Breaking News

সেলিব্রেটি লিখাঃ রোমান্টিক লেখক

সেলিব্রেটি লিখাঃ রোমান্টিক লেখক

বাসে বসে আছি কানে ইয়ারফোন। বাস ভ্রমনের সময় কানে ইয়ারফোন দিয়ে গান না শুনলে কেমন যেনো মনমরা লাগে গন্তব্য ঢাকা' হঠাৎ মনে হলো কেউ ডাকছে আসলে কানে ইয়ারফোন থাকলে কেউ ডাকলেও শুনতে না পাওয়াটা অস্বাভাবিক কিছু না।। তাকিয়ে দেখি এক ভদ্র মহিলা। >জ্বী আন্টিকিছু বলবেন? : বাবা আমার বাসে একটু সমস্যা হয় যদি জানালার পাশের সীট টা ছেরে পাশের সীট টায় বসতে।। >(যা বুঝার বুঝা হয়ে গেছে) জ্বী আন্টি বসুন। নিজের সীট টা ছেরে উঠে বাইরে বের হলাম যাতে ভদ্র মহিলা সীটে গিয়ে বসতে পারে। 

কিন্তু একি। সীট টা ছারতেই এক মেয়ে এসে জানালার পাশের সীট দখল করে নিলো। > এটা কি হলো? : যা হবার তাই হলো। > মানে? : দেখছেন না কি হলো। > এখানে তো -------- কিছু বলার আগেই দেখি ভদ্র মহিলা পাশের সীটে বসে আছে। আমি কিছু বলতে যাবো এর আগেই মেয়েটি বললো, >উনার দিকে তাকিয়ে লাভ নেই আমি ই উনাকে বলেছিলাম। তাকিয়ে দেখি ভদ্র মহিলা মুচকি হাসছে! অত:পর কি আর করার পাশের সীটে বসে পরলাম। . 

বাস চলতে শুরু করলো।চলন্ত বাস কানে ইয়ারফোন ফিলিংস হাইওয়ে। গান শুনতে বেশ ভালোই লাগছে ইচ্ছে ছিলো জানালার পাশে বসে প্রাকৃতিক দৃশ্য উপভোগ করা। কিন্তু ঐ মেয়েটার জন্য আমার সে আশায় গুড়োবালি ভাবলাম ফেসবুকের নিউজ ফীড টা একটু ঘুরে আসি। তাই ফেসবুকে লগ ইন করলাম। গান শুনতেছি আর ফেসবুকিং করতেছি। হঠাৎ খেয়াল হলো পাশে বসা মেয়েটি উকি দিয়ে ফোনের দিকে দেখছে।সেদিকে পাত্তা দিয়ে লাভ নেই এর চেয়ে রুয়েল ভাইয়ের গল্প পড়াটাই ভালো। . অনেক্ষন ধরে গল্প পড়লাম। এবার একটু নিজের প্রোফাইলের গল্প গুলো দেখলাম না অনেক দিন ধরে গল্প লেখা হয় না শীঘ্রই লেখতে হবে। এর মাঝেই পাশে বসা মেয়েটি বললো, >আপনি কি গল্প লেখেন? :একটু আধটু। >আপনার নাম কি... অাবির? :হুম আপনি জানলেন কিভাবে? >আপনার গল্প পড়েছি।আর এখন আপনার প্রোফাইল দেখে বুঝলাম আপনি ই অাবির :ওহ আপনার নাম কি? > অহনা। :কি? >হ্যা চমকে গেলেন যে? :না এমনি। >বুঝেছি। আপনার গল্পের প্রতিটিতেই অহনা নাম দেয়া তাই। :হা হা হা। >কোথায় যাচ্ছেন? :ঢাকা আপনি? >আমিও আপনার বাড়ি ঢাকা? :না এই প্রথম বার যাচ্ছি আপনার? >আমার বাড়ি চট্রগ্রাম ঢাকা থেকে পড়া লেখা করি। :হুম। মনে মনে ভাবলাম,আমার লেখাও মানুষ পড়ে! আমাকে যদি কেউ বলতো তোকে দুই হাজার টাকা দিবো এই লেখাগুলো পড় তবুও পড়তাম না।'কারন আমার কাছে আমার লেখা গুলো পড়ার চেয়ে ঘুমানো অনেক ভালো অখাদ্য লেখা। . 

পাশে বসা মেয়েটি আবার বললো, >আমার জানা মতে যারা গল্প লেখে তারা বাস্তব কিছু নিয়ে লেখার চেষ্টা করে। :হুম। >কই আপনাকে তো দেখলাম না বাস্তবতার ধার কাছ দিয়ে যেতে। :কল্পনা গুলোই ভালো লাগে বাস্তবতা অনেক কঠিন। >হুম সব গল্পেই তো অহনা অহনাটা কে? :অই কাল্পনিক এই নামের আপনাকেই প্রথম দেখলাম। >হা হা হা বাস্তবতা আর ভার্চুয়াল কি এক? :ভুলেও না কেনো? >আমার জীবন কাহিনী শুনবেন তাহলেই বুঝবেন। :আচ্ছা বলেন।(বেশ কৌতুহলী হয়ে) আচ্ছা শুনুন তাহলে,"আমার আইডির নাম ছিলো এঞ্জেল অহনা প্রথমে ফেসবুক তেমন বুঝতাম না। এক বান্ধবীর কাছ থেকে সব কিছু শিখলাম। প্রথমে নিজের ছবি না দিলেও দিন ভর স্ট্যাটাস দিয়ে ভরা থাকতো আমার টাইমলাইন এর পর নিজের ছবি ফেসবুকে দিতে থাকলাম।অল্প দিনেই ব্যাপক সাড়া পেলাম সারা দিনে ৪-৫ টা করে ছবি দিতাম। 

