পাগলের প্রেম কাহিনী

🌷প্রায় প্রতি রাতে ছেলেটি কে🌷
🌹রাস্তার পাশে  বসে থাকতে   দেখা🌷
🌹যায়। একা নয়। বসে বসে বিড়ি টানে,🌷
🌹গাঁজা বানাই আর খায়। দেখতে খুব🌹
🌹পাগল টাইপ লাগে। চুলসব লম্বা লম্বা, মুখ🌹
🌹বর্তি দাড়ি। দেখে মনে হয় অনেকদিন🌹
🌹গোসল করেনা। কাপড় সব মইলা তে🌹
🌹লেপ্টে আছে। তবে এই অবস্থাতে ও🌹
🌹ছেলেটি কে খুব সুন্দর লাগে।🌹
.
.
কথা গুলো মনে মনে বলতে থাকে
নীলা। ছেলেটির দিকে অনেক্ষন
কৌতূহল চোখে তাকিয়ে থেকে
বাড়ির দিকে রওনা দেয়। একদিন
নীলা কৌতূহল কাটাতে ছেলেটির
কাছে যায়
.
-আচ্ছা আপনার নাম কি(নীলা)
-কথা নেই(পাগল)
-কি হল আমার কথা উত্তর দিন
-......
-এই যে মিস্টার আমার কথা শুনতে
পারছেন??
[ছেলেটি নীলার দিকে একপলক
তাকিয়ে উঠে হাটতে থাকে]
.
.
নীলা আরো কৌতূহল হয়ে পরে। তার
চোখে খুব মায়াবী একটা ভাব দেখা
যায়।
,, তবে সেটা রসহীন। একটা সুন্দরী
মেয়ে তার সাথে নিজে এসে কথা
বলতে চাই, আর সে তার কথা সাড়া না
দিয়ে চলে যায়।
খুব অদ্ভুত ব্যাপার।
.
.
পরেরদিন নীলা কলেজের গেটের
বাহিরে সেই পাগল কে দেখতে পাই।
খুব অদ্ভুত ব্যাপার!! তাকে নীলা আজ ১ম
বার দিনের বেলায় দেখতে
পেরেছে। নীলা ও তার বান্ধবী
ছিলো সাথে।
.
-হিমু দেখতো লোক টা কে??(নীলা)
-কই?? আরে এত হিম!!
-তুই চিনিস ওকে??
-হ্যা। অনেকদিন পরে দেখলাম। তাকে
সচরাচর দিনের বেলায় কোথাও দেখা
যায় না
-হ্যা আমিও আজ ১ম দিনের বেলায় ওকে
দেখলাম। কে এই হিম??
-অনেক লম্বা কাহিনী। আমাদের
এলাকায় থাকেন। খুব ভালো ছেলে।
তবে এখন পাগলপ্রায়
-কিন্তু কেন??
[হিমু, হিমের কাহিনী বলা শুরু করে]
.
.
ওর নাম হিম। আমাদের কলেজের ই ছাত্র
ছিলো একসময়। খুব মেধাবী ছাত্র।
কলেজে তার সাথে রুপা নামের
মেয়ের সাথে পরিচয় হয়। পরিচয় বন্ধুত্ব
থেকে ভালোবাসাই রুপ নেই। এভাবে
তাদের সম্পর্ক অনেকদূর এগিয়ে যায়।
দুইজন দুজন কে অনেক ভালোবাসতো।
কলেজে তাদের জুটি ছিলো সেরা।
অন্যান্য প্রেমিক-প্রেমিকা রা
তাদের দেখে ভালোবাসার উদাহরণ
দিতো। কিন্তু একসময় রুপা হিম কে
অবহেলা করতে শুরু করে। হিম অনেক কষ্ট
পাই। হিম এ নিয়ে রুপা কে জিজ্ঞেস
করলে রুপা হিম কে অনেক অপমান করে।
তাই হিম রুপাকে জোড়া থাবড় মারে।
পরে একদিন সকালে রুপার ছোট ভাই
হিম কে এসে একটা চিঠি দেয়।
চিঠিটা ছিলো এমনঃ
.
প্রিয় হিম
জানি খুব কষ্ট পেয়ে সেদিন আমার
গায়ে হাত তুলেছিলে। খুব
ভালোবাসো আমায় তাই এত কষ্ট পাচ্ছ।
কিন্তু আমি কষ্টের চেয়েও অনেক
বেশি সুখী ছিলাম। কেন জানো??
