ঘর জামাই | লেখক: আকাশ আহম্মেদ | প্রথম পর্ব.
ওরে কুদ্দুইচ্ছা কই গেলি তারাতারি আমার বদনাটা পুরাইয়া নিয়া আয়...... আমি:হ বাজান আনতাছি.....হালার বুইড়া সকাল সকাল লাইন ক্লিয়ার করতে চইলাগেছে আর তার বদনাটা আমারে পুরাইয়া দিতে বলে ......ঘরজামাই হইয়া এতো অপমান সয্য করা লাগে......আগে জানলে বিয়াই করতাম না .....ও আম্নেগোরে আর পরিচয়খান দিয়া লই .....আমি অইলাম কুদ্দুস আলী.....আর যে এতক্ষন আমারে বদনা পুরাই দেওয়ার লাইগা ডাকছিলো উনি হইলেন আমার মাথার ছাঁদ মানে আমার শুশুর আব্বা.......জরিনা:ঐ বজ্জতের বজ্জাত তোরে কখন থেইকা কইতাছি বাজারে যাইতে আইজকা আপা আর দুলাভাই আইনো ...বাদাইম্মা হালার পোলা কোন কাম কাজ নাই সারাদিন খালি ঘরে বইসা বইসা খানা খাস ...... আমি:ওরে মোর প্রিয়াসি তুমি মোর লগে রাগ দেখাও কেন..... তুমি না আমার জান......জরিনা:রাখ তোর জান এই দর টাকা নে বাজারে গিয়া বড় বড় ইলিশ মাছ রুই মাছ......ইত্যাদি নিয়া তারাতারি আয়......ও কইতে তো ভুইলা গেছি ও হলো আমার এই বাড়ির আলগা টোকেন মানে থাকা খাওয়া ফ্রি তো ....বউ আমার জরিনা বুয়া......বিয়ে করছি এক বছর বিয়ের পর থেইক্কা বউয়ের বাড়িতে বাদাইম্মা জামাই থাকি ও থুক্ক কিয়া কই ঘর জামাই থাকি......যাই
আইজকা আপা আর দুলাভাই আইবো তাগো লাইগা বাজার কইরা লইয়া আই......বাজার থেইক্কা সব বাজার নিয়া বাড়িতে আসলাম...... আমি:বউ ও বউ ......জরিনা:কি হইছে আমার আদরের সোয়ামী...... আমি:আমারে একটু গামছা খান দাও তো খুব গরম লাগতেছে......জরিনা:আমারে কি তোমার চাকর পাইছো নিজে নিয়া নাও সোনা.... আমি:হায়রে কপাল কেনো যে ঘরজামাই থাকি এতো কথা শুনতে হয়........ আম্মা:কি রে বাজান তুমি এমন ঘামতাছো কেনো ...... আমি:না আম্মা বাজার থেইকা আইছি তো তাই গরম লাগতেছে........আম্মা:আচ্ছা বাজান আমি তোমার জন্য লেবুর শরবত নিয়া আইতাছি..... আমি:আচ্ছা আম্মা ........ইনি হলেন আমার শাশুড়ি আম্মা খুব ভালা মনের মানুষ ..... খুব ভালোবাসে আমাকে......... আমি:ওরে পরানের শালী আমার কই যাও ......শালী:ও দুলাভাই একটু হাওয়া খাইয়ে ...... আমি:আচ্ছা যাও বোন যাও......শুক্কুরের গামছার বাতাস অনেক মধুর তাই না শালী মনি.....শালী:অই দুলাভাই এমনে কইয়ো না লজ্জা লাগে ...... আমি:হি হি হি যাও যাও...... আমি দেহি কি করা যায়......ঐ জরিনা খাওন দাও ক্ষুধা লাগছে তো.....জরিনা: আইতাছি........খাইতে বসলাম......জরিনা:আচ্ছা একটা কতা কও দেখিনি আর কতদিন তুমি ঘরজামাই থাকবা আমার কি মান সম্মান কিছু নাই .....গ্রামের বেভাক লোকে আমারে কয় তুমি ঘরজামাই অকর্মা.....আমার কি এই সব হুনতে ভালা লাগে কও ...... আমি:কি করমু কও জরিনা......খাওয়া শেষ কইরা গাছের নিচে বইসা একটু বাতাস খাচ্ছিলাম শুশুর আমার ডাকতেছে.......শুশুর:ঐ কুদ্দুস...... আমি:হ বাজান......শুশুর :আমার গামছা আর লুঙ্গিটা দিয়ে যা তো..... আমি:হ বাজান আনতাছি.........দুপুর গনিয়ে এলো আপা আর দুলাভাই আইয়া পরছে...... আমি:আরে দুলাভাই কেমন আছো????? দুলাভাই:এই তো একরকম আছি রে ভাই ..... তুমি কিরাম আছো?? আমি: আছি খুব ভালো আছি.......