Breaking News

বউ এর ভালবাসা

--ওগো দরজা টা খুলো।........
----এই কি হলো শুনতে পাচ্ছো না।......
-----এই রোদ!!!!!!.......
----ওগো প্লিজ দরজা টা খুলো।.........
রাত প্রায় ৩ টা হৃদয় বন্ধুদের সাথে আড্ডা শেষে বাড়িতে এসছে।
আর তার বউ কে ডাকতাছে।হৃদয় বুঝতে পারলো তার বউ তার উপর রেগে আছে।
--খুলো খুলো দ্বার রাখিও না আর।
আমারে বাহিরে দাড়ায়ে।
তুমি কি জানো মশার কামর খেয়ে।
কেমনে আছি খারায়ে।...(হৃদয়)
--হে তুমি মশার কামর ই খাও।কি দরকার ছিলো বাসায় আসার।
বাকি রাত টাও বন্ধুদের সাথে কাটিয়ে দিয়ে তার পর আসতে।......(রোদ)
--ওগো মোর প্রিয়তমা।
আর করে থেকো না রাগ।
দরজা টা খুলো এবার।
.
হয়ে যাচ্ছে যে প্রভাত।...(হৃদয়)---
হোক সকাল তাতে আমার কি।যাও বন্ধুদের কাছেই যাও।.....(রোদ)
--এভারের মতো করো ক্ষমা।
ওগো লক্ষী প্রিয়তমা।
কথা দিচ্ছি তোমায়।

