প্রেমিক রদ বদল
দোস্ত দেখ ছেলেটা কি হ্যান্ডসাম। একদম কিউটের ডিম্বা, দেখলেই যে কোনো মেয়ে প্রেম পড়ে যাবে। (সভ্যতা) তোর না বয়ফের্ন্ড আছে, তুই অন্য ছেলেদের দিকে নজর দিস কেন, এটা ঠিক না কিন্তু (স্বর্ণা) -----------আরে তুই যে কি বলিস, আজকাল ওটা কোনো ব্যাপার না। তুই আমকে শুধু ওই ছেলেটা বিষয়ে একটু খোঁজ নিয়া দে।নামধাম আর কী।
---------আমাকে ছাড়!! আমি তোর এ ব্যাপরে কোনো হেল্প করতে পারবো না।
-----আচ্ছা আমার টা আমি দেখে নিবো।
. . . স্বর্ণা এবং সভ্যতা খুব ভালো বান্ধবী, ছোট্টবেলা থেকে ওর এক সাথে বড় হলেও, দুইজন দুই ধাঁচের, স্বর্ণা শান্ত সৃষ্ট ভদ্র, অন্য দিকে সভ্যতা পুরা স্বর্ণার বিপরীত মুখি, নামটা সভ্যতা হলেও যতো অসভ্য কাযর্কালাপ আছে সবকিছু সভ্যতার মাঝে বিদ্যমান তাই স্বর্ণা একটু এড়িয়ে চলতে চাইলেও পারে না এতোদিনের বন্ধুত্বর জন্য।
. . . যাইহোক আজ খুব রাগ হয়েছে সভ্যতার উপর, কারণ মেয়েটা এর আগেও কয়েকটা বফ পরির্বতন করেছে, আজ সে আবার নতুন একটা ছেলের দিকে নজর গেছে সভ্যতার, স্বর্ণা জানে সভ্যতার যার দিকে নজর দেয়, তাকে তার রুপের আগুনে জ্বলতেই হয়, কারণ মেয়েটা দেখতে হেব্বি সুন্দর, যে কেউ ওর ফিগার দেখলে পাগল হয়ে যাবে। . . . গতবার যে ছেলেটার সাথে ব্রেকআপ করলো, ছেলেটা খুব কান্না করছিলো কিন্তু সভ্যতার একটু মায়া হয়নি। আজ আবার নতুন একটা, এই সভ্যতার মতো মেয়ের জন্য আজ মেয়ে জাতিকে সবাই অপমান করে।
এই সব কথা ক্লাস রুমে একা একা বসে ভাবচ্ছে। ক্লাসে প্রফেসার এসে কি লোকচার দিয়ে গেল কিছুই স্বর্ণার মাথায় ঘুটছে না। তাই ক্লাস পর বাসায় চলে গেল। . . . স্বর্ণা আম্মু ----এতো তাড়াতাড়ি বাসায় চলে আসলি যে শরীরটা কি খারাপ? । ----না আম্মু আমি ঠিক আছি। . . এই বলে স্বর্ণা ফ্রেস হয়ে না খেয়ে ঘুমিয়ে পড়লো, রাতে নয় টা এতো রাতে নুর আবার ফোন করলো কেন?এইটা স্বর্ণার নিত্য রুটিন হয়ে দাঁড়িয়ে, সভ্যতা ওর বফ নুর এর সাথে রাগ করবো তা আমাকে ভাঙ্গাতে হবে। এই সব ভাবতে ভাবতে ফোন রিসিভ করলো স্বণা ........... হ্যালো -----নুর হা, বলে নিশ্চয় আবার রাগ করছে বলে আমাকে ফোন দিয়েছেন, অামি সভ্যতাকে বুঝিয়ে বলছি, --- স্বর্ণা না, সভ্যতা আমার সাথে রাগ করে নাই তাহলে? আজ আমার সাথে ব্রেকআপ করে দিয়ছে, ও বলছে আমার সাথে নাকি ওর বোরিং লাগে এজন্য আসার সাথে রিলেশন চালানো সম্ভব না। (কাঁদো কাঁদো কন্ঠে) আমি কিছু বলতে যাবো তার আগে লাইন কেটে যায়........ . . . একটু পর সভ্যতার ফোন . . দোস্ত আমি আমার হিরোর খোঁজ পেয়ে গেছি (সভ্যতা) .......তুই কার কথা বলছিস?(স্বর্ণা) আরে আজ কলেজ থেকে যে হ্যান্ডসাম ছেলের কথা বলছিলাম না ওই টা।(সভ্যতা) ও আচ্ছা আমি কাল বিকেলে ওর সাথে দেখা করবো, দোস্ত আমার অনেক খুশি লাগছে।