দুলাভাই:হ তা তো তুমি থাকবাই বসে বসে শুশুরের অন্য ধ্বংশ করতেছো তোমার মতো ভালো কজন থাকে বলো....... আমি কিনা বলে আড়ালে চলে আসলাম...... ছোট বেলায় বাবা মা মারা যায় একটা বাড়িতে কাজ কাম কইরা বড় হইছিপড়ালেখা তেমন জানিনা .....জানিনা কেমন করে জরিনার সাথে আমার বিয়েটা হয়ে যায় ঘর জামাই বলে সবার কথা শুনতে হয় উঠতে বসতে......কিন্তু আমি কি করবো শুশুর শাশুড়ির দেখা শুনা করা লাগে তাই আমারে ঘর জামাই থাকা লাগে ......শুশুরের ছেলে মেয়ে গুলা সবাই পড়ালেখা করে বউ নিয়া শহরে থাকে আর গ্রামে আমি আর জরিনা ওদের দেখা শুনা করি......যে যাই বলুক না কেনো আমার জরিনা আমারে খুব ভালোবাসে.........সবার অপমানে আমি অতিষ্ট তবুও সব মাথা পেতে মেনে নিই ......কারন আমার বিশ্বাস একদিন সবাই আমারে ভালোবাসবে......শুশুর : ঐ কুদ্দুস .... আমি:হ আব্বা ......শুশুর :বাড়িতে জামাই আইছে গাভী থেকে দুধ ধুয়ে আন..... আমি:হ আব্বা আনতাছি........গোয়াল ঘরে আসলাম........ একটা টুইল নিয়া গাভীর কাছে বসতেই গাভী.....ফেততত ..... আমি:উহু কি গন্ধ হালায় মনে হয় সাত দিন হাকু করে না ......দিলো বাতাস ছাইড়া.......গাভীর দুধে হাত দেবো তখনই .......গাভী হিসসসসস ..... আমি:দেত ...শালা এবার মুইতা দিছে......ইসসস লুঙ্গিটা নষ্ট কইরা দিলো রে.........না না এভাবে ভেংগে পরলে হবে না কোন কবি জেনো বলেছিলো একবার না পারলে দেখো শত বার...... হুম কথাটা কাজে লাগাইতো অইবো......এর পর হাত ধুয়ে দুধ ধুয়ে গেলাম.....বসে মাএই দুধ ধোবো তখনই.....গাভী ব্যত ব্যত.... আমি:উহু কি গন্ধ শালা আবার হাকু কইরা দিসে......দেত অনেক কষ্টের পর দুধ নিয়ে বাসায় আসলাম......... আমি:অ আম্মা গাভীর দুধ নিয়া আসলাম........আম্মা:অয় বাজান তোমার এমন অবস্তা. কেমনে অইছে...... আমি:আর কইয়েন না আম্মা গাভীটা ও জরিনার মতো........সময় বুঝে কাজ করে না......হায়রে কপাল আমার ........দুপুর বেলা সবাই মিল্লা খাইতে বইলাম........কিন্তু সবাই বাড়ির ছোট মাইয়ার জামাইরে নিয়া ব্যাস্ত আমি মনে হয় বাড়ির চাকর চুপচাপ খেয়ে উঠে পরলাম.....আর হুম আমি এসবে কিছু মনে করি না কারন আমি ঘর জামাই আর ঘর জামাই রা শুশুর বাড়িতে এমনই থাকে.......গরু নিয়া মাঠে আসলাম.......জমি চাষ করা লাগবো.......জমিতে নাইমা.......গরু দিয়া হাল চাষ করতেছি আর বলতেছি চলে আমার হাম্বা উইরা উইরা হুর....... আমি ও ঘর জামাই তোরাও ঘর জামাই হুর.......ওরে বাবা রে এই গরু কি বুঝলো নাকি আমি তারে ঘর জামাই বললাম.....এই গরুর গরু থাম ভাই .....আরে আমার লুঙ্গি কই .....গরু এমন জোরে ছুটছে আর আমি গরুর দড়ির সাথে প্যাঁচিয়ে গেছি......জানিনা লুঙ্গিটা কই...........ওরে ওরে দেখে দেখ কুদ্দুইচ্ছার লুঙ্গি নাই....... আমি:যা সয়তানের দল......এই রে কেউ দেখার আগে লুঙ্গিটা খুইজা নিই......হি হি হি হি হি .........
.
.
.
চলবে...........
No comments
info.kroyhouse24@gmail.com