ফুসকাওয়ালীর ভালোবাসা | শেষ পর্ব
শাপলা: দূর পাইজলামী রাখ তো…….আমাকে খাইয়ে দে…..
আমি:ও এই কথা এজন্য বলি ভুতের মুখে রাম নাম…হি হি হি …..
শাপলা:কিইইই আমি ভুত…….
আমি:না তুই তো কিউট পরী ….
শাপলা:ওরে আমার গুলুগুলু আর পাম না দিয়া খাইয়ে দাও আমাকে…..
আমি:আচ্ছা হা কর…….. অতঃপর পাগলি কে খাইয়ে রুমে এসে ঘুমালাম……এভাবে আমাদের দুষ্টু মিষ্টি সম্পর্ক ভালোবাসায় রূপান্তরিত হয় …..তা আগে বুঝতে পারি নি সেদিন বুঝে ছিলাম যেদিন শাপলা নিজে আমাকে জড়িয়ে ধরে বলছে সে না কি আমাকে খুব ভালোবাসে……..কি কিছু বুঝেন নি তো …..বুঝিয়ে বলতাছি…….কিছু দিন আগে কলেজে একটা মেয়ে আমাকে অফার দিয়েছে আর তা শাপলা দেখে ফেলেছিলো…. যেহেতু আমার এসব ভালো লাগে না আর আমার তো বেস্টু শাপলা আছে তাহলে আর রিলেশান এর কি প্রয়োজন……তাই না করে দিলাম….সেদিন সব কিছু শাপলা দেখে ছিলো আর আমাকে সেদিন জড়িয়ে ধরে বলে ছিলো সে আমাকে ভালোবাসে………আর আমি ও আমার পাগলিটাকে বুকে টেনে নিই………এভাবে চলতে থাকে আমাদের ভালোবাসা……এভাবে আমাদের দুষ্টু মিষ্টি খুনসুটি ভরা ভালোবাসা চলতেছে আজ প্রায় দুইবছর…..বাসা থেকে হঠাৎ মায়ের ফোন ……মা:আকাশ তোর বাবা খুব অসুস্থ….. আমি তারাতারি বাসা থেকে রেড়ি হয়ে খালাকে বলে আমাদের বাড়িতে চলে আসলাম …..আসার সময় পাগলিটা কে একবার বলে ও আসতে পারলাম না……বাড়িতে এসেই বাবাকে ডাক্তার দেখালাম…..আজ পনেরদিন বাড়িতে বাবা মায়ের সাথে খুব আনন্দেই দিন কাটতেছে……কিন্তু পাগলিটা কে খুব মনে পড়তেছে আসার পর থেকে ওর সাথে একবার ও কথা হয় নি…… গ্রামে আসার সময় ফোনটা হারিয়ে ফেলেছি……তাই আর পাগলিটার খোঁজ খবর ও নিতে পারি নি…..বাবা এখন সুস্থ হয়েছে তাই ভাবতেছি বিকালেই ফিরে যাবো…… সন্ধ্যায় বাসে সোনা……শাপলা:কিসের সরি তোর কোন ক্ষমা নাই…..যা আমার জন্য ফুসকা নিয়ে আয়….. আমি:কিইইইই এতো রাতে ফুসকা পামু কই……শাপলা:আমি জানি না আনতে বললাম আন…… আমি নিরুপায় হয়ে বেরিয়ে পরলাম……বাজারে আসার পর দেখি একটা মামা আছে ফুসকা বিক্রি করতেছে….. আমি:মামা আমাকে অনেক গুলা ফুসকা দাও…….ফুসকা নিয়ে বাসায় ফিরলাম……পাগলির রুমে এসেই …আমি:এই নে তোর ফুসকা পেট ভরে খা……শাপলা:হি হি হি থাংকু গুলুগুলু সোনা ময়না আমার…… আমি:হয়েছে আর পাম দিও না এবার খেয়ে নাও …….পাগলিটা খাচ্ছে আর আমি তাকিয়ে তাকিয়ে দেখতেছি কতনা কষ্ট দিয়েছি পাগলিটাকে….. পাগলিটা আমাকে খুব ভালোবাসে বলেই যতই কষ্ট দিই না কেনো….রাগ অভিমান করে থাকতে পারে না ……খাওয়া শেষে……. শাপলা: এই আকাশ চল….. আমি:কোথায় যাবো…..শাপলা:রাস্তার পাশে একটু হাঁটবো…… আমি:এতো রাতে…..শাপলা: হুম চল…….এখন আমি শাপলার হাত ধরে জোৎসা ভরা রাতে রাস্তার পাশে হাঁটতেছি……..চাঁদের আলোয় পাগলিটাকে পরীর মতো লাগতেছে…… আমি লুকিয়ে লুকিয়ে দেখতেছি…..