ভালোবাসার অধিকার | শেষ পর্ব
সকাল বেলা ঘুম থেকে উঠলাম ফারহার ভেজা চুলের কুয়াশা ভেজা চুলে……
ফারহা:এই যে শুনছেন অনেক বেলা হয়েছে উঠুন please……… আমি বিছানা থেকে উঠলাম মেজাজ খারাপ হয়ে গেলো রাতে ঘুমাতে পারলাম না এমনি তার উপর অনেক টেনসেনে আছি……. খুব রাগ হয়েছে…….ফারহার দিকে না তাকিয়েই বললাম……সাজ সকালে এতো চেচামেছি করতেছো কেনো একটু শান্তিতে ঘুমাতে ও দিবে না…..যা তা ব্যাবহার করলাম…….. ফারহার দিকে তাকিয়ে দেখি মাথা নিচু করে মন খারাপ করে দাড়িয়ে আছে আছে……. আমি ফারহাকে প্রথম দেখতেছি কি সুন্দর অপ্সরি …..পরীর মতো লাগতেছে……মেয়েটার মুখে একটা মায়া আছে জানি না কেনো মেয়েটাকে বকে নিজের কাছেই খারাপ লাগতেছে……..ফারহা আমার কথা গুলো শুনে কিছু না বলে মন খারাপ করে রুমের বাহিরে চলে গেলো…….আর আমি অসহায়ের মতো নিজেকে গালি দিচ্ছি …….ওর তো কোন দোষ নেই প্রত্যেক মেয়েই তার স্বামীকে ভালোবাসতে চায় কিন্তু আমার ফারহার প্রতি দুর্বল হলে চলবে না আমি তানহা কে ভালোবাসি আর ফারহাকে স্থী অধিকার দেওয়া আমার পক্ষে সম্ভব না ………..ফ্রেস হয়ে নাস্তা করতে বসলাম……..সবাই মিলে নাস্তা করতেছি তখন বাবা বললো …..বাবা:আকাশ তোর তো অফিস খোলা খুব বেশি সময় নেই যাবার সময় ফারহাকে সাথে নিয়ে যাস একা একা ও বাসায় থাকতে পারবে না …… আমি বাবার কথায় কিছু না বলে নাস্তা করে বাসা থেকে বের হয়ে গেলাম…….বন্ধুদের সাথে একটু আড্ডা দিলাম কিন্তু মনটা খুব খারাপ ফোনটা ও বন্ধ করে রেখেছি …..তানহা নিশ্চয় অনেক বার কল দিয়েছে কিন্তু আমি কি করবো আমার যে কিছুই করার নেই…… আমি যে অন্য কাউকে বিয়ে করতে বাধ্য হয়েছি নিজে ও জানি না ওর শেষ কোথায় ……এসব চিন্তা আমাকে কুড়ে কুড়ে খাচ্ছে রাত বারোটা বাসায় ফিরলাম…….বাসায় আসার পর ……ফারহা : আপনি এতো রাত করে বাসায় ফিরলেন যে…… আমি কিছু না বলে বিছানায় শুয়ে পরলাম……. ফারহা:কি হলো খাবেন
না……..??? উঠে ফ্রেস হয়ে নিন আমি খাবার দিতেছি……… আমি:তোমার এতো আলগা ফিরিতি না দেখালে ও চলবে আর হুম আমি বাবার কারনে তোমাকে বিয়ে করতে বাধ্য হয়েছি …… আমি তোমাকে স্থী হিসেবে মানতে পারবো না আর কখনো আমার কাছে স্বামীর অধিকার দাবী করতে আসবা না ……এই বলে বিছানায় শুয়ে গেলাম…….মাঝরাতে কারো কান্নার শব্দ শুনতেছি……..কিন্তু এতোরাতে কে কান্না করতেছে……..চোখ মেলে দেখি ফারহা কান্না করতেছে……..ফ্লোরে শুয়েছে…….