আর আড্ডা দিতে যাবোনা।...(হৃদয়)
---কথা তো বার বার ই দাও। আমি কিছু শুনতে চাই না আর।
আমি দরজা খুলতে পারবো না।....(রোদ)
হৃদয় এর এভাবে কবিতার ভাষায় কথা বলা দেখে রোদ হাসছে আর মনে মনে বলছে, 
ঘরে বউ রেখে বন্ধুদের সাথে আড্ডা দেওয়ার মজা বুঝো এবার।
এদিকে হৃদয় এর খুব রাগ হচ্চে।হৃদয় বুঝতে পারলো যে তার বউ
 আজ সহজেই দরজা খুলবে না।তার মাথাই একটা বুদ্ধি এলো।
তাই হৃদয় পড়ে যাওয়ার মতো শব্দ করলো আর বললো।
---ওরে মারেএএএ।আমার কোমর টা গেলো রে।....(হৃদয়)
এমন সময় দেখতে পেলো রোদ দরজা খুলে বাহিরে বের হলো আর বলতে লাগলো।
---এই কি হয়ছে তোমার এই কিভাবে পড়ে গেলে।....(রোদ)
হৃদয় অমনি দৌড় দিয়ে ঘরে ঢুকে গেলো।
----কি আর হবে কিছুই হয়নাই।.....(হৃদয়)
---তাহলে চিৎকার করলা কেন আর পড়ে যাওয়ার মতো যে শব্দ হলো।......(রোদ)
---আরে এই অভিনয় টা না করলে কি দরজা টা এতো তাড়াতাড়ি খুলতে।....(হৃদয়)
---তুমি আসলেও একটা শয়তান।কেন এলে বাসাই বন্ধুদের সাথে
 বাকি রাত টুকু কাটিয়ে দিয়ে আসতে।.....( রোদ)
---হয়ছে তো এবার আর কতো বলবা।এবার খাবার দাও খুব ক্ষুদা লাগছে।.......(হৃদয়)
---ক্ষুদা কি তোমার একাই লাগছে আমার লাগে নাই।......(রোদ)
---কি তার মানে তুমি এখনো খাও নাই।.....(হৃদয়)
--না তুমি বাসাই যে পর্যন্ত আমি খাবো না।দেখি এখন কিভাবে
 রাতে বন্ধুদের সাথে আড্ডা দাও।.....(হৃদয়)
---এই খাবার রেডি করো তাড়াতাড়ি।আমার লক্ষীবউ টা না খেয়ে আছে টা 
জানলে তো আমি কখন ই বাসাই এসে পড়তাম।....(হৃদয়)
---হয়ছে এখন আর বউ এর প্রতি প্রেম দেখাতে হবেনা।....(রোদ)
----এই আমি তোমাই আমার হাতে খাইয়ে দিবো।.....(হৃদয়)কিছুক্ষন পর.......
---এই খাওয়া তো শেষ।সারা রাত ই তো জেগেছো এবার ঘুমিয়ে পড়ো।.....(রোদ)
--এই না কাল তো শুক্রবার অফিস বন্ধ।আর কিছুক্ষন পর তো সকাল ই হয়ে যাবে 
চলো বাকি রাত টুকু গল্প করে কাটিয়ে দেই।....(হৃদয়)
--সারারাত বন্ধুদের গল্প করেও মন ভরে নাই তোমার।.....(রোদ)
---ওকে গল্প করতে হবে না।...(হৃদয়)
এই বলে হৃদয় ঘুমিয়ে পড়লো আর রোদ ও।
.
এই হলো হৃদয় আর রোদ নামের মেয়েটা হলো হৃদয় এর বউ।তার পুরো নাম হলো 
রোদেলা কিন্তু হৃদয় তাকে ভালবেসে রোদ বলে ডাকে।
আজ থেকে ৬ মাস আগে পারাবারিক 
ভাবেই তাদের বিয়ে হয়েছে।
তারা একে অপর কে অনেক ভালবাসে।হৃদয় এর অনেক বাজে অভ্যাস ছিলো আগে।
কিন্তু বিয়ের পর রোদ এর জন্য সব বাজে অভ্যাস গুলো ত্যাগ 
করতে বাধ্য হয়েছে।কিছু রাগ কিছু অভিমান আর মিষ্টি ভালবাসায় তাদের দিন
 গুলো ভালোই কাটছিলো।দেখতে দেখতে প্রায় ২ বছর চলে গেছে।
আজ রাতে রোদ হৃদয় এর বুকে মাথা রেখে শুয়ে আছে।আর বলছে,,,,
---তোমার বুকে মাথা রেখে শুয়ে থাকলে মনে হয় সুখের রাজ্যে আছি আমি।....(রোদ)
---ওও তাই নাকি।পাগলি একটা।.....(হৃদয়)
---হুম পাগলী ই তো তোমার জন্য পাগলী।......(রোদ)
----হুম আমার লক্ষী বউ।.....(হৃদয়)
---এই তোমায় তো একটা কথা বলায় হয়নি।.....(রোদ)
---কি কথা?.....(হৃদয়)
---আগে আমায় কিছু উপহার দাও তারপর বলবো।.....(রোদ)
---এখন না কাল দিবো। আগে বলো কি কথা?......(হৃদয়)
---আজ তো ডাক্তারের কাছে গিয়েছিলাম।ডাক্তার কি বলেছে জানো?........(রোদ)
---এই কি বলেছে তাড়াতাড়ি বলো।......(হৃদয়)
.
---ডাক্তার বলেছে?.....(রোদ)
---আরে কি বলেছে সেটা বলো?.....(হৃদয়)
---বলেছে তুমি বাবা হতে চলেছো।.....(রোদ)
হৃদয় লাফ দিয়ে উঠলো আর রোদ কে কোলে তুলে নিলো।
----এই পাগলি এই খুশির খবর টা তুমি এতোক্ষনে বলছো।.....(হৃদয়)
---এই ছাড়ো তো।কোল থেকে নামাও তো।কি যে করো না তুমি।.....(রোদ)
---উফফফ! আমি বাবা হবো ভাবতেই কেমন লাগছে বউ।.....(হৃদয়)
---কাল আমায় কি উপহার দিবে বলো।.....(রোদ)
---আরে কাল কেন আজ ই দিবো।তুমি থাকো আমি মার্কেট এ যাচ্ছি।.....(হৃদয়)
---এই এতো রাতে যাওয়ার দরকার নেই।.....(রোদ)
---আরে এখন তো মাত্র ১১ টা বাজে।চিন্তা করো না আমি যাবো আর আসবো।......(হৃদয়)
এই বলে হৃদয় চলে গেলো তার বউ এর জন্য উপহার আনতে।