আমি আর অল্প কিছুদিনের অতিথি
মাত্র। যখন জানতে পারি আমি
ক্যান্সার নামক রোগের লাস্ট স্টেজে
চলে এসেছি,, তখন আমার মনে সর্বপ্রথম
যার কথা আসে সে তুমি। আমি চাইনি
আমার শেষ মুহূর্ত তুমি দেখে কষ্ট পাও।
তাই এই অভিনয়। আমি তোমাকে বলতে
চাইনি। কিন্তু এতটা ভালোবেসে
নিজেকে তোমার ঘৃণার পাত্র
বানাতে পারিনি। আমাকে ক্ষমা
করে দিও। আমি গেলাম। একটা ভালো
মেয়ে দেখে বিয়ে করে নিবা।
.
চিঠিটা পরে হিম বেহুশ হয়ে পরে।
পরে সে রুপার কবরে যায়। কিন্তু তার
চোখে একফোঁটা পানি আসেনি। সে
থেকে হিম খুব পাগলামি করে। রাতের
বেলা ফুটপাতে বসে সিগারেট খায়,
গাঁজা খায়। অনেক রাত করে ঘরে
ফিরে। কখনো আবার ফিরেনা।
[কাহিনী বলতে বলতে দুইজনের চোখে
স্পষ্ট পানি বুঝা যাচ্ছে]
.
.
-তুই ওর সম্পর্কে এতকিছু কিভাবে জানিস??(নীলা)
-কারণ ও আমার বড় ভাই হিমালয়
-কি??
-হুম। চল ভাইয়াকে বাসায় নিয়ে যায়
.
.
-ভাইয়া [হিম হিমুর দিকে তাকিয়ে
আছে। সাথে নীলাও আছে যে
গতরাতে তার নাম জিজ্ঞেস
করেছিলো। সাধারণত হিমের অবাক
হওয়ার কথা। কিন্তু তার চোখে
বিন্দুমাত্র কৌতুকবোধ নাই]
-এই যে হিম সাহেব এভাবে পরে
থাকেন কেন সবসময়। জানেন আপনার
বোন আর আপনার মা-বাবা আপনার কত
চিন্তা করে??
-ভাইয়া চল। বাসায় যাবো
.
হিম, হিমু আর নীলা একসাথে বাসায়
যাচ্ছে। নীলাও তার সাথে যাচ্ছে।
হিম কে বাসায় এনে নীলা জোড় করে
বাথরুমে ঢুকিয়ে গায়ে পানি দিত্ম্যে
দেয়। হিমের মা-বাবা খুব অবাক। হিমুও
কিছুটা অবাক। হিম কে ভালো ভাবে
গোসল করতে বলে। হিম বাথরুমে গোসল
করছে। হিমু কে একজন নাপিত ডাকতে
বলে। এই ১ম হিম কে গোসল করাতে
পারলো নীলা। সবাই কিছুটা অবাক
হলেও অনেক খুশী। হিমার মা তো
খুশিতে কান্না করে দেয়। নাপিত
এসে খুব যত্নসহকারে হিমের চুল কাটছে।
.
সবশেষে নীলা হিম কে একটা ঘুমের
ইঞ্জাকশন দিয়ে ঘুমের ঘোরে পাঠাই।
নীলা সাইকোলজি নিয়ে লিখা-পড়া
করে। হিম কে হিপনোটাইজ করে তার
অতীত তাকে মনে করিয়ে দেয়। হিম
কান্নাই ভেঙে পরে। তারপর ঘুমিয়ে
পরে। সেদিন রাতে নীলা হিমুর
সাথে থেকে যায়।
.
.
সকালে হিম যে নিয়ে রুপার কবরে
যায়। হিম রুপার কবরে গিয়ে খুব কান্না
করে। হিমু তাকে ধরতে যায়,, কিন্তু
নীলা বারণ করে। হিমু কাঁদছে,,
অঝোরে কাঁদছে। নীলার কারণে হিম
আবার আগের মত অবস্থাই ফিরে আসে।
.
.
৬মাস পর………
.
-হিম সাহেব এবার ঘুম থেকে উঠুন (নীলা)
-এইতো উঠছি(হিম)
-না,, এক্ষুনি উঠেন বলছি,, নাহলে পানি মারবো
-আরে উঠছি উঠছি,, এইতো উঠে গেলাম
-গুড
.
.
হিম যখন নরমাল হয়ে পরে পরিবারের
কথায় নীলা কে বিয়ে করে নেই।
তাছাড়া রুপার ও শেষ কথা ছিলো
এটা। আর নীলাও হিমকে
ভালোবেসে ফেলে। তাই হিম
নীলাকে বিয়ে করে নেই। তারা এখন
অনেক সুখেই আছে………

  🌷🌷  -----(সমাপ্ত)-----🌷🌷