ওহ সিট মাথা ঠিক ছিলো না কিন্তু মেয়েটা কে তো ফ্লোরে ঘুমাতে দেওয়া উঠে হয় নি……. আমি জানি ওর কান্নার মানে টা কিন্তু আমি কি করবো আমি যে মাঝসাগরে বাসতেছি…….এর তো কোন কিনারা খুঁজে পাচ্ছি না …….মনটা খুব খারাপ লাগতেছে……..সকাল বেলা ঘুম থেকে উঠে দেখি পাগলিটা আমার রুমে চা নিয়ে আসলো কিছু না বলে চা টা নিলাম আর একটা Thanks…..দিলাম…….ফারহার দিকে তাকিয়ে দেখি ও খুব খুশি……হয়তো এমন ভাবে হাসি খুশি রাখতে পারলেই মেয়েটাকে আমি খুশি হতাম……. ফারহা একটু পরে একটা টাওয়াল আর জামা কাপড় এনে দিতে বললো…… ফারহা:এই নিন গোসল করে নিন. তারাতারি……. আমি:ওর থেকে ওগুলা নিয়ে গোসল করে আসলাম……..রুমে এসে রেড়ি হচ্ছিলাম তখনই ফারহা আসলো…… ফারহা:আপনি কি কোথাও যাচ্ছেন ….. আমি: হুম একটু কাজ আছে…… ফারহা:আচ্ছা বেশি দেরী করবেন না…… ঠিক মতো খেয়ে নেবেন ….. তারাতারি বাসায় ফিরে আসবেন…….. আমি অপেক্ষায় থাকবো……সকাল বেলা ফোনটা অন করলাম…..দেখি 5টা sms…….তানহা দিয়েছে…….বাহ আকাশ খুব ভালো করেছো ভালোবেসেছিলাম তোমায় আর তুমি আমাকে ঠকিয়ে বিয়ে করে সুখে সংসার করছো……..তোমার মতো মহান মানুষ হয় না ……..সুখে থাকো বউ নিয়ে চিরবিদায় তোমার থেকে…….আমার পৃথিবীটা একমুহূতে থমকে গেলো ……কি করবো বুঝতে পারছি না তারাতারি তানহা কে কল দিলাম…… ফারহা:কেনো কই দিসো আমাকে…… আমি: ফারহা আমার কথা তো শুনো…….. ফারহা:চুপ কুওা তোর কোন কথা আমি শুনবো না তোর মতো ছেলেকে বিশ্বাস করাই আমার ভুল হয়েছে……আর হুম চিন্তা করিস না আমি আগে থেকে জানতাম এমন কিছু করবি তাই আমি আমার মামাতো ভাইকে বিয়ে করতেছি…….ভালো থাকিস…..রাখি…… টুট টুট……… ফারহা আমাকে ভুল বুঝলো যাকে নিজের থেকে বেশি ভালোবাসলাম……… একটু সময় দিলে কি ক্ষতি হতো ……..মাথা কাজ করতেছে না……. তারাতারি বাসায় ফিরে আসলাম…… ফারহা:কি হলো আপনাকে এমন দেখাচ্ছে কেনো….. আমি:তেমন কিছু না …….বাসায় এসে বারান্দায় বসে সিগারেট খাাচ্ছি……পেছন থেকে ফারহা এসে আমাকে বললো…… ফারহা:এসব খাবেন না please……. আমি:এখান থেকে যাও তোমার জন্য আমার জীবনটাই শেষ……. ফারহা:আমি কি দোষ করেছিলাম…. আমি তো কোন অন্যায় করিনি তবে কেনো আমাকে এতো কষ্ট দিচ্ছেন এই বলেই কান্না করে দিয়েছে ... আমি বাসা থেকে বের হয়ে বাসার ছাঁদে চলে গেলাম…….ছাঁদে এসে বসে আছি মনটা খুব খারাপ……… কি করবো আমি আল্লাহ আমার মাথা কাজ করতেছে না ……..একজনকে বিয়ে করে স্বামীর আদর ভালোবাসা থেকে বন্চিত করতেছি আরেকজন আমাকে ভুল বুঝে দূরে সরে যাচ্ছে….