কিছুক্ষন পর।
.
রোদ বসে আছে হৃদয় এর জন্য।এমন সময় হৃদয় এর ডাক শুনে রোদ দরজা খুললো।
----এই আমার জন্য কি উপহার এনেছো।.....(রোদ)
---এই যে নাও আমার মিষ্টি বউ।......(হৃদয়)
এই বলে হৃদয় রোদ এর হাতে একটা শাড়ীর প্যাকেট দিলো।
রোদ প্যাকেট টা খুলে দেখলো তার ভিতর একটা লাল শাড়ি।
----ওয়াও।....(রোদ)
---পছন্দ হয়ছে বউ।.....(রোদ)
----কি বলো তুমি তোমার দেয়া উপহার আমার পছন্দ হবেনা এটা কি হয়।.....(রোদ)
---হুম কাল এই শাড়িটা পড়বা তুমি।....(হৃদয়)
---হুম এই অনেক রাত হয়ছে এবার শুয়ে পড়ো তো....(রোদ)
তারপর গল্প গল্প করতে কর‍তে কখন যে ঘুমিয়ে গেছে তারা।
সকাল হয়ে গেছে রোদ এর ডাকে হৃদয় এর ঘুম ভাঙলো।
---এই দেখো তো আমায় কেমন লাগছে।.....(রোদ)
হৃদম চেয়ে দেখলো রোদ সেই লাল শাড়ি টা পড়েছে।রোদ কে এতো সুন্দর লাগছে।
---আমি তো আবার তোমার প্রেমে পড়ে গেলাম।....(হৃদয়)
.

---এই হয়ছে। এবার উঠো অফিসের সময় হয়ে যাচ্ছে।....(রোদ)
এভাবে দেখতে দেখতে কয়েক মাস কেটে গেলো।
হৃদয় আর রোদ এর সংসারে নতুন অথিতি আসার সময় হয়ে গেছে প্রায়।
হৃদয় তার বউ কে সহজে কোনো কাজ করতে দেই না এখন। 
অফিস থেকে এসেই সব সব সময় রোদ এর পাশেই থাকে।
আজ রোদ আর হৃদয় বসে আছে আর গল্প করছে।
---এই যে তোমার বাবু টাও খুব দুষ্ট এক টা সময় ও আমায় শান্তি তে থাকতে দেই না।
......(রোদ)
.
---কি বলো!দারাও আমি তাকে বকা দিচ্ছি।....(হৃদয়)
---হুম একটু বকে দাও তো।....(রোদ)
---এই যে বাবা তুমি তোমার আম্মু কে নাকি শান্তি তে থাকতে দাও না।
এরকম করো কেন।
.....(হৃদয়)
---হুম হয়ছে তোমার কথা সে পেটের ভেতর থেকে শুনতে পাবেনা।....(রোদ)
--হুম যখন পেট থেকে তোমার কোলে আসবে তখন বকে দিবো।.... (হৃদয়)
হৃদয় আর রোদ তাদের নতুন অথিতি কে নিয়ে কত গল্প করে।
এভাবে ভালোই কাটছিলো তাদের। হৃদয় এর যেন আর দেরি সইছে না।
কবে আসবে তার সন্তান এই পৃথিবীতে এই সব ভেবে ভেবে হৃদয় দিন কাটাই।
.
হৃদয় অফিসে কাজ করছে এমন সময় একটা ফোন আসলো।
রোদ নাকি হাসপাতালে।
এই কথা শুনেই হৃদয় তাড়াতাড়ি হাসপালে চলে গেলো।
সেখানে দেখতে পেলো হৃদয় এর পরিবারের সবাই সেখানে।তাদের 
কাছে হৃদয় জানতে পারলো রোদ নাকি ওয়াস রুমে পা পিছলে পড়ে গিয়েছিলো।
রোদ এর অবস্থা নাকি খুব খারাপ এখন।
এসব শোনার পর হৃদয় এর মাথাই যেন আকাশ ভেঙে পরলো।
হৃদয় বুঝতে পারছিলো না যে কি করবে।এমন সময় ডাক্তার আসলো।
---ডাক্তার আমার রোদ এখন কেমন আছে।সে ঠিক আছে তো।....(হৃদয়)
-- না মানে।.....(ডাক্তার)
--না মানে কি ডাক্তার আমার রোদ আর সন্তান ঠিক আছে তো।....(হৃদয়)
-- আমরা আমাদের যথাসাধ্য চেষ্টা করেছি কিন্তু আপনার সন্তান কে আমরা বাচাতে পারিনি।
আপনার স্রী ঠিক আছে এখন।...(ডাক্তার)
এই কথা শুনে হৃদয় এর খুব কষ্ট হচ্ছিলো কত স্বপ্ন ছিলো তার সন্তান কে নিয়ে।
হৃদয় এর কান্না পাচ্ছিলো খুব।
কিছুক্ষন পর হৃদয় রোদ এর কাছে গেলো।রোদ হাসতাপালের বেড এ সুয়ে আছে।
হৃদয় কে দেখেই রোদ কেদে দিলো।

