:কেনো কেনো???মেহু:একটা সাপ্রাইজ দেবো
তাই…… আমি:তাই কি সাপ্রাইজ……মেহু:এদিকে আসো…… আমার কানের কাছে
এসে বললো আমি মা হতে চলেছি আর তুমি বাবা …… আমি:সত্যিইইইই কি যে খুশি
লাগতেছে বলে বুঝাতে পারবো না……ওয়াও জান উম্মাহহহহ পাগলিটাকে কোলে নিয়ে
চিৎকার করে বলতে লাগলাম I Love you মেহু I Love you…….এমন সময় বৃষ্টির
আগমন দুজনে বৃষ্টিতে ভিজতেছি……. খুব ভালো লাগতেছে………অনেকক্ষন
ভিজার পরে বাসায় আসলাম দুজনে আর যা হবার রাতে আমার খুব জ্বর এসেছে আর
পাগলিটা আমার পাশে বসে কান্না করতেছে …..মেহু:আমার জন্যই তোমার জ্বর
আসলো……. আমি খুব পঁচা……. আমি:এই পাগলি বাচ্চা মেয়ের মতো কান্না
করতেছো কেনো হুম…….আমার তো কিছুই হয় নি সামান্য জ্বর সেরে যাবে
…….মেহু:নাক টেনে টেনে না সব দোষ আমার আমি তোমাকে ছাঁদে না নিয়ে গেলে
তোমার জ্বর আসতো. না ………. আমি: পাগলিটা কে কাছে এসে চোখের জল মুছে
দিয়ে …. দেখো জ্বর চলে গেছে আর কান্না করতে হবে না …..আর তুমি কান্না
করতেছো বাবু দেখলে হাসবে……মেহু:ও মা গো …. আমি:কি হইছে
………..সমাপ্ত………
No comments
info.kroyhouse24@gmail.com