নষ্ট । পর্ব -০৭
ইমুর সাথে কথা হওয়ার পরে যা জানতে পারলাম তার জন্য আমি মোটেও প্রস্তুত ছিলাম না।
আবির নাকি তার কলেজের ফাস্ট ইয়ারে পড়া এক সুন্দরী মেয়ের প্রেমে পড়েছে।
এবং আমার থেকে টাকা নিয়ে সেই মেয়ের যাবতীয় চাহিদা পুরন করতো।
কিন্তু ইমু
ভয় দেখিয়েছে যদি আবারো সে আমার থেকে টাকা নেই
তাহলে তার সব অতীত হিস্ট্রি
তার নতুন প্রেমিকাকে সে বলে দিবে।
এই ভয়েই আবির আর এখন আমার থেকে টাকা চায়
না,
এমন কি কোনপ্রকার যোগাযোগও রখতে চাই না।
আমি ভাবছি এতো তাড়াতাড়ি একটা মানুষ কিভাবে এতটা বদলে যেতে পারে।
হয়তো সাপও তার খোলস বদলাতে একটু সময় নেয় কিন্তু আবির.....
সামনে পরীক্ষা অথচ তা নিয়ে আমার বিন্দু মাত্র মাথা ব্যথা নেই।
আমি সারাদিন সারারাত আবিরকে ফোন দিচ্ছি ,
কেন জানি ইমুর কথাগুলো আমার মন মানতে চায় না।
কেন জানি ইমুর কথাগুলো আমার মন মানতে চায় না।
এত ভালোবাসা, এত বিশ্বাস, এত স্বপ্ন এক মুহূর্তের মধ্যে শেষ হতে পারে না।
আমার আবির এতটা পরিবর্তন কিছুতেই হতে পারে না।
কিন্তু না প্রতিদিন আমার বিশ্বাস একটু একটু করে ভাঙ্গছে।
আমি খুব করে বুঝতে পারছি আমার আবির আর আমার নাই।
জীবনের শ্রেষ্ঠতম জঘন্য পরীক্ষা দিচ্ছি।
কিন্তু এটা নিয়ে আমার মন খারাপ করার সময় নেই।
আমার মন প্রাণ সব কিছু আবিরের অবহেলায় ভরে গেছে।
নিজেকে এখন বড্ড বেশী তুচ্ছ মনে হয়।
আরো টিউশনি করা শুরু করলাম কারন ব্যস্ত থাকাটাই হয়তো আমাকে বাচিয়ে রাখবে।
ইদানীং আবার তারা দেখা শুরু করেছি।
জ্বলজ্বল করে জ্বলতে থাকা তারাটার
দিকে তাকিয়ে
আবারো জীবনের অপ্রাপ্তির অভিযোগ গুলো করা শুরু করেছি।
এবং
মিথ্যা বলাটাও এখন ভালোই শিখেছি।
সেদিন হোস্টেলে একটা মেয়ে জানতে চাইলো টিউশনি করে কত টাকা পাই
যদিও আমায় কেউ তিন হাজারের বেশি বেতন দেয় না তারপরো আমি বললাম
যদিও আমায় কেউ তিন হাজারের বেশি বেতন দেয় না তারপরো আমি বললাম
সাতহাজারের
নিচে আমি কাউকে পড়ায় না,
এই কথা শোনে মেয়েটার মুখ কেমন যেন হয়ে গেল।
বুঝলাম
তার কেমন যেন একটু হিংসা হিংসা লাগলো আমায় দেখে,
এটাই কেন জানি আমায় আনন্দ দিল।
এটাই কেন জানি আমায় আনন্দ দিল।
তারপর থেকেই সবাই কে বানিয়ে বানিয়ে যা মনে আসতো মিথ্যা বলতাম,
নিজের
কল্পনার সুখের গল্প শুনিয়ে তাদের মিথ্যা হিংসা কুড়াতাম।
আসলে তাদের
সুখগুলোই আমায় পোড়াত তাই এই ছলনা।
আমার সুখ বলতে কিছুই নেই এখন
আমাকে ভালোবাসারও কেউ নাই এখন।বাবাও আমার ঠিকমতো খোজ নেয় না।
