সম্পর্কের ‘ডিজিটাল ব্রেক আপ’!
মন ভেঙে গেলে তা নাকি আর জোড়া লাগে না। এত দিন সেই মন ভাঙার খবর কেবল মনের মানুষ, বড়জোর কাছের মানুষেরাই জানতেন। কিন্তু যুগ পাল্টেছে। এখন অনলাইনের ডিজিটাল জগতে যেমন মানুষে মানুষে চেনাজানা হয়, সম্পর্ক হয়, তেমনি সম্পর্ক ভেঙে গেলে তারও ছায়া পড়ে সেখানে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম নিয়ে গবেষণায় দেখা গেছে, কোনো জুটির সম্পর্ক ভেঙে গেলে অনলাইন জগত্ থেকে সেই সম্পর্কের সব চিহ্ন মুছে ফেলতে সচেষ্ট তরুণ-তরুণীরা। আর একেই বলা হচ্ছে ‘ডিজিটাল ব্রেক-আপ’। যুক্তরাজ্যে ফেসবুক নিয়ে গবেষণার বরাত দিয়ে জানিয়েছে ফিমেলফার্স্ট ডটকম। সাম্প্রতিক এক গবেষণায় দেখা গেছে, ব্রিটিশ তরুণ-তরুণীরা সম্পর্ক ভাঙার পর অনলাইন জগত্ থেকে সেই সম্পর্কের স্মৃতি বহনকারী ছবি, স্ট্যাটাস আপডেট, ইত্যাদি খুব দ্রুতই মুছে ফেলছে। এমন ডিজিটাল ব্রেক-আপে নিজের ফেসবুক আইডি থেকে ভেঙে যাওয়া সম্পর্কের ছাপ ধুয়ে-মুছে সাফ করতে গড় হিসাবে তিন থেকে ১৫ দিনের বেশি সময় নেন না তরুণ-তরুণীরা। আর সাধারণত মোটের ওপর ১৭ ঘণ্টার মধ্যেই ‘রিলেশনশিপ স্ট্যাটাস’ বদল করে অনলাইন দুনিয়াকে তাঁরা জানিয়ে দেন যে, তাঁরা আবারও ‘সিঙ্গেল’ বা একা আছেন। ওই জরিপে দেখা গেছে, উভয় পক্ষের বোঝাপড়ার মধ্য দিয়ে এমন সম্পর্ক ভাঙার চেয়ে এক পক্ষের আকস্মিক সিদ্ধান্তে সম্পর্ক ভাঙলেই এই প্রতিক্রিয়া মারাত্মক আকার নেয়। হঠাত্ করেই সঙ্গী চলে যাওয়ার পর মারাত্মক মুষড়ে পড়েছিলেন বলে জানিয়েছেন প্রায় ৭৮ ভাগ তরুণ-তরুণী। এমন সম্পর্ক ভাঙার প্রতিক্রিয়ায় প্রথমেই যা হয়, তা হলো—ছেড়ে যাওয়া সঙ্গীর সঙ্গে থাকা ছবিগুলো ফেসবুক থেকে সরিয়ে ফেলা, মোবাইল ফোন থেকে সরিয়ে ফেলা বা মুছে ফেলা, ফেসবুক ইনবক্স এবং ই-মেইল ইনবক্স থেকে সব ‘চ্যাট’ সব ‘চিঠি’ মুছে ফেলা। তবে, কিছুসংখ্যক তরুণ-তরুণী হয়তো সেগুলো সরিয়ে অন্যত্র নিরাপদ কোনো স্থানে রেখে দিতে পারেন। আবার অনেকেই তাত্ক্ষণিকভাবেই ছেড়ে যাওয়া ছেলেবন্ধু বা মেয়েবন্ধুর ফোন নম্বরও মুছে ফেলেন। গবেষণা পরিচালনাকারী সংস্থা ‘ভাউচারকোডসপ্রো’-এর মুখপাত্র জর্জ চার্লস বলেছেন, ‘সোশ্যাল মিডিয়া এখন এমনভাবেই আমাদের জীবনের অংশ হয়ে গেছে যে, আনুষ্ঠানিকভাবে ফেসবুকে না ঘোষণা দেওয়া পর্যন্ত যেন একটা সম্পর্ক হলেও তার অস্তিত্ব থাকে না। তেমনি ফেসবুকে রিলেশনশিপ স্ট্যাটাস পরিবর্তন না করা পর্যন্ত একটা সম্পর্ক ভেঙে গেলেও তা যেন স্পষ্ট হয় না।’
No comments
info.kroyhouse24@gmail.com