হাইব্রিড রিলেশন | লেখকঃ AB. Samad
মন মরা হয়ে ক্যাম্পাসের বাইরে
উদাসীন মুডে সিগারেট টানছিলাম
আচমকা একটা মেয়ের ওড়না উড়ে
পড়লো আমার মুখে।তাকাতেই দেখি
পরীর মতো,ড্যাবড্যাব করে তাকিয়ে
দেখলাম।
মেয়ে:সরি ওড়নাটা দিন।
আমি:ছোট বেলায় তো শুনছেন পড়ে
পাওয়া মানে ধরে নেওয়া,পইড়া
পাইছি ধইরা নিছি।
মেয়ে:অসহ্য অভদ্র একটা লোক আপনি।
আমি:হুম।
মেয়েটা ওড়না কেড়ে নিয়ে রিকশায়
করে চলে গেলো।বুকের ভেতর মোচর
দিয়া উঠলো,বাসায় আসলাম দেখি
নতুন ভাড়াটিয়া আসছে।
আম্মু:যা তো নতুন ভাড়াটিয়াদের সব
কিছু দেখে আয়।
আমি:ওকে আম্মু।
আমি দীপ্ত বিবিএ ফাইনাল ইয়ার।
.
কলিং বেল টিপতেই দরজা খুললো সেই
মেয়েটা,ড্যাবড্যাব চোখে।
মেয়ে:আপনি ফলো করতে করতে আমার
বাসায় আসছেন।
দীপ্ত:ঐই হ্যালো এটা আমার বাসা
আপনারা ভাড়াটে বুঝলেন।
বাসার ভিতর থেকে একজন মহিলার
ডাক,তৃপ্তি কে আসছে।
তৃপ্তি:আম্মু একটা মোটা দামড়া
ভেড়া।
দীপ্ত:আমি মোটা দামড়া ভেড়া।
তৃপ্তি:হহহহ।
দীপ্ত:তুই আলু পটল হাইব্রিড জাত।
তৃপ্তি:ঐই হাইব্রিড কিরে।
দীপ্ত:হিহিহি হাইব্রিড মানে উন্নত
জাতের মস্ত বড় কুমড়া।
তৃপ্তি:আমি কুমড়া।
দীপ্ত:হহহহ।
এক পর্যায়ে তৃপ্তি দরজাটা বন্ধ কইরা
দিলো।আমার মতো আমি নিচে চলে
আসলাম বন্ধুরা গান করছে নিচে বসে
গানের সাথে তালি দিচ্ছি।হঠ্যাৎ
উপর থেকে পানি পড়লো।
তৃপ্তি:যে না আমার সুর তার নাম আবার
বাহাদুর।
দীপ্ত:ঐই হাইব্রিড,যে না তোমার
চেহারা তার নাম আবার পিয়ারা।
তৃপ্তি:মোটা দামড়া ছেরা চুপ।
এরকম ঝগড়ায় মজাই অন্য রকম।
.
আজকের দিনটা শেষ হয়ে গেলো
রাতটাও পার হয়ে গেলো।সকালে ঘুম
থেকে উঠে ছাদে ব্যায়াম করতাছি
সে সময় আরেকটা মেয়ে চলে
আসলো,তখন আমি বুক ডাউন দিচ্ছিলাম
মাত্র চারটা দিছি মেয়েটাকে
দেখে।
দীপ্ত:হেই ৫০১,৫০২,৫০৩,৫০৪ আর পারলাম
না।
মেয়ে:আপনি তো জিম করার ওস্তাত
দেখছি।
দীপ্ত:আরে কি বলেন এসব আমার বাম
হাতের ব্যাপার,ব্যাই দা ওয়ে আমি
দীপ্ত।
মেয়ে:আমি তুলি।
অনেক কথা হলো তুলি তৃপ্তির বোন
তৃপ্তি অনার্স ২য় বর্ষে তুলি ইন্টার ২য়
বর্ষে।
তুলির সাথে বন্ধুত্বটা হেব্বি জমেছিল
বাট তৃপ্তি আমাকে দু চোখেই দেখতে
পারতো না।
.