.......তুই তো এর অাগে অনেক বার এই খুশি অনুভব করছিস। লাস্ট যখন নুরে সাথে রিলেশনে গেলি হৃদয়ের সাথে ব্রেকআপ করে, তুই আমার মুডটা নষ্ট করে দিলি। ও আচ্ছা স্যরি, কিন্তু এখন নুরের কি হবে? ওর নিয়া তুই ওকালতি করবি না, ওর মতো হাবল মার্কা ছেলের সাথে রিলোশনে গিয়ে আমার লাইফটা বোরিং হয়ে গেছে। তোর সাথে হৃদয়ের ফিজিক্যাল রিলেশন হয়েছে তো? আরে ওইটা কোনো ব্যাপার না।বাদ দে পুরান কথা।
. . . . ফোন রেখে দেয় সভ্যতা, এই মেয়েটা অনেক বুঝিয়েছে স্বর্ণা,, কিন্তু কোনো লাভ হয়নি। । . . . সকাল ১০ টা সভ্যতা এবং স্বর্ণা কলেজ ডুকছে এমন সময় পেছন থেকে কেউ একজন সভ্যতার হাত ধরে টান দেয়, পিছন ফিরে তাঁকিয়ে অবাক সভ্যতা। কে??? . অবাক হয়ে পিছনো তাকিয়ে দেখে জুবায়ের এই ছেলের সাথে জীবনের বেশি সময় কাটিয়েছে সভ্যতা, কারণ স্কুল লাইফে পুরা তিনটা বছর রিলোশন ছিলো, কিন্তু আজ আবার হঠাৎ জুবায়ের এখানে কোনো, এড়িয়ে চলে গেলো সভ্যতা, এই ছেলেটা অনেক কষ্ট দিয়েছে সভ্যতাকে, এই জুবায়েরকে অনেক বেশি ভালবাসতো মন প্রাণ দিয়ে, জুবায়ের ছিলো তার জীবনের প্রথম ভালোবাসা
........ . . . . ৩ বছর পিছোনে
..... . . . জুবায়ের ১৪ই - ফ্রেরুয়ারীতে সভ্যতাকেকে প্রপোজ করেছিলো, সেদিনটার কথা আজও মনে আছে তার, বম্বে নায়কের মতো হাটু গেড়ে বসে হাতে ফুল নিয়ে বলোছিলো ভালোবাসি তোমায়, মনের সবটুকু ভালবাসা দিয়ে আপন করে নেয় জুবায়েরকে, কিন্তু জুবায়ের তার ভালোবাসা মূল্য দেয়নি, খুব কম দেখা করতো জুবায়ের, কিন্তু যখনই দেখা করতো, তখন দুটো ভালোবাসার কথা না বলে শুধু তার শরীর নিয়ে কথা বলতো, এটা খুব একটা পছন্দ করতো না সভ্যতা, শারীরিক সম্পর্ক কথা বলতো, সভ্যতার ভয় হতো এটা নিয়ে, তাই রাজী হয়নি, তবে একদিন পার্কে বসে জোর করে তাকে কিস করে, সেদিন বাসায় এসে কান্না করেছিলো সভ্যতা।
. . . আস্তে আস্তে জুবায়ের তাকে ফিজিক্যাল রিলেশন করার জন্য চাপ দিতে থাকে, এক পৃযায়ে বাধ্য হয়ে জুবায়ের কু-প্রস্তাবে রাজী হয়, সেদিন ছিলোও ১৪ই- ফ্রেরুয়ারী, যেদিন নিজের সমস্ত কিছু বিলিয়ে দেয়, সভ্যতা, কিন্তু কি অদ্ভুদ রিলশনের একদিন পরই জুবায়ের তার সাথে ব্রেকআপ করে দেয়,। . . সেদিন থেকে সভ্যতা পুরুষ জাতির উপর আস্থা হারিয়ে ফেলে। তার কাছে এখন প্রেম,ভালোবাসা পুতুল খেলা মনে হয়। এইতো জুবায়ের সাথে রিলেশন ব্রেকআপ হওয়ার পর গত এক বছরের ৫ জনের সাথে রিলেশন করে। সভ্যতাকে অনেক বুঝিয়ে স্বর্ণা কিন্তু ফলাফল শূ্ন্য, কিছুই বুঝতে চায় না মেয়েটা, যেন এটা তার নেশায় পরিণত হয়েছে। . . . বতর্মান..!........ . . . অনেকটা কষ্ট করে এড়িয়ে চলে আসে জুবায়ের সামনে থেকে, সভ্যতা এখন আর তার অতীতকে আর বতর্মানের সাথে জুড়িয়ে রাখতে চায় না। এখন তার একমাএ লক্ষ্যে কলেজের হিরো, যার সাথে আজ দেখা করবে........... . . . বিকেল পাচঁটা.... .
