Breaking News

অভিশপ্ত_ফ্রেন্ডশীপ

পর্ব : ১২
ছোট করে কপালে একটা চুমু দিয়ে জড়িয়ে ধরলো।।।
আওয়াজ হলো, মাআআআআ...........!
বাড়ীর সব মেহমানের কান এখন বৃত্তের বাসরঘরে!
এতো জোরে চিৎকার আসছে কেন??
সবাই এসে দরজার সামনে জড়ো!!
বারবার ঢাকছেন বৃত্তকে! কিন্তু কোনো সাড়াশব্দ নেই!
বৃত্ত মাটিতে পড়ে লুটোপুটি খাচ্ছে। প্রিয়মানুষটি তার বুকে ছুরি ঢুকিয়ে দিল! অর্পির দিকে একদৃষ্টিতে তাঁকিয়ে আছে । জানতে চাইল অর্পির কাছে, এটা কেনো করল??
অর্পি এবার মোবাইল বের করে রেকর্ড হওয়া কথা গুলো শোনালো! বৃত্ত অবাক! অমি অর্পিকে বলে দিছে! তার কাছে কি দোষ করলাম আমি! সে আমার এই ক্ষতিটা করল। বৃত্ত অর্পিকে বলল, এইসব মিথ্যা বানোয়াট !!
অর্পি এবার সুহানের আর অমির ফোনে সেই কথাটি শোনালো
" অামি সুহানকে খুন করে ফেলেছি, এখন কি করব অমি ??"
সবাই দরজায় ধাক্কা দিচ্ছে। হয়তো ভেঙ্গে ফেলবে কিছুক্ষণের মধ্যে।
অর্পির এখনও প্রতিশোধের নেশায় দাঁড়িয়ে আছে । বৃত্তের গলার মধ্যে পা চেঁপে ধরলো।
বিষাদময় কান্না জড়িত কণ্ঠে বলে উঠল,
কি দোষ করেছিলো সুহান? তাকে মেরে ফেললি! নিজের চেয়েও বেশি ভালোবাসতো তোকে, এটাই তার পাওনা ছিল । তোর কি মনে নাই, সেদিন তোর মা মরতে বসেছিলো, কোথাও পাইছিলি রক্ত! এই সুহান নিজের জীবনের ঝুকি নিয়ে তোর মাকে বাঁচিয়েছিলো । তোর কি মনে নাই, ১ বছর আগে তুই পানিতে পড়ে মরতে বসছিলে! এই সুহান নিজের জীবনের দিকে না তাকিয়ে তোকে বাঁচিয়েছিল, এটা কি ছিল তার ভুল। তাকে মারতে একবারও বাঁধলো না! বৃত্ত অর্পির কথা শুনে সত্যি খুবই মর্মাহত হলো। বন্ধুর এই সব কথা এখন মনে পড়ছে । অর্পির কাছে জানতে চাইল, সে এইসব জানল কেমনে?
অর্পি একটি ডায়রী ছো মেরে বৃত্তের মুখে মেরে বলল, এইটা পড়ে দেখ, বুঝবি!!
বৃত্তের সময় ধীরে ধীরে শেষ হয়ে আসছে ! শেষ মুহুর্তে এসে কান্না জড়িত কণ্ঠে উপরের দিকে চেয়ে বলল,
"Sorry Suhan, Im really sorry, আমাকে তুই ক্ষমা করে দিস বন্ধু, আমি মোহে পড়ে অমির কথা শোনে তোর মত একটা ভালোবন্ধুকে শেষ করে দিলাম। আমি একটা পাপী। আমাকে ক্ষমা করিস বন্ধু "
বৃত্ত শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করল। অর্পি একটা নিঃশ্বাস নিয়ে উপরের দিকে তাঁকিয়ে বলল,
" সুহান দেখো, আমি তোমার খুনিকে দুনিয়াতে রাখিনি! আমি প্রতিশোধ নিয়ে নিলাম। আমাকে ক্ষমা করে দিও বাবু। আমার জন্যই তোমাকে এই সুন্দর পৃথিবী ছেড়ে যেতে হয়েছে। আমি এই বিয়েতে রাজিহইছি বলে তুমি রাগ করোনা প্লিজ। আমিও তো চাইছিলাম "কবুল" বলে তোমাকেই গ্রহন করতে! কিন্তু উপরওয়ালা তো আমার পক্ষে নাই, তাই তোমারে তার কাছে নিয়ে গেছেন।
এই বিয়েটাতে শুধুমাত্র প্রতিশোধ নেয়ার জন্য আমি রাজি হইছি। ভালো থেকো বাবু"
বৃত্তের আত্বীয়স্বজনরা ঘরের বাহিরে থেকে ধাক্কাতে ধাক্কাতে দরজা ভেঙ্গে ফেললেন। সবাই ভেতরে প্রবেশ করে, একি হলো একি হলো বলে চিৎকার করতেছেন। অর্পি এখনও উপরের দিকে তাঁকিয়ে আছে। বৃত্তের চাচা ফোন দিলেন পুলিশকে। অনেকেই চাইছে অর্পিকে মারতে কিন্তু বৃত্তের চাচা একজন আইনের মানুষ তাই সবাইকে বাঁধা দিলেন। পুলিশ আসলো। অর্পিকে হাতকড়া পরালো ।
নিয়ে যাচ্ছে টেনেহেঁচড়ে। অর্পির এইদিকে কোনো মন নেই। গাড়ীতে বসানো হলো। অর্পির মা জেনে গেলেন বিষয়টা।
তার মাথায় যেন আকাশের বাজ পড়ল।
ফোন দিলেন বিদেশে থাকা অর্পির বাবাকে ।
হতবাক বাবা! যে মেয়ের জন্য এত বছর থেকে কষ্ট বিদেশে পড়ে রয়েছেন, আজ মেয়েটা এই কি করল??
অমিও জেনে গেল, বৃত্ত খুন হয়েছে। খুব খুশি হলো। অমির বোন রাখির লিখে যাওয়া ডায়েরীর সেই পাতাটি খুলে চেয়ে দুচোখের পানি ফেলছে!
মনে মনে বলছে,বোন আমার, আমি তোর আর তোর সন্তানের খুনিকে মাষ্টারপ্লান করে পৃথিবী থেকে সরিয়ে দিয়েছি। আজ বৃত্ত দুনিয়া থেকে বিদায় নিয়েছে, আমি খুব খুশিরে বোন আমি
খুব খশি!!!
(আগের পর্ব গুলো না পড়ে থাকলে টাইমলাইনে গিয়ে পড়তে পারেন)

No comments

info.kroyhouse24@gmail.com