গল্পের নাম: ঝগড়াটে মেয়ে। লেখকঃ AB. Samad
আম্মু, আম্মু
– কি হইছে তোহা?
– তোমাকে কে পারমিশন দিছে পাশের বাসা ভাড়া
দিতে?
– মানে!
– তুমি ওটা ভাড়া দিছো কেন?
– তাতে কি হইছে?
– আমি এখন আমার বন্ধুদের এনে আড্ডা দিব কই?
– আড্ডা দিতে হবে না, আর আড্ডা দিতে চাইলে
কলেজে গিয়ে দিস।
– ইই মাথা গরম করবা না কিন্তু!
– যা যা বসে থাক গিয়ে , আদর দিয়ে বাঁদর তৈরি
করে
ফেলছি।
– ধ্যাত্,
.
কেমন লাগে এখন, রাগে লুচির মতো ফুলতে শুরু
করছি এখন। কখন যে ফেটে গিয়ে বাড়িটাই আচমকা
ফিনিশ করে দেই নিজেই বুঝতে পারছি না। দরকার
ছিলো কি পাশেরটা ভাড়া দেওয়ার?
অবসর সময়ে বান্ধবীদের ডেকে এনে
পাশেরটায় আড্ডা দিতাম আর এখন ওখানে নতুন
মানুষ
গুলো থাকবে আমি আর আড্ডা দিতে পারবো না। উহুঁ
উহুঁ, ভাবতেই কান্না পাচ্ছে এখন।
.
পাশে বললে ভুল হবে, সেই বাসাটা এই বাসার
সামনে
মানে মুখোমুখি।
দুইটা বাসাই আমার আব্বুর, দুটোই ছাদওয়ালা একতলা
বাসা।
ওটা সম্ভবত ভাড়া দেওয়ার জন্যই আব্বু তৈরি করছিল
কিন্তু ভাড়াটিয়ার অভাব হওয়ার জন্য আমিই আড্ডা
দেওয়ার
জন্য ওটা দখল করে নেই কিন্তু আজ সকালে ওটায়
নতুন ভাড়াটিয়া এসে জুটেছে।
আমার সবকিছু মাটি হয়ে গেল, কি যে করি এখন।
এখন
বন্ধুদের ডেকে এনে আর আড্ডা দিতে পারবো
না, এখন শুধু কলেজে গিয়ে আড্ডা নয়তো বাসায় চুপ
করে রিমোট হাতে টিভির সামনে বসে থাকা।
.
আর আজকে শুক্রবার, বেলা বারটা বাজে। এগারটার
সময় ঘুম থেকে উঠেছি। ফ্রেস হয়ে খাওয়া শেষ
করে ছাদে এসেই দেখি ওই বাসায় মানুষ তাই আমার
আর বোঝার বাকি রইলো না ওনারা কে!
রাতে কত প্লান করে রাখছি আজ ওদের ডাকবো,
নতুন নতুন আইটেম বানাবো তারপর খাব আর
হইহুল্লোড় করবো কিন্তু আব্বু এভাবে আমার
প্লানে পানি ঢালবে ভাবিনি।
এখন আবার সবাইকে ফোন করে বলবো, এই
তোরা আসিস না, আর কখনো আমার বাড়িতে আড্ডা
হবে না।ওদের এগুলো বলতেও এখন লজ্জা
করবে।
.
আমি রুমে গিয়ে চুপচাপ বসে বসে টিভি দেখতে
গেলাম। কিছুক্ষণ বসে থাকার পর রুমে আর মন
টিকলো না তাই আম্মুকে জানিয়ে আমি আমার বন্ধু
রুনার বাসায় চলে গেলাম।
ওই বাসার দিকে আর তাকাইও নাই, কে না কে
আসছে
আমি দেখে কি করবো যত্তসব!
.
নামটা তো প্রথমে আপনাদের আম্মুই বলে দিছে,
তোহা আর আমি এবার ডিগ্রি ফাস্ট ইয়ারে
পড়াশোনা
করি। তো চলে গেলাম রুনার বাসায়। সেখানে আমি
আর রুনা জমিয়ে আড্ডা দিলাম।
উফ রুনার আম্মু যে স্বাদ করে বিরিয়ানি রান্না করে
শুধু
খেতেই মন চায়। দুপুরের খাবারটা রুনার সাথে ওর
বাসায়ই শেষ করলাম।
অতঃপর ৩:৪৫ মিনিটে রওনা দিলাম বাসার দিকে।
রিক্সা
করে আমার বাসা পর্যন্ত আসলাম তারপর গুটিগুটি
পাঁয়ে
বাসার দিকে যেতে লাগলাম, আমার বাসায় যেতে
আগে সামনের বাসার নীচ দিয়ে আসতে হয় আর
সেটার নীচে আসা মাত্রই ঝপাত্,
.
ভাবছেন আমি পরে গেছি, একদমই না। কোন বাঁদর
যেন উপর থেকে সাবান লাগানো পানি ফেলে
দিছে আর তার পুরোটাই আমার উপর ফেলছে,
একেবারে গোসল করিয়ে দিছে রে।
কয়েক টন রাগ নিয়ে উপরে তাকালাম, দেখি এক
বজ্জাত ছেলে আমার দিকে তাকিয়ে হরিপদ
ব্যান্ডওয়ালা ছবির হরিপদর মতো করে হাসছে।
রাগে
গা গজগজ করতে লাগলো আমার। তো আমি
নীচে থেকেই শুরু করলাম।
.
——চলবে…..
No comments
info.kroyhouse24@gmail.com