শাপলা:ঐ উকি মেরে কি দেখা হচ্ছে হুম. ……… আমি:তোকে দেখি……শাপলা:দেখতে হবে না এবার বাসায় চল………বাসায় এসে রাতে ঘুমালাম……মান অভিমান ভালোবাসায় ভরা আমাদের সম্পর্ক চলতেছে……দেখতে দেখতে আমার পড়ালেখা শেষ হয়ে গেলো……খালুর অফিস দেখা শুনার দায়িত্বটা ও আমার উপর এসে পরলো……খালু খুব একটা অফিসে যায় না সব কাজ আমাকে বুঝিয়ে দিয়ে এখন অবসরে আছে…….অফিসে বসে আছি পাগলিটা কে খুব মনে পড়তেছে…….না বাসায় যেতে হবে পাগলি কে ছাড়া ভালো লাগতেছে না…..বাসায় ফেরার সময় পাগলির জন্য পুসকা আর কিছু চকলেট নিলাম….. আর ওর পছন্দের একটা লাল গোলাপ নিয়ে বাসায় বাসলাম……বাসায় এসে তো আমি অভাক বাবা মা খালার বাসায় আসছে…… আমি তো মহা খুশি…….বাসায় এসে সবার সাথে দেখা করে শাপলার রুমে আসতেই শাপলা আমাকে জড়িয়ে ধরে লাপাচ্ছে….. আমি:কি রে এমন করছিস কেনো কি হইছে তোর ……শাপলা: উমমমমমম্মাহ…. আমি:কি হলো বলবি তো……আমাকে ছেড়ে দিয়ে …শাপলা:খালা খালু কেনো আসছে জানিস…… আমি:উহু….শাপলা:মা বলেছে আমাদের বিয়ে দেবে …… আমি:সত্যিইইইই……. শাপলা:লজ্জা পেয়ে…. হুম……. আমি শাপলাকে বুকে টেনে ধরলাম…… আমি:তাহলে তুই আমার বউ হবি……শাপলা:উুহু …. তুই না আজ থেকে তুমি…… আমি:হি হি হি আচ্ছা….তুমি…..কিন্তু তোমার ফুসকা…..শাপলা:ফুসকা আনসো…..
উঠলাম……5ঘন্টা পর খালার বাসায় আসলাম…..পনের দিন বাড়িতে থাকলে ও মনটা শাপলার কাছেই পড়ে ছিলো…..জানিনা পাগলিটা কেমন আছে ….…বাসায় গেলে আমার কি করে তা ও আমি জানি না …..বাসার দরজায় এসে কলিং বেল চাপলাম ……খালায় দরজা খুললো….. আমি:কেমন আছো খালামনি……খালা:আমি ভালোই আছি কিন্তু তোর কপালে বড় দুঃখ আছে রুমে গিয়ে দেখ শাপলার কি অবস্থা হয়েছে…..খালার কথায় আমি ভয় পেলাম……খালা:তুই যাবার পর থেকে কি ওর সাথে কথা হয় নি…….. ঠিক মতো খায় না শুধু কান্না করে কেমন যেনো হয়ে গেছে……… আমি তারাতারি দৌড়ে পাগলির রুমে আসলাম…….দেখি মাথাটা গুছিয়ে রুমে বসে আছে….. আমি রুমে ডুকতেই…..কাথা বালিশ সব ছুড়ে মারতে শুরু করলো…….শাপলা:ঐ কুওা আজ কয়দিন হলো তুই বাড়িতে গেছিস যাবার সময় ও একবার বলে যাস নি আর আজ পনের দিনে ও একটা কল দিতে পারিস নি….দৌড়ে এসে আমাকে জড়িয়ে ধরেছে আর বাচ্চা মেয়ের মতো কান্না করতেছে……. আমি:না রে পাগলি হঠাৎ বাবা অসুস্থ হয়ে গেছিলো ……আর আমি যাবার সময় ফোনটা হারিয়ে গেছে……তাই তোর সাথে কথা বলতে পারি নি…..জানিস পনের দিন বাড়িতে ছিলাম পনের সেকেন্ডের জন্য ও মনটা তোকে ভুলে নি…..আমার ও খুব কষ্ট হয়েছে…..পাগলিটাকে জড়িয়ে ধরে আছি পাগলিটা ও আমাকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরেছে……আমার শার্টটা পুরো ভিজে গেছে….. আমি:এই পাগলি কান্না করিস না…..শাপলা:আমাকে কাঁদাস কেনো….. আমি:সরি
আমি: হুম…….
