অভিশপ্ত_ফ্রেন্ডশীপ ( ২য় পর্ব )
শুধু অর্পির ছবি ভেসে উঠছে!
বৃত্ত আর খেতে পারলো না।
এই কোন মায়াবিনীর ছায়ায় বলী হয়েছে সে নিজেও বুজতে পারছেনা। খাওয়ার টেবিল থেকে উঠে তাররুমে গিয়ে অর্পির কথা ভাবতে থাকে!
আর সুহান গল্প লেখা শেষ করে তাড়াতাড়ী ঘুমিয়ে পড়লো!সকালে আবার টিউশনিতে যেতে হবে । অচেনা শহর ঢাকাতে দুটি টিউশনি করেই তার লেখাপড়ার জীবন চলে।
রাত ১২ টা ৩০ মিনিট!
ফোন আসলো সুহানের মোবাইলে! অসহ্য লাগলো সুহানের! এতো রাতে কেউ ফোন দেয়! প্রথমবার ফোন না ধরলেও দিত্বীয়বার বিরক্ত হয়ে ফোন ধরলো,
হ্যালো!
সুহান : হ্যালো! কে বলছেন?
জ্বি আমি অর্পি ! ঐ যে হাসপাতালে দেখা হয়েছিল, আপনি আমার মাকে বিপদের হাত থেকে বাঁচিয়েছিলেন!
সুহান : ওহ আচ্ছা, তো এখন আন্টি কেমন আছেন ? আর কোনো প্রবলেম হয়েছে কি?
অর্পি : না আর কোনো সমস্যা হয়নি । মাকে বাসায় নিয়ে এসেছি। আপনি দেখতে আসবেন কিন্তু....
সুহান : আচ্ছা, ঠিক আছে। সময় পেলে একদিন আসবো।
আর একটি কথা! আপনি আমার নাম্বার পেলেন কোথা থেকে!
অর্পি : ওই যে আপনার বন্ধু হাসপাতালে মোবাইল রেখে গিয়েছিল, উনার মোবাইল থেকে পেয়েছি !
সুহান : আচ্ছা ভালো করেছেন, এখন ফোন রাখি কেমন? আমার আবার ঘুম অনেক বেশি ! তাছাড়া খুব সকালে ঘুম থেকে উঠতে হবে!
অর্পি : আচ্ছা, ঠিক আছে। ঘুমান! বলে অর্পি ফোন রেখে দিল। সুহান আবার ঘুমিয়ে পড়লো। এই দিকে অর্পি সুহানের মহানুভবতা দেখে, সুহানের গুছিয়ে কথা বলার স্টাইল দেখে প্রেমে পড়ে যায়। সারারাত অর্পি সুহানকে নিয়ে ভাবে ! এই রকম একটা ছেলের অপেক্ষায় সে আজ পর্যন্ত একটাও প্রেম করেনি!
আজ স্বপ্নের সেই পুরুষটি স্বপ্নের মাঝখান থেকে বের হয়ে সামনে এসে দাঁড়ালো! এখন তার লুফে নেয়ার পালা।
অর্পিতো ছেড়ে দেয়ার পাত্রী নয়! সে ঠিকই তার মায়াজালে আটকাবে!