রুমে বসে ভাবছি আর ভাবছি হঠ্যাৎ
আমাদের বাসার কলিং বেল বেজে
উঠলো দেখি তৃপ্তি আসছে।
দীপ্ত:কি ব্যাপার এক তলার জিনিস দু
তলায় মতলব কিয়া হে।
তৃপ্তি:এমনি আসলাম ঘুরতে বারন আছে
নাকি।
দীপ্ত:আরে না কি যে বলেন আসুন
ভিতরে।
তৃপ্তিকে আম্মু দেখে অনেক পছন্দ করে
আম্মু ওকে অনেক আদর করলো।
পরের দিন সাইকেল চালাচ্ছি সে সময়
তুলি এসে হাজির।
তুলি:ভাইয়া আমাকে সাইকেল
চালানো শিখাবেন।
দীপ্ত:কি যে বলো না,এখানে তো
ফাকা জায়গা নেই চলো ফাকা
জায়গায় যাই।
তুলি:ওকে চলেন,কোথায় বসবো।
দীপ্ত:কোথায় আবার সামনে।
মেয়েটাকে বলতে না বলতেই সামনে
বসে পড়লো।উফ কি সুন্দর ওকে নিয়ে
সাইকেল চালিয়ে যাচ্ছি,সারাদিন
তুলিকে নিয়ে সাইকেল চালানো
শিখালাম।
.
বাসায় আসলাম বিকালে ছাদে বসে
আছি তৃপ্তির আগমন।
তৃপ্তি:এ দামড়া ভেড়া নেক্সট টাইম
তুলির দিকে তাকাবি না।
দীপ্ত:ওকে তোর দিকে তাকাবো
তাইলে।
লাজুক চোখে দৌড়ে পালিয়ে
গেলো হু হু হু এতো দেখছি ভাল লক্ষণ
গাছে ওহ খাওয়া যাবে তলায় ওহ
কুড়ানো যাবে।
তৃপ্তির বাসার সবার সাথে বেস
আন্ডার স্ট্যান্ডিং হলো।
তৃপ্তির আম্মু সবসময় আমাকে অনেক স্নেহ
ভালবাসতো কেননা তাদের কোনও
ছেলে নাই।
আন্টি:বাবা দীপ্ত তুলি একটু শপিং এ
যাবে ওকে একটু নিয়ে যাও না।
দীপ্ত:ওকে আন্টি।
আরেক দিন।
আন্টি:তৃপ্তি কলেজে যাবে তোমরা
তো দুজন এক কলেজেই পড়ো ওকে নিয়ে
যেয়ো।
দীপ্ত:ওকে আন্টি।
বন্ধুরা সবসময় জেলাস ফিল করতো বিকজ
সকালে তৃপ্তি নেই বিকালে তুলি
নেই,সরি মিসটেক।
.
এক দিন রাতে ছাদে বসে আছি তৃপ্তি
এসে প্রপোজ করে ফেললো না করতে
পারি নি।আবার পরের দিন বিকালে
তুলি প্রপোজ করলো না করতে পারি
নি।দুটোই প্রেম চলছে দুজনেরই এক কথা
তোমাকে ছাড়া কাউকে লাভ করতে
পারবো না।
একদিন ওদের বাসায় তৃপ্তিকে দেখতে
কিছু লোক এলো তৃপ্তিকে দেখলো।যে
ছেলেটা দেখলো তার ছোট ভাই ওহ
তুলিকে দেখে পছন্দ করে ফেললো।তো
দুজনের বিয়ের কথা চলছে ইতি মধ্যেই দু
বোন এসে বললো সবাইকে,ও বলে আমি
একজনকে ভালবাসি আরেকজন বলে
আমি একজনকে ভালবাসি।
আমি ওখানে দাড়িয়ে আছি।
আন্টি:কে সে।
তুলি তৃপ্তি এক সাথে_ঐই যে দীপ্ত।
আন্টি:ভ্যাবাচেকা হয়ে ফেললো।
ছেলে পক্ষ এসব কান্ড দেখে চলে
গেলো।রাতে রুমে শুয়ে আছি আচমকা
চিৎকার শুনলাম গিয়ে দেখি তুলি হাত
কেটে অজ্ঞান ওদিকে তৃপ্তি ঘুমের ওষুধ
খেয়ে অজ্ঞান দুজনকে তুলে নিয়ে
হসপিটালে গেলাম।
অনেকক্ষণ পরে দুজনের জ্ঞান ফিরলো
পাশাপাশি বেডে দুজন শুয়ে
মাঝখানে বসে আমি।
তৃপ্তি এক হাত টেনে বুকে নিলো
ওদিকে তুলিও।
দুজনে এক কথা তোমাকে ছাড়া ২য়
কাউকে মেনে নিতে পারবো না।
দীপ্ত:উহ রে।
মাঝখানে বসে বসে চিৎকার মেরে
বললাম,এতো রিলেশন না মনে হচ্ছে
হাইব্রিড রিলেশন,উন্নত জাতের?
সমাপ্ত.....
No comments
info.kroyhouse24@gmail.com