বড় দুই বোন
নিজেদের সংসার নিয়ে ব্যস্ত।
ঠিক তেমনই অবহেলায় আছি যেমনটা মা অসুস্থ হওয়ার
পর ছিলাম।
আবারো প্রচন্ডরকম ভালোবাসাহীনতায় ভুগছি আমি।
ঠিক এই সময়ই হুট করে হোস্টেল ছেড়ে দিলাম কেননা সবাই শুধু আবিরের কথা জানতে চাইতো।
আর কতোই বা মিথ্যা বলবো সবাইকে। এতো কষ্ট আর অবহেলা আমি আর নিতে পারছি না
আর কতোই বা মিথ্যা বলবো সবাইকে। এতো কষ্ট আর অবহেলা আমি আর নিতে পারছি না
তাই আবিরের নামটাও আর শুনতে চাই না আমি।
সেজন্যই ভাবলাম নতুন জায়গায় যায়
যেখানে কেউ আর আবির সম্পর্কে কিছু জানবে না।
মিতুর সহায়তায় একটা
মেসে ওঠলাম। একটা ফ্লাট ভাড়া করে মাত্র ৬টা মেয়ে থাকে ।
তাদের মধ্যে একটা
মেয়ে হলো গোলআলুর(অয়ন) ছোট বোন এবং ওই মেসের যাবতীয়
দায়িত্ব গোল আলুর। আর
গোল আলু থাকে ঠিক তার
পাশের ফ্ল্যাটে কিন্তু এটা আমি জানতাম না। জানলে
কোনদিনও ওই গোলালুর মেসে ওঠতাম না।
এদিকে আমাকে দেখে গোল আলু তো মহা খুশি। যেন তার ঈদ লাগছে।
আনন্দে সারাদিন
তাদের ফ্লাটের দরজা খুলে রাখে।
মেজাজ খুব খারাপ হয় কিন্তু এখন কিছুই বলতে
পারি না।
পরীক্ষার রেজাল্ট দিলো
আমি দুইটা বিষয়ে ফেল করছি কিন্তু আমি যাস্ট এটাই ভাবছি
আমি দুইটা বিষয়ে ফেল করছি কিন্তু আমি যাস্ট এটাই ভাবছি
বাকি চারটাতে পাশ করলাম কিভাবে?
মিতু ফেল করছে একটা সাবজেক্ট এ তাই আমি ভীষণ খুশি।
ও পাশ করলে ফেল করার কষ্টটা আরো বেড়ে যেত আমার।
এদিকে আমার ফেল করার কথা শোনে গোল আলু নিজেই আসছে আমার
পড়াশোনার বিষয়ে
সাহায্য করতে।
কিন্তু আমি একদম চাই না গোল আলুর থেকে সাহায্য নিতে।
কিন্তু
কি আর করার পরীক্ষায় তো পাশ করতে হবে।
তাই বাধ্য হয়েই এখন গোলআলুর সাথে
হেসে হেসে কথা বলতে হচ্ছে।
আবীরের কেয়ার আর ভালোবাসা গুলো আমি এখনো প্রতিনিয়ত মিস করি
তাই মাঝে মাঝে ফোন দিই কিন্তু আবির সেই আগের মতোই ফোন ধরে না।
এখন গোলআলু আমার মোটামুটি ভালো বন্ধু।
ঠিক আগের মতো এখন আর ওকে এতটা বিরক্তিকর লাগে না।
কেন জানি ওকে আর গোল আলু বলতে ইচ্ছে করে না তাই এখন অয়ন বলেই ডাকি।
অয়ন শুধু আমার পড়াশোনার হেল্প করতো না
বরং আমার সব বিষয়ে অনেক খেয়াল
রাখতো।
অনেক কেয়ার করতো আমার। আমার কিছু হলে একদম সহ্য করতে পারতো না।
আমার পরীক্ষার রেজাল্ট ভালো হতে শুরু করলো।
কিন্তু আজো আমি আবিরকে ভুলতে
পারি না
অথচ অয়নের যত্ন আর ভালোবাসারও লোভ সামলাতে পারছি না...
চলবে...
লেখকঃ Md Dipu Islam Rup
No comments
info.kroyhouse24@gmail.com