দুর কিছুই ভালো লাগতেছেনা……..বাসায় আসলাম …………..রাত অনেক হয়েছে…….ফারহা এখনো বসে আছে ….. আমি রুমে ঢুকতেই ……..ফারহা:আপনি এসেছেন.. ….ফ্রেস হয়ে আসুন …..আমি খাবার দিতেছি…….. আমি:থাক তোমাকে কষ্ট করতে হবে না আমি খাবো না ………. ফারহা:এ কেমন কথা আমি খাবার আনতেছি আপনি ফ্রেস হয়ে আসুন…… আমি:বললাম তো খাবো না ……এই বলে একটা সিগারেট ধরালাম……. ফারহা:আমার হাত থেকে সিগারেট নিয়ে ছুড়ে ফেলে দিলো…… ফারহা:আপনাকে কত বার বলবো এসব খাবেন না……
আমি:ঠাসসসসস…..তোমাকে না বলেছি আমার উপর অধিকার খাটাতে আসবে না…….. ফারহা শুয়ে পরলো আর মুখের ভেতর শাড়ির আঁচল দিয়ে চেপে কান্না করতেছে……..বিছানায় শুয়ে আছি ঘুম আসতেছে না….বসে বসে ভাবতেছি….. আমি জীবনে প্রথম কোন মেয়ের উপর হাত তুললাম তাও আমার বউয়ের উপর……ওর তো কোন দোষ নেই ……ও তো সব সময় আমার ভালোই চায় তবে কেনো এমন হচ্ছে যাকে নিজের থেকে বেশি ভালোবেসেছি সে আমাকে ছেড়ে চলে গেছে…….আর যে নিজের থেকে বেশি আমাকে ভালোবাসে তাকে এতো কষ্ট দিচ্ছি কেনো আমি না এর শেষ চাই আমি আর না অনেক কষ্ট দিয়েছি অনেক কাঁদিয়েছি আমি ফারহাকে ওর মতো এমন মেয়ে আমার কপালে জুটেছে এই আমার সৌভাগ্য অন্য কোন মেয়ে হলে বিয়ের পরের দিন বাপের বাড়িতে চলে যেতো……শত আঘাত করার পরে ও কখনো বিন্দুমাএ প্রতিবাদ করে নি…….বুকের মধ্যে অজানা এক কষ্ট আমাকে কুড়ে কুড়ে খাচ্ছে …………মন চাইতেছে এক্ষুনি ফারহার পায়ে পড়ে ক্ষমা চাই……… পাগলিটা ঘুমাচ্ছে ওর গায়ে একটা কথা আর কপালে একটা চুমু দিয়ে আমি ঘুমিয়ে গেলাম……সকালে ঘুম থেকে উঠে ফারহাকে খুঁজতেছি কিন্তু সারা বাড়িতে কোথাও খুঁজে পেলাম না…….এক দৌড়ে বাসার ছাঁদে আসলাম দেখি পাগলিটা জামা কাপড় শুকাতে দিচ্ছে …… আমি দৌড়ে আসলাম ফারহার কাছে……. ফারহা আমাকে দেখে একটু অভাক হলো……. আমি ফারহাকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরলাম…….আমাকে ক্ষমা করে দাও ফারহা আমি তোমার উপর অনেক অন্যায় করেছি……. আমি আর তোমাকে কষ্ট দিতে চাই না ………কেঁদেই দিলাম…… ফারহা ও কান্না করতেছে……..একজন আরেকজনকে জড়িয়ে ধরে কান্না করতেছি………এটা কষ্টের নয় সুখের কান্না ………প্রকৃত ভালোবাসা কখনো হারায় না ভালোবাসা সত্য হলে একদিন ঠিক তার HaPpY ending হবেই……..বেঁচে থাকুক ভালোবাসা বেঁচে থাকুক ভালোবাসার মানুষ গুলো।।।।
………….. সমাপ্ত……………….
No comments
info.kroyhouse24@gmail.com