অল্প দিনেই ফেসবুক সেলেব্রিটি হয়ে গেলাম। অনেক ফ্রেন্ড পেলাম ফেসবুকে। ভার্চুয়াল ই তখন সব। অবশ্য কিছু ফ্রেন্ড বলেছিলো ফেসবুকে ছবি দেয়া ঠিক না। কিন্তু তাদের কথা পাত্তা দেই নাই এভাবেই চলতে ছিলো বেশ কিছু দিন। হঠাৎ একদিন একজন ফ্রেন্ড আমাকে একটি ছবি ইনবক্স করলো। দেখে তো আমার চোখ ছানাবড়া। অই ফ্রেন্ড আমাকে একটা পেজের লিঙ্ক দিলো। সেখানে গিয়ে দেখি আমার সব ছবি ন্যুড করা। ইডিট করে আমার চেহারা ন্যুড ছবিতে বসানো হয়েছে। মুহুর্তেই মধ্যেই সব কিছু উলট পালট হয়ে গেলো। এর পরে অনেক ফ্রেন্ড এই ছবি গুলো দেখে ফেলে এমন কি আমার পরিচিতরাও এগুলো দেখে। সবাই ভাবে এগুলো আমার ই। বাসার বাইরে বের হলে সবাই এমন ভাবে দেখতো যেনো অইগুলো সত্যি ই আমার ছবি।

আমার জীবনে কালো অধ্যায় নেমে আসে তখনি। কিছু করার ছিলো না। এর পর ভার্চুয়াল কে বিদায় দিয়েছি"। তার বর্ননা শুনে আমার কিছু বলার ছিলো না। কিছুক্ষন চুপ থেকে বললাম, >এর পর আর ভার্চুয়ালে যান নি? :গিয়েছি।তবে ছদ্ম নামে আইডি দিয়ে।তবে সেই ছবি গুলোর কথা মনে হলে আর যাই না। >আর কখনো কেউ কিছু বলছিলো? :হ্যা। সবাই ভাবছে অইগুলো আমার।তাদের তো আর বুঝানো যাবে না। তাই শহর ছেরে অন্য শহরে চলে গেছি পড়ার জন্য। >হুম। . আর কিছু বলতে পারি নি মেয়েটাকে।ভার্চুয়াল সেলেব্রিটি আজ ভার্চুয়ালের পাশেও হাটে না। কিছু নোংরা মানসিকতার মানুষের জন্য এখন ভার্চুয়ালের দোষ। মনমানসিকতা চেঞ্জ না হলে এমন সেলেব্রিটিদের অকাল দশাই হবে। . আমি কখনো মানুষ হিসেবে দাড়াতে পারি নি। অমানুষ হিসেবেই আছি। 

ভালো তো দুরে থাক খারাপের খাতায় সবার শেষে আমার নাম। হয়তো একদিন আমি ও মানুষের কাতারে দাড়াবো।তবে তার কোনো সম্ভাবনা দেখছি না। . আনমনে ভাবতেছি মেয়েটির করুন দশা।হঠাৎ মেয়েটি বললো, >এবার বুঝছেন তো ভার্চুয়াল আর রিয়েলিটি? :হ্যা। >এর পরে অনেক মেয়েকেই বলছি ছবি না দেয়ার জন্য কিন্তু কেউ শুনে নি।দোয়া করি যাতে কারো অবস্থা আমার মতো না হয়। :(নিশ্চুপ) >অনেক কিছুই বললাম আপনাকে কিছু মনে করবেন না। :না মনে করার কিছু নেই। . কিছুক্ষন বাদেই বাস গন্তব্যে এসে গেছে।এবার বাস থেকে নামতে হবে। তবে আমার চিন্তা এখনো মেয়েটাকে ঘিরে। ভার্চুয়াল সেলেব্রিটির করুন অবস্থার কথা ভাবতেছি। ফেসবুকে অনেক সেলেব্রিটি দেখছি। কিন্তু ভার্চুয়াল আর বাস্তবের কথা আজ প্রথম শুনলাম।হয়তো মেয়েটাকে প্রতিনিয়ত তাড়া করে বেড়াবে তার ছবি গুলো।হয়তো সব ক্ষেত্রেই হেন্সতার স্বীকার হতে হবে তাকে। . হঠাৎ বাসের স্টাফ ডাক দিলো, >ভাই এসে পড়েছি এবার নামেন। বাইরে তাকিয়ে দেখি বন্ধুরা দাড়িয়ে আছে। না এবার নামতে হবে। তাদের তো বলতে হবে।



No comments

info.kroyhouse24@gmail.com