Breaking News

সিনিয়ার vs জুনিয়ার |১ম পর্ব

শুনো, তুমি আজ নতুন ভার্সিটিতে যাচ্ছা। নতুন নতুন মুখ দেখতে সাথে আজ তুমি পরিচিত হবে। অন্যেকেই তোমাকে বিরক্তও করতে পারে।  তোমার তো রাগ অনেক, একটুই তেই তো রাগ মাথায় উঠে যায়।  ভার্সিটি কেউ বিরক্ত মুলক কথা বলে তুমি রাগ করবে না। চুপচাপ থাকবে। তাহলে পরে কেউ তোমাকে আর  বিরক্ত মুলক কোনো কথা বলবে না।(আব্বু)
.
___জ্বি আব্বু (আমি)
___আজ মমতা থাকলে অনেক খুশি হত। কারণ সে তোমাকে ঢাকা ভার্সিটিতে পড়াতে চাইছিলো। দেখে শুনে রাস্তা পার হবে। অপরিচিত কারো হাতে কিছু খাবে না। আর সিগারেট একবারে খাবে না। (আব্বু)
___হুম (আমি)
___এভাবে খাবার গুলো না নেড়ে তাড়াতাড়ি খেয়ে নেও। খাবার কেউ এভাবে নাড়া-চাড়া করে (রাগান্তিত ভাবে কথা গুলো বল আব্বু)
___খাইতে ইচ্ছা করছে না তো, এত খাবার কি করে খাব। (আমি)
___খেতে হবে তো বাপ না খেলে এতপড়াশুনা কি করে করবে। (কমল কন্ঠে বল,আব্বু)
.
কিছু না বলে চুপচাপ ভাবে খেয়ে।
আব্বু কাছ থেকে বিদায় নিয়ে ভার্সিটির দিকে হাটা দিলাম। ভার্সিটি বাসা থেকে অনেকই দুরে হওয়ায় বাস-স্টাপে এসে বাসের জন্য দাড়ালাম। যদিও বা ভার্সিটি থেকে বাস আসে কিন্তু নতুন বলে এখনো বাস ব্যবহারর করতে পারি না। তাই এমন করে জেতে হচ্ছে।
.
যাই হক,
আমি মোহাম্মদ অমি আহমেদ। পিতার একমাত্র আদর সন্তান। মা  বেচে নেই। ১০ শ্রেনিতে যখন ছিলাম তখন আম্মু পৃথিবী ছেড়ে চলে যায়। এখন আব্বুই আমার মায়ের অভাব-টুকু পুরণ করে। সব চাওয়া পাওয়া গুলো পুরণ করে।
.
যা প্রায় ২০ মিনিট পর বাস আসলো। বাংলাদেশের কোনো বিষয় ঠিক ভাবে কাজ করে না। সে যেকোনো বিষয়ই হক না কেন কোনটাইতে সময়ের কোনো ঠিক নেই।
.
যেখানে ভার্সিটিতে যেতে সময় লাগবে ১০ মিনিট, সেখানে পুরো ২৮  মিনিট পর যেতে পারলাম, এই হলো আমাদের দেশের সময় মেনে কাজ করার অবস্থা। তবুও যাক ভার্সিটিতো আসতে পারলাম।
.
ভর্তি হবার সময় তেমন করে কিছু দেখতে পারিনি ভার্সিটির তবুও অনেক কষ্টেই ক্লাস রুম খুঁজে বের করলাম। ক্লাস রুমে ঢুকবো তখন পিছন থেকে আমার নাম ধরে একটা ডাক ভেসে আসলো। পিছনে ফিরে আমি তো পুরো অবাক!
.
___দোস্ত তুই এখানে?
___আমি এখানে ভর্তি হয়েছে তোর খবর কী সেটা বল?(আমি)
___আমি দোস্ত রংপুরে বেগম রোকেয়া ভার্সিটিতে ভর্তি হয়েছি রে।
___তোর তো রেজাল আমার থেকেও ভালো হয়েছে? তুই এখানে পরিক্ষা দিস নি! (আমি)
___দিয়েছিলাম দোস্ত, কিন্তু কপাল খারাপ রে ভর্তি হতে পারিনি!!
___হুম বুঝলাম। কবে জাবি তুই রংপুরে?(আমি)
___ক্লাস করবো তোদের সাথে এখানে আর রংপুর গিয়ে পরিক্ষা দিব। ক্লাস করতে পারবো না। আর তুই তো জানিস আমি বাইরে খাবার খেতে পারিনা। আর তোদের ছেড়ে কি করে থাকবো বল?
___ভালোই করছিস।  আমার খুব একা একা লাগছিলো? যাক তুই এখন আছিস এখন আর কোনো সমস্যা নেই। (আমি)
___আমি তো ইংরেজি বিষয়ে ক্লাস করবো, তুই কি বিষয় পাইছি?
___আমি তো পদার্থ বিঞ্জান রে! যাই হক, বাকি সময় তো গল্প করতে পারবো কি বলিস (আমি)
___হুম তো চল।
___হুম।
.
এতখন যার সাথে কথা হল সে হলো শাকিল চৌধরী।  একসাথেই  HSC পরিক্ষা দিয়েছি একই কলেজ থেকে আমার থেকে ভালো ছাত্র ছিল কিন্তু তবুও ঢাকা ভার্সিতে ভর্তি হতে পারেনি।  আসলে সব সময় লেখাপড়া থাকলে চলে না। সৃষ্টিকর্তার ইচ্ছাও কাজ করে।  তার এটি বড় একটি উদাহরণ।