শাপলা:কইইই দাও তো…..
আমি:না আগে আমাকে কিস করো তারপর দেবো…….
শাপলা:উহু কিস করবো না ….
আমি:তাহলে ফুসকা দেবো না……
শাপলা:এইইইই এদিকে আসো করতাছি ………উম্মমমমমমমমমাহ…….এবার দাও…..
আমি:না দেবো না……শাপলা কেনো কিস করলাম তো…..
আমি:বসো তুমি আমি খাইয়ে দেবো…… অতঃপর পাগলিটাকে আমি ফুসকা খাওয়াচ্ছি…..পুসকা খাওয়া শেষে…..রুমে বসে গল্প করতেছি এমন সময় খালা আসলো আমাদের রুমে……আকাশ শাপলা তোদের কে ডাকতেছে……এমন ভাবে ডাকতেছে মনে হয় কোন অপরাধ করলাম……খালু :আমরা ঠিক করেছি তোমাদের বিয়ে দেবো তোমাদের কি কোন আপওি আছে….. আমি আর শাপলা মাথা নাড়ালাম……..খালু:আচ্ছা তাহলে এখন যাও…আজ আর শাপলা আজকে বিবাহিত বন্ধনে আবদ্ধ হলাম……রাত দশটা রুমে আসলাম……পাগলি বসে আছে…… আমি এসে ওর পাশে বসলাম……কেনো জানিনা খুব লজ্জা লাগতেছে…….. হঠাৎ শাপলা…কি হলো এমন লাজুক লাগতেছে কেনো……. আমি:না মানে প্রথম বিয়ে করেছি তো তাই…..শাপলা:কিইইই আরো করার ইচ্ছে আছে নাকি……খাট থেকে নাম …নাম বলছি….. আমি:এ না ছি ছি আমি তা বলি নি ….শাপলার কাছে গিয়ে ওর হাতটা ধরলাম….. আমি তো তোকে খুব ভালোবাসি…….শাপলা:হুম মনে থাকে যেনো কোন মেয়ের দিকে তাকালেই চোখ তুলে নেবো হুম…..আমি: তাকাবো না …..শাপলা:আচ্ছা সারারাত কি শুধু জগড়া করবা নাকি অন্যকিছু ও করবা…… আমি:হি হি হি হি পাগলি কে একটা পাপ্পি দিলাম…..আর আপনারা এখন আসেন কেমন নতুন বউ তো লজ্জা পাচ্ছে তা ছাড়া কারো বাসর রাতে উকি মারতে নেই……………
পাগলিটা কান্না করতেছে…..রুম থেকে দুজনে বাহিরে আসলাম…….শাপলা চোখের জল মুছতে মুছতে…..তুই বস আমি খাবার নিয়ে আসতেছি…… পাগলিটা একটু পর খাবার নিয়ে আসলো দুজনে খেতে বসলাম….. আমি খাচ্ছি কিন্তু শাপলা আমার দিকে তাকিয়ে আছে…… আমি:কি রে পাগলি না খেয়ে হা করে কি দেখছিস…..শাপলা:তোকে দেখতেছি রে আকাশ…… আমি:বা বা আগে কখনো দেখোনি নাকি
………………………..সমাপ্ত…………….
ভালোবাসায় জড়িয়ে রাখুন ভালোবাসার মানুষটিকে সারাজীবন….মান অভিমান করে সম্পর্কটা নষ্ট করবেন না ……ভালোবাসার উপর বিশ্বাস রাখুন……সন্দেহ খুব খারাপ তাই ভালোবাসার মানুষটিকে সন্দেহ করা থেকে বিরত থাকুন…….. ভালো থাকুক ভালোবাসার দুষ্টু মিষ্টি সম্পর্ক গুলো……..
No comments
info.kroyhouse24@gmail.com