অনেক সময় ধরে বসে অাছে সভ্যতা, আজই প্রথম কারো জন্য আগে এসে বসে আছে।অপেক্ষা করা যে কি কঠিন, তা আজ বুঝতে পারছে..... হঠাৎ উদয় হলো তার হিরো... হ্যাই...আমি নিলয় হ্যালো ......আমি সভ্যতা আস্তে আস্তে নিলয়েন সাথে প্রেমের সম্পর্ক জড়িয়ে পড়ে সভ্যতা। আজ এক মাস চুটিয়ে প্রেম করছে সভ্যতা। এর মাঝে অনেকবার বার ফোন, মেসেজ করেছে নুর, কিন্তু সভ্যতা কোনে রিপ্লাই দেয় নাই। . . .
আজ সকালে জানতে পারে নুর সুইসাইড করেছে সভ্যতার জন্য, তাকে না পাওয়ার বেদনায় সহ্য করতে না পেরে, আসলে প্রিয় মানুষ যদি অবহেলা করে, তখন বাঁচার ইচ্ছা মরে যায়। নুর মারা যাওয়াতে কোনো রকম বিন্দু মাএ অনুশোচনা নেই সভ্যতার মাঝে, খুব হালকা ভাবে আমলে নেয় বিষয়টা। কারণ জুবায়ের যখন তার ইচ্ছের বিরুদ্ধে তাকে ধষর্ণ করেছিলে, তাতে এতোটা কষ্ট পায়নি যা তাকে ছেঁড়ে দেওয়ার পর পেয়েছিলো।তখন সভ্যতা সুইসাইড করার কথা চিন্তা করেছিলো, কিন্তু পরিবারের কথা চিন্তা করে করতে পারে নাই। . . . . এদিকে নিলয়ের সাথে বেশি আগাতে পারিনি সভ্যতা, কারণ ওর সাথে সভ্যতার টাইপ যায় না।তাই ব্রেকআপ করে দেয় নিলয়। . .
আজ বেশ কিছুদিন সভ্যতা সিঙ্গেল, তাই একটু বেশি সময় দেয় ফেবুতে। রিকোয়েস্ট দেখতেছে এমন সময় একটা নাম দেখে তার চোখ আটকে যায় ...ফকিন্নির জামাই ...কি অদ্ভুদ নাম একসেপ্ট করার সাথে সাথে মেসেজ আসে "শুকরিয়া " এ রকম মেসেজ দেখে তাই একটু আগ্রহ জাগে ছেলেটার উপর... কথা চালিয়ে যায়, সারাদিন ফেবুতে চেটিং ..... কিন্তু কে এই ছেলেটা এক পর্যায়ে লিয়নের বন্ধুত্ব এবং প্রেমর সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে, কারণ দুজনের উদ্দেশ্য ছিলো একই..... আজ লিয়নের সাথে দেখা হবে, তাই পার্লারে গিয়ে সকাল থেকে সেজে এখন দেখা করার জন্য প্রুস্তুত সভ্যতা, আজ সভ্যতাকে যে সুন্দর লাগছে, লিয়নকে একদম পাগল করে দিবে, কিন্তু হিতে-বিপরীত . . . যেখানে সভ্যতাকে দেখে লিয়নের মাথা ঠিক থাকবে না, কিন্তু সেখানে লিয়নকে দেখে পুরা ক্রাশ খায় সভ্যতা ....
কি সুন্দর হ্যান্ডসাম, লম্বা, ড্রাশিং পুরাই অসাম..... নিজেকে সামলাতেনা পেরে তাই সভ্যতা জড়িয়ে ধরে লিয়নকে, কিন্তু কিছুক্ষণ পর লিয়নের সাড়া না পেয়ে ছেড়ে দেয় সভ্যতা..... সেদিন বেশি সময় থাকে নি লিয়নের সামনে হয়তো লজ্জায়....... . . . বাসায় এসে স্বার্ণাকে ফোন দেয় সভ্যতা... ফোন রিসিভ করলো না স্বর্ণা, আজকাল কেমন জানি সভ্যতাকে এড়িয়ে চলে স্বর্ণা.. তারপর বসে লিয়নের কথাভাবে, কে এই রাজকুমার, আমার মনকে পাগল করে দিলো, এই ছেলেটাকে পেলে জীবন ধন্য হয়ে যাবে আমার, এই সব কথা ভাবতে ভাবতে ঘুড়িয়ে পড়ে সভ্যতা। তাদের দিনগুলো খুব সুন্দর ভাবে এগিয়ে চলছে... কিন্তু দুজনের স্বপ্ন দুই রকম, সভ্যতা এখন তার স্বপ্নে তার রাজকুমারকে দেখে, লিয়ন ছাড়া বাকী কাউকে কল্পনা করতে পারে না, সে লিয়নকে ছাড়া বাঁতে পারবে না। . ,,. . .......