এসব ভেবে ভেবে অর্পি শুনতে পেল চারদিকে ফজরের আজান দিচ্ছেন মুয়াজ্জিনেরা! অর্পির চোখে ঘুম চলে আসলো! মায়াবিনীর মত মৃদ হাসি দিয়ে চলে গেল, ঘুমের রাজ্যে।
সুহান এবার ঘুম থেকে ওঠে ফজরের নামাজ পড়তে মসজিদে গেল। নামাজ পড়ে এসে সামান্য নাস্তা করে, টিউশনি উদ্দেশ্যে রওনা হলো।
এই দিকে বৃত্তের অবস্থা অনেক কাহিল! সারারাত ঘুম নেই, ঘুমে চলে গেছে অর্পির তরে! উদ্ধামের মত শুয়ে আছে ঠিকই কিন্তু মন তার সাথে নেই! জেগে থাকা স্বপ্নের মধ্যে অর্পিকে নিয়ে হাবুডুবু খাচ্ছে প্রেম রাজ্যে! অর্পিকে যেকোনো মূল্যে তার চাই-ই-চাই! ঘুমাতে পারলোনা বৃত্ত ওঠে পড়লো। মাকে ডাক দিয়ে বলল , নাস্তা দেওয়ার জন্য! বৃত্ত আর স্থির থাকতে পারছেনা! সে কি সুহানের সাথে এই বিষয়টি শেয়ার করবে? না এখনও শেয়ার করার সময় হয়নি! আগে সুহানকে নিয়ে অর্পিদের বাসায় যাই । অর্পির সাথে কথা বলি তারপর না হয় সুহানকে বলব! এখন সুহানের সাথে কিছুক্ষণ কথা বলি দেখি মনে শান্তি আসে কিনা, বৃত্ত ফোন দিল সুহানকে! সুহান ফোন ধরে বললো এখন টিউশনিতে আছে, ৯ টার পর গাজী সাহেবের দোকানে আসতে সেখানে বসে চা খেয়ে দুজন গল্প করবে! কিছুটা বিরক্ত হয়ে ফোন রেখে দিল বৃত্ত ! এদিকে বৃত্তের মা নাস্তা নিয়ে এসে টেবিলে রাখতে গিয়ে খেয়াল করলেন যে ছেলের চোখ মুখ ফুলে গেছে! তারমানে বৃত্ত সারারাত ঘুমায়নি!
কি ব্যাপার বৃত্ত তুই সারারাত ঘুমাসনি কেনো?
বৃত্ত হতবাক হয়ে বললো, আমি তো ঘুমাইছি মা!
আমাকে মিথ্যা বলিস মনে হয় আমি বুঝি না। আচ্ছা মা, যাওতো আমি কাপড় চেঞ্জ করবো বলে মা বিদায় করলো!
এ ঝলক মিষ্টি হাসি দিয়ে মায়ের উদ্দেশ্যে মনে মনে বলল, মা তোমার ছেলেকে অর্পি রোগে ধরেছে গো! এইজন্য ঘুম হয়নি ! এই রোগ থেকে মুক্তি পেতে অর্পিকে আমার চাই।
সকাল ৯.৩০ মিনিট।
বৃত্ত আর সুহান বসে গাজী মিয়ার দোকানে চা খাচ্ছে!
সুহান : কিরে রাতে ঘুমাস নি, তোর চোখ এতো লাল কেন?
বৃত্ত : মাথা ব্যাথা করছিল তাই ঘুমাতে পারিনি।
সুহান : না মহাশয় তা হবার কথা নয়! প্রেমে পড়েছিস?
বৃত্ত : কি যে বলিস না তুই! চল ভার্সিটি যাবো ।
সুহান : আচ্ছা চল।
বেলা ১১ টা।
অর্পি ঘুম থেকে উঠে গেছে। ফ্রেশ হয়ে তার মাকে ওষুধ খাইয়ে দিয়ে বের হলো ভার্সিটির উদ্দেশ্যে, রাস্তায় সঠিক সময়ে গাড়ী পাওয়ায় বেশিক্ষণ লাগলো না ভার্সিটি পৌছাতে । গেটে প্রবেশ করতে যাবে তখনই দেখতে পেল, ভার্সিটির একপাশে বসে সুহান লেখালেখি করছে! অবাক হলো কিছুটা! এইসময় মানুষ আড্ডা নিয়ে ব্যস্ত হয়, আর সে কিনা লেখালেখি করে! আরো বেশি মুগ্ধ হয়ে পড়ে সুহানের প্রতি!
ধীরে ধীরে অর্পি সুহানের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে, বৃত্ত এসে সামনে দাঁড়ালো....
(wait for next part)
No comments
info.kroyhouse24@gmail.com