.
ক্লাস রুমে ঢুকে দেখি অনেকই রুমে বসে আছে। সবাই নিজের মত করে নিজেকে প্রদর্শন করতেছে। আমার সাথে যারা পড়তো মানে HSC  তে তারা অনেকেই ঢাকা ভার্সিতে ভর্তি হয়েছে কিন্তু পদার্থ ক্লাসে কেউকে দেখলাম না। তার মানে কী আমি একাই পদার্থ বিষয় পাইছি।
.
আজ বেশি ক্লাস হলো না।  ক্লাস শেষ করে বের হলাম হয়ে শাকিলকে ফোন দিলাম।
.
___হ্যালো দোস্ত কোথায় তুমি? (আমি)
___এই দোস্ত, ক্যান্টিনে তুই কোথায়? (শাকিল)
___আমি ক্লাস শেষ করে বাইরে বের হলাম। তুই ওখানে বস আমি আসতেছি?
___ওকে তাড়াতাড়ি আয়।
___ওকে।
.
ক্যান্টিনের দিকে হাটা দিলাম।
.
___এইই ছেলে দাঁড়াও,,,,,
___আমাকে বলছেন? (আমি)
___হুম তোমাকেই বলছি, নাম কী?
___অমি আহমেদ। আপনাকে তো চিনলাম না আপু? (আমি)
___তুমি আমাকে চিনবে না, আমি নীলা। অনার্স ২য় বর্ষ। (নীলা)
___আপু আমার জন্য বন্ধু ক্যান্টিনে অপেক্ষা করছে আমি যায়? (আমি)
___ওকে যাও।
.
আর কথা না বাড়িয়ে ক্যান্টিনের দিকে হাটা দিলাম। 
.
___কি রে তোর এতসময় লাগলো আসতে। ৫ মিনিট পথ আর তুই এখনি আসতেছি (শাকিল)
___দোস্ত (শাকিলকে সব বলাম) কি আর করবো বল। (আমি)
___দোস্ত ক্রাস খাইছিস নাকি রে? (শাকিল)
___শালা তোর মাথায় পাথর মারবো? কিছু দিতে বল। খুদা লাগছে?(আমি)
___ওকে দিতেছি।(শাকিল).মামা........
.
কিছুখন আড্ডা দিয়ে বাসায় আসলাম। হালকা নাস্তা করে। পড়তে বসলাম। রাতে খাবার টেবিলে আব্বু সাথে এই সব নিয়ে কথা হল। তবে নীলার কথা কিছু বলিনি।
.
কি বলবো বলুন তো। যাই হক....রাতে কিছুখন পড়ে ঘুমিয়ে পড়ালাম।
.
এভাবে দীর্ঘ ৬(ছয়) মাস চলে গেলো। এখন অনেকই বন্ধু হয়েছে আমার। তবে  শাকিল এখন রংপুরে।
.
এখন নীলার পুরো নাম জানি? পুরো নাম হল নীলিমা আক্তার জান্নাতি (নীলা) তবে মেয়েটা প্রেম করে, কিন্তু ছেলেটা সুবিধার নয়। সেদিনের পর আরও অনেকবার কথা হয়েছে তবে তিনি(নীলা) প্রশ্ন করতো আমি বলাম কিন্তু তেমন কোন বিষয় নিয়ে নয় হালকা পাতলা কথা।
.
এমন করে আরও ৮ (আট) মাস চলে গেলো। হঠাৎ একদিন দেখতেছি নীলা আপুর মন খারাপ করে বসে আছে। তাই কাছে গেলাম।
.
___কেমন আছো আপু তুমি? (আমি)
___ভালোই,তুই(নীলা)
___ভালো, আপু তোমার মন খারাপ মনে হচ্ছে?
___কোথায় না তো? (জোর করে হাসির চেষ্টা মাত্র)
___শেয়ার করার মত হলে শেয়ার করতে পারো, এতে মনে হালকা হবে আর তোমার ভালো লাগবে।
___আরে না, তেমন কিছু নয়।
___ওকে, আমি তবে আজ উঠি।
___তো ব্যবহারিক পরিক্ষা শেষ হল নাকি আজকের মত?
___জ্বি আপু(উঠতে উঠতে)
.
এখন আমি ২য় বর্ষে আর আপু ৩য় বর্ষে। আপু রাষ্ট্রবিঞ্জান নিয়ে পড়তেছে। ছাত্রী হিসাবে মন্ধ নয় বেশ ভালোই। গ্রামের বাসা বরিশাল। ঢাকায় ছাত্রীনিবাসে থেকে পড়া শুনা করে।  আপুর বাসা কলেজের শিক্ষক, আর আন্টি মানে আপুর মা হলো গৃহিণী। আপু পিতামাতার একমাত্র সন্তান।
.
পরেদিনে ভার্সিটিতে যাওয়ার জন্য, ভার্সিটির বাসের জন্য অপেক্ষা করছি তখন দেখি আপু মানে নীলার বফ একটা মেয়েকে নিয়ে কোথায় জানি যাচ্ছে। মনে মনে ভাবলাম তাঁর ছোট বোন হয় তো কিন্তু পরে যা জানতে পারলাম না শুনে যেনো আকাশ থেকে পড়লাম।

No comments

info.kroyhouse24@gmail.com