কিন্তু লিয়ন কেমন জানি তাকে এড়িয়ে চলে, দেখা করতে বললে দেখা করতে চায় না, মাঝে মধ্যে দেখা করতে আসলে আনমন হয়ে থাকে, তার ভাব-গতি কিছু বুঝতে পারে না, কিন্তু এই সব ভেবে সময় নষ্ট করে না সভ্যতা, কারণ লিয়নের প্রেমে অন্ধ, সে লিয়ন ছাড়া কিছুই বুঝে না, সে লিয়নকে তার স্বামীর আসনে বসিয়েছে, আজ অনেক দিন হলো লিয়ন দেখা করে না ব্যস্ততার কারণে...... . . . তাই আজ সভ্যতা সরাসরি লিয়নের বাসায় এসে হাজির ....দেখে তার রাজকুমার মহা আনন্দে ঘুমাচ্ছে, তাই আলতো করে কিস করে সভ্যতা.. তার অনুভব বুঝতে পেরে, জড়িয়ে ধরে লিয়ন, এমন সময় শক্ত করে ধরে সভ্যতা, ঠোঁটে একটা লম্বা কিস করে সভ্যতা, তারপর যৌন আকর্ষনে সাড়া দিয়ে মিলিত হয় তারা। এর পর মাঝে মধ্যে এই অনৈতিক কাজে লিপ্ত হয় লিয়ন এবং সভ্যতা। তাদের সম্পর্কে আস্তে আস্তে ভাঙ্গন ধরে .কিছুদিন পর দেখা করবে বলে ঠিক করে... তাই লিয়নের পছন্দের লাল শাড়ি আর টিপ পড়ে দেখা করতে যা,, আজই প্রথম শাড়ি পড়েছে সভ্যতা, তাছাড়া একটা সুখবর দিবে লিয়নকে . . .
লিয়ন আমি মা হতে চলেছি,....(সভ্যতা) কি বলো,? (লিয়ন) ....হুম, আমি সত্যি বলছি, এখন আমাকে বিয়ে করতে হবে তোমাকে (সভ্যতা) ....আমার পক্ষ এখন তোমাকে বিয়ে করা সম্ভব নয়, আর তোমাকে বিয়ে আমি কোনো সময় করবো না (লিয়ন) মানে.... মানে আমার পক্ষ তোমাকে বিয়ে করা সম্ভব নয়, তোমার বাচ্চাচা নষ্ট করে দাও। ....আমি পারবো না। সেটা তোমার ব্যপার, আর হ্যা, চাইছিলাম কিছুদিন পরে বলবো, কিন্তু এখনো বলছি. . . . তুমি নিশ্চয় নুরকে চিনো? যে তোমাকে পাগলের মতো ভালোবাসতো, যে তোমার জন্য নিজের জীবন শেষ করে দিয়েছে। তার বড় ভাই আমি....
যে সময় জানতে পারলাম তোমার জন্য আমার ভাই, আত্তহত্যা করছে, সেদিন থেকে তোমার সব খোজ-খবর নিয়া তোমার সাথে এতোদিন ভালোবাসার অভিনয় করছি,তোমাকে বুঝানোর জন্য যে কারো সাথে ভালোবাসা নিয়ে অভিনয় করলো, তার পরিণাম কি হয়,নুরেের বন্ধুর মাধ্যমে জানতে পারি তুমি সেই মেয়ে, তারপর থেকে তোমার জন্য ফাঁদ তৈরী করি যাতে, তুমি সহজে আমার প্রেমে পড়ো। আর খুব সহজে তুমি আমার ফাঁদে পা দাও।জানো তোমার সম্পর্কে নুর আমাকে বলেছিলো, তুমি তাকে খুব ভালোবাসো, আর এই তার নমুনা। . . সেদিন লিয়নের অনেক হাতে পা ধরেছিলো সভ্যতা,কিন্তু লাভ হয় নাই। বাসায় এসে সভ্যতার অপমান জ্বালা সহ্য করতে না পেরে, পেটে পাপের ফসল নিয়ে গলায় দড়ি দিয়ে আত্তহত্যা করে। . . . আসলে আমাদের সমাজে এখন প্রেমের নামে প্রতারণা করে, হাজার হাজার তরুন -তরুণী জীবন নষ্ট হচ্ছে, এগুলো থেকে আমরা নিজেকে দুরে রাখার চেষ্টা করি।
No comments
info.kroyhouse24@gmail.com