গল্প:- ঝগড়াটে মেয়ে। পার্ট ২য়
ওই চার আনার হরিপদ এটা কি করলি?
– জ্বী কাকে বলছেন?
– আইছে রে ন্যাকা ষষ্ঠী, এখন কিছুই বুঝে না। জল
ফেললি কেন আমার উপর?
– আমি আপনার উপর কখন জল ফেললাম, আমি তো
নীচে ওই পিচ্চি পিচ্চি চারাগাছ গুলোকে
বাঁচানোর
জন্য ওদের উপর জল ফেললাম কিন্তু কোথা
থেকে যেন আপনি এসে পরলেন নীচে তাই
আর কি জলটা আপনাকেই চোখে দেখলো।
– দ্যাখ এখন কিন্তু আমার ঝগড়া করার মোড নাই,
ফাজিল
কোথাকার! তোর সাথে কথা বলাই আমার ভুল হইছে।
– যান যান ভাগেন, এরপর আমার সামনে আসলে
ঝগড়া
করার মোড নিয়ে আসবেন তাহলে দেখবেন
পরে অনেক মোড পাবেন।
– যত্তসব।
.
ওখানে আর এক মূহুর্ত না দাড়িয়ে দৌড়ে আমার
বাসায়
এসে বাথরুমে চলে গেলাম। গোসল সেরে
এসে ড্রয়িংরুমে বসে পরলাম মুখ ভরা রাগ নিয়ে আর
তখনই আম্মু চলে আসলো পাকা ধানে মই দিতে।
– কি হইছে রে তোহা? এতো রেগে আছিস
কেন?
– চুপ করবা তুমি? নাহলে কিন্তু সব ভেঙে দিব!
– আচ্ছা, করলাম। কেমনে যে এতো রাগি হইছে
কপালে জানে ( বিড়বিড় করতে করতে চলে গেল
ওনার রুমে)
.
টানা পঁয়ত্রিশ মিনিট বসে থাকলাম ওখানে, একটুও
এদিক
ওদিক নড়াচড়া করিনি, এতক্ষণ পর মাথাটা একটু
ঠান্ডা
হলো, তাই ভাবলাম একটু ছাদে যাওয়া যাক, বিকেল
হইছে ঠান্ডা বাতাস তো থাকবেই ছাদে তাই ওখানে
যাওয়ার কথা ভাবলাম। যেই ভাবা সেই কাজ, ছাদের
দিকে পাঁ বাড়ালাম।
.
ছাদে আগে থেকেই একটা চেয়ার দেওয়া আছে
আমার জন্য, আমি গিয়ে শুধু ওটায় বসে থাকি তাই
আজও
গিয়ে বসলাম চেয়ারটায় কিন্তু পাশের ছাদে চোখ
যেতেই আবার মাথাটা মরিচের মতো জ্বলে
উঠলো, সেই বেয়াদব ছেলেটা আমার সামনে,
বিপরীত ছাদে দাড়িয়ে আছে তবুও আবার আমার
দিকে তাকিয়ে। এর সাহসের প্রশংসা করতে হয়।
আবার
দেখি হাতে একটা গিটার।
.
– এই এখানে কি করেন? আর আমার দিকে এভাবে
তাকিয়ে আছেন কেন? মেয়ে দেখলেই তাকিয়ে
থাকতে ইচ্ছে করে তাই না?
– আপনাকে কে বললো আমি আপনার দিকে তাকিয়ে
আছি?
– দেখেই বোঝা যায়।
– আন্টি আন্টি দেখেন আপনার মেয়ে আমার দিকে
নির্লজ্জের মতো তাকিয়ে আছে।
– আরে এই চুপ চুপ, ফাজিল কোথাকার! কি বলছেন
এগুলো?
– ঠিকই বলছি।
– আমি আপনার দিকে তাকালাম কখন?
– আমার দিকে না তাকালে বুঝলেন কেমনে আমি
আপনার দিকে তাকিয়ে আছি?
– এখন তো নিজেই ফেসে গেলাম ( মনে মনে
বললাম)
– কি হলো কচুপরী? কি বিড়বিড় করেন?
– কিইই, আমি কচুপরী?
– একদম।
– আরেকবার বললে না জুতা খুলে মারবো, আমার
সুন্দর একটা নাম আছে তোহা।
– এমন সুন্দর নাম শুনে তো কুত্তাও জ্ঞান হারাইবো।
– আপনার সমস্যা কি?
– আমি তো কোনো সমস্যা দেখছি না।
– তাহলে আমার সাথে এভাবে ঝগড়া করেন কেন?
– আপনিই তো আগে শুরু করছেন মিস কচুপরী।
– আবার?
– স্যরি স্যরি,
– হু, এলাকার সব পোলাপাইন আমার সাথে ভাব
জমানোর
চেষ্টা করে আর আপনি ঝগড়া করেন। কি ভাবেন
নিজেকে?
– আপনি নিজেকে কি ভাবেন হুম? চেহারা সুন্দর
বলে
সব পোলাপাইন আপনার দাস হবে?
– এইরে আবার ঠকে গেলাম, ছেলেটা তো খুব
শয়তান। যেকোনো সময় আমাকে ফেলুদা বানাই
দিব, এখন কেটে পড়াই উওম কাজ হবে ( মনে
মনে)
– কি হলো?
– শেট আপ, ( চলে আসলাম ছাদ থেকে)
.
রুমে এসে ভাবতে লাগলাম কি করা যায়! আমার
পক্ষে
ছেলেটা মোটেও সুবিধার না। যত তাড়াতাড়ি এদের
এখান থেকে তাড়ানোর ব্যবস্থা করতে হবে।
– আম্মু, আম্মু
– কি আম্মু?
– পাশের বাসার ভাড়াটিয়াদের বদলিয়ে অন্য
ভাড়াটিয়া
আনো।
– পারবো না রে, ৪ মাসের এন্ট্রি করে নিয়েছে।
চারমাসের আগে কিছুই করতে পারবো না।
– এই না হলে আমার আম্মু, তোমাকে তো এখন চুমু
দিতে ইচ্ছে করছে।
– থাক আম্মু, দরকার নাই।
– ধুর হও আমার চোখের সামনে থেকে।
– যত্তসব,
.
আমি এখন কি করবো? রাগে চোখ দিয়ে টপটপ
করে পানি পড়তে লাগলো, আমার তো এখন চিৎকার
করে কাদতেঁ ইচ্ছে করছে, ও গড এ কোন
ঝামেলায় ফেললা আমাকে?
রাতে পড়াশোনা শেষ করে খেয়ে নিয়ে শুয়ে
পরলাম। সকালে উঠে ফ্রেস হয়ে খাওয়া শেষ
করে কলেজে চলে গেলাম।
.
বিকেল বেলা,
ড্রয়িংরুমে বসে হেডফোন লাগিয়ে গান শুনতেছি
আর তখনই দেখি ওই বাসার পাজি ছেলেটা এসে
হাজির। আর কি যেন বকবক করছে হেডফোনের
জন্য শুনতে পারিনি। তাই হেডফোন সরাল…
চলবে……..
No comments
info.kroyhouse24@gmail.com