---আমি পারলাম না তোমার সন্তান কে তোমার কাছে দিতে।.....(রোদ)
---এই পাগলি কাদছো কেন।তুমি ঠিক আছো এটাই আমার কাছে সব চেয়ে বড় পাওয়া।
....(হৃদয়)
---আমার একটু অসাবধানার জন্যই সব শেষ হয়ে গেলো।....(রোদ)
---আরে আমাদের ভাগ্য টা খারাপ তাই এমন হয়ছে।....(হৃদয়)
রোদ কোনো কথা বলছেনা শুধু কেদেই চলছে।
হৃদয় এর ও খুব কান্না পাচ্ছে কিন্তু প্রকাশ করছে না।
এমন একটা দিন আসবে তাদের এটা কখনো ভাবেনি হৃদয় আর রোদ।

দেখতে দেখতে অনেক দিন ই হয়ে গেছে।এখনো মাঝে মাঝে রোদ 
তার সন্তান এর কথা ভেবে কাদে।আর হৃদয় তাকে নানা ভাবে শান্তনা দেই।
তারা আবার নতুন করে সব কিছু শুরু করেছে। 
আবার আগের মতো হাসি খুশি তাদের পরিবার।
এখন প্রতিদিন মিষ্টি ঝগরা রাগ আর অভিমান আর রাতে 
সব সব কিছু ভুলে দুজন আবার এক হয়ে যায়।
"
"
"
"
প্রায় ৩ বছর পর........
"
"
"
"
---এই রোদ তোমার বজ্জাত ছেলে আমার গায়ে হিসু করে দিছে।তারা তারি আসো। 
আমার অফিসে দেরি হয়ে যাচ্ছে।.....(হৃদয়)
----হুম তোমার মতই বজ্জাত হয়ছে।আসছি আমি একটু দারাও।.....(রোদ)
---হুম আসো আমার বাবা অনেক দুষ্ট হয়ছে।...(হৃদয়)
হুম এখন হৃদয় আর রোদ এর একটা ছেলে হয়েছে।ছেলেটার নাম আকাশ।
তারা দুজনে এই ছেলে টা কে পেয়ে পুরোনো সেই কষ্ট টা ভুলে গেছে।
দুষ্ট ছেলে আর মিষ্টি বউ নিয়ে ভালোই চলছে হৃদয় এর পরিবার।
আর হে প্রতিটা পরিবার ই এমন ভালো ভাবে থাকুক এই প্রত্যাশায় গল্প টা শেষ করলাম।



                                                               <>সমাপ্ত<>

No comments

info.kroyhouse24@gmail.com